মুরগীর ফার্মে কাজ করছেন নাজমা বেগম
অপরাজিতাবিডি ডটকম, সাতক্ষীরা : দারিদ্র্যের নিষ্ঠুুরতা দমাতে পারেনি আত্মপ্রত্যয়ী পাটকেলঘাটার এক গৃহবধূকে। মুরগীর ফার্ম করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।
অল্প কয়েকটা কিছু মুরগী নিয়েই শুরু হয়েছিল তার পথচলা। প্রয়োজনীয় পুঁজির সরবরাহ পেয়ে মাত্র চার বছরের ব্যবধানে তিনি এখন ছোটবড় ৬টি ফার্মের মালিক।
গৃহবধূর নাম নাজমা বেগম। এখন তিনি মুরগীর ফার্ম সমিতির মাধ্যমে ইনকিউবেটর মেশিন সংগ্রহ করে সেখানে নিজ ফার্মের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাচ্ছেন। সমিতির বিভিন্ন ফার্মে সেই বাচ্চা সরবরাহ করছেন। এই কাজে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন তার স্বামী ওসমান গণি।
তার ৩ টি ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি বড় ছেলে ১ মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের হ্যাচারির তদারকি করছে। তাদের সংসারের চাকা ঘুরছে এই ফার্মেরই আয় দিয়ে।
নাজমা বেগম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কুমিরা গ্রামের বাসিন্দা। তিন সন্তানের লেখাপড়াসহ সংসারের খরচ চালাতে রীতিমত হিমশিম খেতেন।
এমনই পরিস্থিতিতে তিনি বাড়ির আঙ্গিনায় ছোট লেয়ার মুরগীর ফার্ম তৈরি করেন। প্রতিটি ৩০ টাকা দরে প্রথম পর্বে ১শ লেয়ার মুরগীর ১দিন বয়সী বাচ্চা তোলেন। খাবার ও ওষুধসহ প্রতিদিন ২শ টাকা হারে খরচ হতো। বাচ্চার বয়স সাড়ে পাঁচ মাস হলে ডিম পাড়া শুরু করে। কিন্তু বিপত্তি দেখা দেয় অন্যখানে।
একদিকে যেমন প্রতিদিন ২শ টাকা খরচ সংকুলন করা অসম্ভব, অন্যদিকে মাত্র ১শ মুরগীর জন্য গড় খরচ বেশি হওয়ায় পুঁজি বাঁচানো দায় হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় তার ফার্ম অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে।
এ সময় বেসরকারি সংস্থার তালা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার তাজউদ্দিনের সাথে পরিচয় হয় তার। তিনি এগিয়ে আসেন সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে।
নাজমা তার স্বামীর সাথে পরামর্শ করে মুসলিম এইড থেকে প্রথম দফায় ২০ হাজার টাকা সুদমুক্ত ঋণ গ্রহণ করে ৩শ বাচ্চা পালন শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি ডিম পেতে থাকেন। পরে নিজের হ্যাচারিতেই বাচ্চা ফুটাতে শুরু করেন। বর্তমানে গড়ে বাচ্চা প্রতি ২০ টাকা নীট মুনাফা থাকে।
নাজমা বেগম জানান, ৫ দফায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তার ফার্মের কাজে লাগিয়েছেন। বর্তমানে তার হ্যাচারিতে ১২ হাজার ডিমে বাচ্চা ফোঁটার অপেক্ষায় আছে। ফার্মে ২ হাজার বাচ্চা আছে। এক হাজার ডিমের মুরগী আছে, যা প্রতিদিন ৬শ-সাড়ে ৬শ ডিম দেয়।
অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/১৯ জুন ২০১৪ই.