banner

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: April 2024

 

রান্নার টুকিটাকি টিপস

আপনাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস যা আপনাদের রান্নাকে মজাদার করে তুলবে।
img20171101_014904
ডাল(Pulses): ডালের মজা জ্বালে! অর্থাৎ যত বেশি সময় জ্বালানো হবে স্বাদ বেড়ে যাবে ততই।
যে তরকারীতে লবন বেশি হবে।
img20171101_014753
লবণের স্বাদ(Taste of salt): পরিমিত লবণ তরকারীর আরো স্বাদ বাড়িয়ে দেয়, তাই কিছু উপকরন দিয়ে দেয়া যেতে পারে। যেমন, আলু, টমেটো, শাক ইত্যাদি। আর অন্যক্ষেত্রে (তরকারী বা তরকারী না হলে) যদি ঘরে কয়লা থাকে তবে তার ছোট এক টুকরা পাতিলে দিয়ে দিলে লবন শুষে নিয়ে নিবে।
img20171101_014644
হলুদ বিড়ম্বনা(Yellow spit): হলুদ বেশী হয়ে যায় তবে ছোট একটা কাপড়ের টুকরা চুবিয়ে দিলে কাপড় কিছু হলুদ টেনে নিয়ে নিবে।
img20171101_014538
চিনির যত্ন (Sugar care): চিনিতে পিঁপড়া ধরলে চিনির পাত্রে কয়েকটি লবঙ্গ রাখুন চিনির পিঁপড়া ছেড়ে যাবে।
img20171101_014445
ডিম ভাঁজি(Fold the eggs): ডিম ভাঁজির সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন , ড়িমের খোসার টুকরা যেন না পড়ে … আর ড়িম অবশ্যই কালো কড়াইয়ে ভাজবেন , তাহলে ভাজাটা ভাল হবে । এছাড়া যখন ডিম সেদ্ধ করা হয়, সে সময় পানিতে আধা চা চামচ লবণ দিন। তাতে ডিম তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হবে এবং ডিম ফাটবে না।
img20171101_014721
লবণ বিড়ম্বনা(Salt fermentation): যে তরকারীতে বা অন্য কিছুতে লবন বেশি হবে তাতে আটা বা ময়দার একটা গোল্লা (রুটি বানাতে যে কাই করা হয়) বানিয়ে এক পাশে রেখে দিতে হবে। উক্ত আটা বা ময়দার গোলা বেশ কিছু লবন শুষে নেবে। তবে তিনি আরো জানালেন যে, আলু বা টমেটো দিয়ে ঝোল বাড়িয়ে নিলেও লবন কমে যায়। এছাড়া যে তরকারীতে লবন বেশি হবে তাতে কিছু আলু কিংবা কুমড়ার শাক দিলে লবন কমে যাবে। তবে তিনি ছোট বেলায় উনার মায়ের কাছ থেকে দেখেছেন, তরকারীতে লবন বেশি হলে কয়লার টুকরা দেয়া হত।
img20171101_014351
কর্ণ ফ্লাওয়ার(Corn Flowers): তরকারির ঝোল ঘন করতে চাইলে কিছু কর্ণ ফ্লাওয়ার পানিতে গুলিয়ে নিয়ে ঢেলে দিন। লক্ষ্য রাখবেন কর্ণ ফ্লাওয়ারের দ্রবণটি যেন ভালমত তরকারির সাথে মিশে যায়।

 

আজ চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা -২০১৭ এর প্রিলিমিনারির ফলাফল দিয়েছে

চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা – ২০১৭ এর নির্বাচিতদের ফলাফল এর রেজাল্ট বিজ্ঞপ্তি

আজ মঙ্গলবার ১৪তম নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি রেজাল্ট প্রকাশ করবেন। শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়ে নানা জটিলতা থাকা সত্ত্বেও ১৪ তম বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা স্কুল, স্কুল -২ এবং কলেজ পর্যায়ের প্রিলিমিনারী শেষ হয়েছে গত মাসের আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে, লিখিতপরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ডিসেম্বরের ১ তারিখ।
১৪ তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার পাসের হার গতবারের তুলনায় অনেক কম মাত্র ৩৮%.

সূত্র জানায়, ফলাফল জানতে ভিজিট করুন- http://ntrca.teletalk.com.bd/result/ঠিকানায়।

নিউজ:https://www.facebook.com/Oporajitabd/

 

৯৮ বছর বয়সী মা দেখাশোনা করছেন ৮০ বছর বয়সী ছেলেকে

সময়ের প্রয়োজনে, ভালোবাসার ফেরিওয়ালা ৯৮ বছরের মার দায়িত্ব এসেছেন তার ৮০ বছরের ছেলে টম। এমন একটি চমৎকার ঘটনা ঘটেছে লিভারপুলের মোস ভিউ কেয়ার হোমে।
ছেলের প্রতি ভালবাসা নাকি মায়ের প্রতি তীব্র হৃদয়ের টান। কতখানি ভালোবাসা লুকায়িত? নিজের জীবনের থেকেও বেশি। বয়স যেখানে মুখ্য বিষয় না।
৮০ বছর বয়সী ছেলেটির এখন দেখাশোনা করার জন্য ৯৮ বছর বয়সী মা।
এই সর্বোচ্চ সন্মানিত মা অ্যাড কেটিং। অ্যাড কেটিং এবং তার ছেলে টম লিভারপুলের মোস ভিউ কেয়ার হোমে থাকেন।
৯৮ বছর বয়েসী মা কাছে চলে আসেন ৮০ বছর বয়েসী ছেলে তার আরও ভাল দেখাশোনা করার জন্য একটি কেয়ার হোমে।
টম ২০১৬ সালে লিভারপুলের মোস ভিউ কেয়ার হোমে আসেন কারণ তিনি আরও শারীরিক এবং মানসিক যত্ন এবং সমর্থন প্রয়োজন অনুভব করেন এবং এক বছর পর তার মা তার জ্যেষ্ঠ পুত্রের দেখাশোনা করার দায়িত্ব পালন করছেন।
“আমি প্রতিটি রাতে আমার সন্তান টমকে শুভকামনা ব্যক্ত করি এবং আমি শুভ কামনা প্রকাশ করি সকালকেই।” কিটিং এ কথা বলেন।
টম বলেন, “যখন আমি আবার আমার মামের বাহু দ্বারে ফিরে আসি তার বাহু প্রসারিত হয় এবং আমাকে ভালবাসার টানে আলিঙ্গন করেন কাছে রেখে দেন যত্নে। You never stop being a mum”। তিনি আরও বলেন, আমরা এখানে মা ছেলে ভাল আছি। এবং আনন্দে দিন কাটছে আমাদের।
কেয়ার হোমের ম্যানেজার ফিলিপ ড্যানিয়েলস বলেন যে, অবিচ্ছেদ্য জোড়া। তিনি বলেন, “একদম বাড়ির মত এরূপ যত্ন মায়ের তার সন্তানের প্রতি, একসঙ্গে দেখতে খুব কমই দেখা যায়।”

সুত্র: The Independent.

