banner

রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 50 বার পঠিত

 

‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৪’ পেলেন ঢাকা বিভাগের পাঁচ সংগ্রামী নারী

 

আত্মশক্তির প্রতীক হয়ে সমাজে পরিবর্তন এনে দেওয়া ঢাকা বিভাগের পাঁচজন সংগ্রামী নারী পেয়েছেন ‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৪’। রাজধানীর দোয়েল চত্বরে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

এই বছর অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী হিসেবে রাজবাড়ির স্বপ্না রানী ঘোষ, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের মাসুদা আক্তার, সফল জননী ক্যাটাগরিতে কিশোরগঞ্জের সেলিনা মজিদ, নির্যাতনের বিভীষিকা কাটিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করায় ফরিদপুরের লিপি বেগম এবং সমাজ উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য ফরিদপুরের সামর্তবান এই পুরস্কারে ভূষিত হন। প্রতিটি পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীকে সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার ৫৮ জন নারী এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্য থেকে নির্বাচিত পাঁচজনকে চূড়ান্তভাবে ‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৪’ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ নারীদের অবদানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন ‘আমরা নারীর অসহায়ত্বের গল্প বেশি বলি, কিন্তু আমাদের ইতিহাসে নারীর বীরত্বের অসংখ্য উদাহরণ আছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীরা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, অথচ তাঁদের অবদান অনেক সময় উপেক্ষিত থেকে যায়। আমাদের উচিত এই বীর নারীদের স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাঁদের গল্পগুলো সংরক্ষণ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্থনীতি, কৃষি ও পরিবার প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। গৃহস্থালি কাজে একজন নারী প্রতিদিন প্রায় ১৮ ঘণ্টা ব্যয় করেন, অথচ সেই শ্রমের কোনো স্বীকৃতি নেই। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে এবং নারীদের অবদান যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।’
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ চব্বিশের অভ্যুত্থানে নারীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন ‘জুলাইয়ের আন্দোলনে প্রথম সারিতে থাকা নারীদের নাম আমরা কি মনে রেখেছি? চব্বিশের আন্দোলনে শহীদ হওয়া ১১ জন নারীর কথা কি আমরা বলি? আমাদের ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে ইতিহাসের ন্যায়সংগত স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ, মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খানসহ আরও অনেকে।
বক্তারা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা ও সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
নারীদের সংগ্রাম, সাহস ও সাফল্যের স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে সমাজকে আরও এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Facebook Comments