banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 575 বার পঠিত

আমার বাচ্চা খায় না! -ডা. মারুফ রায়হান খান

আমার-আপনার পরিচিত যতো মানুষ আছে সম্ভবত তাদের অধিকাংশের বাচ্চাই খায় না! ডাক্তার হোন বা না হোন এই অভিযোগ শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা বেদম কম।

আমি একটু কঠিন সত্যি কথা বলে ফেলি। আসলে শিশু তার প্রয়োজনমতোই খায়–ঝামেলা যা করে থাকেন তা করেন অতি সেন্সিটিভ মায়েরা! মা প্রথম দিকে মনে করেন তার বাবুটি বুঝি পেট ভরে খেলো না; তাই তিনি জোর করে আরও খাওয়াতে চেষ্টা করেন। এতে হয় কী বাবুটা মনে করে খাওয়া-দাওয়া ব্যাপারটা তার কাজ না, বরং এটা তার আম্মুর কাজ। তো আমি কেন খাব! ফলে ও খেতে চায় না।

মনোবিজ্ঞানী এম ই ল্যাম্ব একবার একটা মজার পরীক্ষা করলেন। তিনি একটা ঘরে বিভিন্ন বয়সী শিশুর জন্যে প্রয়োজনীয় খাবার টেবিলে সাজিয়ে রাখলেন। কিছুক্ষণ না খাইয়ে রেখে বাচ্চাগুলোকে ঐ ঘরে ছেড়ে দিলেন। দেখা গেলো, যে বয়সী বাচ্চার যে ধরনের খাবার প্রয়োজন তা তারা খুঁজে খেতে থাকলো। অর্থাৎ শিশুরা তাদের চাহিদা ও পছন্দমাফিক খাবার নিজ থেকেই খায়।

আরেকটা ব্যাপার আছে। শিশুটির খাওয়া নিয়ে যে মা দুশ্চিন্তা করেন এটি তারা বুঝে ফেলে। ফলে মায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে শিশুটি এমন করতে পারে। যদি সে বলে ‘খাব না’–তাহলে মা তার সাথে অনেকক্ষণ সময় ব্যয় করবে। মা-কে কাছে রাখার একটা ট্রিক হতে পারে এটা!

তো চিকিৎসা কী!

মায়ের জন্যে কষ্টসাধ্য হলেও শিশু খেতে না চাইলে কিছুক্ষণ না খাইয়ে রাখা উচিত। ক্ষুধা লাগলে বাচ্চা শেষ পর্যন্ত খাবেই।

আরেকটা ব্যাপার। বাচ্চা খেলে তাকে এমনভাবে পুরস্কৃত করা শুরু করবেন না যেন সে অলিম্পিকে গোল্ড মেডেল নিয়ে এসেছে! যদি একটু খাওয়াতেই তাকে এটা-সেটা গিফট দিয়ে ভরে ফেলেন, আখেরে কিন্তু বিপদে পড়তে যাচ্ছেন এই বলে দিলুম কিন্তু!

ও হ্যাঁ, আরেকটা ব্যাপার মাথায় রাখা দরকার। শিশুর মা-বাবার মাঝে যদি প্রকাশ্য ঝুটঝামেলা চলতে থাকে, তাহলে কিন্তু বাচ্চার মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে–এ কারণেও ক্ষুধাহীনতা প্রকাশ করতে পারে। নিজেদের ঝামেলা দূর করুন, বাচ্চাকে নির্বিঘ্নে খেতে দিন!

Facebook Comments