banner

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 823 বার পঠিত

 

মিম্ মি রহমান: প্রতিটা মুহুর্তেই সম্ভব ঘুরে দাঁড়ানো, যদি আমি তা চাই

ফাতেমা শাহরিন


মিম্ মি রহমান পেশায় একজন ডাক্তার পাশাপাশি লেখালেখি করছেন। এবার বইমেলায় এসেছে তার একক লেখা, সম্পাদিত এবং গ্রুপ সম্মিলিতভাবে  কয়েকটি বই। এই সাক্ষাৎকারটিতে থাকছে তার একান্ত নিজস্ব কিছু কথা, একুশে বই মেলায় প্রকাশিত ও সম্পাদিত বই সম্পর্কে অজানা অনেক কথা।

‘আনটোল্ড স্টোরি ফর অ্যা স্ট্রাগলার’ বইয়ের লেখিকা মিম্ মি রহমান সাথে আছি আমি ফাতেমা শাহরিন।

অপরাজিতা: আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন আমাদের পাঠকদের?
মিম্ মি রহমান: আমার স্কুল কলেজ ছিল ফরিদপুরে। কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ থেকে MBBS শেষ করে বারডেম থেকে CCD এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে MPH করেছি। চাকরি শুরু করি USAID এর সূর্যের হাসি হাসপাতালে আউট ডোর মেডিকেল অফিসার হিসেবে। এরপর কাজ করেছি নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালে ইনডোর মেডিকেল অফিসার হিসেবে। লেকচারার হিসেবে কাজ করেছি ফরিদপুর ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ট্রমা সেন্টার, অপরাজেয় বাংলাতেও কাজ করার সুযোগ ঘটেছে মেডিকেল অফিসার হিসেবে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রথম INTERNATIONAL Baccalaureate বোর্ডিং স্কুলে PHIS এ আবাসিক চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছি।

অপরাজিতা: ডাক্তারি নিয়ে দীর্ঘদিন উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন, আছেন এবং পাশাপাশি লেখালেখি। কেমন চলছে বর্তমান কাজ এবং লেখালেখি?
মিম্ মি রহমান: লেখালিখি ছোটবেলা থেকে করতাম টুকটাক। দৈনিক ইত্তেফাকের দাদাভাই রোকনুজ্জামান খানের ‘কচি কাঁচার আসরে, ভোরের আলো, জনকন্ঠ এবং প্রথম আলোর বন্ধুসভাসহ বিভিন্ন পাতায় লেখা পাঠাতাম। ছাপাও হতো। এরপর ২০১৫ থেকে অনলাইনে লেখালেখির শুরু বিভিন্ন পোর্টালে। আর এ বছর বইমেলায় আসছে আমার একক বই ‘আনটোল্ড স্টোরি ফ্রম এ স্ট্রাগলার’ সম্পাদক হিসেবে জড়িত আছি ‘হার না মানা একদল অপরাজিতার জীবনযুদ্ধ’, ডাক্তারদের সাথে সম্মেলিত বই ‘স্টেথোস্কোপ রেখে কীবোর্ডে’ এবং সাহিত্য সংক্রান্ত ফেসবুক গ্রুপ জানালা থেকে আসছে ‘জানালা’তেও একটি লেখা।

অপরাজিতা: তাহলে বোঝা যাচ্ছে আপনার লেখার হাতিখড়ি সেই শৈশব থেকেই ‘সেই সব দিনগুল কেমন কেটেছে’ আমি শৈশবের কথা বলছি? হারানো সেই দিন গুলোতে কি ফিরে যেতে ইচ্ছে করে?
মিম্ মি রহমান: দারুণ আনন্দময় এক শৈশব কাটিয়েছি। পাঁচ বোন মিলে মিশে ছোটবেলা কেটেছে প্রাণের শহর ফরিদপুরে। নাহ ফিরতে চাই না ঐ দিনগুলোতে। আমার কাছে আমার বর্তমান জীবনটা যা আমি নিজে তৈরি করেছি সেই জীবনটাই আমার প্রিয়। এই জীবনটাতেই বারবার ফিরে পেতে চাই।

অপরাজিতা: গল্প, কবিতা, উপন্যাস এই সব ক্ষেত্রে আপনার পদচারণ আছে। যে কোন একটির কথা বললে আপনি কোনটাকে বেছে নিবেন?
মিম্ মি রহমান: গল্প।

