মাউন্ট এভারেস্ট—বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। ২৯ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতার এভারেস্টে ওঠা যেনতেন কথা নয়। বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে প্রবল যুঝতে পারলেই সর্বোচ্চ সেই স্থানে বিজয় পতাকা ওড়ানো যায়। আসুন, জেনে নেওয়া যাক, একই দেশের দুজন নারী পবর্তারোহীর কথা, যাঁরা কিনা ভিন্ন ভিন্ন বয়সে জয় করেছিলেন এভারেস্ট।
অভিনেতা রাহুল বোস পরিচালিতপূর্ণা সিনেমাটি কি দেখা হয়েছে? দেখা থাকলে পূর্ণা মালাভাথের জীবনের গল্পের সঙ্গে পরিচয় হয়ে যাওয়ার কথা। অজানা থাকলে বলছি শুনুন।
ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের একটি ছোট্ট গ্রামে ছিল পূর্ণার বাস। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ২০১৪ সালে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন তিনি। এভারেস্টজয়ী সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে সেই সময় রেকর্ড করেছিলেন পূর্ণা। এর আগে ১৪ বছর বয়সী এক মার্কিন কিশোরের দখলে ছিল সেই রেকর্ড।
এভারেস্টের পথে পূর্ণা প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন। কিছুদিন আগেই সেখানে হিমবাহ ধসের ঘটনা ঘটেছিল। তবে এত কিছুতেও দমে যাননি তখনকার ১৩ বছরের কিশোরী। এভারেস্টের চূড়ায় উড়িয়েছিলেন বিজয় পতাকা।
এভারেস্ট জয়ে কোন বিষয়টি পূর্ণাকে অনুপ্রাণিত করেছিল জানেন? তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, মেয়েরা যেকোনো কিছুই অর্জন করতে পারে। এভারেস্টের চূড়ায় উঠে সব প্রতিবন্ধকতাকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছিলেন পূর্ণা।
২০১১ সালে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় যখন ভারতের ঝাড়খন্ডের অধিবাসী প্রেমলতার পা পড়েছিল, তখন তাঁর বয়স ছিল ৪৮ বছর। তিনি ছিলেন দুই সন্তানের মা। এমন বয়সে সবাই চায় নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। কিন্তু প্রেমলতা গিয়েছিলেন হিমালয়ের ঝঞ্ঝামুখর পথে। সে সময় তিনি ছিলেন ভারতের এভারেস্টজয়ী সবচেয়ে বেশি বয়সী নারী। যদিও পরে সেই রেকর্ড ভেঙেছিলেন আরেকজন, তবে পথপ্রদর্শক হিসেবে তিনিই ছিলেন।
শুধু তা-ই নয়। বিশ্বের সাত মহাদেশের সাত সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়াতেও (সেভেন সামিট) পা রেখেছেন প্রেমলতা। প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে এই রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
পর্বতারোহণে অবদান রাখায় ভারত সরকারের দেওয়া সম্মানসূচক ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার পেয়েছেন প্রেমলতা। আরও পেয়েছেন ‘তেনজিং নোরগে ন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড’। লিমকা বুক অব রেকর্ডসেও নাম লিখিয়েছেন প্রেমলতা।
তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, এনডিটিভি, দ্য হিন্দু ও টাইমস অব ইন্ডিয়া