banner

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1447 বার পঠিত

 

দাওয়াতে নতুন বউ

আলোকসজ্জা, সানাই, খাওয়া, সাজপোশাক—বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো জমজমাট থাকে এসব আয়োজনেই। বিয়ে শেষ হওয়ার পরও যেন বিয়ের আমেজ শেষ হয় না। ঘুরে বেড়ানো, দাওয়াত খাওয়া—এসবের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর-কনের নতুন জীবন। আর নতুন বউ বলে কথা! সবার নজর থাকে তার ওপরই। কীভাবে সাজল, কোন পোশাক পরল—সবকিছুই থাকে আলোচনার কেন্দ্রে। চেহারায় ফুটে ওঠে নতুন জীবনের আনন্দ। সঙ্গে হাতের মেহেদি, গয়না, হালকা ভারী কাজের শাড়ি—সবকিছু মিলিয়েই যেন নতুন বউয়ের সাজ।
বিয়ের পরের কিছুদিন কেটে যায় ঘোরের মধ্য দিয়েই। সবকিছু নতুনভাবে অনুভব করা হয় বলেই হয়তো দিনগুলো স্মরণীয় হয়ে থাকে। বিয়ে-পরবর্তী সময়ে বউদের একটু হালকা সাজে দেখতে ভালোই লাগে বলে জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা মুন্নী। বিয়ের সময় স্যুটকেসে পাওয়া শাড়িগুলো এ সময় বেশ কাজে লেগে যায়। তিনি বললেন, ‘দাওয়াতে উজ্জ্বল রঙের কাতান, মসলিন বা সিল্কের শাড়ি; উজ্জ্বল লিপস্টিক, চোখে হালকা কাজল ও মাসকারা, হাতভর্তি চুড়ি ভিন্ন একটা চেহারা এনে দেয়। নতুন বউদের সাজের ক্ষেত্রে কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। তবে পরিবেশ বুঝে গয়না ও সাজে হালকা পরিবর্তন আনতে পারে। জীবনের এ সময়টার প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করা উচিত। তাহলে চেহারায়ও সেই সৌন্দর্য ফুটে উঠবে।’
পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে লাল, কমলা, ম্যাজেন্টা রঙের লিপস্টিক পরতে পারেন। যদি শুধু লাল রঙের লিপস্টিক ভালো না লাগে, তাহলে দু-একটা রং মিলিয়ে লিপস্টিকের রং বানিয়ে নিতে পারেন। বিয়ের পরের কয়েকটা দিনই একটু ভারী গয়না পরে নিতে পারেন। কারণ, কিছুদিন পরে এই গয়নাগুলোই বাক্সবন্দী হয়ে পরে থাকে।
নতুন বউ মানেই যে অনেক ভারী সাজে সব দাওয়াতে উপস্থিত হতে হবে, এমনটি নয়। হালকা, স্নিগ্ধ সাজেও তাকে অনন্য লাগবে। তুলে ধরবে তার ব্যক্তিত্ব। এন্ডি সিল্ক, হাফ সিল্ক বা তাঁতের শাড়িতে পাড়ে ভারী কাজ আছে এমন শাড়িও বেশ মানাবে বলে মনে করেন যাত্রার ডিজাইনার উর্মিলা শুকলা। তিনি মনে করেন, নতুন বউয়ের আবহ ফুটিয়ে তোলা যায় অনেকভাবেই। কাঠ-পুঁতি দিয়ে তৈরি ভারী গলার মালায় ভিন্নতা আসবে।
বিয়ে হয়ে গেছে এক বছর তিন মাস। কিন্তু বিয়ে-পরবর্তী দাওয়াত খাওয়া কিন্তু এখনো চলছে। এ কারণে অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু এখনো নতুন বউয়ের সাজগোজের মধ্যেই আছেন। বিন্দু বলেন, ‘শাড়ির রং নিয়ে সব সময়ই আমি একটু খুঁতখুঁতে। গাঢ় রংগুলো বেশি ভালো লাগে। শাড়ির পাড় অন্য রঙের হতে পারে। আমার বিয়ের পর লাল, কমলা, ম্যাজেন্টা, নীল, গাঢ় সবুজ, গাঢ় মেরুন, সাদা, কালো, গোলাপি বেশি পরা হয়েছে। বিয়ের পর একটু গাঢ় রঙের লিপস্টিক, সোনার চুড়ি, হালকা চেইন, ছোট দুল পরে থাকলে নতুন বউদের দেখতে ভালোই লাগে। দাওয়াতে আমি চুল বেঁধে রাখা পছন্দ করি।’ বিন্দু বিয়ের পর গাঢ় মেরুন, লাল রঙের নেলপলিশ বেশি ব্যবহার করতেন। সুবিধা ছিল যে শাড়ির সঙ্গে মিলে যেত সহজেই। বারবার সময় ব্যয় করতে হতো না এর পেছনে। বিয়ের পরের দাওয়াতগুলোতে স্বর্ণের গয়নাই পরেছেন মূলত। স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ক্লাচ ব্যাগে। গয়নার মধ্যে কাটাইয়ের কাজ করা গয়না এখন খুব পছন্দ করছেন।
বিয়ের সময় উপহার হিসেবে অনেক শাড়ি ও গয়না পেয়ে থাকেন নতুন বউরা। নেমন্তন্ন করেছেন যিনি তাঁর কাছ থেকে যদি এমন শাড়ি বা গয়না উপহার হিসেবে পেয়ে থাকেন, তবে সেটা পরে যেতে পারেন। খুশি হবেন তাঁরা। শাড়ি ও গয়না পরার সময় খেয়াল রাখবেন আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন কি না। নাহলে আপনার চেহারায় সেটা ফুটে উঠবে। কনক দ্য জুয়েলারি প্যালেসের ডিজাইনার লায়লা খায়ের বলেন, ‘শাড়ি ও গয়নার মধ্যে যেকোনো একটিকে প্রাধান্য দিতে হবে। শাড়ি হালকা হলে গয়না যেন একটু ভারী হয়। গলার মালাটা বেশি ভারী হলে শুধু দুল আর মোটা দুটো বালা পরে দাওয়াতে যেতে পারেন। কোনো দাওয়াতে লম্বা মালা পরলে, কোনো দাওয়াতে গলায় চিক পরতে পারেন। তাহলে একেক দিন একেকটি লুক তৈরি হবে।’ কাতানের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী গয়না বেশি ভালো মানায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সিল্ক শাড়ির সঙ্গে বেছে নিতে পারেন মুক্তার গয়না। মসলিন শাড়ির সঙ্গে পাথরের গয়না বা রূপার গয়না ভালো লাগবে। জামদানি শাড়ির রং যদি চাপা সাদা হয় কিংবা জরির কাজ বেশি থাকে, পরে ফেলুন মুক্তার মালা। এ ছাড়া সোনার গয়না মানাবে।

Facebook Comments