banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 315 বার পঠিত

 

পায়ের নিচে লক্ষ তারার মেলা

উজ্জ্বল নিভু নিভু তারারা মিট মিট করে জ্বলে রাতের আকাশে। কোন রাত এমন হয় না যেদিন আমরা আকাশের দিকে তাকাই আর তারা খুঁজি না। এই ঢাকার ধুলিভরা ধোঁয়াশা আকাশেও ঠিক উঁকি দেয় একটি দু’টি তারা। আকাশ যেখানে পরিষ্কার সেখানে মেলা বসে হাজারো তারার।
তারাদের মেলা দেখতে মানুষ ছুটে যায় কতদিকে। সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন আকাশ আছে যেখানে, সেখানে শুধু তারা নয়, খালি চোখে ধরা পড়ে মিল্কিওয়ে, গ্যালাক্সি। আমাদের তারা সূর্য, তাকে দেখা কঠিন। দূর আকাশের মিট মিট এই সূর্যরা যেন চোখে আরাম দেয়, মনকে কৌতুহলী করে, বিস্মিত করে।
কিন্তু তারা কি আছে শুধুই আকাশে? যদি তারার দেখা মেলে সমূদ্রে? হ্যাঁ, সমুদ্রের জলেও পেতে পারেন অগুণতি তারার দেখা। সেই তারা বিছানো ঢেউ-এ পা ডুবিয়ে বসে থাকতে পারবেন আপনি। হাতে তুলে নিতে পারবেন এক মুঠো তারা। অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন রসিকতা করছি? একদমই না।
তারা ছড়ানো এই বিচ দেখতে আপনাকে যেতে হবে মালদ্বীপে। ঝকঝকে বিন্দু বিন্দু তারারা এখানে থাকবে আপনার পায়ের তলায়। মনে হবে যেন রূপকথার কোন দেশে চলে এসেছেন আপনি। কিন্তু তা নয়। এই তারার মেলা সম্পূর্ণই প্রাকৃতিক। বিন্দু বিন্দু এই আলোর উৎপত্তির কারণ এক ধরণের মাইক্রোস্কোপিক জীব যাকে বলা হয় bio luminescent phytoplankton, or Lingulodinium polyedrum।
এই প্ল্যাঙ্কটন রক্তিম ঢেউয়ের অংশ। কোন একটা এলাকায় যখন এই প্লাঙ্কটন বেশী মাত্রায় জন্মে তখন সেই এলাকার পানির রং লালচে কমলা হয়ে যায়। তবে প্রকৃতির এই খেলা কিছুক্ষেত্রে সমূদ্রের প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর। ক্ষতিকর মানুষের জন্যও।
মজার ব্যাপার হল রাতে এই লাল পানি সম্পূর্ণ ভিন্ন রং ধারণ করে। সৃষ্টি করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য আলোক বিন্দুর। বিচের বালিতে হেটে গেলে আপনার প্রতি পায়ের ছাপে জ্বলে উঠবে আলোর বিন্দুরা। যেসব সার্ফাররা রাতে সার্ফিং করেন তাদের বোটের ঢেইয়ের সাথে সাথে যেন হাজারো আলোর রাশি ঝলসে ওঠে। সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউ যেন লক্ষ্য কোটি তারা নিয়ে আচরে পড়ে সৈকতে।
মালদ্বীপ ভ্রমণে অবশ্যই যাবেন এই বিচে। তবে অবশ্যই রাতে। রাতই এখানে চমক, বিস্ময়।
Facebook Comments