banner

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 412 বার পঠিত

 

ইসলামি পটভূমিতে বিয়ে : কোরান মাজিদের নির্দেশনা

ইসলাম কেবল একটি ধর্মই নয়; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এটি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের মত সমাজ জীবনেরও পুরোপুরি নির্দেশনা প্রদান করে। আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া পেতে হলে আমাদেরকে এসব বিধি-বিধান সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখতে হবে এবং তা পালনে সচেষ্ট হতে হবে। প্রত্যেক মুসলমানের একটি সামাজিক দায়িত্ব হল পারস্পরিক শ্রদ্ধবোধ, সাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। এই দায়িত্ব ও কর্তব্যের সূচনা হয় ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি পরিবার গঠনের মাধ্যমে। সুদৃঢ় পারিবারিক বন্ধনের ভিত্তিতে গঠিত একটি পরিশীলিত পরিবার ইসলামি সমাজের কেন্দ্রবিন্দু। এভাবে বিয়ে একজন মুসলমানের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি ইসলামের পরিশীলিত পারিবারিক জীবনের বুনিয়াদ, যা একজন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে প্রতিযোগিতা নয়; বরং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।

ইসলাম প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে এবং পরিবার গঠন করতে উদ্বুদ্ধ করে। এটি স্বামী ও স্ত্রীর যথার্থ অধিকারের নিরাপত্তা বিধান করে, যারা পরবর্তীতে তাদের ছেলেমেয়ের সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। আর এভাবেই একটি সুস্থ পরিবার ও সুস্থ সমাজ বিনির্মিত হয় এবং সমাজের প্রতিটি সদস্যের অধিকার নিরাপত্তা সংরক্ষিত হয়।

ইসলামি ফিকাহশাস্ত্রে বিয়ে সংক্রান্ত কিছু সাধারণ নীতিমালা বিধৃত হয়েছে। সকল প্রাপ্তবয়স্ক সাধারণ মুসলমানের জন্যে বিয়ে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যদি কারও মধ্যে স্ত্রী সঙ্গ লাভের বাসনা উদগ্র হয় এবং বিয়ে না করলে পাপে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়, তবে তার জন্যে বিয়ে করা ওয়াজিব। অবশ্য যে ব্যক্তি পরিবারের ভরণ পোষণ প্রদানে অক্ষম কিংবা কোন উপযুক্ত পাত্রী খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয় তার জন্যে বিয়ে করা মাকরূহ (অপছন্দনীয়)।

কোরান মাজিদ আমাদেরকে বিয়ে সংক্রান্ত মৌলিক নীতিমালা প্রদান করেছে এবং রাসূলের সুন্নাহ এ সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা তুলে ধরেছে। নিম্নে কোরান মাজিদের কিছু বুনিয়াদী নীতিমালা তুলে ধরা হল:

কোরান মাজিদের নির্দেশনা
আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিয়ে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী। আর যাদের বিয়ের সামর্থ নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে। (আন-নূর, ২৪:৩২-৩৩)

এই আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কেবল দুই কারণে বিয়ে বিলম্বিত হতে পারে; উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজে না পাওয়া কিংবা পরিবারের ভরণ পোষণ প্রদানে অক্ষম হওয়া। যদি এই দুই শর্ত পাওয়া না যায় তবে তাহলে বিয়ে করা আল্লাহ তাআলার আদেশে পরিণত হয়, যা পালন ও অনুসরণ করা আবশ্যক।

আর যদি কেউ কোন কারণে বিয়ে করতে না পারে, তাহলে কোরান আমাদেরকে আমাদের প্রবৃত্তির বাসনাকে নিয়ন্ত্রণ ও ইসলামের সংযম ও পবিত্রতার নীতিমালা অনুসরণের আদেশ প্রদান করে। যা উপর্যুক্ত আয়াতের দ্বিতীয় অংশে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কোরান মাজিদে আরও ইরশাদ হয়েছে:

নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফ, সদাচার ও নিকটাত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমালঙ্ঘন থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।

বল, আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরিক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেন নি এবং আল্লাহর উপর এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না। (আল-আরাফ, ৭:৩৩)

আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। (বনি ইসরাঈল, ১৭:৩২)

বিয়ের জন্য ইসলাম সর্বপ্রথম যে শর্ত প্রদান করেছে তা হল একজন ঈমানদার কেবল একজন ঈমানদারকেই বিয়ে করতে পারবে। অমুসলিমকে বিয়ে করার অনুমতি ইসলামে নেই। কোরান মাজিদে ইরশাদ হয়েছে :

আর তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে এবং মুমিন দাসী মুশরিক নারীর চেয়ে নিশ্চয় উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। আর মুশরিক পুরুষদের সাথে বিয়ে দিয়ো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। আর একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। তারা তোমাদেরকে আগুনের দিকে আহবান করে, আর আল্লাহ তাঁর অনুমতিতে তোমাদেরকে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন এবং মানুষের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। (আল-বাকারা, ২:২২১)

