সাজেদা হোমায়রা
খুব ছোটবেলা থেকেই আমরা এটা জেনেই বড় হই, সুন্দর হওয়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে তার গায়ের রঙ সাদা। আর যার গায়ের রঙ সাদা নয় সে তথাকথিত সুন্দরের সংজ্ঞার বাইরে।
যার গায়ের রঙ সাদা নয়, কালো বা শ্যামলা সে প্রতিনিয়তই হীনমন্যতায় ভুগছে বা আফসোস করছে।
অবশ্য করবেইবা না কেন?এ আফসোস তো আর একদিনে তৈরি হয়নি।
যখন দিনের পর দিন গায়ের রঙের জন্য সে অবজ্ঞার শিকার হয়….
যখন প্রকৃত মেধা/যোগ্যতার চেয়ে ফর্সা না কালো এটিই মূল্যায়নের মাপকাঠি হয়ে উঠে…..
যখন ভাই বোনদের মধ্যে যার গায়ের রঙ সবচেয়ে অনুজ্জ্বল, সে ছোটবেলা থেকেই এটা মনের ভিতর ধারণ করতে করতে বড় হয়…..
যখন একটা ছোট বাচ্চা যার গায়েব রঙ ফর্সা নয় সে এটা জেনেই বড় হতে থাকে যে কলোত্বের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে তাকে extra ordinary হতে হবে…..
যখন রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের ভীড়ে বাজার সয়লাব হয়ে যায়…..
যখন একটা মেয়ে তার মনের আলোতে চারপাশ দ্যুতিময় করেও শশুর বাড়িতে প্রিয় হতে পারেনা শুধু তার গায়ের রঙের জন্য…..
তখন আসলে নিজের রঙের উপর সন্তুষ্ট থাকাটা কঠিনই হয়ে পড়ে। তখন মনে হয় এই পৃথিবীতে সুন্দর না হওয়াটা ভীষণ অপরাধ।
আশেপাশে আবার সান্ত্বনামূলক কিছু কথাও শোনা যায়।
যেমন: কালো হলেও তার মনটা ভালো বা কালো হলেও সে মেধাবী…. ইত্যাদি।
তার মানে ‘কালো হলেও’ এ কথার মাধ্যমে আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি, কালো একটা ঘাটতি।
হ্যাঁ, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় সৌন্দর্যেরই দরকার আছে। তবে তথাকথিত সৌন্দর্যের সংজ্ঞা দিয়ে সুন্দর/অসুন্দর নিরুপন করা কখনোই কাম্য নয়।
আসলে প্রত্যেকটি মানুষের সৌন্দর্যের ধরণ আলাদা।
একেক মানুষ একেক রকম সুন্দর।
একেক মানুষ একেক কারণে সুন্দর।
পরিবর্তন আসুক মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে!