সফলতার গল্প সবসময় অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকে, আর সেই গল্প যখন নিজ দেশের কারও হয়, তখন তা গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এমনই এক অনুপ্রেরণার নাম মাহজাবিন হক, যিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-তে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।
মাহজাবিন হকের শৈশব কেটেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কদমরসুল গ্রামে। তার বাবা সৈয়দ এনামুল হক পূবালী ব্যাংকের একজন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। ২০০৯ সালে মাহজাবিন তার পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তি ও মহাকাশবিজ্ঞানের প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল। সেই আগ্রহ থেকেই তিনি মিশিগান রাজ্যের ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
নাসায় যোগদানের আগে মাহজাবিন দুই দফায় নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে ইন্টার্নশিপ করেন। প্রথমবার তিনি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ডেটা অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করেন। এরপর ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মিশন কন্ট্রোল সেন্টারে সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে কাজ করেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে নাসার স্থায়ী নিয়োগের জন্য প্রস্তুত করে।
ইন্টার্নশিপ শেষে তিনি নাসা, অ্যামাজনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রস্তাব পান। তবে তিনি নাসায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নাসায় আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেন।
একজন বাংলাদেশি নারী হিসেবে নাসায় কাজ করা নিঃসন্দেহে এক বিশাল অর্জন। মাহজাবিন প্রমাণ করেছেন যে পরিশ্রম, মেধা ও একাগ্রতা থাকলে বিশ্বের যেকোনো বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করার স্বপ্ন সত্যি করা সম্ভব। তার সাফল্য বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী করবে এবং তাদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনুপ্রেরণা দেবে।
বাংলাদেশের মেধাবী তরুণরা যে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে নিজেদের জায়গা করে নিতে পারে, মাহজাবিন হক তারই এক উজ্জ্বল উদাহরণ।