বরফ আচ্ছাদিত কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে কে না চায়? তাই, করোনা পরিস্থিতিতেও পর্যটকদের ভিড় এখন উত্তরের সীমান্ত পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
এই সীমান্ত উপজেলায় শহরের মহানন্দার পাড় থেকে ভারতের রূপালি কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। ঝকঝকে কাঁচের মতো স্বচ্ছ নীল আকাশ আর পরিচ্ছন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশের ঋতু শরৎ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। এমনই সময়ে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও দেখা মিলছে বিশ্বের তৃত্বীয় সর্বোচ্চ পবর্তশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার।
চলতি শীত মৌসুমের শুরুতে আকাশে তেমন মেঘ আর কুয়াশা না থাকায় উত্তরের এই সাদা পাহাড় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোনো রকম কৃত্রিম যন্ত্র ব্যবহার না করে দূর পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য দেখে বিমোহিত দেশীয় পর্যটকরা। শনিবার সকালে তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা গেছে। তেঁতুলিয়া উপজেলার ডাকবাংলোসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে দেখা মিলেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা অপরূপ দৃশ্য।
করোনা পরিস্থিতিতে আকস্মিক অতিরিক্ত পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো এবং মহানন্দার পাড়ে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কথা হয় কয়েকজন স্থানীয়ের সাথে। তারা জানান, সাধারণত অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত শীতের আগে মেঘমুক্ত নীলাকাশে ভেসে ওঠে তুষার শুভ্র হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা। বছরের এই নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশ থেকে দৃশ্যমান হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখতে প্রতি বছরই অসংখ্য পর্যটক আসে। তবে এবার করোনার কারণে পর্যটক কম হলেও গত দু’দিনে আকস্মিক বেড়েছে পর্যটক। একারণে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার সকালে সূর্যোদয়ের পর থেকেই চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো চোখে ধরা পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার নয়নাভিরাম নৈসর্গিক রূপ। সূর্যকিরণের তেজ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সকাল দশটা থেকে এগারটা পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই দেখা যায়। তারপর ক্রমান্বয়ে আবার ঝাপসা হয়ে হারিয়ে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে, শেষ বিকেলে সূর্যকিরণ যখন তির্যকভাবে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ে পড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে আবারও ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কাঞ্চনজঙ্ঘা অপরূপ দৃশ্যে দেখা মেলে দুই মেরু রেখার বাইরে সবচেয়ে বেশি বরফ ধারণ করে রেখেছে হিমালয় পর্বতমালা। আর সুর্যের সব রঙেই যেন নিজের মধ্যে ধারণ করে রেখেছে হিমালয়ের সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘা। তাই সুর্যের আলো বাড়ার সাথে সাথে ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাতে থাকে হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ। প্রথমে লাল রঙ দেখা গেলেও সেই রং লাল থেকে পাল্টে গিয়ে কমলা রঙের হয়, তারপর হলুদ রঙ হয়ে সর্বশেষ সাদা দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা অপরূপ সৌন্দর্য।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস এবং উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৮ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২’শ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। তাই, মেঘ-কুয়াশামুক্ত আকাশের উত্তর-পশ্চিমে তাকালেই দেখা মেলে বরফ আচ্ছাদিত সাদা পাহাড় কাঞ্চনজঙ্ঘার।হিমালয়ের পাদদেশে তেঁতুলিয়া উপজেলা অবস্থিত হওয়ায় খালি চোখে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
প্রতিবছর নভেম্বর মাসের শুরু বা মাঝামাঝিতে দেখা গেলেও আকাশ পরিস্কার হওয়ার কারণে আজ শনিবার সকালে হঠাৎ করে দেখা গেছে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আজ সকালে আকাশ পরিষ্কার থাকার কারণে খালি চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলেছে। মেঘমুক্ত আকাশে রূপোলি চকচকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে। আকাশ মেঘমুক্ত থাকা ও উত্তরবঙ্গে সাম্প্রতিক বৃষ্টির কারণে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ কমে যাওয়াতেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান হয়েছে।
পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত এই কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয় পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতমালা। এই পর্বতমালার তিনটি চূড়া আবার পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া। এর মধ্যে প্রথম অবস্থানে থাকা মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৮’শ ৪৮ মিটার বা ২৯ হাজার ২৯ ফিট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চূড়া কেটু’র উচ্চতা ৮ হাজার ৬’শ ১১ মিটার বা ২৮ হাজার ২’শ ৫১ ফিট। তৃতীয় অবস্থানে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার বা ২৮ হাজার ১’শ ৬৯ ফিট। যদিও ১৮৫২ সালের আগে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বলে মনে করা হতো। ১৯৫৫ সালের ২৫ মে ব্রিটিশ পবর্তারোহী দলের সদস্য জোয়ে ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড সর্বপ্রথম কাঞ্চনজঙ্ঘায় আরোহণ করেন।
সুউচ্চ এই চূড়া দেখতে প্রতি বছর অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক ছুটে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা শহরের টাইগার হিল পয়েন্টে। টাইগার হিলই হচ্ছে,কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা। তবে, কেউ কেউ যান সান্দাকপু বা ফালুট। আবার কেউ কেউ সরাসরি নেপালে গিয়েও কাঞ্চনজঙ্ঘায় পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। তবে যাদের এসব সুযোগ মেলে না সেইসব বাংলাদেশি পর্যটকে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ অবলোকন করতে ছুটে আসেন তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধায়। এখানে মেঘমুক্ত আকাশে দিনের প্রথম সূর্যকিরণের সঙ্গে সঙ্গেই চোখে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা। একটু বেলা বাড়লেই তেজোদীপ্ত রোদ যখন ঠিকরে পড়ে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ের গায়ে, কাঞ্চনজঙ্ঘা তখন ভিন্নরূপে ধরা দেয় পর্যটকের চোখে। যে রূপের টানে প্রতি বছর হাজারো পর্যটক আসেন তেঁতুলিয়ায়।
স্থানীয়রা জানান, দিনের শুরুতে কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রথমে একটু কালচে, এরপর ক্রমান্বয়ে টুকটুকে লাল, কমলা, হলুদ এবং সাদা বর্ণ ধারণ করে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ পরিবর্তন দেখতে দূরবীন বা বাইনোকুলারের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকলে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা মেলে। অনেকে তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার বিষয়টি অপেক্ষাকৃত কম সামর্থ্যবান পর্যটকদের জন্য “সৃষ্টিকর্তার উপহার” বলে অবহিত করেন।
শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে যাওয়া পর্যটকদের জন্যই তেঁতুলিয়া ও বাংলাবান্ধা এলাকার আশেপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি হোটেল-মোটেল ও পিকনিক স্পট।
স্থানীয় জাবেদ উদ্দিন জানান, “হঠাৎ করেই এ মৌসুমে প্রথম কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য চোখে পড়েছে। তাই,বন্ধু-বান্ধবদের জানিয়েছি,তারা অনেকে তেঁতুলিয়া আসছে।”
তেঁতুলিয়া রওশনপুরের কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটের ব্যবস্থাপক এ কে এম ওয়াহিদুল হক বলেন “ কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখা গেছে। চা বাগান, আনন্দ ধারা (পিকনিক স্পট) এবং কাঞ্চনজঙ্গা দেখতে এখানে প্রতিবছর অনেক পর্যটক ভিড় করেন। শীত কেবল নামছে। পুরোপুরি শীত নামলে পর্যটকের সংখ্যাও বেড়ে যাবে।”
চিত্ত-বিনোদনের অন্যতম পর্যটন স্পট এখন তেঁতুলিয়া। মানচিত্রের সবার উপরে থাকায় একনামে সবাই জানে সীমান্তবেষ্টিত পর্যটন খ্যাত এ জায়গাটি। প্রতিবছর কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে অগণিত দেশি-বিদেশি ভ্রমণ পিপাসুরা পাড়ি জমান। পর্বতশৃঙ্গ হিমালয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা আর দার্জিলিংকে কাছ থেকে দেখা মেলে তেঁতুলিয়ায় এলেই। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নতুন রূপে ঢেলে সাজানো হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে পিকনিক কর্নার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। এখান হতেই হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুবিধা দিতে নির্মাণ করা হয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। এ ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে দেখা যাবে কাঙ্ক্ষিত আকাশচুম্বী হিমালয় পর্বত, মেঘকন্যা কাঞ্চনজঙ্ঘা, দার্জিলিং এবং নদীর ওপারে ভারতের বিস্তৃত সবুজ চা বাগানসহ নানান দৃশ্য।