ইসলাম আহলে কিতাবদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নিয়ম রেখেছে। তা আমাদেরকে ধার্মিক ও পূতঃপবিত্র রমণীদের বিয়ের অনুমতি দেয়, এমনকি আহলে কিতাবদের মধ্য থেকেও। তা আরও বলে যে, এধরনের ক্ষেত্রে কোন অসদিচ্ছা কিংবা জাগতিক সম্পদ অর্জন উদ্দেশ্য থাকবে না। বরং, পবিত্রতার সংরক্ষণই হবে মূল উদ্দেশ্য। কোরান মাজিদে ইরশাদ হয়েছে :

আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের সচ্চরিত্রা নারীদের সাথে তোমাদের বিবাহ বৈধ। যখন তোমরা তাদেরকে মোহর দেবে, বিবাহকারী হিসেবে, প্রকাশ্য ব্যভিচারকারী কিংবা গোপনপত্নী হিসেবে নয়। (আল- মায়েদা, ৫:৫)

এই আয়াত থেকে পরিষ্কার হয় যে, প্রথম যে গুণ কোন ব্যক্তি একটি পাত্রীর মধ্যে অনুসন্ধান করবে তা হল চারিত্রিক পবিত্রতা ও ধর্মানুরাগিতা। কোরান মাজিদ আমাদেরকে এ বিষয়েও সতর্ক করে যে, যদি আমরা একজন পূতঃপবিত্র ও ধার্মিক পাত্রী কামনা করি তবে আমাদেরকেও আমাদের আচার আচরণে পরিশুদ্ধ ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী ধার্মিক হতে হবে। আল-কোরানে ইরশাদ হয়েছে :

দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য। আর সচ্চরিত্রা নারীরা সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষরা সচ্চরিত্রা নারীদের জন্য; লোকেরা যা বলে, তারা তা থেকে মুক্ত। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক। (আন্ নূর, ২৪:২৬)

এসব আয়াত থেকে বুঝা যায়, ইসলামে বিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কিছু সাধারণ বিশ্বাস ও সমন্বিত মূল্যবোধের ভিত্তিতে কায়েম হয়ে থাকে। এগুলো বিয়ের মূল বুনিয়াদ ও ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। যতদিন এই ভিত্তি বিদ্যমান থাকে তাদের মধ্যে মায়া মমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। একারণে ইসলামে বিয়ে একটি খুব টেকসই প্রতিষ্ঠান। পক্ষান্তরে, পশ্চিমা সমাজে বিয়ে কেবল তুচ্ছ ভালবাসা ও নারী পুরম্নষের মধ্যে প্রণয়মূলক আকর্ষণের ভিত্তিতে সম্পন্ন হওয়া একটি বিষয়। যখন একজন পুরুষ ও নারীর মধ্যে ভালবাসা চরম পর্যায়ে পৌঁছে তখন তা তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। এভাবে তাদের সমাজে পুরো বিয়ের প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে একটি বৈষয়িক আবেগ-উচ্ছাসের ভিত্তির উপর। বাস্তবতা প্রমাণ করে যে, এটি বিয়ের জন্যে একটি নেহায়েত দুর্বল ও নড়বড়ে ভিত্তি।

ইসলামে একাধিক বিয়ে
ইসলামে কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে একাধিক বিয়ের অনুমতি রয়েছে। বস্ত্তত: কোরান মাজিদ এই শর্তে কোন ব্যক্তিকে তার অনুমতি দেয় যে, তাকে অবশ্যই সকল স্ত্রীর সাথে ন্যায্য আচরণ করতে হবে। যদি কেউ ভয় করে যে, সে তা করতে পারবে না, তখন তাকে কেবল একজন স্ত্রী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতিমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ করতে পারবে না, তবে তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমার ভাল লাগে; দুটি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে। এটা অধিকতর নিকটবর্তী যে, তোমরা যুলম করবে না। (আন-নিসা, ৪:৩)

