বাংলাদেশের স্বর্ণালি এক দিন
নারী সংবাদ
মুহূর্তেই সাদতোবাদো ক্রীড়া কমপ্লেক্সের কারাতে ভেনু হয়ে উঠল এক টুকরো বাংলাদেশ। সতীর্থ কারাতে খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, কোচ সবাই যেন ঈদের আনন্দে মেতে উঠলেন। কোলাকুলি পর্ব যেন শেষ হতেই চায় না। এই মিলনমেলায় সবার চোখেই ছিল আনন্দ অশ্রু। একই দিনে পোডিয়ামে তিন তিনবার জাতীয় সঙ্গীত বাজলে কোনো বাংলাদেশী চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। শিহরণে মন প্রাণ উজাড় করে গাইতে ইচ্ছা করে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।’ আর যাদের কারণে এমন একটি পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে তারা হলেন আল আমিন, মারজান আক্তার প্রিয়া ও হুমায়রা আক্তার অন্তরা। ১৩তম সাউথ এশিয়ান গেমসে কারাতে ডিসিপ্লিনে ভিন্ন ভিন্ন তিনটি ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয় করে সোনালি এক অধ্যায় রচনা করেছেন। এর আগের দিন তায়কোয়ানডোতে স্বর্ণ জিতেছিলেন দীপু চাকমা।
দশরথ থেকে সাতদোবাদো এক ঘণ্টার রাস্তা। সকালে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপেক্ষা করে যারা ভেনুতে গেছেন তাদেরকে ভাগ্যবানই বলা যায়। উশু, শুটিং, তায়কোয়ানডো, কারাতেসহ অনেক ডিসিপ্লিনের ভেনুই সেখানে। খবর পাওয়ামাত্রই হা পিত্তেশ করতে করতে ছুটে চলা। ফটোসাংবাদিকদের অনবরত ফ্লাশ। বুকে পতাকা জড়িয়ে হাসি মুখে তিন স্বর্ণজয়ী কারাতেকা আল আমিন, অন্তরা ও পিয়া। কাঠমান্ডুর ক্রীড়া কমপ্লেক্সে উপস্থিত বাংলাদেশীদের চোখে মুখে বিশেষ রকমের তৃপ্তি। একই দিনে তিনটি স্বর্ণ জয়ের ঘটনা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে খুবই বিরল। বিদেশের মাটিতে তিন স্বর্ণ জয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ গৌরবের। তিনজন স্বর্ণজয়ী ক্রীড়াবিদকে একসাথে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য অন্য ডিসিপ্লিনের কর্মকর্তা, সাবেক ক্রীড়াবিদরা ছুটে এসেছিলেন হন্যে হয়ে।
গেমসের তৃতীয় দিনেও সাফল্য এলো সাদতোবাদো কমপ্লেক্স থেকে। দ্বিতীয় দিনে এসেছিল তায়কোয়ানডো আর গতকাল কারাতে থেকে। কাঠমান্ডুর সকাল গড়িয়ে দুপুরের আগেই বাংলাদেশের আরো তিনটি স্বর্ণ যোগ করেছে কারাতে। কারাতে সেন্টারে বাংলাদেশের খুশির বন্যা। কোচ-কর্মকর্তা-কাভার করতে আসা সাংবাদিক সবাই আনন্দে মাতোয়ারা। মাত্র ঘণ্টা দু’য়ের ব্যবধানে তিন স্বর্ণ। এর চেয়ে আর আনন্দের উপলক্ষ কী হতে পারে। উপস্থিত ভিনদেশীদের আফসোসের মাত্রাটাও ছিল চোখে পড়ার মতো। হয়তো ভাবছিল ইস আমরা যদি জিততে পারতাম।
কাঠমান্ডুর ঠাণ্ডা সকালে বাংলাদেশের আড়মোড়া ভেঙেছে কুমিতে অনূর্ধ্ব ৬১ তে আল আমিনের স্বর্ণজয়ের মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানের জাফরকে ৭-৩ পয়েন্টে হারান। এর আগে সেমিফাইনালে হারান নেপালি রাজীব পোদাসানিকে। আল আমিনের স্বর্ণপদকের পরেই উল্লাসের উপলক্ষ তৈরি করেন মারজান আক্তার প্রিয়া। কুমি অনূর্ধ্ব ৫৫ কেজিতে পাকিস্তানের কাউসার সানাকে ৪-৩ পয়েন্টে হারান। কিছুক্ষণ পর কুমিতে অনূর্ধ্ব ৬১ কেজিতে হুমায়রা আক্তার অন্তরা নেপালের আনু গুরংকে ৫-২ পয়েন্টে হারিয়ে তৃতীয় স্বর্ণ জয় করেন।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।