banner

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: April 15, 2024

 

ভালবাসা দিবসে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন ‘সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে ভালবাসা বিতরণ’

অপরাজিতার নিজস্ব প্রতিবেদন


ভালোবাসা দিবস, ভিন্ন আয়োজন হিসেবে ছিন্নমূল শিশুদের নিয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে নিবেদিত সংগঠন ‘স্কুল অব হিউম্যানিটি’।

গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি রোজ বুধবার কর্মব্যস্ত ঢাকার মোহাম্মদপুর বটতলায় ছিলো উৎসবমুখর এক পরিবেশ। পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী এদিন ছিলো ছিন্নমূল শিশুদের নিয়ে ভালোবাসার উৎসব। তাই সুবিধা বঞ্চিত বাচ্চারা সকাল থেকেই সাজগোছ করে প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।

তাদের ভাষ্যমতে, ভালোবাসা দিবসে তাদের আয়োজনে যা যা ছিল,

★চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ।

★আহারের পূর্বে কিভাবে হাত ধৌত করতে হয় তা ব্যবহারিক ভাবে শিখানো।

★সবার জন্য লাঞ্চ বক্স।

★সবাই একসঙ্গে বেলুন উড়ানো।

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়ক ফখরুল মজুমদার আমাদের আরো জানিয়েছেন যে, ‘আসলে আমরা সবসময় চেয়েছি এই শিশুদের সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসতে। সে থেকেই আমাদের সদস্যরা নিয়মিত কাজ করছে। জেনে খুশি হবেন যে, স্কুল অব হিউম্যানিটি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ পর্যন্ত শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যার্তদের সহায়তা ও ঈদ উৎসব সম্পন্ন করেছে। গত একবছর ধরে আমাদের পথচলা। শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০১৮ এর জানুয়ারী থেকে।

বর্তমানে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ক্লাস শুরু হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে শুরু কথার কথা ভাবছে।
শিক্ষা কার্যক্রমে দুটি প্রদক্ষেপ-

১) যারা পড়াশুনা করতে ইচ্ছুক, তাদেরকে স্পন্সর সংগ্রহের মাধ্যমে নিয়মিত পাঠদান করা।
২) যারা পড়াশুনা করবে নাহ, তাদেরকে অক্ষর জ্ঞান শিখিয়ে কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান।

এছাড়াও স্কুল কার্যক্রম নিয়মিত চালিয়ে নিতে স্কুল অব হিউম্যানিটি ক্যাম্পাস ভিত্তিক দুই টাকা প্রকল্প শুরু করেছে। স্লোগান হলো- ‘রোজ দুই টাকা জমাই
পথ শিশুদের পাশে দাড়াই।’ ছবি এবং তথ্য সহযোগী: ফখরুল মজুমদার।

(http://oporajitabd.com)

 

‘প্রি- টিনেজার ও টিনেজার প্যারেন্টিং’ পর্ব-৩

ফাতিমা খান


বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা মানেই আমার ঘরে অন্যরকম একটা আমেজ । বাচ্চারা স্কুল থেকে ফিরলে ওদের ক্লান্ত চেহারাতেও একটা “তাইরে নাইরে না” টাইপ ভাব দেখি। আমার শত ক্লান্তির মাঝেও ওদের আনন্দ আমাকে পেয়ে বসে, বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ওদের “যা খুশী তাই কর” দিন, রুটিন-ছাড়া, বাধনহারা সময়। আমার বয়সটা ঠুস করে কমে একদম ওদের সমান সমান হয়ে দাঁড়ায়।

বাচ্চাদের মাঝে মাঝে এই ছাড় দেওয়া ওদের অনেক রিল্যাক্স আর রিফ্রেশ করে। আজকাল স্কুল কলেজের পড়াশোনার চাপ এত বেশী থাকে যে ওরা নিজস্ব সৃজনশীলতা প্রায় হারাতে বসেছে। প্রত্যেক মানুষ কোন না কোন বিশেষ গুণ নিয়েই পৃথিবীতে আসে।

এই বিশেষ গুনগুলো লালন করার জন্য একটু অবকাশ খুব দরকার যেন পরের ব্যস্ত ওয়ার্কিং ডে গুলোর জন্য ওদের দেহ ও মন-মস্তিষ্ক সতেজ হয়।

