রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বনামে উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বদের পোশাক-আশাক নিয়ে অভিনয়শিল্পী বা সঙ্গীতশিল্পীদের পোশাক, সাজসজ্জার মতই মাতামাতি হয়ে থাকে পাশ্চিমা দেশগুলোতে। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনের নারী তারকাদের ক্ষেত্রে তাদের পোশাক, সাজসজ্জা নিয়ে মাতামাতিটা বাড়াবাড়ি, ক্ষেত্রবিশেষে সমালোচনাতেই রূপ নেয় বেশি। ব্যক্তির, বিশেষ করে নারীদের, কাজের মূল্যায়ন তার পোশাক আশােকর সমালোচনার ভিড়ে হারিয়ে যায় যেন।
তবে নিজের নতুন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা প্রম ছবিতে এসব সমালোচনার জবাব দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটন।প্রম ছবিতে একসঙ্গে লাল, সাদা ও নীল রঙয়ের (যা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পতাকার রং) প্যান্ট-স্যুট পরিহিতা ছবি দিয়ে যেন বলতে চাইলেন, “ফ্যাশন নিয়ে মন্তব্য করা শুধু যারা ফ্যাশন নিয়ে কাজ করে তাদেরই দখলে নয়, রাজনীতিবিদরাও ফ্যাশনেবল হতে পারে”। হিলারির পোশাক নিয়ে প্রায়ই সমালোচনা করা হয় যে, তার পোশাকগুলো ঠিক ‘নারীসুলভ’ না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিনড়ব
টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয় টক শোগুলোতেও তার পোশাক নিয়ে সরাসরি কৌতুক করা হয়ে থাকে প্রায়ই। এমনকি ফ্যাশন বিশ্লেষক টিমগান এমনও মন্তব্য করেছেন যে, হিলারির পোশাক দেখে মনে হয় তিনি তার লিঙ্গপরিচয় নিয়ে বিভ্রান্ত। হিলারি পুরুষদের মধ্যে নিজেকে স্বতন্ত্র করে তোলার চেয়ে বরং তাদের মধ্যে মিশে যেতে চান বলেই এধরনের পোশাক পড়েন বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে। সাবেক ফার্স্ট লেডি, পরবর্তীতে সিনেটর এবং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রম মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে কাজ করা
হিলারির সব অর্জনই যেন তুচ্ছ তার সাজপোশাকের কাছে! শুধু হিলারি নয়, বর্তমান ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার সাজপোশাক নিয়েও আলোচনা সমালোচনা কম হয় না মার্কিন মিডিয়াতে। সাজপোশাক নিয়ে আলোচনায় বিভিনড়ব বিষয়ে তাদের বক্তব্য, কাজ ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানগুলো অনেকাংশেই আলোচনার আড়ালে চলে যায়। এমনকি অভিনয়শিল্পী বা সঙ্গীতশিল্পীদের ক্ষেত্রেও এধরনের বৈষম্য হরদম করা হয়ে থাকে মিডিয়াগুলো।
কোন অনুষ্ঠানের শুরুতে লাল গালিচায় সাক্ষাতকারে ‘অভিনেতাদের’ সাধারণত প্রশড়ব করা হয় তাদের পরবর্তী সিনেমা বা টেলিভিশন সিরিজে অভিনীত চরিত্রগুলো নিয়ে। আর ‘অভিনেত্রীদের’ প্রতি মূলত প্রশড়ব থাকে তাদের সাজপোশাক নিয়েই, তাদের অভিনয় বা সঙ্গীত বিষয়ক কোন প্রশড়ব করাই হয় না এক রকমের। এছাড়া মিডিয়ার তৈরি করে দেয়া ফ্যাশন সংজ্ঞার মধ্যে সামাজিক বৈষম্যগুলো আরো প্রকটভাবেই ফুটে ওঠে। তবে হিলারি ক্লিনটন তার ইনস্টাগ্রাম ছবির মাধ্যমে নিজের অভিরুচি আর বুদ্ধিমত্তার
সঙ্গেই মিডিয়ার তৈরি করে দেয়া ভাষাতেই মিডিয়াকে ঘায়েল করেছেন বলে মনে করছেন তার ভক্তরা।
নারীবিদ্বেষীদের প্রতি হিলারির জবাব
Facebook Comments