banner

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 921 বার পঠিত

পোশাকে দেশপ্রেম

bijoy

 

অপরাজিতাবিডি ডটকম,ঢাকা: দেশপ্রেম প্রকাশের আয়োজন নানা মাধ্যমে হতে পারে। বাঙালি হিসেবে হৃদয়ে ধারণ করা দেশপ্রেমের চেতনার অনেকটাই ফুটে ওঠে পোশাকে, মননে। সে ভাবনা থেকেই আমাদের ফ্যাশন হাউসগুলো এ প্রজন্মকে পোশাকের দিক থেকে করেছে স্বদেশমুখী। ফলে এ সময়ের তারুণ্যের পোশাকের ডিজাইনের বড় অংশজুড়ে রয়েছে দেশাত্মবোধের চেতনা। এবারের স্বাধীনতা দিবসে লাল-সবুজের প্রত্যয়ে আবারও ফুটে উঠেছে দেশপ্রেম প্রকাশের সে ভাবনাই।

এবারের স্বাধীনতা দিবসে লাল-সবুজের প্রত্যয়ে আবারও সে চেষ্টাই চালিয়েছেন তারা। মূলত, ফ্যাশনের ধারাটা সময়কে ধারণ করে। স্টাইল, স্মার্টনেস, আউটলুকিংয়ের সামগ্রিক কনসেপ্টে বৈচিত্র্য এলেও স্বাধীনতা দিবসের ফ্যাশনে দেশাত্মবোধের ভাবধারাটা উন্মোচিত হয়। বাঙালির স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলা ভাষার প্রতি সশ্রদ্ধ মমতা এবং এক রক্তক্ষয়ী ইতিহাসের প্রবল অনুরণন—যে অনুরণনের প্রতিটি মুহূর্তে রয়েছে স্বাধীনচেতা বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের মহিমান্বিত গৌরব গাঁথা। দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম, যুদ্ধ এবং পরিণতিতে স্বাধীনতা অর্জন। আর এই অর্জনের ভেতর দিয়েই অন্ধকার সরিয়ে-সরিয়ে বাঙালির পথচলা হচ্ছে সেই ৪২ বছর আগে পাওয়া রক্তোজ্জ্বল বিজয়ের আলোয়। ১৯৭১-এর ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবস এখন ফ্যাশন স্টাইলের অনুষঙ্গ হিসেবে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এ ফ্যাশন-স্টাইলে উত্সবী আমেজ থাকলেও তার থেকে বেশি থাকে দেশাত্মবোধ তথা দেশপ্রেম। আর সে কারণেই স্বাধীনতা, বিজয় কিংবা ভাষা দিবসের ফ্যাশনের প্রথম চিত্রকল্প হিসেবে পোশাকে। আমাদের জাতীয় পতাকার রঙকে তুলির আঁচড়ে নান্দনিকভাবে পোশাকের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নয়নাভিরাম আঙ্গিকে।

 

1487337_588035737910488_1859329548_n

 

ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে লাল-সবুজকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন ডিজাইনের পোশাক এনেছে। পাশাপাশি ট্রেন্ডি এই আউটলাইনে থাকছে শাড়ি, কুর্তা, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টি-শার্ট ও শার্ট। এবারের ডিজাইনে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন মোটিভ। বড়দের পোশাকের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও থাকছে বিভিন্ন পোশাক যা অঞ্জন’স-এর সকল শোরুমে পাওয়া যাবে। ফ্যাশন হাউস রঙ-এর ফ্যাশনের মূল ভাবনা গড়ে উঠেছে দেশীয় আত্মপরিচয়কে ঘিরে। দেশীয় রং, দেশীয় কাপড় রঙ-এর আয়োজনের মূল উপাদান। লাল-সবুজ আমাদের পতাকার রং, আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক।

 