 

বিবেকের পাল্লা

কোরবানির গোস্ত মাপা দেখছি
আর ভাবছি ভিন্ন প্রেক্ষাপট,
এক পাল্লায় মানবতা আর
অন্য পাল্লায় জাতীয় স্থায়ী সংকট
রোহিঙ্গাদের বাংলার মাটিতে
দিতে চাই স্থান।
মানবতা যখন ডুকরে কাঁদে
বধির বিশ্ব বিবেকের কান।

ঠিক তার বিপরীতে শংকিত জাতি
ঠাঁই দিলে এরাই হবে জাতির ক্যান্সার
বাংলার ভূমি দখল করে-
বানাবে হয়ত মাদকের ভান্ডার।

এক পাল্লায় মানবতা বিবেক
অন্য পাল্লায় সংশয়
দোদুল্যমান পাল্লাটা যে
স্থির করা দ্বায়।
কোরবানি দিব কাকে?
জাতীয় বিবেক?
নাকি জাতির ভবিষ্যত?
পারছিনা আর মেনে নিতে
দোদুল্যমান প্রেক্ষাপট।

বিবেক যদি দেই কোরবানি
জীবনটাই তো বৃথা
সব ভাবনা বাদ দিয়ে
এসোনা দেখাই মানবতা।

লিখেছেনঃ শরীফা সীমা

 

মুক্ত আলোচনায় বক্তারা – “রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ এখন সময়ের দাবী “

মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি,অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকট। এই সংকট মোকাবিলায় আর্ন্তজাতিক ভাবে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারের কুটনৈতিক তৎপরতা আরো জোরদার করা দরকার। সেই সাথে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরা যাতে এদেশে কোন ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে না পরেন, সেই দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

গত ২৮ অক্টোবর সকাল এগারটায় বাংলাদেশ সেন্টার ফর উইমেন সলিডারিটির উদ্যোগে, ঢাকায় অবস্থিত , মহিলা সমিতির আইভি রহমান হলে, “নির্মম গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের প্রতি করনীয় এবং পবিত্র হজ্বব্রত পালনের স্মৃতি অভিজ্ঞতা” শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

স্বনামধন্য সঙ্গীত শিল্পী ফাতেমা-তুজ-জোহরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত , মুক্ত আলোচনা সভায়, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- হেল্প এজ ইন্টারন্যাশনাল এর বোর্ড মেম্বার(জাতিসংঘের সাবেক সিডো সদস্য ও বিটিভির সাবেক ডিজি) ফেরদৌস আরা বেগম, বার্ড-এর সাবেক ডেপুটি ডিরেক্টর নুরুন্নাহার কবীর, বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্টস ফোরামের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র সাংবাদিক রোজী ফেরদৌস , বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্টস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দৈনিক দিনকালের সাবেক কুটনৈতিক প্রতিবেদক মাহমুদা চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মরিয়ম মানসুর,সমাজসেবা মূলক কাজের সাথে যুক্ত লুৎফুন্নেসা ও বিভিন্ন অঙ্গনের এবং পেশার সাথে যুক্ত নারীরা।

আলোচনা সভায় হেল্প এজ ইন্টারন্যাশনাল এর বোর্ড মেম্বার (জাতিসংঘের সাবেক সিডো সদস্য ও বিটিভির সাবেক ডিজি) ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, “রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে যে ভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে তা ইতিহাসে বিরল। মিয়ানমার সরকারের এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। সারা বিশ্বের সকল মানুষ এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের এই মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মিয়ানমার এর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে সম্মিলিত ভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। আমার প্রস্তাবনা হলো, ১. মিয়ানমার তাদের মাতৃভূমি। সেখানে সসম্মানে, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে, তাদের ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। এর বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা। ২.যতদিন তারা এদেশে আছে, সরকার মানবিক দায়িত্ব নিয়ে জায়গা দিলেও, আমাদের সব বাংলাদেশীর পক্ষ থেকে তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া। আমরা ১৬ কোটি মানুষ। ১ টাকা করে দিলেও ১৬ কোটি টাকা হয়ে যাবে। ৩.রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে নাকি অনেক শিশু ওতরুণীরা হারিয়ে যাচ্ছে। এখানে নারী ও শিশু পাচারকারীরা যাতে তাদের উদ্দেশ্য সফল না করতে পারে, তাই সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যতদিন তারা নিজেদের দেশে ফিরে যেতে না পারে, ততদিন পর্যন্ত।”

বার্ড-এর সাবেক ডেপুটি ডিরেক্টর নুরুন্নাহার কবীর বলেন, “নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে যাওয়া কতটা কষ্টের তা আমরা ‘৭১ সাল থেকেই জানি। আরাকানে রোহিঙ্গাদের উপর হত্যা, ধর্ষণসহ যে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে তা যে কোন দেশে যুদ্ধ ঘোষণা করা হলে , সেখানেও এত নৃশংসতা দেখা যায় না। তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের বসবাসের স্থানগুলো যেন নিরাপদ হয় এবং এখানে কোন নারী ও শিশুরা যেন বঞ্চনার শিকার না হয় , তাদের সম্পদ, অর্থ যেন কেউ হাতিয়ে নিতে না পারে , সে দিকে সরকার কে লক্ষ্য রাখতে হবে।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্টস ফোরামের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজী ফেরদৌস বলেন, “রোহিঙ্গা নারী, শিশুসহ সকলের মানবিক বিপর্যয়ের খবরে আমাদের অন্তরে প্রতিনিয়ত রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। এ জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি নানাভাবে চাপ প্রদান সহ প্রয়োজনে তাদের শাস্তি প্রদানের জন্য বিশ্বের সকল দেশকে এগিয়ে আসতে হবে। শত শত নারী গর্ভবতী দেখা যাচ্ছে। এত নারী কেন গর্ভবতী তা নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন ছিল। জানা গেল ধর্ষণের ভয়ে তারা গর্ভধারণ করে। কী সাংঘাতিক ব্যাপার! প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ আসছে সে জন্য আমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আর হজ্জ্বের স্মৃতিচারণ প্রসঙ্গে বলবো, এটা আমার স্বপ্ন পূরণের অভিজ্ঞতা। ঐ পবিত্র ভূমিতে গেলে মন অন্যরকম হয়ে যায়। ঈমানের মজবুতি আসে। প্রত্যেক সামর্থ্যবানের হজ্জ্ব করা উচিত। ”

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মরিয়াম মানসুর বলেন, “আমি এখন খবর পড়তে পারি না, খবর দেখতে পারি না আমার কষ্ট হয়। সকল ধর্মে মানবহত্যা নিষিদ্ধ এবং মহাপাপ তাহলে কেন এই হত্যাকাণ্ড? শিশুদের পর্যন্ত হত্যা করা হচ্ছে তাদের তো কোনো দোষ নেই। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।”

বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্টস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদা চৌধুরী বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতিকে আরো মজবুত করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসঙ্ঘের মাধ্যামে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। বলা হচ্ছে ১০ লাখ রোহিঙ্গা এসেছে। এখনও আসছে। আমাদের দরিদ্র এই দেশ এত মানুষের ভার কীভাবে সহ্য করবে? এর একটা স্থায়ী সমাধান করতে হবে। আজ সমগ্র বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেক দেশ আবার বাংলাদেশের উপর রোহিঙ্গা ইস্যুকে জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য অনেক মুসলিম দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরব ভূমিকা পালন করছে। তাই, আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টির বিকল্প নেই ।”

সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট সংঙ্গীত শিল্পী ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, ” হেমন্তের এই সুন্দর সকালে, আমাদের কিছু অসুন্দর কথা বলতে হচ্ছে। ১৯৭১ সালে আমরা ছিলাম শরণার্থী। আমাদেরটা ছিল মুক্তিযুদ্ধ। আর রোহিঙ্গাদের এটা হচ্ছে মৃত্যুযুদ্ধ। এখানে কোন যুদ্ধ নেই। আছে শুধু মৃত্যুর খবর। বর্তমান বিশ্ব কী করবে তা জানি না, তবে আমাদের নির্লিপ্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের এই দুটি হাত খুব দুর্বল। এই হাত দুটো দিয়ে কিছু করতে পারছি না। আমাদের আন্তর্জাতিক সমর্থন দরকার। তা না হলে তো আমাদের পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের মনটা অনেক বড়। কিন্তু, সামর্থ্য ছোট । রোহিঙ্গাদের প্রতি সাহসিকতাপূর্ণ ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তাদের দায়িত্ব নেয়াটা খুব সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু, এর শেষ কোথায়? তাদের তো নিজেদের বাড়িতে নিরাপদে, সসম্মানে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। হজ্জ্বের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, হজ্জ্ব করতে পারা আল্লাহ্‌র এক বিশেষ নেয়ামত প্রাপ্তি। আমার রাসুল যে পথে হেঁটেছেন, আমি সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছি, যে ধূলো বালিতে তার স্মৃতি জড়িয়ে আছে, তার উপর দিয়ে আমি হাঁটছি এ এক বিস্ময়কর আনন্দ। এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
received_10208823477658840
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ইয়াসমিন মুশতারীর গান পরিবেশনায় এক অন্যরকম আবহ তৈরী হয়। উপস্থিত সবাই অনুরোধ করলে, সভাপতি নিজের লেখা একটি নাতে রাসুল ও একটি নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সব শেষে একটি কেক কাটা হয়। এতে বাংলাদেশ সেন্টার ফর উইমেন সলিডারিটির মুক্ত মত প্রকাশ অনুষ্ঠানে আনন্দ এক ভিন্ন মাত্রা পায়। আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চীফ কো অর্ডিনেটর শাহিন আখতার আঁখি , উইমেন জার্নালিষ্টস ফোরামের প্রচার -প্রকাশনা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও অনুষ্ঠানের কো অর্ডিনেটর খাতুনে জান্নাত কণা, সাব কো অর্ডিনেটর আকলিমা ফেরদৌসী ও মুশফিকা সাদিয়া। উপস্থাপনায় ছিলেন-টিভি সংবাদ উপস্থাপক ফারজানা মাহবুবা।

 

নৈঃশব্দ্য

চলো ডুব দেই নৈঃশব্দ্যে,
চুষে নেই স্থির মুহূর্তগুলো।

পৃথিবীর বুকে অন্তত একবার
সবকটি ভাষার গলা টিপে ধরে
চলো নীরব হই, একটু দাড়াই।

দেখো, মুহূর্তটা কেমন অচেনা হয়ে উঠবে,
কোন তাড়া নেই, ইঞ্জিনের শব্দ নেই,
একটা আকস্মিক বিস্ময়ে একত্রিত হবো সবাই
আমি, তুমি, সে।

তিমিদের গায়ে আঘাত করা
থামিয়ে দিবে শীতল সাগরের মাঝিরা,
লবণ জমানো সেই লোকটা থেমে গিয়ে
চোখ রাখবে তাঁর আহত হাতের উপর।

যারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল যুদ্ধের,
বিষাক্ত গ্যাস, আর আগুনের যোগান দিচ্ছিল যারা,
আচমকা জিতে যাবে তাঁরা কোন মৃতপ্রায় উত্তরজীবী ছাড়াই।
পরিষ্কার জামা গায়ে জড়িয়ে
এরা হেঁটে বেড়াবে ভাইদের সাথে,
ছায়ার নিচে, চুপচাপ।

চলো লেনদেন সেরে ফেলি
মৃত্যুর সাথে।

চলো একবার — না করি কিছুই,
হয়তো এই বিশাল নীরবতা
ব্যঘাত ঘটাবে আমাদের বিষণ্ণতায়।
হয়তো পৃথিবী আমাদের শেখাবে—
যখন নৈঃশব্দ্যে থেমে যায় সবকিছু,
পর মুহূর্তেই জেগে উঠে জীবন।

Shariful Islam
অক্টোবর ২৫, ২০১৭, ঢাকা ।
[উৎসাহ, নেরুদা’র কিপিং কোয়াইট]

 

“ডুব” বিশিষ্ট্য ব্যক্তিদের স্ট্যাটাস

ডুব হচ্ছে ২০১৭ সালের একটি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। ধারণা করা হচ্ছে এটি জীবনী সম্পর্কিত একটি নাট্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি লিখেছেন ও পরিচালনা করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। চলচ্চিত্রটির প্রযোজনা করবেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার আবদুল আজিজ, এসকে মুভিজ এবং ইরফান খান ফিল্মসের ইরফান খান। চলচ্চিত্রটির শিল্পীগন হলেন ইরফান খান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, রোকেয়া প্রাচী এবং পার্ণো মিত্র। গল্পটি তৈরি হয়েছে পরিবারের প্রধান সদস্যের মৃত্যুর পরে দুইটি পরিবারের অটুট বন্ধনের কাহিনী নিয়ে। যেখানে একজন মধ্যবয়স্ক লেখক এক তরুনীর প্রেমে পড়েন যিনি তার মেয়ের বন্ধু। চলচ্চিত্রটির প্রধান ভাষ্য হচ্ছে যে,”মৃত্যু সবসময় সব কিছু নিয়ে যায় না,অনেক সময় কিছু দিয়েও যায়।”
ডুব মুভি নিয়ে সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে ফারুকী আইএনএসকে জানায়, “ডুব: নো বেড অফ রোজেস’ সিনেমাটি তৈরি করা আমার জন্য মোটেও সহজ ছিলো না। সিনেমার নামের মতই এটি ছিলো কষ্টসাধ্য, অর্থাৎ ‘নো বেড অফ রোজেস’। তবে দেশের বাইরে সিনেমাটি প্রশংসিত হয়েছে দেখে খুবই ভালো লাগছে।”

