banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 206 বার পঠিত

ধারাবাহিক উপন্যাস “নিয়ন্ত্রিত পরিণতি” পর্ব-৭

 

 images

 

 

নাসরিন সিমা:

 

 

দুই সপ্তাহ পর,
নাদিমের বাসায় ঢুকলো রাজিব, নাদিম বিছানায় শুয়ে আছে, মা দুদিন হলো বাড়ি গেছে থাকবে দুমাসের মতো। মামা বাড়ি আর ছেলেদের বাড়ি সহ। রাজিব খেয়াল করলো কারেন্ট নেই, তবুও নির্বিকার ভাবে শুয়ে কিছু একটা ভাবছে। দরোজায় টোকা দেয়,
-নাদিম আসবো?
দ্রুত উঠে পড়ে নাদিম, হাতের কাছে একটা গেন্জি ছিলো পরে নেয়,
-হ্যা হ্যা এসো।
ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে,
-এতো গরমের মধ্যে শুয়ে শুয়ে কী ভাবছো?
-না কিছু না, চলো বাইরে যাই তুমি এতো গরম সহ্য করতে পারবেনা।
-না নাদিম ভুল বলছো, তুমি আমার খুব প্রিয় বন্ধু, যা তুমি পারো তা আমার না পারলে চলবে? একটু হাসে রাজিব,
-স্মৃতির কথা ভাবছিলে বুঝি?
দীর্ঘশ্বাস ফেলে নাদিম,
-যার তিনবেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা নেই সে কী স্বপ্ন দেখতে পারে রাজিব?
-অবশ্যই পারে কেন পারবেনা, যিশুর কৃপা যার উপর একবার হয় সে কিছুতেই বন্চিত হতে পারেনা। তুমি খ্রিষ্টান হয়ে যাও দেখ………
রাজিবের হাত চেপে ধরে নাদিম,
-খ্রিষ্টান না হলে হয়না রাজিব?
রাজিব ভ্রু কুঁচকে নাদিমের দিকে তাকায়,
-যিশু ঈশ্বরের কাছে খ্রিষ্টানদের জন্যই প্রার্থণা করেন।
-না মানে বলছিলাম কি আমি বেশী কিছু চাইনা, তেমাদের কনফারেন্স গুলোতে আ্যটেন্ড করবো, প্রোগ্রাম গুলোতে, শুধু খ্রিষ্টান হতে বলোনা আমায়…
রাজিবের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, নাদিম ওর মুখের দিকে তাকাতে ভয় পায় যেন, কারণ নাদিম নিজেও জানে টাকা নেয়ার সময় এসব কথা হয়নি, আর পরে বলার কথাও ছিলোনা। -সেটা তোমার ইচ্ছা নাদিম, তবে ভুলে যেওনা খ্রি্ষ্টান না হলে এ যাবৎ ভোগ করা সমস্ত অর্থ ফেরত নেবেন রিলিজিওন প্রিষ্ট।
চমকে রাজিবের দিকে তাকায় নাদিম, প্রায় পাঁচ লাখের মতো টাকা খরচ হয়ে গেছে, বিভিন্ন ভাবে টাকা দিয়েছে ওরা। টেনশনে মাথা ব্যাথা শুরু হয় নাদিমের, কী করবে সে এখন!
এক পর্যায়ে রাজিব উঠে চলে যায়।
চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে নাদিমের, বাইবেল ষ্টাডি করে যা পেয়েছে তাতে খ্রিষ্টান হওয়ার প্রশ্ণই আসেনা, কারণ সেখানে ষ্পস্ট লেখা আছে, শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)………
ভাবতে পারেনা নাদিম এ সময় নাদিমের এক বন্ধু ইমরাণ আসে, রাজিবকে পেয়ে এই বন্ধুকে ভুলে গিয়েছিলো নাদিম, নাদিমকে চিন্তিত দেখে,
-কী হয়েছে নাদিম?
ইমরানকে দেখেই দ্রুত ওর কাছে এসে জড়িয়ে ধরে,
-কেমন আছো ইমরান? অনেকদিন আসোনা যে!
-ভালো আছি, কিন্তু তোমার কী হয়েছে বলোতো, প্রায় সময় খুব অন্যমনষ্ক দেখি। তেমার বন্ধু এসেছিলো মনে হয়, নাম কী?
-রাজিব রোজারিও, হ্যা এসেছিলো………
-খ্রিষ্টান! ভ্রু কুঁচকে যায় ইমরানের,
-একটু সাবধানে থেকো নাদিম, এখন কিন্তু খ্রিষ্টানরা, ফাঁদে ফেলে মুসলমানদেরকে খ্রিষ্টান বানাচ্ছে।
-ফাঁদ! মানে? আসলে ফাঁদই হয়তোবা, কিন্তু রাজিব আমাকে ফাঁদে ফেলবে আমি ভাবতে পারিনা। কিন্তু ওদের শর্তটা মানাও আমার পক্ষে কোনমতেই সম্ভব নয়।
নাদিমের কাঁধে হাত রাখে ইমরান,
-এসব নির্মূল করতে হবে!
নাদিম অবাক হয়ে,
-কিভাবে?
-ভাবতে হবে, চলো বাইরে যাই খালাম্মা কী বাড়িতে?
-হ্যা। চলবে……

অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/২০১৪ই.

Facebook Comments