অপরাজিতাবিডি ডটকম : অনেকেই আছেন যারা শাক খেতে খুব একটা পছন্দ করেন না। অথচ আপনি কি জানেন খুব দামী দামী খাবারের মাঝে প্রতিনিয়ত যে পুষ্টিগুণ খুঁজে বেড়াচ্ছেন, কেবল একটুখানি সরিষা শাকেই আপনি পেয়ে যেতে পারেন তার সব কিছু। শুধু শাক হিসেবেই নয়, বরং কুচি কুচি করে বিভিন্ন তরকারির বা সালাদের সাথে মিশিয়ে নিলেও এটি ভীষণ স্বাদ বাড়ানোর কাজ করে। এর সব চেয়ে বড় গুণ হলো, এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করে দিতে ভূমিকা রাখে। শুধু তাই নয় এই ভীষণ সস্তা খাবারটির পুষ্টিগুণ মোটেই সস্তা নয়। আর এগুলো জানবার পরে আপনি নিশ্চয়ই এটি না খেয়ে থাকতেই চাইবেন না।
জেনে নিন সরিষা শাকের ৭ টি স্বাস্থ্য গুণঃ
১। ভিটামিন ও মিনারেলের সমৃদ্ধ উৎসঃ
সরিষা শাক ভিটামিন এ, সি ও কে তে পরিপূর্ণ যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন সিতে আছে শিক্তশালী এন্টি অক্সিডেন্ট যা নানা রকম ভাইরাল অসুখ থেকে আপনাকে সুরক্ষা দেয়। ভিটামিন এ ভালো রাখে আপনার দৃষ্টিশক্তি আর ভিটামিন কে দেয় হাড়ের সুরক্ষা এবং মস্তিষ্ককে রাখে দারুণ সচল।
এছাড়াও এতে আছে আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, প্রোটিন ও ফাইবার। যা আপনার হার্ট ভালো রাখে, রক্তের কোলস্টেরল কমায় এবং গর্ভবতী মায়েদের সুস্থ শিশু জন্মদানের সম্ভাবনা বাড়ায়।
২। এন্টিঅক্সিডেন্টের ভান্ডারঃ
এন্টিঅক্সিডেন্ট এর সব চেয়ে বড় গুণ হলো, এটি আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয়। কেবল তাই নয়, এটি মাসসিক চাপ কমায়, এবং নানা ধরনের ক্যান্সার (মূত্রথলী, স্তন, পায়ূপথ, জরায়ু, ফুসফুস) থেকে আপনাকে রাখে ১০০ হাত দূরে।
৩। ধুয়ে দেয় শরীরের বিষাক্ত পদার্থঃ
সরিষা শাকে আছে সালফার সমৃদ্ধ পুষ্টিগুণ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট। এটি আপনার দেহে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে আর সেই সাথে নানা ক্রনিক রোগের আক্রমণ থেকেও আপনাকে রক্ষা করে। সরিষা শাকে থাকা পরিস্কারক উপাদান আপনার দেহে জমে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে আনে, দেহের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে, এবং হজমশক্তি বাড়িয়ে দেহের বিষাক্ত পদার্থগুলো মলমূত্রের সাথে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে।
৪। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
এই শাক আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে. এটি আপনার দেহে হার্ট এটাক, আর্থ্রাইটিস ও ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে। এবং এর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৫। ক্যান্সার প্রতিরোধঃ
এতে আছে দুই ধরনের গ্লুকোসিনোলেটস, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত শরিষা শাক খেয়ে থাকেন তাদের বিভিন্ন রকম ক্যান্সার হবার ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে অনেক কম।
৬। কোলস্টেরল কমায়ঃ
এটি রক্তে কোলস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে আনে। সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও কার্যকর। কেননা এটি হজম শক্তি বাড়াতে সরাসরি কাজ করে থাকে।
৭। ত্বক, চুল, ওজন ও স্বাস্থ্যঃ
সরিষা শাক ত্বক ও চুল ভালো রাখে। সেই সাথে এটি অতি কম ক্যালোরি সম্পন্ন হওয়াতে ওজন কমাতেও সাহায্য করে। এটি শারিরীক দূর্বলতা, রক্তশূন্যতা, ত্বকের শুস্কতা, চুল পড়া ইত্যাসি সারিয়ে তুলতেও দারুণ কার্যকর।
সুতরাং সরিষা শাককে আর মোটেই অবহেলা নয়, যেভাবে ইচ্ছে রান্না করুন, খেয়ে নিন। ব্যস! বেঁচে গেল হাজারবার ডাক্তারের কাছে দৌড়াবার খরচ!
অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/১৯ জুন ২০১৪ই.