এ সময় তিনি আরও বলেন, “ডুব’য়ের মুক্তি নিয়ে এ পর্যন্ত যত বাধা ও সমস্যার মুখে পড়েছি আজকের আয়োজনে দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আমি সব ভুলে গিয়েছি। দেশের বাইরে অগণিত দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসায় সিক্ত হয়ে খুবই ভালো লাগছে। এখন অপেক্ষায় আছি কবে বাংলাদেশের দর্শক ছবিটি দেখতে পাবে।”

ডুব নিয়ে বিশিষ্ট্য ব্যক্তিরা,

ইরফান খান বলেছেন, ” ‘ডুব’ করার একমাত্র কারণ ফারুকী ”

Nusrat Imrose Tisha…পেজ থেকে,
“ডুব চলছে…..।

Anisul Hoque স্যারে পেজ থেকে,
“দেশের চাইতে বিদেশেই তো হলের সংখ্যা বেশি। আগামীকাল বাংলাদেশের সিনেমার বিশ্বযাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। অভিনন্দন,
সংশ্লিষ্ট সবাইকে।”

গায়ক লুৎফর হাসান তার ফেসবুক পেজে লেখেছেন,
“Mostofa Sarwar Farooki ভাই, কিছু মন খারাপের সংবাদেও আনন্দ আছে। খোঁজ নিলাম, দৌড়ঝাঁপ করলাম। ডুবের টিকেট শেষ। দমবন্ধ অবস্থায় আছি। হয়তো ম্যানেজ হবে, তবে এই টিকেট ফুরিয়ে যাওয়ার খবরে আনন্দিতই। শুভকামনা ভাই ”

কবি হাসনাউল রেজা ফিরোজ ফেসবুক স্ট্যাটাস,
“জাভেদের জীবনে এই দুই নারীর প্রভাব সবচেয়ে বেশী।একজন নুসরাত ইমরোজ তিশা, যিনি জাভেদের বড় মেয়ে।আরেকজন পার্নো মিত্র, যিনি জাভেদের দ্বিতীয় স্ত্রী।
বলার অপেক্ষা রাখেনা,দুজনেই অত্যন্ত অত্যন্ত সু অভিনেত্রী।
তাদের অভিনয় দেখার জন্য হলেও হলে গিয়ে দেখতে হবে “ডুব”…
#ডুব চলছে আপনার পাশের প্রেক্ষাগৃহে”

আহারে জীবন, আহা জীবন, জলে ভাসা পদ্ম জীবন।’
ডুব…..

 

নামে কি আসে যায়,কর্মই নামকে বড় করে -২

বর্তমানে আর একটি নাম অত্যন্ত জনপ্রিয় সেটি আনিসুল হক। হুমায়ুন নামধারীদের নামের শেষ অংশ মিল ছিলনা কিন্তু আনিসুল হক নামে যে তিনজন আছেন তাদের নামের কোথাও কোন বেমিল নেই।

১। আনিসুল হক (সাহিত্যিক)। (Anisul Hoque) । আজ যাকে আমরা সাহিত্যিক হিসেবে দেখছি তিনিও হুমায়ুন আহমেদের মতই অনেক গুলো প্রতিভার অধিকারী। বুয়েট থেকে পাশ করা এই অসাধারণ মানুষটি ইঞ্জিনিয়ারতো বটেই তার সাথে সাংবাদিক,সাহিত্যিক,নাট্যকার এবং বেশ ভাল মানের আর্টিস্টও বটে।
মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বদেশ প্রেম নিয়ে লেখা তার রচনা গুলো আমাদেরকে দেশ প্রেম শেখায় নিয়ে যায় উত্তাল সেই দিনগুলোতে। মনের মধ্যে বীরত্ব জন্ম দেয়।
প্রেমের উপন্যাস গুলোতে আমাদের জীবনের চতুর্থপর্বে এসেও প্রেম জাগায়,মনে হয় যেন এই বৃদ্ধ বয়সেও আমি এক তরুন কলেজ স্টুডেন্ট।

নিছক ছোটদের আনন্দ দেয়ার জন্য তিনি যখন গুড্ডু বুড়োকে নিয়ে নানা কান্ড ঘটাতে লাগলেন আমরা অবাক হয়ে দেখলাম সেটা কেবল ছোটরাই নয় সেই সাথে বড়রাও গো গ্রাসে গিলছে।

তার লেখা গদ্য কার্টুন কার না ভাল লাগে।

আচ্ছা ধরুন সব কিছু বাদ। এই আনিসুল হক বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যে মানের ভক্ত তার বিনিময়ে তার স্থান আমার দৃষ্টিতে এক নাম্বার হবে এটাইতো স্বাভাবিক। তিনি বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশ দলকে যেভাবে সাপোর্ট করেন তার মুগ্ধকর।

২। আনিসুল হক (মেয়র)। এই আনিসুল হক সাহিত্যিক আনিসুল হকের থেকে বয়সে প্রবীন।তিনি আগে লাইম লাইটে ছিলেন না। ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাকে চিনতাম এবং তার সাথে কয়েকবার আমার দেখাও হয়েছে। তখন তাকে আমার ঠিক সেরকম লাগেনি। বরং তিনি যখন মেয়র পদে দাড়ালেন আমার মনে হলো এই লোকটা নির্বাচিত হলে কিছুই করবেন না।

আহ আমার ধারণা ভুল প্রমান করে দিয়ে তিনি নির্বাচিত হওয়ার সামান্য এ কয়দিনের ব্যবধানে যা করেছেন আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান বলে যে প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ থেকে সাদেক হোসেন খোকাও তা করেন নি। হ্যা আমি দেখেছি একই সাথে এলাকার সব রাস্তা খুড়ে কাজ শুরু করেছেন। ভোগান্তি হচ্ছে কিন্তু তিনি কোন কাজ ফেলে রাখেন নি। তর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচিত হওয়ার পর তার সাথে দেখা হলো। আমার মত সাধারণ মানুষকে হতবাক করে দিয়ে তিনি হাসিমুখে কথা বললেন। এবং আমার মনে হলো নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি যতটা বন্ধুভাবাপন্ন ছিলেন নির্বাচিত হওয়ার পর তা বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুন। এবং দেখবেন অবধারিত ভাবেই তিনি আপনার মনেও জায়গা দখল করে নেবে। যদিনা আপনি ঘোর বিরোধী না হন।

৩। আনিসুল হক (আইন মন্ত্রী)। তিন আনিসুল হকের মধ্যে শেষ জন হলেন বয়সে সব থেকে প্রবীন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আইনমন্ত্রী হওয়ার পর অনেক কিছু হয়েছে। অনেকের চোখ ভিজে উঠেছে আনন্দ অশ্রুতে এবং কারো কারো হয়তো বেদনায়।

