নারীর জন্য আইন
রাষ্ট্রে নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে কোনো রূপ বৈষম্য নেই। আইনের দৃষ্টিতে সব নাগরিক সমান অধিকারী। প্রতিটি রাষ্ট্রে তাদের নিজস্ব আইন রয়েছে।
তবুও অনেক আইন থাকা সত্ত্বেও এখনো অনেক নারী বঞ্চিত ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অধিকার আদায়ে প্রতিনিয়ত লড়াই করছেন নারীরা।
আশির দশকের নারী আইন:
নারী নির্যাতন বন্ধে আইন প্রণয়নের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আশির দশকের শুরুর দিকে বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় তা দমনে ১৯৮৩ সালে এ আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু নারী নির্যাতন বন্ধে এ আইন খুব বেশি কার্যকর হচ্ছিল না।
নম্বই দশকের নারী আইন:
আশির দশকের আইনে কাজ না হওয়ায় আরো কঠোর আইন তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। পরে ১৯৯৫ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন পাস করা হয়। এ আইন পাসের পর নারী নির্যাতন কিছুটা বন্ধ হয়।
বিংশ শতকের নারীর আইন:
তবে পরে আইনটি বাতিলক্রমে ২০০০ সালে নতুন করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনটিকে আরো শক্তিশালী করতে ২০০৩ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন প্রণয়ন করা হয়। এছাড়া এসিড-সন্ত্রাস দমন আইন ২০০২ ও যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন ১৯৮০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ প্রভৃতি আইন রয়েছে।
এ ছাড়া নারীনীতিসহ কিছু নীতি ও আইন আছে, যেখানে পরোক্ষভাবে নারীর অধিকার ও স্বার্থকে রক্ষা করা হয়েছে।
দেশে প্রথমবার নারীনীতি আইন প্রণয়ন করা হয় ১৯৯৭ সালে, এরপর ২০০৪ ও ২০০৮ সালে তা সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে পুনরায় নারীনীতি প্রণয়ন করা হয়।
নারীর তালাকের বিধান:
এ ছাড়া পুরুষকে তালাক দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন না থাকলেও মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ মোতাবেক নারীদের বিবাহবিচ্ছেদেরও অধিকার দেওয়া হয়। পারিবারিক আইনে নারীর অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। কিন্তু সামাজিকভাবে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকায় নারী তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংবিধান এবং আইনে থাকলেও নারীর প্রতি বৈষম্য বিরাজ করছে সমাজের সর্বক্ষেত্রেই।
নারীর অধিকার বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় বাধা হলো পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মানুষের মানসিকতা। পুরুষদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারলে সমাজে নারীদের অধিকার সহজেই প্রতিষ্ঠা পাবে।