banner

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 620 বার পঠিত

 

বসন্তের শুভেচ্ছা

ফাতিমা মারিয়াম


মালা গ্রামের মেয়ে। মামার পরিচয়ের সূত্রে বিয়ে হয় ঢাকায়।

মালার শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ি একই জেলায়। তবে তার স্বামী আনিস ঢাকাতেই প্রতিষ্ঠিত।

আনিস একজন সরকারী কর্মকর্তা। বেতনের চাইতে উপরি আয়ই বেশি। অনেক অনেক টাকা হাতে আসার কারণেই হোক অথবা গ্রামের মেয়ে হঠাৎ রাজধানীতে রাজরানি হওয়ার কারণেই হোক মালা বেশ বেহিসাবি জীবন যাপন করা শুরু করে।

আনিস কখনো কিছু বলে না। কারণ বলার মত শক্ত মেরুদণ্ড তার নেই।

মালার লাগামহীন ছন্নছাড়া জীবন যাপনের ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে বললেই আনিস বলে- আরে থাক না। এখন তো সবাই এভাবেই জীবন কাটায়। ওকে তাই কিছু বলি না।

আনিসের মা বাবা কেউ কখনো মালার ব্যাপারে কিছু বলেও আনিসের কাছে পাত্তা পায় না। সবাইকে সে বুঝাতে চায় যেভাবেই চলুক না কেন মালা মানুষ হিসেবে ভালো। তার আত্মীয়স্বজন তো বটেই এমন কি মালার আত্মীয়রাও আনিসের স্ত্রৈণ স্বভাবের জন্য আড়ালে আবডালে বিরক্তি প্রকাশ করে।

একে একে দুইটি সন্তান হয় মালা ও আনিসের। তারা দিন দিন বড় হয়। মালার বেহায়াপনা বাড়তে থাকে, বাড়ে আনিসের আয়। আয়ের পুরো টাকা বউয়ের হাতে তুলে না দেয়া পর্যন্ত মায়া আনিসকে শান্তি দেয় না।

এক পর্যায়ে স্বামী স্ত্রী দুজনেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর
জানাজানি…..
কানাকানি।

তারপরও দিন যায়। সংসারে চরম অশান্তি।

ছেলে মেয়ে বড় হয়েছে। তারা বাবা মা দুজনকেই কড়া কথা শোনায়। আবার তারা নিজেরাও যে ভালো পথে চলে তা নয়। ছেলেও এক মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেই মেয়ের মাকে মালা দু কথা শোনায়। আবার মেয়ের প্রেমিককে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বেশ কায়দা করেই জানায়। ছেলেমেয়ে কোন শাসন মানতে চায় না।

পরিবারে চরম অশান্তি চলে…চলতে থাকে।



পহেলা ফাল্গুনে মা মেয়ে দুজনেই বাসন্তী শাড়ি পরে সাজুগুজু করে ফেসবুকে ছবি দেয়। আর ক্যাপশনে লিখে ‘সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা’। লাইক আর কমেন্টের বন্যায় আপাতত তাদের পরিবারের অশান্তির কথা মা মেয়ে ভুলে যায়। মাতা কন্যা উভয়ে একে অন্যের পোষ্ট চেক করে দেখতে থাকেন কার পোস্ট এ লাইক বা কমেন্ট কত এসেছে![ছোট গল্প]

Facebook Comments