তাই দেখা যাচ্ছে বাংলার আকাশে হুমায়ুন আর আনিসুল হক নাম দুটোতে একাধিক ব্যক্তি খ্যাতিমান হয়েছেন মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

তাহলে আসুন আমি আপনি আমাদের সন্তানদের নামও ওরকম কারো সাথে মিলিয়ে রাখলে সন্তান তার মত হবে এই ধারনা থেকে বেরিয়ে আসি এবং তাদের মেধা বিকাশে আন্তরিক সহযোগিতা দেখাই। হয়তো সহযোগিতা পেলে সেই ছেলেটিই একদিন নাম কামাবে।
কুসুম কুমারী দাশের সেই কবিতার মত
“আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে?
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।”

হ্যা হুমায়ুন আর আনিসুল হক নামধারী মানুষ গুলো শুধু কথায় নয় কাজে বড় হয়েছেন। তাদের জন্য স্যালুট।
………………………..
#জাজাফী
উত্তরা

 

নামে কি আসে যায়,কর্মই নামকে বড় করে-১

ধরুন, শখ করে আমার ছেলেটির নাম রাখা হল আইনস্টাইন কিংবা মুশফিকুর রহিম! তাই বলে আমার ছেলেটাও ওই নাম পেয়ে তর তর করে বেড়ে উঠবে আর হয়ে যাবে আইনস্টাইন কিংবা মুশফিকুর রহিম এটা ভাবার কোন কারণ নেই। তবে হ্যা তার যদি চেষ্টা থাকে এবং ভাগ্য থাকে তবে সে হয়তো তার নামটাকে বড় করতে পারবে,মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারবে।

অতীতে এবং বর্তমানে একই নাম নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রজন্মে জন্ম নিয়ে কিংবা একই প্রজন্মে জন্মনিয়ে কেউ কেউ একে অন্যকে খ্যাতির দিক থেকে পেরিয়ে গেছে। কখনো কখনো বা তাদের একজনকে অন্যজনের সাথে তুলনা করা বোকামী বলে মনে হবে কারণ এক একজনের ক্ষেত্র এক এক রকম। কিন্তু জগতে কাউকে না কাউকেতো বড় করে দেখতেই হয়।

একদিন যেমন শাহীদ আফ্রিদির রেকর্ডকে মনে হত কেউ ভাংগেই পারবেনা কিন্তু সেটাও ভুল প্রমান করে দিয়ে আরো অনেকেই সেই রেকর্ড ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। ঠিক একই ভাবে কারো কারো খ্যাতিকে ছাড়িয়ে গেছে তারই নামে নামধারি অন্য কেউ।

বাংলাদেশে এমন অন্তত বেশ কয়েকটি নাম আছে যে নাম নিয়ে একই সাথে বেশ কয়েকজন খ্যাতির শীর্ষে আরহোন করেছেন।

প্রথমে আসি হুমায়ুন নামটা নিয়ে। না তাই বলে আমি ইতিহাসের পাতা থেকে সম্রাট হুমায়ুনকে আমার এই ক্ষুদ্র লেখাতে টেনে আনতে চাইছিনা। তিনি বরং ইতিহাসের পাতাতে বসেই আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন যে তাকে রেখেও আমরা অন্য হুমায়ুনদের নিয়ে আলোচনা করতে পারি।

বাংলার আকাশে সম্রাট হুমায়ুন নয় আরো কয়েকজন হুমায়ুন চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছিলেন তারা হলেন ১। হুমায়ুন আহমেদ ২। হুমায়ুন ফরিদী ৩। হুমায়ুন আজাদ ৪। হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী।

সিরিয়াল অনুযায়ি হুমায়ুন আহমেদকে এক নাম্বার স্থান দিয়েছি এটা একান্তই আমার মতামত। চাইলে আপনি তাকে দুই নাম্বার বা চার নাম্বারেও নিয়ে যেতে পারেন। কারণ জানেনতো আকাশে চাদ একটাই। সেই চাদকেই হুমায়ুন আহমেদ দেখলেন অসম্ভব সুন্দর রুপে আবার সুকান্ত দেখলেন ঝলসানো রুটি রুপে আবার প্রেমিক তার প্রেমিকাকে চাদের সাথে তুলনা করতে চায়না কারণ চাদের কলঙ্ক আছে।

তাই প্রত্যেকেরই নিজের চিন্তাকে প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে।

আমি হুমায়ুন আহমেদকে এক নাম্বারে রেখেছি কারণ তিনি কেবল মাত্র একজন সাহিত্যিক ছিলেন না। তিনি প্রথমে বিজ্ঞানে পিএইচডি ধারি ছাত্র তার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেখান থেকে সাহিত্যিক,নাট্যকার,এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা রুপে আবির্ভূত হলেন। বাকিদের মধ্যে এক সাথে এতো গুলো প্রতিভা আমি দেখিনি। ও হ্যা তিনি অসাধারণ ম্যাজিক পারতেন এবং আমাদের প্রিয় জুয়েল আইচকে আমি নিজে বলতে শুনেছি “হুমায়ুন আহমেদ পামিং এ আমার থেকেও ভাল এবং বাংলাদেশে এক নাম্বার!}–(জুয়েল আইচ)।

পামিং হচ্ছে কয়েন হাতে নিয়ে পুর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই দেখানো যায় এমন এক ম্যাজিক যা দিয়ে চোখের নিমিষে কয়েন অদৃশ্য করে ফেলা হয়।
হুমায়ুন আহমেদের ম্যাজিক মুনশি এবং কালো যাদুকর বই দুটিতে ম্যাজিকের অনেক কিছু বলা হয়েছে আর হ্যা তিনি আর্ন্তজাতিক ম্যাজিশিয়ান সোসাইটির সদস্য ছিলেন।
একই সাথে তিনি বেশ ভাল ছবিও আকতেন। এই হুমায়ুন আহমেদকে তাই এক নাম্বার হুমায়ুন বলেই চিনতে চেয়েছি।

* হুমায়ুন ফরিদী একজন কোন মানের অভিনেতা ছিলেন সেটা আমি না লিখলেও অন্যরা নিশ্চই সেটা জানেন। তার অভিনয় শৈলি তার ব্যক্তিত্ব এবং তার আবৃত্তি নিয়ে কারো কোন দ্বিমত আমি কখনোই দেখিনি। ব্যক্তি হুমায়ুন ফরিদিও ছিলেন অসম্ভব সদালাপি।

