banner

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 537 বার পঠিত

 

প্রতিটি সন্তানকে ভালবাসুন সমানভাবে….

শিশুর আগমনী বারতা অবশ্যই সবাইকে করে আনন্দে উদ্বেলিত। কিন্তু, যদি তা হয়,দ্বিতীয় /তৃতীয় সন্তান,তবে আনন্দের পাশাপাশি তা কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করে আমাদের।প্রথম সন্তান দ্বিতীয় সন্তানকে কিভাবে নেবে,
তা নিয়ে বাবা মাদের চিন্তার শেষ নেই। এটা খুব কমন যে,

প্রথম সন্তান-
প্রচন্ড রেগে যাচ্ছে,বলছে,ওকে রেখে আসো/ফেলে দিয়ে আসো /তোমরা আমাকে একটুও ভালোবাসো না।
আবার,বাবামার অগোচরে,বড় সন্তান অনেক সময় ছোট সন্তানকে মার দিয়ে বসে।
কিছু ক্ষেত্রে,এমনও হয়,বড় সন্তানের (বয়স ৩-৬) খাওয়া,ঘুম,টয়লেট ট্রেনিং সব অভ্যাস এলোমেলো হয়ে যায়।
বাবা মায়েরা হয়ে পড়েন দিশেহারা।কি করবেন।একদিকে নতুন শিশুর জন্য মায়ের শরীরও থাকে ক্লান্ত।বাবাও দৌড়াদৌড়ি করে হয়ে থাকেন বিধ্বস্ত।
এসময়,বাবা মায়ের একটু চতুর সিদ্ধান্তই দুই সন্তান লালন পালনে করতে পারে বেশ সাহায্য।কিছু টিপস

ছোট সন্তানের আগমনী বারতা শুরু থেকেই আপনার বড় সন্তানকে দিন।হতে পারে গল্পের ছলে/রোল প্লেয়িং খেলার মাধ্যমে/পুতুল খেলার ছলে।ওকে তৈরি করুন,হুট করে যেন কিছু না হয়।

বড় সন্তান রেগে গেলে,তার রাগ প্রকাশ করতে চাইলে,তার কথা শুনুন।যেমন,সে যদি,বলে,আমার কোন ভাই বোন না থাকলেই ভালো হত।আপনি বলুন,আসলেই,আমারো ছোট বেলায়,এমন মনে হত।মাঝে মাঝে,বাবা মা শুধু আমারো একা পেতে ইচ্ছে করত। – আপনার এটুকু কথা,এটকু আশ্বাস আপনার সন্তানের মন ভালো করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

কখনওই বড় সন্তানকে জোড় করবেন না,ছোট সন্তানকে ভালোবাসার জন্য।ওকে নিজে বুঝতে দিন।একা থাকলে/কিছু না করার মত সময়ে,ওরা দুজন খেলার সংগি হবে, এটা উপলব্ধি করতে দিন।

প্রতিটা শিশুরই ইমোশনাল ব্যাগটা ভালোবাসায় পূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। এটা কঠিন,যে,একে তো নতুন শিশুর ঝক্কি,তার উপর,আরেকজনের রাগ জেদ সহ্য করা।কিন্তু,আমাদের বাবা মায়েদের নিজেদের সন্তানদের ভালোর জন্য আমাদের সহ্য শক্তি বাড়াতে হবে।প্রতিদিন বড় সন্তানকে আপনার একান্ত কমপক্ষে দশ মিনিট সময় দিন।শুধু আপনি আর সে। তাকে বলুন আপনি তাকে ভালোবাসেন।তাকে জড়িয়ে ধরুন।আদর করুন।তার কথা,গান,কবিতা শুনুন,ঠিক আগের মত করে।

দু’সন্তান এক সাথে কান্না জেদ করলে,আপনি নিজে আগে,বড় করে একটু শ্বাস নিন।তারপর, বড় সন্তানকে আদর করুন,এবং,তাকে বলুন,ছোট্ট বাবু কষ্ট পাচ্ছে,ওকেও আদর করতে হবে।দু জনকে এক সাথেই আদর করতে চেষ্টা করুন।

মূলত,ছোট শিশুটি বুঝবেনা/মনে রাখবে না,আপনি কাকে আগে কোলে নিয়েছেন, আদর দিয়েছেন। কিন্তু,আপনার বড় সন্তানটি মনে রাখবে।এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।আপনার প্রতি আস্থা বাড়বে।আর একবার,সে তার আস্থা ফিরে পেলে,ছোট ভাই/বোনটিকেও সে আপন করে নিবে।

ছোট সন্তানের কাজে বড় সন্তানকে নিয়োজিত করুন/হতে দিন।এবং তার প্রশংসা করুন এ জন্য।তাকে আরো উৎসাহ দিন।আর বড় সন্তান যদি,তার সব কাজে খুব বেশি আপনার সাহায্য চায়,নিজেকে অনবরত বলতে থাকুন,এ সময় খুব দ্রুতই পার হয়ে যাবে।আর সন্তানকে সাহায্য করতে চেষ্টা করুন।

দুই সন্তানকে কাছাকাছি রাখতে চেষ্টা করুন।ধরুন, বড় জনকে,গল্পের বই/খেলনা দিয়ে ছোট জনের কাছেই রাখুন।আপনি দুজনকে দেখতে থাকুন।

বড় সন্তান,ছোট সন্তানকে চিমটি/খামচি দিতে চাইলে/মারতে চাইলে,আপনি নিজে দুজনের মাঝে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে দৃঢ় স্বরে বলুন,তুমি ওকে মারবে না।পরে আদর করে,বুঝিয়ে বলবেন।
বড় সন্তানকে শাস্তি /মার দিয়ে কোন লাভ হয় না।এতে তার মনের ক্ষোভ বাড়বে।সে আরো অবাধ্য হয়ে উঠবে।

দুই সন্তানের মাঝে বন্ধুত্ব স্থাপনে আপনার ভূমিকাই প্রধান।বড় সন্তানটির একটিই ভয়,বাবা মা তাকে আর আগের মত ভালোবাসবে না।এর মূল মন্ত্র একটিই,ভালোবাসুন।আদর করুন। গুরুত্ব দিন।

পজেটিভ প্যারেন্টিং
ট্রেইনার গ্রুপ,
লাইফস্প্রিং(মেন্টাল হেলথ ইন্সটিটিউট),ঢাকা
https://www.facebook.com/lifespringinstitute/

Facebook Comments