বিশ্বজুড়ে গত ২০ বছরে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে খুবই সামান্য। এক্ষেত্রে সামান্য কিছু প্রান্তিক অগ্রগতি ছাড়া আর তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি বললেই চলে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক জরিপে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।
১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের পার্থক্য কমেছে মাত্র ০.৬ শতাংশ। যেসব দেশে নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ বেশি সেসব দেশেও তাদের চাকরির মান এখনো উদ্বেগের একটি বিষয়।
বিশ্বের ১৭৮টি দেশে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের হার, কর্মপরিবেশসহ নানা তথ্য সংগ্রহ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
আইএলও প্রধান গাই রাইডার বলেছেন, ’নারীরা যে এখনো উপযুক্ত কাজ খুঁজে পেতে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন তারই প্রমাণ এই প্রতিবেদন। নারীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের ব্যাপারে যে অগ্রগতি হয়েছে তা একেবারেই প্রান্তিক পর্যায়ে’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ পুরুষদের চেয়ে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ কম ছিল। ১৯৯৫ সালে এ পার্থক্য ছিল ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ। আর এ হার ২০ বছর আগের হারের চেয়ে মাত্র ০.৬ শতাংশ কম।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়- বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নারীরাই বেশি বেকারত্বে ভোগেন। বিশ্বজুড়ে নারী বেকারের হার ৬.২ শতাংশ যেখানে পুরুষদের বেকারত্বের হার ৫.৫ শতাংশ। চাকরির অভাবে প্রায়ই নারীদের নিম্ন মানের চাকরিতে যোগ দিতে হয়।
উচ্চ ও নিম্ন -সব ধরনের আয়ের দেশেই নারীর গৃহস্থালী কাজের জন্য কোনও পারিশ্রমিক হিসেব করা হয় না। মূলত, নারীরা কর্মক্ষেত্রে ও গৃহস্থালী কাজ মিলিয়ে পুরুষের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে থাকেন বলেও গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বেশিরভাগ নারীকেই তার যোগ্যতার চেয়ে নিম্নমানের চাকরিতে যোগদান করতে হয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে নারীকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গৃহস্থালী কাজে জড়িত থাকতে হয় যার জন্য আর্থিক প্রতিদানও পান না তারা। গবেষকদের মতে, এসব চিত্র নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা। আর তা থেকে উত্তরণের হারও আশানুরূপ নয়। এজন্য নারী-পুরুষ উভয়েরই ঐকান্তিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।