* হুমায়ুন আজাদকে অনেকেই পছন্দ করেন না। আবার অনেকে শুদ্ধপুরুষ রুপে তাকে দেখেন।
আমি হুমায়ুন আজাদকে দুই তিনটা বই দিয়েই বিবেচনা করতে চাই। “আব্বুকে মনে পড়ে” বইটা পড়ে দেখুন। আমার মনে হয় আপনি না খেয়ে মরে গেলেও কোন দিন বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসার কথা চিন্তাও করতে পারবেন না। এবং যারা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছেন তাদেরকে ওই বইটা জোর করে পড়িয়ে দিন। দেখবেন কাদতে কাদতে গিয়ে সেই দিনই বাবাকে বৃদ্ধাশ্রম থেকে বাসায় নিয়ে আসবে। তার স্ত্রী পুত্র যদি সেটা পছন্দ না করেন তবে হয়তো তাদেরকে এক হাত দেখে নিতেও দ্বিধা করবেনা। আর হ্যা “লাল নীল দিপাবলী” পড়ুন। বাংলা সাহিত্যের জন্মকথা এমন ভাবে লিখেছেন যে আপনি মুগ্ধ না হয়ে যাবেন না। অথচ আপনি কেবল পড়ে আছেন তার “পাক সার জমিন সাদ বাদ” নিয়ে।

* হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী জাতীয় সংসদের স্পিকার ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে তিনিও সফল একজন মানুষ।

এই চার হুমায়ুন বাংলার আকাশে উজ্জল করে রেখে গেছেন তাদের নাম।”

#জাজাফী
উত্তরা,ঢাকা-১২৩০

 

রূপচর্চায় বরফ-লেবু এবং হাটা

ত্বক এবং শরীর যতবেশি সতেজ থাকে তাকে ততবেশি আকর্ষণীয় দেখায়। তাই লেবু ও বরফের পাশাপাশি হাটার কোন বিকল্প নেই। অপরূপ সতেজ ত্বক এবং স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক পদ্ধতি জানা দরকার।

♥দীর্ঘ সময় মেকআপ ধরে রাখতে: মেকআপ শুরু করার আগে এক টুকরো বরফ নিয়ে ভাল করে মুখে ঘষে নিন। যখন দেখবেন জলটা একেবারে শুকিয়ে গেছে, তখন মেকআপ শুরু করুন। এমনটা করলে ফাউন্ডেশন খুব ভাল ভাবে ত্বকে শোষিত হয়।

♥সাধারণভাবে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সমপরিমাণ শশার রস ও লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরী করে নিন। কটন বলের সাহায্যে পুরো মুখে লাগাতে থাকুন। মিশ্রণটি মুখে লাগানোর সাথে সাথে যদি জ্বালা করে, তবে দ্রুত ধুয়ে ফেলুন। তারপর বরফ লাগান।

♥ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করার ক্ষেত্রে লেবুর রস ও দুধের মিশ্রণও বেশ কার্যকরী। একটি বড় লেবুর অর্ধেক অংশ কেটে তার রস বের করে নিন। এবার তার সাথে ১০ টেবিল চামচ তরল দুধ ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। ধীরে ধীরে পুরো মুখে ম্যাসাজ করুন, যতক্ষণ পর্যন্ত পুরো মিশ্রণটা ত্বক শোষণ করে। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

♥ত্বককে টানটান করে: একটা কাপড়ের টুকরো নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো বরফ নিয়ে নিন। এবার সেটি ভাল করে মুখে ঘষুন কিছুক্ষণ। প্রচন্ড ঠান্ডা হওয়ার কারণে বরফ ঘষা মাত্র মুখে রক্ত চলাচল খুব বেড়ে যায়, ফলে ত্বক টানটান হয়ে ওঠে।

♥চোখের ফোলাভাব কমায়: একটা কাপড়ে পরিমাণ মতো বরফের টুকরো নিয়ে নিন। এমনটা করলে চোখের ফোলা ভাব যেমন কমে যাবে, তেমনি ডার্ক সার্কেলের সমস্যাও দূর হবে।

♥পুড়ে যাওয়া ত্বককে স্বাভাবিক করে: বরফের প্রচন্ড ঠান্ডা হওয়ার কারণে এটি ত্বকে ঘষলে সে জায়গার তাপমাত্রা নিমেষে কমে যায়। তারপর ডিমের সাদা অংশের সাথে অর্ধেকটা লেবুর রস ও এক টেবিল চামচ কমলালেবুর রস, কুসুম গরম পানি দিয়ে পেস্টের মতো করে মিশিয়ে নিন।

♥হাঁটা রক্তের বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। শরীরের রক্তচাপের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

♥প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট হাঁটা শরীরের ক্যালোরি ঝড়াতে সাহায্য করে। এতে ওজন কমে। তাই ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই হাঁটুন।

♥নিয়মিতা হাঁটা হাড় ও পেশির শক্তি বাড়ায়। প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ মিনিট হাঁটা হাড়কে ভালো রাখে। বিশেষ করে পায়ের স্বাস্থ্য ভালো করে।

♥হাঁটা এনড্রফিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এনড্রোফিন মস্তিষ্কের এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান। এটি মেজাজকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।

 

আজকের রান্নার স্বাদ -২

গৃহিনীদের সারাদিনের অর্ধেকের বেশি সময় কাটাতে হয় রান্নাঘরে। আপনাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস যা আপনাদের রান্নাকে আরও মজাদার করে তুলবে।

♠মাছ রান্না
মাছ রান্না করে হাতের কাছে কাঁচা ধনিয়া পাতা থাকলে তা কুচি করে কেটে বিছিয়ে দিন, স্বাদ দুইশত গুন বেড়ে যাবে। যদি তেলাপিয়া মাছে কোন গন্ধ থাকে তবে তেলাপিয়া মাছ হলুদ ও ভিনিগার/লেবুর রস মাখিয়ে মিনিট ১৫ রেখে ধুয়ে নিলে গন্ধ থাকেনা।

♠ডাল রান্না
ডালে বাগার দিতেই হবে, রসুন কুচি তেলে ভেজে ডালে দিয়ে দিতে হবে। ডালের মজা জ্বালে! অর্থাৎ যত বেশি সময় জ্বালানো হবে স্বাদ বেড়ে যাবে ততই।

♠সবজী রান্না
রং ঠিক রাখতে ঢাকনা দিয়ে জ্বাল না দেয়াই ভাল। আর কিছু সব্জী আছে যাদের সামান্য সিদ্ব করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে কিংবা বরফ কুঁচিতে রাখলে রান্নার পরও রং ঠিক থাকে।

♠ভাজি রান্না
কিছু ভাজিতে কড়াইতে তেল গরম হলে যা দেবেন তার সাথে সামান্য লবণ দিয়ে দিন, তেলের ছিটকা উঠবে না।

♠রান্নায় সর্ষের স্বাদ
লাল সর্ষে তিতা বা ঝাজ বেশী হয়। হলুদ সর্ষে ব্যাবহার করলে তিতা হয়না। আরেকটি কথাঃ সর্ষে বাটার সময় লবন আর কাচামরিচ এক সাথে বাটলে তিতা হয়না।

♠লেবুর ভূমিকা রান্নায়
বর্ষাকালে লবণ গলে যায়। এক মুঠো পরিষ্কার চাল পুটলি করে বেঁধে লবণের পাত্রে রেখে দিলে লবণ গলবে না।

♠কাঁচের গ্লাস
কাঁচের গ্লাসে গরম কিছু নিতে গেলে অনেক সময় ফেটে যায়। গরম কিছু ঢালবার আগে গ্লাসে একটি ধাতু নির্মিত চামচ রেখে ঢাললে গ্লাস ফাটবে না।

♠রান্নায় আলু
আলু এবং আদা বালির মধ্যে ডুবিয়ে রাখলে অনেক দিন টাটকা থাকে।

 

অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেল “সুবোধ” কে!!

গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের পাশেই থাকতেন পারভীন আক্তার নাম এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। স্বামী তাকে ছেড়ে গেছে অনেক আগেই। সোমবার রাতে তার প্রসব বেদনা ওঠে। পরিচিত একজন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন তার গর্ভের সন্তানের অবস্থা ভালো নয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভর্তির জন্য জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারকে লেখেন।

এরই মধ্যে একজন জানান, রোগীর সিজার করতে হবে। বেশ কিছু টাকা খরচপাতি লাগবে। কিন্তু হাতে টাকা নেই শোনার পর তিনি পারভীন আক্তারকে নিয়ে দ্রুত অন্য কোথাও যাওয়ার পরামর্শ দেন।

পরে তাকে নিয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে সেখানে তার কাছে ১৫শ’ টাকা চাওয়া হয়। টাকা না দেয়ায় সেখান থেকে পারভীন আক্তারকে অন্য কোথাও যেতে বলা হয়।

সকাল ৮টার দিকে পারভীনকে আজিমপুর মাতৃসদনে নেয়া হয়। সেখানে তার নামে কোনো কার্ড কিংবা রেজিস্ট্রেশন না থাকায় কর্তৃপক্ষ ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়। বারবার অনুরোধের পর তাকে দ্বিতীয় তলার লেবার রুমে নিয়ে যান এক নারী চিকিৎসক। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বের হয়ে যেতেই আয়া শাহিদা সেখানে যান।

এ হাসপাতালে চিকিৎসা হবে না বলেই শাহিদা তাকে টেনে দোতলা থেকে নিচে নামান। পারভীন তখন ব্যথায় ছটফট করছিলেন। অন্য একটি হাসপাতালের ঠিকানা দিয়ে আয়া তাকে বের করে দেন।

ম্যাটারনিটি হাসপাতাল থেকে বের হতেই প্রসব বেদনায় রাস্তার ওপর বসে পড়েন পারভীন। সেখানেই সন্তান প্রসব করেন তিনি। প্রথমে নড়াচড়া করলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই নবজাতক নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

… এবং সন্ধ্যার পর নবজাতককে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তবুও ভালো শিশুটার দাফনটা অন্তত করা গেছে। যাবেই তো।

মধ্যম আয়ের এই দেশ রাস্তায় নবজাতকের জন্ম দেবার দৃশ্য সহ্য করতে পারে – কিন্তু রাস্তায় পড়ে থাকা লাশের গন্ধ সহ্য করতে পারে না যে।

কিছুই বলার নেই- শুধু একটা কথা ছাড়া।

শুনলাম গোয়েন্দারা নাকি সুবোধ সিরিজের সেই গ্রাফিতিগুলোর স্রষ্টাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

গোয়েন্দাদের বলছি আজিমপুর গোরস্থানে যান – দেখবেন একজন সদ্যজাত শিশু গোরস্থানের দেওয়ালে বসে হাসতে হাসতে বলছে –

“আমিই সুবোধ – পালিয়ে এসেছি – মানুষ ভালোবাসতে ভুলে গেছে!”

shomoy marma
(সৌজন্যে: bdflow24.com)

 

দাম্পত্য -১০

বর্তমান সময়কার দম্পতির মাঝে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ থাকা খুব স্বাভাবিক। কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট – শুনতে খুব ভারিক্কি মনে হলেও, শেষ পর্যন্ত এর প্রয়োগ দেখা যায় একদম চাল চুলো, গম আলু তে। টিভির রিমোট কাড়ার মত ছোট বিষয় থেকে শুরু করে জীবনের প্রতি দর্শন – যে কোন কিছুই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের আওতায় পড়তে পারে।

কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট কী? এটা কি কেবলই ভিন্নমত? না! বরং ভিন্নমতের/ভিন্ন পছন্দের দু’জন আলাপ আলোচনা করে অন্যের যুক্তিটাকে মেনে নিয়ে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই যখন জানায়, এই অভ্যাসটা/দর্শনটা/প্রিয় বস্তুটা আমি ছাড়তে পারব না – তখন তাকে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট এর আওতায় ফেলা যায়।

কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট হতে পারে খুব ছোট কোন বিষয় নিয়ে। হয়ত পার্সোনাল স্পেসের মাত্রাটা ভিন্ন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে খুঁতখুঁতেপনা একজনের বেশি। আবার হতে পারে অনেক বড় – হয়তবা জীবনের সার্থকতার মাত্রাটাই। আপনার ইচ্ছে করে আয়েশ করে জীবন কাটাতে। আপনার জীবনসঙ্গীর ভীষণ ইচ্ছে পুরো বাংলাদেশটা পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখার।

মনে হচ্ছে এমন আর কী? থাকলোই নাহয় ভিন্নতা, অসুবিধা কী? অসুবিধা আছে। প্রতিদিনের কাজে বারবার করে খটিমটি বাঁধবে দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতার কারণে। আপনার জীবনসঙ্গী হয়ত যেভাবে ভুল সংশোধন করে সেটা আপনার পছন্দ না। শোধরাতে চাইবেন, দেখবেন তার ভেতরে গেড়ে আছে এই বোধ – ভুল শোধরাতে হলে শক্ত না হয়ে উপায় নেই। এর ফলাফল পড়বে সন্তানদের বড় করায়।

আপনার জীবনসঙ্গী বন্ধুদের জন্য খরচের ব্যাপারে বেশ উদারহস্ত। আর আপনি মনে করেন জীবনের জন্য এত খরচের প্রয়োজনটা কী? বিলাসিতা আপনার চক্ষুশূল। কী হবে? প্রতিবার এ ধরণের আয়োজনে আপনি গোমড়া হয়ে থাকবেন।

আরো উদাহরণ দিতে হবে? ঠিক আছে। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির কথাই বলি। দু’জনেই ধার্মিক। একজন উদারমনা ধার্মিক, একজন কট্টর ধার্মিক। একজন দান সদকা ও সামান্য আয়ে সাধারণ জীবনযাপনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে আগ্রহী, অন্যজন জ্ঞানচর্চা, জীবিকায় উন্নতির শিখরে চড়ে মুসলিমদের এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। ভাবছেন সমস্যাটা কী? ধরুন একটা ভালো চাকরির সুযোগ আছে, কিন্তু এতে করে পরিবারে সময় দেয়া কমে যাবে অনেকটাই। দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতার কারণে একজন উৎসাহ দেবেন, অপরজন আপত্তি জানাবেন।

