কলকাতার চলচ্চিত্রে এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত নায়িকা কৌশানী মুখার্জি। ওপার বাংলার সেরা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ব্যানারে গেল বছর রাজা চন্দ পরিচালিত ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’ ছবি দিয়ে তার অভিষেক। বনি চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেছেন টোল পড়া হাসির এই মিষ্টি নায়িকা।
সেই ছবির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় কৌশানী তার দ্বিতীয় ছবিতেই চমক দেখিয়েছেন যীশু সেনগুপ্ত, দেব, রুদ্রনীল, নুসরাত, মিমির মতো এক ঝাঁক তারকার সঙ্গে ছবিতে কাজ করে। রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘কেলোর কীর্তি’ নামের সেই ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় নায়ক অঙ্কুশের বিপরীতে। সুপারহিট এই ছবি দিয়ে কৌশানী বনে গেছেন সুপারস্টার!
তারকালোকের সেই ঝলকানি সীমান্ত পেরিয়ে এসে দোলা দিয়েছে বাংলাদেশেও। এখানের বাংলা ছবির দর্শকদের মনেও কৌশানী নতুন ভালোবাসার নাম। স্বভাবতই বলা যায়, তিনি এখন দুই বাংলার ক্রেজ।
সেই কৌশানী এবার বাংলাদেশি দর্শকদের জন্য দারুণ এক চমক নিয়ে হাজির হচ্ছেন টিভির পর্দায়। দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রাণ বেভারেজ লিমিটেডের নতুন পণ্য ‘কালার্স লেমন’র বিজ্ঞাপনে দেখা যাবে এই নায়িকাকে। গেল ২৯ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার রাজধানী গুলশানে অবস্থিত পুলিশ প্লাজাতে টিভিসিটির বিজ্ঞাপনে অংশ নেন কৌশানী। জিঙ্গেলভিত্তিক এই বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেছেন হাসান তৌফিক অংকুর।
এই বিজ্ঞাপনে কাজ করা প্রসঙ্গে কৌশানী বলেন, ‘প্রাণ ইন্ডিয়াতে খুবই জনপ্রিয় একটি ব্র্যান্ড। সেই প্রতিষ্ঠানের পণ্যের মডেল হওয়াটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য দারুণ এক সংযোজন। কড় ব্র্যান্ড, বড় পরিসরের কাজ। ভালো লাগছে। আমি শুনেছি এই টিভিসিটি বাংলা ও হিন্দিতে নির্মিত হবে এবং বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হবে। একটি কাজ দিয়ে অনেক দর্শকের সামনে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটি একটি কোমল পানীয়ের বিজ্ঞাপন। এ ধরনের প্রোডাক্টগুলো সাধারণত তরুণ-তরুণীদেরকেই বেশি আকৃষ্ট করে। তাই এই বিজ্ঞাপনে একটা প্রাণবন্ত বিষয়ের উপস্থাপনা থাকছে। আর প্রাণ কালার্স লেমনের স্লোগান ‘কালার ইউর লাইফ’কে মাথায় রেখে টিভিসিটি নির্মাণ হচ্ছে। অনেক এনজয় করে কাজ করেছি। এখানে নির্মাতা অংকুর থেকে শুরু করে তার টিমের প্রত্যেকেই খুব হেল্পফুল। আর আলাদা করে বলতে হয়, এই পণ্যটির ব্র্যান্ড ম্যানেজার রবিন ভাই (এমডি. আশফাকুর রহমান) নানাভাবে সহযোগিতা করছেন। আশা করছি উপভোগ করার মতো একটি বিজ্ঞাপন আসতে যাচ্ছে। যা সত্যি মনকে রঙিন করে দেবে।’
বিজ্ঞাপনটি সম্পর্কে প্রাণ বেভারেজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং আতিকুর রহমান বলেন, ‘প্রাণ কালার্স লেমনের প্রথম বিজ্ঞাপন হতে যাচ্ছে এটি। খুব ভালো একটি কনসেপ্ট নিয়ে কাজ হয়েছে। আশা করছি দর্শকদের ভালো লাগবে। আর কৌশানীকে অভিনন্দন জানাই আমাদের পরিবারের নতুন সদস্য হিসেবে।’
প্রাণ বেভারেজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড ম্যানেজার আশফাকুর রহমান বলেন, ‘প্রাণ কালার লেমন একটি কালারফুল প্রোডাক্ট। কোনো রকম টিভিসা বা প্রচারণা ছাড়াই পণ্যটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই এবার আমরা ভাবছি এর প্রচারে মনযোগ দিতে। আর এর বিজ্ঞাপন ভাবনার শুরু থেকেই আমরা কালারফুল একটি উপস্থাপন রাখতে চেয়েছিলাম। সেই ভাবনা থেকেই কৌশানীকে নিয়ে কাজ করা। সে এখন দুই বাংলাতেই তুমুল জনপ্রিয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জীবনের অনেক মুহূর্ত থাকে যেগুলো ছোট ছোট আনন্দে মুখর। সেইসব আনন্দদের সেলিব্রেট করতেই প্রাণ কালার লেমন চাই- এমন একটি ভাবনা থেকে বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করা হয়েছে। শিগগিরই এটি প্রচারে আসবে।’
বিজ্ঞাপন ভাবনা নিয়ে নির্মাতা অংকুর বলেন, ‘বেশ কালারফুল একটি কাজ করা হলো। প্রোডাক্ট, কৌশানী এবং বিজ্ঞাপনের কনসেপ্ট- সবখানেই রঙ আর তারুণ্যের ছোঁয়া আছে। আশা করছি প্রচারে এলে সবার ভালো লাগবে এটি।’
এদিকে এই বিজ্ঞাপনে অংশ নিতে প্রথমবারের মতো ঢাকায় এলেন কৌশানী। প্রথম বাংলাদেশ দেখার অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি আমার জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা বলতে পারেন। বাংলাদেশ আমার বাপ-ঠাকুর দা’র পূর্বসূরীদের দেশ। এখানে আমারো অনেক আবেগ থেকে যায়। বাবা ও ঠাকুর দা’র মুখে মুখে এই দেশের অনেক গল্প শুনেছি কিন্তু কখনো আসা হয়নি। খুব সুন্দর। খুব সবুজ। আর খুব বেশি ভালো মানুষের বাস এখানে। মাত্র দুইদিন থেকেই সেটি উপলব্দি করে গেলাম। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে এসে মনে হচ্ছে না বিদেশে এসছি। সবই একরকম। ভাষাটাও। কিছু পার্থক্য আছে সেগুলো হুট করে চোখে পড়ে না। আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে আমার প্রথম ছবিটি বাংলাদেশের মানুষ নানা উপায়ে দেখেছেন। আর দ্বিতীয় ছবি ‘কেলোর কীর্তি’ ছবিটি এখানকার হলে মুক্তি পেয়েছিলো। বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে এখানে ছবিটি। চলচ্চিত্রের প্রতি ঢাকার মানুষদের ভালোবাসার গল্প আমাকে মুগ্ধ করেছে।’
কৌশানী বলে গেলেন, সুযোগ হলে বাংলাদেশে বারবার আসতে চান তিনি। কাজ করতে চান এখানেও।