অপরাজিতা: প্রথম প্রকাশিত বই ও প্রথম বইমেলা নিয়ে ‘কিছু বলুন’?
মিম্ মি রহমান: এবারের বইমেলায় প্রথম আসছে আমার একক এবং যৌথ বইগুলো। প্রথম ছাপার অক্ষরে হাতে নিয়েছি আমার ফেসবুক গ্রুপ ‘ভালো থাকি-ভালো রাখি’ র মেয়েদের জীবনের গল্প নিয়ে আমার সম্পাদিত বই ‘হার না মানা একদল অপরাজিতার জীবনযুদ্ধ’ বইটি। গ্রুপের সবাইকে নিয়ে খুব আনন্দের সাথে মনের ভেতর ধুকধুকানি নিয়ে কাটিয়েছি দোসরা ফেব্রুয়ারি।

অপরাজিতা: এবারের বই মেলায় প্রকাশিত বইটি সম্পর্কে জানতে চাই?
মিম্ মি রহমান: একক বইটিতে যে লেখাটি যাচ্ছে তা একজন নারী চিকিৎসকের জীবনের ছোট বড় ঘটনা নিয়ে লেখা। যেখানে একদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন এবং সিঙ্গেল মা হিসেবে জীবনে ব্যালেন্স করে চলছে ডা.মম। আমার সম্পাদিত বইটিতে যাচ্ছে ২৩ জন নারীর জীবনের সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা জীবনের গল্প। ‘স্টেথোস্কোপ রেখে কীবোর্ডে’ যে লেখাটি যাচ্ছে তাতে কর্মস্থলে একজন নারীর বিড়ম্বনা নিয়ে ছোটগল্প লেখার চেষ্টা করেছি।

অপরাজিতা: লেখার সাথে সম্পর্কিত স্মরণীয় কোন ঘটনা?
মিম্ মি রহমান: স্মরণীয় ঘটনা হচ্ছে এই লেখালেখির বদৌলতে অনলাইনে অনেক মেয়ের সাথে কথা হয় যারা আমাকে কখনো দেখেনি কিন্তু আমার লেখার ভেতর দিয়ে নিজেকে খুঁজে পায়, ভালোবাসে।

অপরাজিতা: আপনার লেখা নিয়ে আগামীর পরিকল্পনা কী?
মিম্ মি রহমান: লেখালেখি নিয়ে আপাততঃ পরিকল্পনা নিজের ভালো লাগে বলেই লিখছি। যতদিন ভালো লাগবে লিখব। আরো দায়িত্বশীল হতে চাই লেখালেখি নিয়ে। আরো অনেক বই পড়তে চাই লেখালেখির প্রস্তুতি হিসেবে।

অপরাজিতা: আপনার পছন্দ এবং অপছন্দের বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাই?
মিম্ মি রহমান: পছন্দ করি নির্জনতা, একাকীত্ব, নির্ঝঞ্ঝাট, সরল জীবন কাটাতে। বই পড়তে, গান শুনতে, মুভি দেখতে এবং আহ্ নাফের সঙ্গ।
অপছন্দ– জটিলতা এবং মিথ্যে কথা।

অপরাজিতা: তরুণদের উদ্দেশে কিছু বলুন!
মিম্ মি রহমান: হাহাহা আমি নিজেই তো এখন তরুণ। আমি কি বলব ? যখন প্রবীণ হব তখন নাহয় বলব।

অপরাজিতা: উপরের প্রশ্নগুলো ছাড়াও এমন কোনো বিষয় আছে যা আপনি বলতে চান?
মিম্ মি রহমান: একটা কথা বলতে চাই। মরে না গেলে জীবনে শেষ বলে আসলে কিছু নেই। প্রতিটা মুহুর্তেই সম্ভব ঘুরে দাঁড়ানো, যদি আমি তা চাই। নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং ভরসা করতে শিখলে জীবন মিরাকল ঘটাতে বাধ্য।

ধন্যবাদ, অপরাজিতার সবাইকে আমার মত সামান্য মানুষের সাক্ষাৎকার নেবার জন্য। ভালো থাকবেন সবাই। ধন্যবাদ অপরাজিতাকে।

ফাতেমা শাহরিন
সহ-সম্পাদিকা(অপরাজিতা)
web:http://oporajitabd.com
facebook: https://www.facebook.com/Oporajitabd/

Facebook Comments