banner

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: March 13, 2024

 

‘নারীদের মূত্রনালীতে ইনফেকশান বেশি হয়’ এর কারণ, লক্ষণ, ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় ও করণীয় —ডা.মারুফ রায়হান খান

খুব অহরহ যে রোগটিতে মানুষ আক্রান্ত হয় সেটি হলো মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ বা Urinary Tract Infection (UTI)। সাধারণত মূত্রথলী এবং মূত্রনালীর প্রদাহকেই UTI বলা হয়।
সবচেয়ে বেশি এ রোগটি হয় যে জীবাণু দিয়ে তা হলো Escherichia coli।
এটি নারীদেরই সাধারণত হয়। পুরুষদের কমই দেখা যায়। তবে জীবনের ১ম ১ বছর এবং ষাটোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে হতে পারে।
img20171209_214403
কেন নারীদের বেশি হয়?

-তাদের মূত্রনালী আকারে ছোট হয়।
-এটি মলদ্বারের নিকটবর্তী, তাই সেখান থেকে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।
-প্রোস্টেট গ্লান্ড থেকে পুরুষদের এক ধরনের তরল নিঃসৃত হয় যা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে তার অনুপস্থিতি।

এছাড়া যৌনমিলনের সময় মূত্রনালীতে আঘাত লাগতে পারে তখন পেরিনিয়াম থেকে মূত্রথলীতে জীবাণু প্রবেশ করে এ রোগটি হতে পারে।
img20171209_214533
ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ঃ

– যারা বিভিন্ন কারণে মূত্রথলী পরিপূর্ণভাবে খালি করতে পারেন না।
– মূত্রনালীতে যদি ক্যাথেটার করা থাকে। কিডনী, মূত্রথলি কিংবা মূত্রনালীতে যদি পাথর জমা হয়।
– যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমনঃ মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া নারী ও ডায়াবেটিস রোগী।
img20171209_214633
লক্ষণসমূহঃ

১। হঠাত করে ঘনঘন প্রস্রাব পাওয়া।
২। প্রস্রাব করার সময় খুব জ্বালাপোড়া হওয়া।
৩। প্রস্রাব করার সময় অথবা শেষে তলপেটে ব্যথা অনুভব করা।
৪। প্রস্রাব করা শেষে পুরোপুরিভাবে প্রস্রাব হয়নি, কিছু থেকে গিয়েছে এরকম অনুভব করা।
৫। প্রস্রাব কখনও কখনও ধোঁয়াচ্ছন্ন হতে পারে, দুর্গন্ধযুক্ত হতে পারে।
৬। কখনও কখনও প্রস্রাবের সাথে রক্ত যেতে পারে।
img20171209_214655
চিকিৎসাঃ

উপযুক্ত এন্টিবায়োটিক এক্ষেত্রে প্রধান চিকিৎসা। তবে বলে রাখা ভালো, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজেরা কিংবা ফার্মেসিওয়ালাদের কাছ থেকে যেকোনো এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করা বিপদজনক হতে পারে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে বলা হয়ে থাকে।

যাদের বারবার এই রোগটি হয় তারা এটি প্রতিরোধের জন্য যা করতে পারেন :

১. দিনে ২-৩ লিটার পানি খাবেন।
২. প্রস্রাব আটকে রাখবেন না। যখন প্রস্রাবের বেগ আসবে করে ফেলবেন।
৩. যৌন মিলনের আগে ও পরে প্রস্রাব করে নেবেন। (সঙ্গমের পরে প্রস্রাব করে নিলে এসময় যদি কোনো ব্যাক্টেরিয়া মূত্রনালীতে যেয়ে থাকে তাহলে বেরিয়ে যাবে।)
৪. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন। টয়লেট সেরে পরিষ্কার হবার সময় সবসময় সামনে থেকে পেছনের দিকে পরিষ্কার করবেন।
৫. বেশি করে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। (এটা ইউরিনে অম্লীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে, ফলে ব্যাকটেরিয়া বেশি বৃদ্ধি হতে পারে না।)
৬. মাসিকের সময় পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করবেন। (গ্রামাঞ্চলে হয়তো এখনও অনেকে ন্যাপকিন/প্যাড ব্যবহার করেন না।) নিয়মিত প্যাড চেঞ্জ করবেন। বলা হয়ে থাকে ৬ ঘণ্টার বেশি এক প্যাড না ইউজ করার জন্যে।
৭. কটনের আন্ডারওয়্যার ব্যবহার করবেন। ( কারণ ব্যাকটেরিয়া আর্দ্র জায়গায় বেশি জন্মায়, কটন আর্দ্রতা ধরে রাখে না।)

 

নারীশিক্ষার অগ্রদূত ‘বেগম রোকেয়া’

“অশিক্ষিত চোখ যেই খানে ধূলি-কর্দম দেখে, শিক্ষিত চোখ সেই খানে দেখে মণি-মাণিক্য”

আপনার ধারণায় ঠিক বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের উক্তি এটি। তিনি নারীদের শিক্ষা দিয়ে আলোকিত করার অগ্রদূত। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। খুব অল্প সময়, মাত্র ৫২ বছর তিনি বেঁচে ছিলেন। কিন্তু এই অল্প সময়ে এবং হাজার বাধার মধ্যে তিনি এত কাজ করেছেন যে ভাবতে অবাক লাগে। নারীশিক্ষার জন্য যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা তিনি করেছেন, যে সাহস দেখিয়েছে, সেটা তিনি দেখিয়েন আমাদের অনুপ্রেরণাককারী হিসেবে। বেগম রোকেয়া ১৩৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুগলের হোমপেজে বিশেষ একটু ডুডল প্রদর্শন করা হচ্ছে।

প্রতিবছর ডিসেম্বরের ৯ তারিখ বেগম ‘রোকেয়া দিবস’ পালন করেন বিভিন্ন নারী সংগঠন, এনজিও, সরকারের নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ‘রোকেয়া পদক’ দেওয়া হয় বিশিষ্ট নারীদের। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোকেয়া পদক-২০১৭ প্রদান ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি থাকবেন।
এ বছর রোকেয়া পদক পেয়েছেন
images(81)
চিত্রশিল্পী ‘সুরাইয়া রহমান’, লেখক ‘শোভা রানী ত্রিপুরা’, সাংবাদিক ‘মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদ(মরণোত্তর)’, সংগঠক ‘মাজেদা শওকত আলী’,
সমাজকর্মী ‘মাসুদা ফারুক রত্না’।
আজ তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বেগম রোকেয়া দিবস থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস—ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস, বাংলাদেশের নারীদের এই অনন্যসুযোগ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। সামগ্রিকভাবে সবাই মিলে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তুতি আমরা রোকেয়া দিবস থেকেই শুরু করতে পারি। সমাজের সবাইকে মনে করিয়ে দেয়, নারীমুক্তির জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করার মাধ্যমে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখা যায়। রোকেয়া সেই দিকটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ছবিসুত্র:বিডিনিউজ২৪,গুগল