মাছ ভাজা, মাছের ঝোল না হলে মাছের কোপ্তা, খাবার পাতে মাছ না হলে কি চলে? কথায় তো আছে, মাছে-ভাতে বাঙালি। চেনা মাছের ভিন্ন কিছু রেসিপি দিলেন আল্পনা হাবীব
চিংড়ি ভর্তা
উপকরণ: চিংড়ি (মাঝারি আকারের খোসা ছাড়ানো) এক কাপ, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, আদাকুচি ১ টেবিল চামচ, শুকনো মরিচ ৫ টি, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, চিনি আধা চামচ, ধনেপাতাকুচি তিন টেবিল চামচ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: চিংড়িগুলোকে লবণ-পানিতে হালকা সেদ্ধ করে নিন। এরপর পানি ঝরিয়ে সেগুলো ১০ মিনিট বরফপানিতে ভিজিয়ে রাখুন। চিংড়িগুলো চৌকো করে কেটে নিন। চিংড়ি বাদে সব উপকরণ ভালো করে হাত দিয়ে চটকে নিন। এবার কেটে রাখা চিংড়িগুলো দিয়ে আলতো করে মেখে নিন।
কাঁচকি মাছের পাতুরি
উপকরণ: লাউপাতা প্রয়োজনমতো, কাঁচকি মাছ ১ পোয়া, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ১০ টা, ধনেপাতাকুচি আধা কাপ, সরিষাবাটা ৪ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, নারকেল দুধ ২ কাপ, সরিষার তেল ৪ টেবিল চামচ, হলুদ ও মরিচবাটা আধা কাপ।
প্রণালি: লবণ লাউপাতায় মেখে ভালো করে ধুয়ে নরম করে নিন। একটি পাত্রে কাঁচকি মাছ, পেঁয়াজকুচি, কাঁচা মরিচ (ফাঁড়া করে দিতে হবে), হলুদ, মরিচ, রসুনবাটা, ধনেপাতাকুচি, সরিষাবাটা ও সরিষার তেল দিয়ে ভালো করে মেখে নিন। লাউপাতার ভেতরে পুর ভরে পার্সেল বানিয়ে নিন। এবার প্যানে তেল গরম করে তাতে বাকি মসলা কষাতে থাকুন। মসলায় নারকেল দুধের অর্ধেকটা দিয়ে কষানো হলে মাছের পাতুরিগুলো দিয়ে দিন। এবার ৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। কিছুক্ষণ পর তা উল্টে দিন। পাতুরির ওপর বাকি নারকেলের দুধ দিয়ে ১০ মিনিট অল্প আঁচে রান্না করুন।
সারা রাত ইলিশ
উপকরণ: গোটা ইলিশ মাঝারি আকারের ১ টা, মল্ট ভিনেগার ১ কাপ, বড় লেবু ১ টা, চিনি ১ কাপ, মরিচের গুঁড়া ২ চা-চামচ, লবণ ১ চা-চামচ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, বেবি অনিয়ন ১০ থেকে ১৫ টা, কাঁচা মরিচ ৬ টা, পানি (মাছ ডোবানোর জন্য) পরিমাণমতো, অ্যারারুট ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: মাছের আঁশ ফেলে বুকের কাছ থেকে লম্বা করে চিড়ে নাড়িভুঁড়ি বের করে নিতে হবে। মাছের কানকোর নিচ থেকে ফুলকা বের করে নিন। তবে খেয়াল রাখবেন, মাছটা যেন ভেঙে না যায়। এবার একটা ছড়ানো পাত্রে সব উপকরণ (অ্যারারুট বাদে) নিন। মাছটাকে দিয়ে ডুবো পানিতে ঢেকে রাখুন। আটা দিয়ে পাত্রের চারপাশ ভালো করে মুড়ে চুলায় বসিয়ে দিন। ২০ মিনিট মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন। পানি কমে এলে ঢিমা আঁচে চুলায় অন্তত আট ঘণ্টা রাখতে হবে। চুলা থেকে নামানোর আধা ঘণ্টা পর ঢাকনা খুলে ইলিশ তুলে সার্ভিং ডিশে রাখুন। পাশে পেঁয়াজ আর মরিচগুলো সাজিয়ে দিন। এবার মাছের পানিটা চুলায় বসিয়ে জ্বাল দিন। পানি কমে এলে অ্যারারুট গুলে দিন। ঘন হয়ে এলে নামিয়ে ইলিশের ওপর ঢেলে দিন। এবার ইলিশের ওপর অল্প পানি দিয়ে ওভেনে ১৮০ ডিগ্রিতে আধা ঘণ্টা বেক করলেই হয়ে যাবে সারা রাত ইলিশ।
সুরমা মাছের কোপ্তা
উপকরণ: সুরমা মাছের পেস্ট ১ কাপ, রসুনবাটা ও আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, ডিমের সাদা অংশ ২ টি, পেঁয়াজবাটা আধা চা-চামচ, অ্যারারুট ১ কাপ, কর্নফ্লাওয়ার ২ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ১ চা-চামচ ও নারকেল দুধ ২ কাপ।
প্রণালি: মাছের পেস্ট, ডিমের সাদা অংশ, কর্নফ্লাওয়ার, অ্যারারুট ও লবণ এগবিটার দিয়ে ভালো করে বিট করে নিন। এর মধ্যে আদা, রসুন ও পেঁয়াজ দিয়ে ভালো করে মেখে মাছের বল গড়িয়ে নিন। কড়াইয়ে তেল ও ঘি গরম করে আদা, রসুন, পেঁয়াজকুচি ও মরিচগুঁড়া ভালো করে কষিয়ে নিন। আরেকটি বাটিতে মিষ্টি দই ও ময়দা ফেটিয়ে নিন। এবার ফেটানো দই মসলার মিশ্রণে দিয়ে দিন। কষানো হলে নারকেল দুধ দিন। মসলা একটু ঘন হয়ে এলে মাছের বল বা কোপ্তাগুলো দিয়ে দিন। আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। এবার বাকি নারকেল দুধ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ২ মিনিট নাড়াচাড়া করে নামিয়ে নিন।
নারকেল সরিষার তেল কই
উপকরণ: কই মাছ ৮ টি, নারকেল দুধ ১ টিন, সাদা সরিষাবাটা ৬ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, পেঁয়াজ ও আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ (ফালি করে কাটা) ১০ টি, কালিজিরা আধা চা-চামচ, মেথি ১ চিমটি, সরিষার তেল ৬ টেবিল চামচ ও সয়াবিন তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: কই মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার মাছের গায়ে ছুরি দিয়ে গভীরভাবে ছয়টি দাগ কেটে নিন। হালকা হলুদ ও লবণ দিয়ে মাছগুলোকে মেখে সয়াবিন তেলে অল্প করে ভেজে নিন। এবার নারকেল দুধে সব বাটা মসলা দিয়ে মেখে নিন। আরেকটি পাত্রে সরিষার তেল গরম করে কালিজিরা, মেথি আর কাঁচা মরিচ ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজকুচি দিন। পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে মাছগুলো ছেড়ে কষাতে থাকুন। মাছ কষানো হলে বাকি মসলা দিয়ে অল্প আঁচে ১০ মিনিট রান্না করুন।