banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 660 বার পঠিত

 

অফিসে ফিটফাট

 

একজন নারীকে এখন নিপুণভাবে ঘর সামলে, কর্মক্ষেত্রও পরিচালনা করতে হয় দক্ষ হাতে। এখন অনেক প্রতিষ্ঠানেই নারীরা উচ্চ পদে কাজ করেন। কর্মক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া, অধীনে থাকা সদস্যদের নিয়ে দলের পথ সঠিকভাবে দেখানো, কর্মক্ষেত্রের ভেতরে-বাইরে আনুষ্ঠানিক সভায় যোগ দেওয়া ইত্যাদি কাজ করতে হয়। এত কাজের মধ্যেও সাজপোশাক হওয়া চাই ফিটফাট। কোনো অফিসের ‘বস’ সেখানকার সব কর্মীর কাছেই অনুকরণীয়। বিশেষজ্ঞদের মতে কর্মক্ষেত্রের বড় বড় কাজ যিনি পরিচালনা করেন, তাঁর পোশাক হওয়া উচিত রুচিসম্মত ও পরিপাটি।
ব্র্যাক ব্যাংকে কমিউনিকেশন অ্যান্ড সার্ভিস কোয়ালিটি প্রধানের দায়িত্বে আছেন জারা জাবীন মাহবুব। কথা হলো তাঁর সঙ্গে। তাঁর মতে কাজের জায়গার পোশাকটি হওয়া চাই পুরোদস্তুর আনুষ্ঠানিক, ছিমছাম কিন্তু ‘স্মার্ট’। মানুষের রুচি ও ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে পোশাক-পরিচ্ছদে। অফিসে এমন পোশাক পরা উচিত যা আপনাকে সম্মানিতবোধ করায়। জারা জাবীন মাহবুব জানালেন, তিনি অফিসে সব সময় লম্বা ব্লাউজের সঙ্গে সাধারণ শাড়ি পরেন। সালোয়ার-কামিজ তাঁর কাছে ঠিক আনুষ্ঠানিক পোশাক বলে মনে হয় না। মাঝেমধ্যে করপোরেট স্যুট এবং প্যান্টও পরেন। গয়নার মধ্যে সাধারণ নকশার মুক্তার মালা, কানে ছোট দুল, হাতে চিকন চুরি বা ব্রেসলেট এবং অন্য হাতে থাকে ঘড়ি।
ছবি: কবির হোসেনউচ্চ পদে কাজ করলেই যে জমকালো, চকমকে পোশাক পরে কর্মক্ষেত্রে হাজির হতে হবে, এমনটা নয়। বরং একজন বসকে তাঁর পোশাক নির্বাচনের বেলায় আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। ‘একজন নারী বস তাঁর অধস্তন সকল নারী কর্মীর কাছে আদর্শ। তাই ব্যক্তিগত পছন্দ বা ফ্যাশনের চলতি হাওয়া সব সময় এখানে খাটানো ঠিক হবে না। কর্মক্ষেত্রের পোশাক ছিমছাম ও কাজের উপযোগী।’ জমকালো পোশাক তোলা থাক দাওয়াতের জন্য। এখানে যেহেতু ব্যক্তির কাজের দিকেই মূল মনোযোগ থাকবে, তাই নিজেকে আকর্ষণীয় করার জন্য বাড়তি কিছু করার প্রয়োজন নেই। নিরীক্ষাধর্মী কোনো সাজ, পোশাক অফিসের জন্য নয়।
কামিজ বা কুর্তা পরলে তার কাট ও নকশায় আনুষ্ঠানিক ভাব থাকা ভালো। পোশাক: আরমাডিওতাহলে কেমন হবে অফিসের সাজ? অফিসের সাজ হবে খুব হালকা। মেকআপ বলতে চোখে পানিরোধক কাজল অথবা চিকন করে দেওয়া আইলাইনার। মাসকারা চাইলে ঘন করে দেওয়া যেতে পারে। মুখে কোনো দাগ বা চোখের নিচে কালি থাকলে হালকা ফাউন্ডেশন লাগানো যেতে পারে। তবে তা যেন ত্বকের ওপর ভেসে না থাকে। আইশ্যাডো অফিসে ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন এই রূপবিশেষজ্ঞ। ব্যবহার করলেও সেটি অবশ্যই হতে হবে একদম ন্যুড বা ন্যাচারাল রঙের। লিপস্টিক হতে পারে হালকা গোলাপি, পিচ বা বাদামি রঙের। অফিসে বিশেষ কোনো দিনে গালে হালকা গোলাপি আভার ব্লাশন বুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে। মুখের মেকআপ করার পর হাত বা গলার রঙের মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে হবে। নইলে সবার আগে মানুষের নজর মুখের দিকেই যাবে। এই খুঁটিনাটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা দরকার, মনে করিয়ে দেন মুন্নী।
চুলগুলোকে তো অবশ্যই পরিপাটি করে রাখতে হবে; যেন কাজের মনোযোগ নষ্ট না হয়। চুলে সাধারণ কোনো হাতখোঁপা বা পনিটেইল করা যেতে পারে। সামনে ছোট চুল থাকলে তা ক্লিপ দিয়ে আটকে নিন। ফ্যাশন হাউস আরমাডিওর ক্রিয়েটিভ অ্যাডভাইজার ফারহিন লালারুখ খুররুম বলেন, অফিসে যে পোশাক পরবেন, তা হতে হবে আরামদায়ক। পাশাপাশি এটি যেন আত্মবিশ্বাস ঠিক রাখে, সেটিও মাথায় রাখা ভালো। মোট কথা, অফিসে ফিটফাট হয়ে থাকতে হবে। সাধারণ মানেই একদম আটপৌরে নয়। হালকা রঙের সুতি, কোটা বা জর্জেট শাড়ি পরা যেতে পারে। পোশাকে জরি, চুমকির কাজ যেন না থাকে। থাকতে পারে হালকা এমব্রয়ডারির কাজ। ছাপা নকশায় ফুলেল মোটিফ থাকতে পারে, তবে তা যেন খুব চোখে না লাগে। চড়া রংগুলো এড়িয়ে যান। কামিজ বা কুর্তা পরলে তার কাট ও নকশা আনুষ্ঠানিক হওয়া চাই। চাইলে লিনেন বা জর্জেটের শার্ট পরতে পারেন। ব্লেজার, প্যান্টও খুব ভালো পোশাক হতে পারে একটি করপোরেট অফিসে।
এরপরেও কথা থেকে যায়, সব অফিসের পরিবেশ এক নয়। সেখানে পোশাকের নীতিমালা একটু শিথিল, সেখানে সাজপোশাক একটু শৌখিন হলেও সমস্যা নেই। তাই সবার আগে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এবং সহকর্মীদের মনোভাব বুঝতে হবে।

Facebook Comments