banner

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 255 বার পঠিত

 

আলো ছড়াচ্ছেন নূরজাহান

‘আপন আলোয় উদ্ভাসিত এক মানুষ নূরজাহান আক্তার। সুযোগ পেলে তিনিও হয়তো জ্বলে উঠবেন অনেকের মতো।’ ২০১১ সালের ২৭ জুলাই ‘আলোর পথে নূরজাহান’ প্রতিবেদনের শুরুটা ছিল এমনই। তিনি সুযোগ পেয়েছেন এবং সবাইকে অবাক করে জ্বলে উঠেছেন আত্মপ্রত্যয়ে। সেই নূরজাহান আক্তার এখন কাজ করছেন এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের মোটর ভেহিকেল ডিভিশনে ডকুমেন্টেশন অফিসার হিসেবে।
নূরজাহানের জীবনের শুরুটা এমন ছিল না। জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সুবিধাবঞ্চিত এই নারীকে চাকরির সুযোগ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। ২০১২ সাল থেকে তিনি এখানে কাজ করছেন।
নূরজাহান এখন আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন তাঁর পরিবারে, তাঁর কর্মস্থলে।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মেয়ে নূরজাহান। ‘চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছিলাম। অথচ কোনো চাকরি পাচ্ছিলাম না।’ একটু থেমে আবার বলতে শুরু করেন নূরজাহান। ‘কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। রাতে ঘুম আসত না নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। ’

অন্যের আশ্রয়ে থেকে যেখানে জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ে, সেখানে নূরজাহান চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। এর পেছনে রয়েছে মা সালেহা বেগমের অবদান। নিজে পড়াশোনা না জানলেও মেয়েকে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন। আর একজনের নাম না বললেই নয়। তিনি আশ্রয়দাতা শাহজাহান মোহাম্মদ মহিউদ্দিন; যাঁর সহযোগিতায় নূরজাহান মিরপুর বাঙলা কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন।

এনার্জিপ্যাকের মানবসম্পদ বিভাগের উপব্যবস্থাপক কাজী জান্নাতুল মাহ্ফুজা জানালেন নূরজাহানের কাজের ব্যাপারে। তিনি বললেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন নূরজাহানের চাকরির ব্যবস্থা করা। আর এটা সম্ভব হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ূন রশীদের চেষ্টায়। এনার্জিপ্যাক সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সব সময় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়, হতে চায় আলোর পথের যাত্রীদের সহযোগী।’

১৭ এপ্রিল নূরজাহানের বাগদান হয়েছে সরকারি চাকরিজীবী নূরে আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে। নূরজাহানের চোখে এখন অনেক স্বপ্ন। সে স্বপ্ন কেবল নতুন সংসার বা নিজের পেশাজীবন নিয়ে নয়। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কোনো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান নূরজাহান। কাঁধে তুলে নিতে চান তাঁদের দায়িত্ব। হতে চান তাঁদের এগিয়ে চলার সহযাত্রী।

Facebook Comments