অস্কারজয়ী এই ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালককে নিয়ে জল্পনা- কল্পনা কিংবা কৌতুহলের সীমা নেই। অন্য দশজন তারকার চেয়ে প্রচারমাধ্যমকে অনেক বেশি এড়িয়ে চলা বিশ্বখ্যাত এই সঙ্গীত তারকাকে নিয়ে অভাব নেই বিভ্রান্তিরও! তেমন কিছু বিভ্রান্তি ও কৌতুহল দূর হল বহুদিন পর প্রকাশিত এ আর রহমানের এক সাক্ষাৎকারে
বলিউডে কাজ করার খুব বেশি সময় পাচ্ছেন না। প্রস্তাবগুলো কিভাবে ফিরিয়ে দিচ্ছেন?
ক্যারিয়ারের এই সময়ে আমি শুধু সেইসব গান করতে চাই- যা আমাকে প্রেরণা যোগাবে। নইলে শ্রোতারা আমার গান শুনবে না। তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক পরিণত হবে দীর্ঘদিনের একঘেয়ে বিবাহিত জীবনের মতো।
আপনার গান সিনেমায় যেভাবে চিত্রায়িত হয়, তাতে কি আপনি সন্তুষ্ট?
‘রং দে বসন্তি’ কিংবা ‘দিল্লি সিক্স’ সিনেমার কথা বলি। সেখানে গানগুলো ব্যবহার হয়েছে আবহসঙ্গীত হিসেবে। গানে ঠোঁট মেলাননি কেউ। সে কারণে যতখানি প্রতিক্রিয়া আশা করা হয়েছিল, পাওয়া গেছে তার মাত্র ৩০ থেকে ৪০ ভাগ। গানে সিনেমার কোনো তারকা ঠোঁট মেলালে মানসিকভাবে তা দর্শকদের বেশি আকর্ষন করে। তারুণ্যনির্ভর সিনেমার গান নিয়ে আমার অধিক আগ্রহের এটাও অন্যতম কারণ।
এটা একটু কঠিন; তবে বিদেশে কাজ থাকলে এক- দেড় মাসের জন্য আমি তাতেই ডুবে যাই। প্রযুক্তি অবশ্য বিষয়টাকে অনেক সাবলীল করে তুলেছে। আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুতেও বিষয়টা এমন ছিল না। এখন দুনিয়ার যে কোনো জায়গা থেকে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন আমার সঙ্গে।
বিদেশে কি ধরনের কাজ করলেন?
কিছুদিন আগে শেষ করেছি ‘মিলিয়ন ডলার আর্ম’ ও ‘দ্য হান্ড্রেড-ফুট জার্নি’ নামে দুটি হলিউড ছবির কাজ। এই ছবির কাজগুলো একদম আলাদা। এখানে ভারতীয় কোন বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করিনি।
যখন লম্বা সময়ের জন্য বিদেশে কাজ করতে যান। পরিবারের জন্য মন আনচান করে না?
এটা এক ধরনের আত্মত্যাগ। গানের জন্য। আমার অগোচরে আমার সন্তানেরা বড় হয়ে উঠছে। অবশ্য ওদের স্কুল ছুটি থাকলে সঙ্গে নিয়ে যাই। কিন্তু সব জায়গায় ওরা যেতে পারে না আমার সঙ্গে। কারণ তাদেরও নিজস্ব জীবন আছে। নিজের জন্য সেটাতে আমি বিঘ্ন ঘটাতে পারি না।
নিজের মতো করে খানিক বিশ্রাম করার সময়টা তো পান!
বিদেশে গেলে একটা সুবিধা আছে। কেউ পথেঘাটে ঘিরে ধরে না। রাস্তায় আশপাশের লোকরা চিনে ফেলার পরও ত্যাক্ত করতে আসে না। অনায়াসে এবং ঝামেলা ছাড়াই আমি লম্বা পথ হেঁটে পাড়ি দিতে পারি। দেশে থাকলে এটা হয় না।
৪৭ বছরে পা রাখলেন। তারপরও তারুণ্যনির্ভর সিনেমার গান কিভাবে করছেন?
আসলে আমি যখন তরুণ ছিলাম, তখন তারুণ্য অনুভব করার সুযোগ পাইনি। বাচ্চাকাল থেকেই আমার প্রচুর সময় কেটেছে চল্লিশোর্ধ সঙ্গীতজ্ঞের সঙ্গে। তারা পান চিবুতে চিবুতে ধ্রুপদী গানের গল্প করতেন। ছেলে বেলায় নিজেকে তাদের মতোই মনে হতো। এখন এই বয়সে এসে তরুণকালের চেয়েও বেশি তারুণ্য বোধ করি।
সূত্র: আইএএনএস ও হিন্দুস্তান টাইমস
Facebook Comments