বাড়ির কাজে আপনার সাহায্যকারী যদি এক দিন না আসেন, তাহলে সেদিন মাথায় হাত পড়ে যায়। কীভাবে করবেন এত কাজ? তা নিয়ে বেশ ঝামেলাই হয় বটে। আবার ধরুন, শরীরচর্চা বা হাঁটার জন্য বাড়তি সময় বের করা কষ্টকর আমাদের জন্য। এই দুই সমস্যার সমাধান হলো বাড়িতে কিছু কাজ নিজেই করে ফেলা। একদিকে ঘরের কাজগুলো করা হবে, অন্যদিকে ঝেড়ে ফেলা হবে শরীরের বাড়তি ওজনটুকু। তা না হলে শরীরে বাড়তে থাকে ক্যালরির পরিমাণ। ফলে ওবেসিটি, শ্বাসকষ্ট, পায়ে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করাসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হয়। একটু পরিশ্রম করলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এমন পরামর্শ দেন পারসোনা হেলথের প্রধান প্রশিক্ষক ফারজানা খানম।
ঘর ঝাড়ু দেওয়া, ঘর মোছা, জানালা পরিষ্কার করা, থালাবাসন ধোয়া শরীরের জন্য খুব ভালো ব্যায়াম। এই কাজগুলো করতে গেলে শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করে থাকে। ফলে খুব দ্রুতই শরীর থেকে ঝরে যায় বাড়তি ক্যালরি। ঘরের কোনো কাজে কতটুকু ক্যালরি ব্যয় হচ্ছে, তারও একটা হিসাব জানালেন ফারজানা।
তিনি বলেন, প্রতিদিন থালাবাসন পরিষ্কার করলে ৮৫ ক্যালরি, কাপড় ইস্ত্রিতে ৭০ ক্যালরি, ঝুল ঝাড়ায় ৫০ ক্যালরি, বাথরুম পরিষ্কার করলে ২০০ ক্যালরি, কাপড় পরিষ্কার করলে ৬৮ ক্যালরি খরচ হয়। খুব দ্রুত ক্যালরি পুড়িয়ে ওজন কমাতে চাইলে ঘর মোছা সবচেয়ে কাজে দেয়। তবে পেটে চাপ দিয়ে মুছতে হবে ঘর। আর এভাবেই পুড়বে ১১৯ ক্যালরি। যাদের পিঠের দিকে মাংস বেশি তাঁদের জন্য ঝুল ঝাড়া হলো আদর্শ কাজ। এতে খুব দ্রুতই কমবে পিঠের মেদ।
অনেকে এটা জানেন না যে রান্না করলে ওজন কমে। রান্নাঘরের গরম বাষ্প আর তাপের কারণে আধ ঘণ্টা রান্না করলে পুড়বে ১০৮ ক্যালরি। শরীর থেকে কতটুকু ক্যালরি পুড়ল সে হিসাবটা ঘরে বসে করতে পারেন। এ জন্য শরীরের বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) অনুপাতটা বের করে নিন। বিএমআই যদি ১৮.৫ থেকে ২৪.৯-এর মধ্যে থাকে তাহলে আপনি শারীরিকভাবে সম্পূর্ণভাবে ফিট রয়েছেন। বিএমআই যদি এর চেয়ে কম হয় তাহলে আপনি আন্ডারওয়েট। আবার যাদের বিএমআই ২৫.০২ থেকে ২৯.৯-এর মধ্যে থাকে তাহলে ওজনটা অতিরিক্ত হলেও সেটা ওবেসিটি নয়। তবে এই মাত্রাটা ছাড়িয়ে গেলেই ওবেসিটির তালিকায় ঢুকে পড়ছেন আপনি। তাই বয়সটা ১৬-এর কোটায় পা দেওয়ার পর থেকেই যদি ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তাহলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে জটিল সব রোগ। আর এ জন্য শারীরিক পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
সূত্র : প্রথমআলো