একাধিক বিয়ে সমাজকে অনেক দুষ্কর্ম থেকে রক্ষা করে। যাদের অতিরিক্ত শারিরীক চাহিদা রয়েছে, তাদেরকে এই আয়াত একাধিক স্ত্রী রাখার অনুমতি প্রদান করে, যা সমাজকে ধর্ষণ, ব্যভিচার, অনাচার ইত্যাদির মত নানা অপকর্ম এবং সকল প্রকার সামাজিক ষড়যন্ত্র ও হিংসা বিদ্বেষ থেকে রক্ষা করে। একাধিক বিয়ে সমাজে অনেক নারীর অধিকারকেও সংরক্ষণ করে। একজন নারী দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হয়ে তার বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হতে পারে। তাছাড়া, কোন কোন ক্ষেত্রে একজন স্ত্রী স্বামীর ইচ্ছানুসারে সন্তান ধারণ করতে পারে না, একাধিক বিয়ের বিধি এমন নারীদেরকে তালাক প্রদানের অনুমতি নয়, বরং দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি প্রদান করে। অধিকন্তু, যুদ্ধের কারণে অনেক সময় পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা অধিক হয়ে থাকে কিংবা পিতাহারা সন্তানসহ অনেক বিধবা নারী থাকে। একাধিক বিয়ের বিধান তাদেরকে তাদের সন্তানসহ দ্বিতীয়বার পরিবার গঠনের সুযোগ করে দেয়। সর্বোপরি, একাধিক বিয়েপ্রথা সমাজ থেকে পতিতাবৃত্তির মত দুষ্কর্ম উচ্ছেদ করতে সহায়তা করে। উল্লেখ্য যে, স্বাভাবিক অবস্থায় একাধিক বিয়ে না পছন্দনীয়, আর না তার প্রতি ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। অধিকন্তু, ইসলাম একজন স্ত্রীকে তার বিবাহ ভেঙ্গে ফেলার অধিকার দিয়েছে, যদি সে তার স্বামীর কাছে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে থাকতে অপছন্দ করে। এজন্যেই বস্ত্ততঃ মুসলিম সমাজে একাধিক বিয়ের প্রচলন রয়েছে।

ইসলাম আরও বলে যে, একজন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে সর্বাধিক অন্তরঙ্গ ও প্রেমময় সম্পর্ক থাকতে হবে। প্রত্যেককে অপর সঙ্গীর স্বার্থ সংরক্ষণ, গোপনীয়তা রক্ষা ও তার নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। (আল-বাকারা, ২:১৮৭)

এই আয়াতটি ইসলামে বিয়ের মৌলিক ধারণার বর্ণনা প্রদান করে।

প্রথমত, পুরুষ ও নারীকে বিবেচনা করা হয়েছে পরস্পর পরস্পরের পোশাক হিসেবে, যা নির্দেশ করে যে, বিয়ের দায়িত্ব ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে উভয়ের সমান মর্যাদা রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, পোশাক শরীরকে এমনভাবে আবৃত করে যে, পোশাক ও শরীরের মধ্যে কোন অন্তরাল থাকে না। স্বামী এবং স্ত্রীকেও এমন কাছাকাছি ও অন্তরঙ্গ হতে হবে যে, তাদের মধ্যে কোন গোপনীয়তা থাকবে না। উভয়কে পরস্পরের উপর পূর্ণরূপে বিশ্বাস রাখতে হবে এবং স্ব স্ব জীবনের কোন বিষয়কে গোপন রাখা যাবে না।

তৃতীয়ত, পোশাকের কাজ হল, শরীরকে বাহ্যিক বিপদাপদ ও ক্ষতিকর বিষয় থেকে রক্ষা করা। অনুরূপভাবে, স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরকে সব ধরনের বাহ্যিক বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবে।

চতুর্থত, একটি পোশাক কেবল শরীরকে আচ্ছাদিতই করে না, বরং তার সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে থাকে। অনুরূপভাবে, স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরকে আচ্ছাদন ও প্রতিরক্ষার চেষ্টাই করবে না, বরং তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির চেষ্টাও করবে।

উপরন্তু পোশাক ব্যতিত কেউ থাকতে পছন্দ করে না। অতএব পুরুষদেরকে নারীদের বিয়ে করার প্রতি উৎসুক থাকতে হবে যাতে একে অপরকে পোশাকের ন্যায় উপকৃত করতে পারে। কোরান মাজিদ আরও বলে,

আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীদেরকে, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা চিন্তা করে। (আর-রূম, ৩০:২১)

তিনিই সেই সত্ত্বা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক ব্যক্তি থেকে এবং তার থেকে বানিয়েছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার নিকট প্রশান্তি লাভ করে। (আল আরাফ, ৭:১৮৯)

এই আয়াতগুলো ইসলামে বিয়ের রঙ-রূপ সম্পর্কে আরও সবিস্তার বিবরণ প্রদান করে। এটি পারস্পরিক ভালবাসা, সঙ্গ ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক। স্বামীর মধ্যে স্ত্রী এমন এক ব্যক্তিকে খুঁজে পায় যার সাথে সে তার ভালবাসা ভাগাভাগি করতে এবং যার কাছে সে তার নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা কামনা করতে পারে। অনুরূপভাবে, স্বামীও একটি শান্তিপূর্ণ নীড় ও প্রাত্যহিক জীবনের দুঃখ কষ্ট থেকে বেরিয়ে একটি প্রশান্তিপূর্ণ আশ্রয়স্থল রচনা করতে স্ত্রীর সহযোগিতা ও স্বান্তনা কামনা করে।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

Facebook Comments