banner

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: April 15, 2024

 

মায়ের বুকের দুধের উপকারিতা এবং খাওয়াবার নিয়ম

ডা.মারুফ রায়হান খান

এটা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাই একটি শিশুর জন্মের পর কী খাবে তার আগাম ব্যবস্থা করে পাঠান। গবেষণায় দেখা গেছে যে, সারা বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ মিলিয়ন নবজাতকের মৃত্যু নিবারণ করা সম্ভব, যদি জীবনের প্রথম ১ ঘণ্টার মধ্যেই শিশুকে বুকের দুধ পান করানো যায়। আরও বলা হয় যে, অনূর্ধ্ব ৫ বছরের শিশুমৃত্যুর হার প্রায় ১৩ ভাগ কমিয়ে আনা যেতো শিশুকে জন্মের প্রথম ৬ মাস শুধু বুকের দুধ দেওয়া হতো। এবার আলোচনা করা যাক বুকের দুধের উপাকারিতা নিয়ে।

শিশুর জন্যে উপকারিতা:

১. এটি একটি পূর্ণাঙ্গ খাবার। সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে এর মাঝে।
২. এটি সহজেই হজম হয়, পরিপাকতন্ত্রে ভালোভাবে শোষণ হয়।
৩. জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে।
৪. মায়ের সাথে শিশুর এক আত্নিক-আবেগিক বন্ধন গড়ে ওঠে।
৫. মস্তিষ্কের গঠন সুসংহত হয়। বুদ্ধিমত্তা শক্তিশালী হয়।
৬. বিভিন্ন ধরনের এলার্জি থেকে প্রতিরোধ করে।
৭. যেসব শিশু নিয়মিত বুকের দুধ পান করে, তাদের শৈশবকালীন ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কম থাকে।

মায়ের জন্যে উপকারিতা:

১. জরায়ু গর্ভকালীন সময়ের আগের স্থানে দ্রুত ফিরে যেতে সহায়তা করে।
২. পরবর্তী গর্ভধারণকে বিলম্বিত করে।
৩. স্তন এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

পরিবার এবং সমাজের উপকারিতা:

১. অর্থ বাঁচায়।
২. পরিবার-পরিকল্পনায় সহায়তা করে।
৩. যেসব শিশুকে যথার্থভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো হয়, তাদের হাসপাতালে কম ভর্তি করতে হয়।
৪. শিশুকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। আর একজন সুস্থ শিশুই পারে সমাজকে তার সর্বোচ্চটুকু দিতে।

শিশুকে বুকের দুধ কীভাবে খাওয়াতে হয়?

১. মায়ের হাত দিয়ে শিশুর পুরো শরীরটাকেই সাপোর্ট দিয়ে রাখতে হবে।
২. শিশুর শরীর মায়ের শরীরের সাথে লাগানো থাকবে।
৩. মাথা এবং শরীর সোজা থাকবে।
৪. শিশুর মুখ স্তনের দিকে থাকবে, নাক স্তনবৃন্তের (নিপল) বিপরীতে থাকবে।
৫. শিশুর থুতনি স্তন স্পর্শ করবে।
৬. শিশুর মুখ বড় করে খোলা থাকবে।
৭. নিচের ঠোঁটটা বাইরের দিকে থাকবে।
৮. স্তনের কালো অংশ (এরিওলা) নিচের থেকে উপরের অংশ বেশি দৃশ্যমান হবে।

ডা.মারুফ রায়হান খান
প্রভাষক
ফার্মাকোলজি বিভাগ
এনাম মেডিকেল কলেজ

 

কত ধর্ষিত শিশুর লাশ পেলে কতৃপক্ষ জেগে উঠবে

ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে খুনের সাত ঘন্টা পর উদ্ধার হয় কুমিল্লার চান্দিনায় শিশু কন্যা মীম। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওমর ফারুক (১৯) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক মোস্তফা কামালের ছেলে ওমর ফারুক চান্দিনা পৌরসভার বেলাশহর গ্রামে বাসিন্দা এবং মীমের প্রতিবেশী। ঘাতক পেশায় গাড়ি চালক।

রবিবার রাতে তাকে আটক করার পর গতকাল সোমবার দুপুর ২টায় ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লব কুমার দেবনাথ এর আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় লোমহর্ষক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয় সে। তার জবানবন্দিতে জানা যায়, নিহত শিশু সুবর্ণা আক্তার মীমের পাশ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা গাড়ি চালক ওমর ফারুক।

ঘটনার দিন গত ৬ ডিসেম্বর (বুধবার) সকাল থেকে ওমর ফারুক তার প্রাইভেটকারটি ওয়াশ করছিল। গাড়ি দেখে মীম এগিয়ে গেলে তাকে গাড়িতে চড়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে পুকুর থেকে পানি সরবরাহ করিয়ে গাড়ি ওয়াশ করে চালক ওমর ফারুক। দুপুর ১২টার কিছু পর গাড়ি ওয়াশ শেষে ওমর ফারুক তার কথামত মীমকে গাড়িতে উঠিয়ে বেলাশহর আরএনআর ব্রিক্স ফিন্ড সংলগ্ন স্থানে এনে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এসময় মীম চিৎকার করে অচেতন হয়ে পড়লে গাড়ি চালক ওমর ফারুক তাকে ওড়না দিয়ে শ্বাসরূদ্ধ করে হত্যা শেষে গাড়ির পিছনের বক্সে লুকিয়ে রেখে গাড়িটি তার গ্যারেজে রেখে দেয়।

প্রায় সাত ঘন্টা শিশুটির মরদেহ গাড়িতে থাকার পর সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টায় গাড়ি যোগে পাশ্ববর্তী থানগাঁও গ্রামের মাস্টার বাড়ি সংলগ্ন একটি খালপাড়ে শিশু মীম এর মরদেহ ফেলে আসে। বিষয়টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ওই গাড়ি চালক তার গোপন একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে শিশু মীমের পিতা কোরবান আলীকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে মুহুর্তের মধ্যে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে সীম কার্ডটি ফেলে দেয়।

চান্দিনা থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই কল লিস্টের সুত্র ধরে চান্দিনা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ, উপ-পরিদর্শক (এস.আই) স্বপন কুমার সরকার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এস.আই) ডালিম কুমার মজুমদার সহ ‘টিম চান্দিনা’ অভিযান চালিয়ে উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের বদরপুর-মেহার গ্রাম থেকে তাকে আটক করার পর এ তথ্য উন্মোচিত হয়।

চান্দিনা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, মূলত যৌন তাড়নায় গাড়ি চালক ওমর ফারুক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এর আগে নিহতের মা খাদিজা আক্তার সিমু বাদী হয়ে মীম এর সৎ মা লাভলী আক্তার (৩৫) ও তার ছোট ভাই দেবিদ্বার উপজেলার বাগুর গ্রামের মোস্তফা সরকারের ছেলে সালাউদ্দিন সরকারকে (৩২) আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাদির লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সৎ মা ও মামাকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার পর থেকে শিশু মীমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে পাশ্ববর্তী গ্রামের থানগাঁও ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় শিশু মীমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সুত্র ও ছবি: ইন্টারনেট