এছাড়া পিকনিক স্পট ডাকবাংলোতে বিভিন্ন ভাস্কর্য স্থাপনের মাধ্যমে সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে। কৃত্রিম ভাস্কর্য ও পশুপ্রাণি স্থাপনসহ শিশুদের খেলনা স্থাপন করে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে নতুন ডাইনিং রূমও। আর পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে নানান দৃষ্টি আকর্ষিত ভাস্কর্য। এসব ভাস্কর্যের মধ্যে মাঝিপাড়া বাইপাসে সারস পাখি, কালান্দিগঞ্জ বাজারে বাংলাদেশের প্রথম ১ টাকা নোট, ভজনপুরে শাপলা এবং তিরনই হাটে মাছসহ নানান ইতিহাস নির্ভর ভাস্কর্য।
উত্তরে বাংলাদেশের শেষ সীমানা বাংলাবান্ধায় জিরোপয়েন্ট। এখানে গড়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। ইমিগ্রেশন সুবিধা চালু হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে প্রবেশ করা যায় ভারত, নেপাল,ভূটান ও চীনে। পাসপোর্ট ভিসা থাকলে অনায়াসেই ঘুরে আসা যায় ভারতের শিলিগুঁড়ি, দার্জিলিংসহ নানান দর্শনীয় স্থান এবং নেয়া যায় উন্নত চিকিৎসা সেবা। তবে করোনা পরিস্থিতে এখন এ স্থলবন্দরে দিয়ে ইমিগ্রেশন সুবিধা বন্ধ রয়েছে।
হিমালয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা কাছ হতে দর্শনের পর মনোমুগ্ধকর সন্ধ্যা উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। ডাকবাংলোর তীরে বসেই ঝিরিঝিরি শীতল হাওয়ায় চোখে পড়বে সন্ধ্যার উত্তরের আকাশের আরেক সৌন্দর্য। দার্জিলিং চুড়ার ঢালু বেয়ে গাড়ি চলাচল। ঢালু পাহাড়ের পথ জুড়ে রঙিন ল্যাম্পস্টের আলো। নদী মহানন্দার তীর ঘেঁষা ভারতের কাটাতারের বেড়ার সাথে সারিসারি সার্চলাইটের আলো। সে আলোয় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে মহানন্দাকে মনে হবে গড়ে উঠা কোন এক আধুনিক শহর। নেমে আসা সন্ধ্যার সূর্যাস্ত মনে হবে সাগরকন্যা কুয়াকাটার সূর্যাস্তের অবিকল নান্দনিক রূপ। মধ্য দুপুরের মাথার উপর সূর্যের কিরণে হীরের মতো জ্বলজ্বল করে হাসতে দেখা যাবে মহানন্দার চরের একেকটি বালুকণা। মন ছুটে যাবে বালুচরে হাঁটতে। পায়ের নিচে বালুর ঝিরঝির শিহরণে আরেক অনুভূতিতে মোহিত করবে হিমালয়ের এই রাজলক্ষী মহানন্দা। দৃষ্টি কাড়বে সবুজ চা বাগান।
দেশের তৃতীয় সবুজ চা অঞ্চল এখন তেঁতুলিয়া। তিনদিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে প্রতিবেশী ভারত। সীমান্ত জুড়ে ভারতীয় সবুজ চা-বাগান, কাটাতারের বেড়া,সার্চলাইট,সুউচ্চ টাওয়ার আর কর্মররত চা শ্রমিকদের পাতা কাটার দৃশ্যও মুগ্ধ করবে যে কাউকে। মুগ্ধ করবে ভারতের দার্জিলিংয়ের ২০৬০ মিটার উঁচু মহালিদ্রাম পাহাড় হতে প্রবাহিত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বয়ে আসা নদী মহানন্দায় হাজার হাজার শ্রমিকদের পাথর উত্তোলনের দৃশ্য।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের চিহ্ন হিসেবে এ অঞ্চল যুদ্ধের সময় ছিল সম্পূর্ণ নিরাপদ। কোন পাক বাহিনী এ অঞ্চলে প্রবেশ করতে না পারায় একাত্তরের মুক্তাঞ্চল হিসেবে খ্যাত স্বপ্নের মতো সুন্দর এ সীমান্ত জনপদটি। এছাড়াও পর্যটকদের ঘুরে দেখার মতো রয়েছে গ্রিন টি গার্ডেন, দর্জিপাড়া কমলা ও চা বাগান,আনন্দধারা, টি ফ্যাক্টরি, মিনা বাজার, সমতল ভূমিতে পাথর কোয়ারি এবং ভিতরগড়ের ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব নগরী ও মহারাজা দিঘী।
পর্যটকদের জন্য রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্রমণ পিপাসুরা যাতে নির্বিঘ্নে পর্যটন স্পটের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন সে বিষয়ে নিরাপত্তা জোরদার করে রেখেছে মডেল থানার পুলিশ। পর্যটকদের মনে করা হয় এ অঞ্চলের স্বাগত অতিথি। তাই পর্যটকদের কোন প্রকার যেন সমস্যা না হয় , সে বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সদা রয়েছেন তৎপর।
সর্বোপরী সীমান্ত জনপদের নির্ভেজাল প্রকৃতির বিশুদ্ধ বাতাস যেমন শরীর-মন জুড়িয়ে যাবে, তেমনি এখানকার সুস্বাদু পানি, খাবারও তৃপ্তি এনে দেবে পর্যটকদের।