banner

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 295 বার পঠিত

 

তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা প্রচলনে আসছে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

দেশজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষা প্রচলনের জন্য এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ জন্য ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন’ (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার জন্য এই প্রকল্পে শিখন প্রক্রিয়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একীভূতকরণ, শিক্ষা ব্যবস্থায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই ও অর্জনক্ষম উন্নয়ন পরিকল্পনা, শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়িয়ে একটি শিক্ষক রিসোর্স পুল তৈরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রেরণাদায়ী প্রক্রিয়া সূচনা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, নতুন এই প্রকল্পটিতে বিদেশি সাহায্য-সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য প্রকল্পের যাবতীয় পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের রূপরেখাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, আইসিটি একটি শক্তিশালী, সমৃদ্ধ ও আত্মবিশ্বাসী জাতি গঠনের লক্ষ্য অর্জন করতে বাংলাদেশের জন্য হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।

প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের মাধ্যমে যেসব মূল কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে সেগুলো হলো- কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ ক্রয়, অফিস সরঞ্জাম কেনা, আসবাবপত্র সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ ব্যয় মেটানো, মনিটরিং ও মেনটরিং ব্যয়, প্রকল্প পরিচালন ব্যয়, সেমিনার ও কনফারেন্স খরচ এবং যানবাহন কেনা হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতর মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৩৫ হাজার প্রতিষ্ঠানসহ বিপুলসংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। এ স্তরে আইসিটির মাধ্যমে শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে মাউশি অধিদফতর ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুন মেয়াদে প্রথম পর্যায়ে ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে আইসিটির মাধ্যমে শিক্ষার প্রচলন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২৩ হাজার ৩৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ল্যাপটপ, ইন্টারনেট মডেম ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে ২৪ হাজার ২০৪ জন শিক্ষকও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে আইসিটির ব্যবহারকে আরও যুগোপযোগী করার জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাথমিক প্রস্তাবে এক হাজার ৪৫২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় এবং ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হলেও পরে পরিকল্পনা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যয় কমিয়ে এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নের সময় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম জানান, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা এ পরিকল্পনার আওতায় দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্য রয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সেকশন ১২.৩.২.এ আইসিটির মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নের বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। তাই এ ধরনের প্রকল্প সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করবে।

Facebook Comments