banner

শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 6 বার পঠিত

 

টাঙ্গাইলে ১৫বছরের কিশোরের ডিপফেক কেলেঙ্কারি: নিরাপদ নেই কোন নারীর ছবি

 

টাঙ্গাইলে মাত্র ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরের চাঞ্চল্যকর কর্মকাণ্ড পুরো দেশকে হতবাক করেছে। জানা গেছে, কিশোরটি প্রযুক্তির অপব্যবহার করে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া (ডিপফেক) প* ভিডিও তৈরি করে পরে সেই ভিডিও ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করত।
গতরাতে যমুনা টিভির রি প্রতিবেদন টি সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে।

এই ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিপফেক প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে এ ধরনের অপরাধের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে, বিশেষ করে নারীরা এই ধরনের অপরাধের প্রধান লক্ষ্যবস্তু।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত কিশোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ভুক্তভোগীদের ছবি সংগ্রহ করত। এরপর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই ছবিগুলো দিয়ে ভুয়া ভিডিও তৈরি করত, যা দেখতে একদম আসল ভিডিওর মতো মনে হতো। পরে সেই ভিডিও ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করত।

ডিপফেক হলো একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর প্রযুক্তি, যা ছবি বা ভিডিওতে মানুষের মুখ ও কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করতে সক্ষম। বর্তমানে এটি যেভাবে সহজলভ্য হয়ে উঠছে, এবং সমাজে বড় ধরনের হুমকি তৈরি করছে। বিশ্বব্যাপী এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।

বিশেষজ্ঞরা নারীদের প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি শেয়ার করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ধরনের ছবি অপরাধীদের জন্য সহজ শিকারে পরিণত হতে পারে। অনেকেই হয়তো সচেতন না হয়ে ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও অনলাইনে আপলোড করেন, যা ডিপফেক বা ভুয়া কনটেন্ট তৈরির জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে কিছুদিন আগে ন্যাশনাল আইডি কার্ডে ছবি দেওয়ার বিষয়ে পর্দানশীন নারীদের আপত্তির প্রসঙ্গ নতুন করে আলোচনায় এসেছে। তাদের সেই দাবি অনেকেই গুরুত্ব দেননি। তবে সাম্প্রতিক এই ঘটনা তাদের দাবি কতটা যৌক্তিক, তা প্রমাণ করে দিয়েছে।

এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে আমরা যা করতে পারি

১. ব্যক্তিগত ছবি শেয়ার থেকে বিরত থাকা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও প্রকাশ না করা।
২. সচেতনতা বৃদ্ধি: প্রযুক্তির অপব্যবহার সম্পর্কে নিজে সচেতন হওয়া এবং পরিবার ও বন্ধুদেরও সচেতন করা।
৩. আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ: কোনো ধরনের ব্ল্যাকমেইল বা সন্দেহজনক কার্যক্রমের শিকার হলে দ্রুত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা।
৪. পর্দা মেনে চলা: ইসলামের পর্দার বিধান মানলে এ ধরনের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যেতে পারে।

বর্তমান প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনই এর অপব্যবহার বড় ধরনের হুমকিতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে অনলাইনে ছবি শেয়ার করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হওয়া জরুরি। আমাদের উচিত সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং প্রযুক্তির এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উচিত এ ধরনের অপরাধ দমনে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। একই সঙ্গে, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ ধরনের ফিতনা থেকে রক্ষা করুন।

Facebook Comments