এবার ফতুল্লায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আটক
নারী সংবাদ
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পর এবার ফতুল্লা থানার ভূঁইগড়ের মাহমুদপুর এলাকায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাওলানা মো. আল আমিন নামে এক মাদ্রাসার প্রিন্সিপালকে আটক করেছে র্যাব। যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে আল আমিন জানান, তিনি আগে এমন ছিলেন না, শয়তানের প্ররোচনায় এ কাজ করেছেন। এ জন্য নিজের মৃত্যুদণ্ড কামনা করছেন।
বায়তুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আটক করা হয়। তিনি এ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। একই সঙ্গে তিনি ফতুল্লা এলাকায় একটি মসজিদে ইমামতিও করেন। আটকের সময় তার মোবাইল ও অফিসের কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে। খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন র্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম ও পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল আজিজ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া স্কুলশিক্ষকের ধর্ষণের ঘটনাটির প্রচারিত বিভিন্ন নিউজ ও ভিডিও আমরা আমাদের ফেসবুক পেজে আপলোড করেছিলাম। স্থানীয় একজন মহিলা যখন ফেসবুকে দেখছিলেন, তখন তার তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে এটি দেখে তার মাকে জিজ্ঞাসা করে যে, ‘স্কুলের ওই শিক্ষকের শাস্তি হলে আমাদের হুজুরের কেন শাস্তি হবে না? আমাদের হুজুরও তো আমাদের সাথে এমন করে। পরে শিশুটি তার মাকে বিস্তারিত জানালে শিশুটির মা র্যাব অফিসে এসে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন যে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক একাধিক ছাত্রীকে তার বাসায় পড়তে গেলে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে।
তিনি জানান, এরপর র্যাব এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করে। র্যাব অনুসন্ধানে জানতে পারে ২০১৮ সাল থেকে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাদ্রাসার ১০ থেকে ১২ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির অভিযোগও পাওয়া গেছে।
তিনি আরো জানান, শিক্ষক আল আমিন মাদ্রাসার একটি কক্ষে তার পরিবার নিয়ে থাকতেন এবং একটি অফিস কক্ষসহ কয়েকটি ক্লাস কক্ষে ছেলেমেয়েদের পড়াতেন। তার স্ত্রী একজন পর্দানশীন মহিলা, তিনি ভেতরের দিকে থাকতেন, সামনে তেমন একটা আসতেন না। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সময় পড়তে আসা ছাত্রীদেরকে আল আমিন ডেকে তার কক্ষ ঝাড়ু দেওয়া ও বিভিন্ন কৌশলে এনে তাদেরকে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ করে।
র্যাব-১১ অধিনায়ক জানান, এসব ঘটনার প্রমাণ স্বরূপ আমরা তার মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার তল্লাশি করে প্রচুর পর্নোগ্রাফি ভিডিও পেয়েছি। কিছু কিছু পর্নোগ্রাফি তিনি নিজেও তৈরি করেছেন। তিনি তার কাছে পড়তে আসা কোনো ছাত্রীর ছবির মাথার অংশ পর্নোগ্রাফি ভিডিওর সাথে সংযুক্ত করে ছাত্রীদের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।
সুত্রঃ ইত্তেফাক।