বর্তমানে আর একটি নাম অত্যন্ত জনপ্রিয় সেটি আনিসুল হক। হুমায়ুন নামধারীদের নামের শেষ অংশ মিল ছিলনা কিন্তু আনিসুল হক নামে যে তিনজন আছেন তাদের নামের কোথাও কোন বেমিল নেই।
১। আনিসুল হক (সাহিত্যিক)। (Anisul Hoque) । আজ যাকে আমরা সাহিত্যিক হিসেবে দেখছি তিনিও হুমায়ুন আহমেদের মতই অনেক গুলো প্রতিভার অধিকারী। বুয়েট থেকে পাশ করা এই অসাধারণ মানুষটি ইঞ্জিনিয়ারতো বটেই তার সাথে সাংবাদিক,সাহিত্যিক,নাট্যকার এবং বেশ ভাল মানের আর্টিস্টও বটে।
মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বদেশ প্রেম নিয়ে লেখা তার রচনা গুলো আমাদেরকে দেশ প্রেম শেখায় নিয়ে যায় উত্তাল সেই দিনগুলোতে। মনের মধ্যে বীরত্ব জন্ম দেয়।
প্রেমের উপন্যাস গুলোতে আমাদের জীবনের চতুর্থপর্বে এসেও প্রেম জাগায়,মনে হয় যেন এই বৃদ্ধ বয়সেও আমি এক তরুন কলেজ স্টুডেন্ট।
নিছক ছোটদের আনন্দ দেয়ার জন্য তিনি যখন গুড্ডু বুড়োকে নিয়ে নানা কান্ড ঘটাতে লাগলেন আমরা অবাক হয়ে দেখলাম সেটা কেবল ছোটরাই নয় সেই সাথে বড়রাও গো গ্রাসে গিলছে।
তার লেখা গদ্য কার্টুন কার না ভাল লাগে।
আচ্ছা ধরুন সব কিছু বাদ। এই আনিসুল হক বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যে মানের ভক্ত তার বিনিময়ে তার স্থান আমার দৃষ্টিতে এক নাম্বার হবে এটাইতো স্বাভাবিক। তিনি বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশ দলকে যেভাবে সাপোর্ট করেন তার মুগ্ধকর।
২। আনিসুল হক (মেয়র)। এই আনিসুল হক সাহিত্যিক আনিসুল হকের থেকে বয়সে প্রবীন।তিনি আগে লাইম লাইটে ছিলেন না। ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাকে চিনতাম এবং তার সাথে কয়েকবার আমার দেখাও হয়েছে। তখন তাকে আমার ঠিক সেরকম লাগেনি। বরং তিনি যখন মেয়র পদে দাড়ালেন আমার মনে হলো এই লোকটা নির্বাচিত হলে কিছুই করবেন না।
আহ আমার ধারণা ভুল প্রমান করে দিয়ে তিনি নির্বাচিত হওয়ার সামান্য এ কয়দিনের ব্যবধানে যা করেছেন আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান বলে যে প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ থেকে সাদেক হোসেন খোকাও তা করেন নি। হ্যা আমি দেখেছি একই সাথে এলাকার সব রাস্তা খুড়ে কাজ শুরু করেছেন। ভোগান্তি হচ্ছে কিন্তু তিনি কোন কাজ ফেলে রাখেন নি। তর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচিত হওয়ার পর তার সাথে দেখা হলো। আমার মত সাধারণ মানুষকে হতবাক করে দিয়ে তিনি হাসিমুখে কথা বললেন। এবং আমার মনে হলো নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি যতটা বন্ধুভাবাপন্ন ছিলেন নির্বাচিত হওয়ার পর তা বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুন। এবং দেখবেন অবধারিত ভাবেই তিনি আপনার মনেও জায়গা দখল করে নেবে। যদিনা আপনি ঘোর বিরোধী না হন।
৩। আনিসুল হক (আইন মন্ত্রী)। তিন আনিসুল হকের মধ্যে শেষ জন হলেন বয়সে সব থেকে প্রবীন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আইনমন্ত্রী হওয়ার পর অনেক কিছু হয়েছে। অনেকের চোখ ভিজে উঠেছে আনন্দ অশ্রুতে এবং কারো কারো হয়তো বেদনায়।
তাই দেখা যাচ্ছে বাংলার আকাশে হুমায়ুন আর আনিসুল হক নাম দুটোতে একাধিক ব্যক্তি খ্যাতিমান হয়েছেন মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
তাহলে আসুন আমি আপনি আমাদের সন্তানদের নামও ওরকম কারো সাথে মিলিয়ে রাখলে সন্তান তার মত হবে এই ধারনা থেকে বেরিয়ে আসি এবং তাদের মেধা বিকাশে আন্তরিক সহযোগিতা দেখাই। হয়তো সহযোগিতা পেলে সেই ছেলেটিই একদিন নাম কামাবে।
কুসুম কুমারী দাশের সেই কবিতার মত
“আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে?
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।”
হ্যা হুমায়ুন আর আনিসুল হক নামধারী মানুষ গুলো শুধু কথায় নয় কাজে বড় হয়েছেন। তাদের জন্য স্যালুট।
………………………..
#জাজাফী
উত্তরা