আদরের সোনামণিটা কানে পরবে বাহারি দুল। আর তার জন্য যে চাই কান ফোঁড়ানো। তাই তো ছোট থাকতেই কান ফোঁড়ানো হয় বাচ্চাদের। আগেরদিনে নানী দাদীরা সোনামুখী সুঁই দিয়ে বাচ্চাদের কান ফুঁড়িয়ে দিতেন বাড়িতেই। কিন্তু আধুনিক যুগে সে দায়িত্ব নিয়েছে পার্লারগুলো। অনেকে খুব ছোটবেলায় কান ফুঁড়িয়ে থাকে। এখন দিন বদলের সাথে সেই সময়টিও বদলে গেছে। “আগে ৬ মাসের বাচ্চাদেরও কান ফোঁড়ানো হত। কিন্তু এখন কিছুটা বড় হওয়ার পর কান ফোঁড়ানো হয়। সাধারণত ১০ বছরের আগে কান না ফোঁড়ানো ভাল।”-এভাবেই প্রিয়.কম কে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল হতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও বর্তমানে ধানমণ্ডির নাজিনূর হাসপাতালে কর্মরত ত্বক বিশেষজ্ঞ নার্গিস সুলতানা।
কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত
কান ফোঁড়ানোর সময় আমাদের কিছু কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে।
- -প্রথমে যার কান ফোঁড়ানো হবে তাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। সেজন্য একটু বড় হওয়ার পর কান ফোঁড়ানো উচিত।
- -কান ফোঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই কানে গোল্ড প্লেটেড বা ইমিটেশনের কানের দুল না পরানোই ভাল।
- -পার্লারে যে মেশিন দিয়ে কান ফোঁড়ানো হবে তা যেন জীবাণুমুক্ত হয়। আর যদি ঘরে কান ফোঁড়ানো হয় তবে যে সুঁই দিয়ে কান ফোঁড়ানো হবে তা যেন অব্যশই গরম পানিতে সিদ্ধ করে জীবাণুমুক্ত করা হয়। কান ফোঁড়ানোর সতর্কতা বিষয়ে প্রিয়.কম কে বলেন ত্বক বিশেষজ্ঞ নার্গিস সুলতানা।
- -যেদিন কান ফোঁড়ানো হবে তার আগে শরীরে কোন ইনফেকশন আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। যদি কোন ইনফেকশন থাকে তবে সেদিন কান না ফোঁড়ানোই উচিত না। সুস্থ হলে তারপর কান ফোঁড়াতে হবে।
কান ফোঁড়ানোর পর যা যা করণীয়
- -কান বারবার স্পর্শ করা যাবে না। কান স্পর্শ করার পূর্বে হাত ভাল করে ধুয়ে তারপর স্পর্শ করতে হবে।
- -রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কানের দুল কান থেকে খুলে রাখতে হবে। যাতে কানে চাপ পড়ে কান পেকে না যায়।
- -দিনে দুবার কানের সুতা বা দুল ঘোরান। যাতে করে কানের ফোঁটাটা বড় হয়। এতে কানের ফোঁটা বন্ধ হবে না।
- -চেষ্টা করুন সেভলন বা ডেটল দিয়ে কানের ফোঁটার চারপাশে ভাল করে মুছে দিতে। এটি দিনে একবার করুন। তাহলে কান ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
- -কান ফোঁড়ানোর পরে লেবু, কমলার মতো ভিটামিন সি আছে এমন খাবার খেলে তাড়াতাড়ি ক্ষতস্থান শুকিয়ে যায়।
- -যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব একেবারেই খাওয়া যাবে না।
- -ফোঁড়ানোর স্থানে নিজে বা অন্য কেউ হাত দেওয়ার আগে অব্যশই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে।
ইনফেকশনে হলে কী করণীয়
অনেক সময় কান ফোঁড়ানো স্থানে ইনফেকশন হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে ত্বক বিশেষজ্ঞ নার্গিস সুলতানা বলেন, “ আমাদের শরীরের সবচেয়ে নরম অংশ হল কানের লতি। এতে কোন হাড় নেই। তাই এখানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনাটা বেশী থাকে। যদি কানের লতিতে ইনফেকশন হয় তবে অ্যান্টিব্যাক্টোরিয়াল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন”। ঘরোয়া উপায় হিসাবে তিনি বলেন “ সরিষার তেল গরম করে কানে লাগানো যেতে পারে”। এটি দিনে দুবার করার জন্য পরামর্শ দেন।
খুব বেশী ইনফেকশন হলে তিনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে বলেন।
আরও তথ্য সুত্র