banner

শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 15 বার পঠিত

 

অস্বাভাবিক স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম

 

বর্তমানে স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম আমাদের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, দেশের জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলো, যেমন ‘সেনোরা’, যেখানে এক প্যাকেটের দাম ১২০ টাকা।
এত চড়াদামে ন্যাপকিন কিনে ব্যবহার করা শুধুমাত্র একজন মেয়ের জন্য নয়, পুরো পরিবারের জন্য আর্থিক চাপ তৈরি করে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য।

স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব স্বীকৃত, তবে কেন আমাদের জন্য এটি বিলাসিতা হয়ে দাঁড়াতে হবে? কেন একটি সাধারণ, স্বাস্থ্যকর পণ্য কেনার জন্য আমাদের এত টাকা খরচ করতে হবে?

যে সমস্যাটি আমরা মুখোমুখি হচ্ছি: এই দাম সাধারণ মানুষের জন্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে যাদের পরিবারের আয় সীমিত, তারা কীভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনবে? কিছু পরিবারের সদস্যরা হয়তো কাপড় বা তুলা ব্যবহার করছে, যেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয় এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। কিন্তু, এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, তবে এটি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।

প্রতিকার:
১. দামের নিয়ন্ত্রণ এবং সাশ্রয়ী পণ্য: সরকারকে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর ভ্যাট কমিয়ে, দাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। সাশ্রয়ী এবং মানসম্পন্ন পণ্য সহজলভ্য করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই এটি কিনতে পারে।

স্বাস্থ্যকর বিকল্পের প্রচলন: কোম্পানিগুলির উচিত স্বাস্থ্যকর এবং সাশ্রয়ী বিকল্প বাজারে নিয়ে আসা। কাপড় বা তুলা ব্যবহার করার পরিবর্তে, সাশ্রয়ী দামে স্যানিটারি প্যাড পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত।

উৎপাদন খরচ কমানো: কোম্পানিগুলি তাদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে, বিক্রির দামে সমন্বয় আনতে পারে। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে খরচ কমানো সম্ভব।

সরকারি নীতি এবং সহায়তা: সরকারের উচিত, নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি কার্যকর নীতি গ্রহণ করা, যাতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের সহজলভ্যতা এবং দাম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা যায়।

স্যানিটারি ন্যাপকিন শুধুমাত্র একটি পণ্য বা খরচের বিষয় নয়, আমাদের সবার স্বাস্থ্য এবং জীবন সুরক্ষার প্রশ্নও বটে। স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম কমানো, তার মান নিশ্চিত করা, এবং সহজলভ্যতা নারীর মৌলিক অধিকার।
আমরা সকলেই দাবি জানাই, যাতে স্যানিটারি ন্যাপকিন আমাদের সবার জন্য সাশ্রয়ী, সহজলভ্য, এবং নিরাপদ হয়। স্বাস্থ্য বা জীবনের নিরাপত্তা কখনোই একটি শ্রেণীর জন্য সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়।

#স্যানিটারি_ন্যাপকিন #স্বাস্থ্য_অধিকার #সাশ্রয়ী_মূল্য #জনসচেতনতা #স্বাস্থ্য_নিরাপত্তা #আর্থিক_সাম্য
[8:25 pm, 26/04/2025] +880 1994-004543: ভিক্টোরিয়ান যুগের ফ্যাশন

ভিক্টোরিয়ান যুগ (১৮৩৭-১৯০১) ছিল একটি বিশেষ সময়, যেখানে ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলিতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা ঘটে। তবে এর পাশাপাশি এক অনন্য এবং কঠিন ফ্যাশন যুগও তৈরি হয়েছিল, যেখানে নারীদের জন্য সৌন্দর্য অর্জন করতে গেলে শারীরিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হতো। এই যুগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফ্যাশন ছিল কর্সেট, যা নারীদের শারীরিক গঠনকে একটি নির্দিষ্ট কাঠামোতে আনার জন্য ব্যবহৃত হত।

ভিক্টোরিয়ান সমাজে নারীদের সৌন্দর্যের মাপকাঠি ছিল একটি সুনির্দিষ্ট শরীরের গঠন, যা আওয়ারগ্লাস ফিগার নামে পরিচিত ছিল। এই শারীরিক আকৃতি অর্জন করতে কর্সেট ছিল এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে কর্সেটের ব্যবহারের ফলে নারীদের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।

অতিরিক্ত টাইট কর্সেট পরার কারণে নারীদের পাঁজরের হাড় বিকৃত হয়ে যেত, যার ফলে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিত। কর্সেটের চাপে অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্থানচ্যুতি ঘটত, যা দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা এবং অসুস্থতা তৈরি করত। চিকিৎসা প্রতিবেদনগুলিতে দেখা গেছে, কর্সেট পরা নারীদের মধ্যে বেহুঁশ হয়ে পড়া এবং শ্বাসকষ্ট ছিল অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা। এমনকি এক্স-রে এবং সংরক্ষিত কঙ্কালগুলি থেকেও প্রমাণ মিলেছে যে, দীর্ঘদিন ধরে কর্সেট পরলে পাঁজরের হাড় স্থায়ীভাবে বিকৃত হয়ে যেত।

এছাড়া, ভিক্টোরিয়ান যুগের ফ্যাশনে হুপ স্কার্ট ও ক্রিনোলিনের ব্যবহারও ছিল খুব জনপ্রিয়। এই পোশাকগুলি সাধারণত বৃহৎ স্কার্ট তৈরি করত, যা নারীদের দেহকে বিশাল আকারে প্রদর্শন করত। কিন্তু এসব পোশাকও ছিল মারাত্মক বিপজ্জনক। এগুলি যেমন চলাফেরায় অসুবিধা সৃষ্টি করত, তেমনি এগুলির আগুন ধরারও সম্ভাবনা ছিল, যা অনেক নারীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল।

সামাজিক চাপের কারণে নারীরা তাদের স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে এই ধরনের ফ্যাশন এ বাধ্য হতেন। তবে, ১৯শ শতকের শেষ দিকে কিছু ডাক্তার, নারীবান্ধব লেখক ও ফ্যাশন ডিজাইনাররা নারীদের জন্য আরামদায়ক পোশাকের প্রচলন শুরু করেন। এভাবেই ২০শ শতকের শুরুতে কর্সেটের জনপ্রিয়তা কমে আসে এবং আধুনিক ফ্যাশনের বিকাশ ঘটে।

ভিক্টোরিয়ান যুগের ফ্যাশন নারীদের জন্য এক চরম শারীরিক কষ্টের যুগ ছিল। কর্সেট ও ক্রিনোলিনের মতো পোশাক নারীদের শরীরের স্বাভাবিক গঠন ও স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক ছিল, কিন্তু সমাজের চাপে তারা এসব পোশাক পরতে বাধ্য হতেন। আজকের দিনে, সৌন্দর্য এবং ফ্যাশনের মধ্যে আরাম এবং স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যা আধুনিক সমাজের অগ্রগতির লক্ষণ।

Facebook Comments