সংসার, চাকুরী, ঘর সামলে ক্লান্ত শুধু আমরাই হই না, ওরাও হয়, কিন্তু ধরন আর কারণটা ভিন্ন। একটু শিকল ছাড়া সময় আর বাবা মায়ের সান্নিধ্য পাওয়ার অপেক্ষাতেই মানসিক ভাবে ওরা ক্লান্ত থাকে, যা ওরাও প্রকাশ করে না আর আমরাও বুঝতে পারি না।

প্রায় বছর দুয়েক আগে আমেরিকায় করা একটা জরিপে দেখেছিলাম পনের বছর বয়স পর্যন্ত দৈনিক অন্তত আধা ঘন্টা মায়ের নিবিড় সান্নিধ্যে থাকা বাচ্চাগুলো মেধাবী হয়।

জীবন কতটা জটিল হলে মায়ের কাছে সন্তানের জন্য আধা ঘন্টা সময়ের দাবী করে জরিপ করা হয়েছিল তাই ভেবে কিছুটা হতাশও হয়েছিলাম।

আজ রাত নয়টায় বাসায় ফিরে দেখি আমার বড় ছেলে পপস্টিকাল স্টিক দিয়ে বাড়ি বানায়, ডুপ্লেক্স বাড়ি। আমার ছোটজন তার বাধ্য এসিস্ট্যান্ট। কোলের উপর বিশাল ওজন ওয়ালা ‘Big book of home plans’ বই নিয়ে ভাইকে গাইড করছে। আমার সারা ঘরের মেঝেতে সদ্য কিনে আনা ক্রাইলিক পেইন্টের ছড়াছড়ি। পপস্টিকাল স্টিকের বাড়ির ওয়াল পেইন্ট হচ্ছে।

আমাকে দেখেই বড়জন বলল, ” আম্মু আমাদের ফিউচার বাড়ির মডেল বানাই। ডুপ্লেক্স বাড়ি হবে আমাদের। নিচতলায় একপাশে নানাভাই নানুমণি থাকবে, আরেকপাশে দাদু। আমরা থাকব উপরে। নাইন সিটারের একটা গাড়ী থাকবে আমাদের। যেখানে যাব সবাই একসাথে যাব। ড্রাইভিং সিটে বসব আমি, পাশে নানাভাই। বাকী সবাই পেছনে।” আমার ছেলের চোখ স্বপ্নময়, মুখ হাসি হাসি।

ছোটজন আবার একটু ভাবুক। সে প্ল্যানের বাকীটা বলে ফেলল ” আর বাড়িটা হবে লেকের পাশে। একটা ওয়ালের পুরাটাই গ্লাসের উইন্ডো হবে। আর থাকবে অনেক বড় এয়ার এলার্ম। বাতাস আসবে আর এলার্ম বাজবে…আআআহহহহ ”(তার চোখ অলরেডি বন্ধ হয়ে গেছে)।

আমিও বোধ হয় হারিয়ে গিয়েছিলাম…!

আজ ওদের কান্ড দেখে নতুন কিছু প্যারেন্টিং এর আইডিয়া পেলাম।

♦ আমাদের প্রি-টিনেজার বা টিনেজার কে তাদের স্বপ্নগুলো লালন করার জন্য একটা মুক্ত ক্যাম্পাস দেয়া উচিৎ যেখানে তারা মনের সব কল্পনা আর রঙ মিশিয়ে স্বপ্ন গড়বে। এই চর্চাই একদিন তার যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্ব গঠনের সোপান হবে।

♦ ওরা নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত দিতে পারে অকপটে, যেগুল আমরা বড়রা সাত পাঁচ ভেবে বা ইগো সমস্যার জন্য হয়ত বলতে পারি না। পরিবারের যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় ওদের পরামর্শও নেওয়া উচিত। ওদের চিন্তার প্রসারতা ও ভালমন্দ জ্ঞান বাড়ানোর জন্যও এটা খুব ভাল উপায় হবে।(চলবে)

লেখিকা কর্মরত:আল হিবা মেডিক্যাল গ্রুপ,জেদ্দা,সৌদি আরব।