নারী সংবাদ
দৌলতদিয়া, হবিগঞ্জ ও বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলছাত্রীসহ চারজন নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নবম শ্রেণীর দুই ছাত্রী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো দৌলতদিয়া ৮ নম্বর ওয়ার্ড যদু ফকিরপাড়ার আ: ছালাম প্রামাণিকের মেয়ে চাঁদনী আক্তার (১৫) ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড ওমর আলী মোল্লাপাড়ার জামাল মোল্লার মেয়ে কেয়া আক্তার (১৫)। তারা দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের ছাত্রী ছিল। বেলা পৌনে ২টায় সড়কসংলগ্ন মডেল হাইস্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত চাঁদনীর ভাই ফরিদুল ইসলাম জানায়, চাঁদনী ও কেয়া একই অটোরিকশায় বাড়ি থেকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য স্কুলের সামনে নেমে সড়ক পার হচ্ছিল। এমন সময় ঢাকার দিক থেকে আসা খুলনাগামী গোল্ডেন লাইন পরিহনের একটি দ্রুতগতির বাস তাদের পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে তারা গুরুতর আহত হয়। দ্রুত তাদের গোয়ালন্দ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ দিকে সড়ক দুর্ঘনায় দুই ছাত্রী নিহত হওয়ার খবর পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় পুলিশের গাড়িতেও উত্তেজিত জনতা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। মহাসড়কে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার যানবাহনের সিরিয়ালে পাঁচ শতাধিক গাড়ি আটকা পড়ে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গুরুতর আহত ১০ জনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে পৃথক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া বাজার থেকে একটি ইজিবাইক কালারডোবা এলাকায় পৌঁছলে হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচংগামী একটি পিকআপ সেটাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে সন্ধ্যা রানী সরকার (৫০) নিহত হন। সন্ধ্যা রানী বানিয়াচং উপজেলা মক্রমপুর ইউনিয়নের নতুল্লারপুর গ্রামের মৃত প্রভু সরকারের স্ত্রী।
এ ঘটনায় ইজিবাইকের আরো পাঁচ যাত্রী আহত হন।
অপর দিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলের ডুবাঐ বাজারে এনা পরিবহনের একটি বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠান। আহতদের মধ্যে কানন (২৫), হৃদয় মিয়া (১৮), রহিদুল ইসলাম (১৩), কামরুর হাসান (২৫), রাইছুল ইসলাম (২৪), জুনায়েদ (২৮) ও সাদিক হোসেনকে (৫০) হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুর পৌর শহরের হাজীপুর এলাকায় গত শুক্রবার রাতে দুই কোচের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক আশিকুল আলম আকাশ (৩৫) নিহত এবং ১৫ যাত্রী আহত হয়েছেন।
জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রংপুরগামী যাত্রীবাহী কোচ এনা পরিবহন (ঢাকা-মে-ব-১৫-৩৯১৬) শেরপুর পৌরশহরের হাজীপুর এলাকায় গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি যাত্রীবাহী কোচ মা-মণিকা পরিবহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এনা পরিবহন (ঢাকা-মে-ব-১১-১৬৮৭) গাড়িটি মহাসড়কের পশ্চিম পাশে উল্টে যায়। এ ঘটনায় চালক আশিকুল আলম আকাশসহ ১৬ জন যাত্রী অহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই শেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মী ও পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আশিকুল আলম আকাশ মারা যান। নিহত কোচচালক আকাশ বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার করমবাড়িয়া গ্রামের টুলু মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেনÑ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর আঞ্জুয়ারা বেগম (৩৫), সুরাইয়া খাতুন (১০), রংপুর সদরের ইমন হাসান (২৮), বিজয় কুমার (২৪), রায়হান ইসলাম (৪০), সেকেন্দার আলী (৪৪), মামনুর রশীদ (২২), গাইবান্ধার আল মামুন (৪০), বিনদি সরকার (৩৪), রংপুরের গঙ্গাচড়ার ফরহাদ হোসেন (৩৩), মিঠাপুকুরের রবিউল (২৯), কুড়িগ্রামের রাজারহাটের শামীম হোসেন (২২), উলিপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৮), অজ্ঞাত মহিলা (৩০) ও অজ্ঞাত পুরুষ (১৮)।