‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার’ তুমিও কি আক্রান্ত হতে পরো!
ডাঃ মারুফ রায়হান চৌধুরী
একবার ভাবুন তো, প্রতি ২ মিনিটে বিশ্বের একজন করে নারী মারা যাচ্ছেন যে রোগে তা কতোটা ভয়ঙ্কর! প্রতিবছর সে রোগে মারা যাচ্ছে ১ লক্ষ নারী! সারা পৃথিবীতে প্রতিবছরই নতুন করে ৫ লাখ নারী আক্রান্ত হচ্ছেন।
জরায়ুমুখের ক্যান্সারের কথাই বলছিলাম। সারাবিশ্ব জুড়ে নারীদের সবচেয়ে বেশি হওয়া ৩টি ক্যান্সারের মধ্যে একটি এই জরায়ুমুখের ক্যান্সার।
তবে এ ভয়ঙ্কর ক্যান্সারটি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এর বেশ ভালো চিকিৎসা আছে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব; আরও এক-তৃতীয়াংশ চিকিৎসায় ভালো হয়।
এখন আসা যাক জরায়ুমুখের ক্যান্সার কাদের বেশি হয়
– যাদের একধিক যৌনসঙ্গী থাকে।
– কম বয়সে যাদের যৌনমিলন ঘটে।
– কম বয়সে যাদের প্রথম গর্ভধারণ হয়।
– যাদের ঘনঘন বাচ্চা হয়।
– অপরিচ্ছন্ন যৌনাঙ্গ।
– দরিদ্রশ্রেণী।
– কিছু ইনফেকশান, যেমন : Human Papilloma virus – 16, 18, 31, 33, HIV, Chlamydia ইত্যাদি।
– জন্মনিরোধকারী পিল যারা খান।
– যাদের ধূমপান করার অভ্যেস আছে।
– যার স্বামীর আগের স্ত্রী জরায়ুমুখের ক্যান্সারে মারা গিয়েছে।
জরায়ুমুখে ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ
– নিয়মিত মাসিকের মাঝে অনিয়মিত রক্ত ভাঙা।
– স্থায়ীভাবে মাসিক বন্ধ হয়ে যাবার পরেও রক্ত যাওয়া।
– দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব।
– যৌনমিলনের পর রক্তপাত হওয়া।
– যদি ক্যান্সার ইতোমধ্যে সামনে বা পেছনে অর্থাৎ মূত্রথলি বা মলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে তবে প্রস্রাব বা পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে।
এসব লক্ষণ দেখা দিলে যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে চাইলে
– যেসব নারীর বয়স ২০-৪০ বছর এবং ২০ বছরের নিচে যারা যৌনমিলনে অভ্যস্ত তাদেরকে প্রতি ৩ বছরে একবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পেলভিস বা শ্রোণিদেশ পরীক্ষা করানো এবং VIA আর Pap test করাতে হয়।
– বর্তমানে আমাদের দেশেও জরায়মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে ভ্যাক্সিন বা টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ভ্যাকসিন নিয়ম মোতাবেক নেয়া প্রয়োজন।
– সর্বশেষে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে সমাজের সর্বস্তরে গণসচেতনতা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।
(বি. দ্র. ইউনাইটেড স্টেটস কংগ্রেস জানুয়ারি মাসকে জরায়ুমুখ স্বাস্থ্য সচেতনতা মাস হিসেবে মনোনীত করে। চলছে সে মাস। নিজে সচেতন হই, অন্যদের সচেতন করি।)