স্বাধীনতার এই মার্চ মাসজুড়ে তাই লাল-সবুজকে নিয়েই রঙ-এর যত আয়োজন। রঙ-এর স্বাধীনতা দিবসের পোশাকগুলো ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয়, দায়িত্ব ও মূল্যবোধ থেকেই করা হয়েছে। রঙ-এর স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে কিছুটা ভিন্নতা আনা হয়েছে। পোশাকগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি ও খাদি কাপড়। রঙ-এর স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ আয়োজন শাড়ি, থ্রিপিস, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, মগ, টুপি ইত্যাদিতে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশ সংবলিত লেখা। আর লাল-সবুজ রঙের মাধ্যমে উঠে এসেছে দেশীয় ভাবনার পাশাপাশি দেশীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান ডিজাইনের অনুষঙ্গ হিসেবে। কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে চুনরি, টাই-ডাই, ব্লক, বাটিক, অ্যাপলিক, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিন ইত্যাদি। এ ছাড়া স্বাধীনতা দিবসে প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য রঙ-এ রয়েছে গিফট ভাউচার। গর্ব করার মতো আমাদের যা কিছু আছে, তার অনুভূতিকে আরও বেশি মানুষের কাছে তুলে ধরার প্রচেষ্টায়, স্বাধীনতার এ মাসে স্বাধীনতার মহিমাকে পোশাকের মাধ্যমে সমুন্নত করতে সচেষ্ট হয়েছে দেশের অন্যতম ফ্যাশন হাউস কে ক্র্যাফট ।

 

aj_posake

 

স্বাধীনতার মাসে কে ক্র্যাফট আয়োজন করেছে স্বাধীনতার পোশাকের একটি বিশেষ কালেকশন। পহেলা মার্চ থেকে প্রতিটি কে ক্র্যাফট আউটলেটে এই কালেকশনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। প্রধানত সুতি কাপড়ে তৈরি এ কালেক্শনে রং হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে সবুজ ও লাল। নিজস্ব উইভিং ডিজাইনে লাল-সবুজে শাড়ি, টাই-ডাই শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ও টপস, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, শাল, ব্যান্ডানা, স্কার্ফের একটি সমৃদ্ধ আয়োজন করা হয়েছে। এ আয়োজনে শিশুদের জন্যও পোশাক রয়েছে। প্রতি বছরের মতো এই বছরও নগরদোলা নিয়ে এসেছে স্বাধীনতার মাসে স্বাধীনতার পোশাক। লাল-সবুজের নান্দনিকতায় নগরদোলার স্বাধীনতার পোশাক সম্ভারে রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ছেলে-মেয়েদের ফতুয়া এবং বাচ্চাদের সব ধরনের পোশাক। বাবা-মায়ের পোশাকের সাথে মিল রেখে করা হয়েছে বাচ্চাদের পোশাক। এ সমস্ত পোশাকসমূহে কারুকাজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, কারচুপি ও অন্যান্য কাজ। পোশাকে রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিজয়ের প্রচলিত লাল-সবুজের পাশাপাশি অন্যান্য রংগুলো এসেছে পোশাক ও স্বাধীনতার মর্যাদার সাথে সমন্বয় রেখে। পোশাকের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ক্রেতাসাধারণের ক্রয় ক্ষমতা ও সাধ্যের মধ্যে।

 

 

এ ছাড়া বাংলার মেলা, অন্যমেলা, নিপুণ, আড়ং, নিত্য উপহার, বিবিআনা, তারামার্কা, পঙিত, বাসন্তী, এড্রয়েট, ওজি, ইনফিনিটি, নন্দনকুঠিরসহ অন্যান্য ফ্যাশন হাউসগুলো স্বাধীনতা দিবসে এনেছে লাল-সবুজের নানা ডিজাইনের পোশাক। মাত্র কয়েক প্রজন্ম আগেও আমাদের পোশাকে যে স্বাধীনতার চেতনাটুকু ছিল অনেকটাই অনুজ্জ্বল, সময়ের বিবর্তনে আজ সেই পোশাক সম্ভারেই লাল-সবুজের দৃপ্ত পদচারণা। উত্সবের যে রং মানুষ এতকাল ধরে তার পরিধেয়র মাঝে ধারণ করত এখন সেই উত্সবের ধারায় যুক্ত হয়েছে দেশপ্রেমের আবহও। আর তাই যেকোনো জাতীয় দিবসের মতো স্বাধীনতা দিবসেও এখন সর্বত্রই চোখে পড়ে পোশাকের মাঝে এক টুকরো স্বদেশ।

 

অপরাজিতাবিডিডটকম/আরআই/এ/১৮ফেব্রুয়ারি২০১৪

Facebook Comments