অপরাজিতাবিডি ডটকম : গ্রামীণ প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের পারিবারিক কাজ নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেন্ডার স্টাডিজ অ্যান্ড সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশন (সিজিএসটি)। গবেষণায় বলা হয়েছে, পরিবারের অমূল্যায়িত সেবামূলক কাজে নারীরা মোট কর্মঘণ্টার প্রায় ৭ ঘণ্টা ব্যয় করেন। অপরদিকে পুরুষরা এ কাজ করেন এক ঘণ্টা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বুধবার গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাহিন সুলতান। গবেষণার ক্ষেত্র উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ এলাকা।
গবেষণায় বলা হয়, নারীর এ কাজের স্বীকৃতি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নেই। কাজের অতিরিক্ত চাপের কারণে নারীরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ পান না। এটি নারীর ক্ষমতায়নে প্রতিবন্ধক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নারীদের তুলনায় পুরুষরা উৎপাদনশীল কাজে বেশি সময় দেন, যে কারণে পরিবারের কর্তৃত্ব পুরুষের হাতে। পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি অবসর সময় পার করেন বিনোদন বা অন্য কাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কারণে পুরুষের ওপর নারী সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হচ্ছে। প্রতিটি নারীকে শিক্ষার সুযোগ দিলে ও অর্থনৈতিক কাজে সুযোগ দিলে নারীর অবস্থানের পরিবর্তন হবে। সরকার এই দুদিকে খেয়াল দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের ঘরের কাজ করতে হয়। পরিবারের পুরুষ সদস্যরাই সিদ্ধান্ত নেয় নারীরা কোন ধরনের কাজ করবে আর সেটির স্বীকৃতি হবে কি-না। ফলে পুরুষের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ে, নারীরা পায় না কাজের স্বীকৃতি।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার নিকোল মালপাস বলেন, ‘বাংলাদেশের জেন্ডার বৈষম্য দূর করতে নারীর অমূল্যায়িত সেবামূলক কাজের মূল্যায়ন দরকার। যদি নারী ও পুরুষের কাজের ভাগাভাগি করা হয় তবে দেশের উন্নতি হবেই।’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সুরাইয়া বেগম, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক জ্যেষ্ঠ গবেষক প্রতিমা পাল মজুমদার প্রমুখ।
অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/সেপ্টেম্বর ২০১৪ই.