banner

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 995 বার পঠিত

 

এন্ডোমেট্রিওসিস: নারীদের জন্যে এক আতঙ্কের প্রতিশব্দ

ডা.মারুফ রায়হান খান


এন্ডোমেট্রিওসিস বিষয়টাকে একেবারে সহজ ভাষায় বোঝানো অনেকাংশে মুশকিল। জরায়ুতে ৩টি স্তর থাকে। একেবারে ভেতরের স্তরটাকে বলা হয় এন্ডোমেট্রিয়াম। এই এন্ডোমেট্রিয়ামের কোষ যখন জরায়ুর বাইরে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে এন্ডোমেট্রিওসিস বলে।

কোথায় কোথায় এটা ছড়াতে পারে ?

– ডিম্বাশয়
– গর্ভনালী
– পাউচ অফ ডগলাস
– পেটের ভেতর যে পর্দায় মোড়ানো থাকে সেখানে
– ব্রড লিগামেন্ট
– এপেন্ডিক্স
– আগে অপারেশান হয়েছে সে কাটা জায়গায়
– নাভী
– যোনি
– জরায়ুমুখ
– ফুসফুস
– নাক

কাদের বেশি হয়ে থাকে এ রোগ ?

১. ৩০-৪৫ বছর বয়সী নারী।
২. সাদাদের বেশি হয়।
৩. যাদের পরিবারে এ রোগের ইতিহাস থাকে।
৪. উচ্চবিত্ত পরিবারে।
৫. বিলম্ব করে বিয়ে করা।
৬. বিলম্ব করে সন্তান নেয়া।
৭. সন্তানহীন।

উপসর্গ কী কী থাকে ?

১. প্রায় ২৫ ভাগ নারীরই কোনো উপসর্গ থাকে না।
২. মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা (৫০%)। মাসিক শুরু হবার কয়েকদিন আগেই ব্যথাটা ধীরে ধীরে শুরু হয় কিন্তু মাসিক চলাকালীন সময় এটা তীব্রতর হয়। মাসিক শেষ হবার পরেও কিছুদিন এ ব্যথা থাকতে পারে।
৩. যৌনমিলনের সময় তীব্র ব্যথা (২০-৪০%)।
৪. বন্ধ্যাত্ব (৪০-৬০%)।
৫. পেটে ব্যথা।
৬. বারবার প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবে করতে অসুবিধা হওয়া, কখনও কখনও প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া।
৭. পায়খানা করার সময় ব্যথা, ডায়রিয়া, পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া।
৮. দীর্ঘসময় ধরে ক্লান্তি, অবসন্নতা।

চিকিৎসা :

অল্পবয়সী বিবাহিত মেয়েদের বাচ্চা নিতে বলা হয়, এতে দেখে যায় স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এ রোগ ভালো হয়ে যায়। এ রোগের চিকিৎসায় নিম্নোক্ত অপশনগুলো আছে।
১. হরমোনের মাধ্যমে চিকিৎসা।
২. অপারেশান
৩. হরমোন এবং অপারেশানের যৌথ চিকিৎসা
৪. রেডিওথেরাপি, ইত্যাদি ।

এন্ডোমেট্রিওসিস প্রতিরোধ করা যায় কী ?

এর প্রতিরোধের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা পাওয়া যায় না। তবে তাড়াতাড়ি সন্তান নিয়ে নেয়া, নিয়মিত ব্যায়াম, নিয়মিত চিকিৎসকের চেক-আপে থাকা উপকার বয়ে আনতে পারে।

প্রভাষক
ফার্মাকোলজি বিভাগ
এনাম মেডিকেল কলেজ

Facebook Comments