এই বিষয়গুলোকে মতদ্বৈততা না বলে ইন্টারেস্টে কনফ্লিক্ট বলছি কেন? কারণ মতের এই ভিন্নতা তৈরি হয়েছে জীবনদর্শনের ভিন্নতা থেকে। আপনি মত বদলাতে পারবেন, জীবনদর্শন বদলাতে পারবেন না। ফলস্বরূপ আপনার উৎসাহে আপনার সঙ্গী সাময়িকভাবে কাজটাতে সম্মতি দিলেও আপনি যে পর্যায়ের আন্তরিকতা আশা করছেন, সেটা পাবেন না কখনোই।

তো কী করা যায়? আপনাদের প্রায়ই ঘুরেফিরে যে জিনিসগুলো নিয়ে খিটিমিটি লাগে, বোঝার চেষ্টা করুন সেটা চিন্তাধারা/জীবনাদর্শের ভিন্নতা থেকে হচ্ছে কি না। যদি তা হয়, তবে বৃথাই একই তর্কবৃত্তে ঘুরে ঘুরে না মরে, বৃত্তের বাইরে এসে দাঁড়ান। চিন্তা করে দেখুন নিজের বা তার এই দর্শনটা বদলানো সম্ভব কি না। যদি না হয়, মেনে নিন।

মেনে নেয়া বলতে কি বোঝায় যত খারাপই লাগুক, হাসিমুখে মেনে নেয়া? মোটেও না। সঙ্গীকে জানিয়ে দিন, তোমার এই দৃষ্টিভঙ্গিকে আমি সমর্থন করিনা। আমি নিজে এভাবে জীবন কাটাতে চাইনা। এমনকি সেটা যদি হয় স্বচ্ছলতা-কৃচ্ছ্রতার দ্বন্দ্ব, নিজের জীবনে আপনারটা মেনে চলুন, আর তাকেও তারটা মানতে দিন।

আগেই বলেছি, জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা থাকলে প্যারেন্টিং ইস্যুতে এসে খুব সমস্যা হয়ে যায়। একজন হয়ত দামি দামি খেলনা, কাপড় কিনে দিচ্ছে, অন্যজন সহজ জীবনের কথা বলেই যাচ্ছেন – এতে করে ছেলেমেয়েরা বাবামায়ের অন্তর্দ্বন্দ্বটা বুঝতে পারে খুব সহজে, আর তারা জীবন সম্পর্কে নির্দেশনাটাও ঠিকমত পায়না।

সমাধান কী? সমাধান হচ্ছে আগে থেকেই এ বিষয়গুলো চিহ্নিত করে জীবনসঙ্গীর সাথে কথা বলা। তাকে জানানো আমি এভাবে জীবনকে সাজাতে চাই, তুমি কী মনে কর? আমার সন্তানদের এভাবে বড় করতে চাই, তোমার আপত্তি থাকলে আগে থেকেই কথা বলে নেয়া ভালো। অন্তত সন্তানদের সামনে যেন দ্বন্দ্বটা প্রকট হয়ে না ওঠে। এমনকি চাইলে এটাও সম্ভব, সন্তানদের বোঝানো, ‘তোর বাবা/মা এমন মনে করে, কিন্তু আমি এমন মনে করি। দুইজনেই ঠিক, তুই তোর পথটা পছন্দ করে নিবি।’ অথবা, ‘তোর বাবা/মা জিনিসটাকে এভাবে দেখে। আমার মনে হয় এভাবে হলে ব্যাপারটা আরো ভালো হত।’ এভাবে প্রকাশ করলে সন্তানেরা ভিন্নমত সহ্য করেও সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার একটা বাস্তব শিক্ষা পাবে।

পরমত-অসহনশীলতার যে মাত্রাতিরিক্ত প্রকাশ দেখা যাচ্ছে আজকাল – ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তার থেকে রক্ষা করতে পরিবারের মধ্যে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টগুলো আগেই চিহ্নিত করে নেয়া ভালো।

পরিশেষে, রেহনুমা আপুর প্রিয় এক উক্তি শরৎচন্দ্রের রচনা থেকে –

অভিমানের যেখানে মূল্য নাই, সেখানে অভিমান প্রকাশের ন্যায় বিড়ম্বনা আর নাই।

প্রতিটা বিষয় মতে মিলতেই হবে এমন কোন কথা নেই। আর না মিললেই অভিমান, দুঃখ নিয়ে জীবনটাকে ব্যর্থ মনে করতে হবে, এমনও কোন কথা নেই। কোন কোন পথ একলা চলেও উপভোগ করা যায়, যদি জানেন সমান্তরাল আরও একটি পথের শেষে আবারও তার সাথে দেখা হবে।

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

সন্তানকে “ভালবাসুন” ভালবাসা জাগ্রত করে

ভালবাসা জাগিয়ে সন্তানকে ভালবাসুন।
সন্তানদের ব্যক্তিত্বের প্রতি আস্থাশীল হওয়া প্রয়োজন। কারণ সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে
img20171022_233914
প্রথমত,
তার উপর মাত্রাতিরিক্ত অভিভাবকত্বের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়।
দ্বিতীয়ত,
সন্তানদের রাজ্যে অনাধিকার প্রবেশ নয়, বরং নিজের অধিকার আদায় করার মত সুস্থ মানসিকতার তৈরির জন্য আজকে থেকেই কাজ শুরু করুন।
img20171021_025347
♥মিষ্টি নামে ডাকুন:

সন্তানকে একটি মিষ্টি ডাক নাম দিন। ছোট্ট বেলায় বাবা মা আদর করে যে নামে ডাকেন তা বাচ্চারা খুব পছন্দ করে।
img20171018_015058
♥ছোট্ট একটা কাগজ লিখুন:

প্রতিদিন টিফিনে না হলেও সপ্তাহে তাদের লাঞ্চবক্সে/lunchbox নোট রাখুন। মনে রাখবেন সেখানে আপনার অনুভূতি লুকিয়ে থাকবে। নোট, কার্ড, বা অক্ষর লিখুন।
img20171022_233654
♥ আই লাভ ইউ বলুন:

“আমি তোমাকে ভালোবাসি” শব্দগুল শক্তিশালী সুতরাং সন্তানদের নিয়মিত বলার অভ্যাসে পরিনত করুন।
img20171022_233836
♥আপনার পছন্দ প্রকাশ করুন:

আপনি চান আপনার সন্তান আপনাকে একবার হলেও হাসিমুখে অনুভূতি জানতে চান। আপনি কেন তাদের পছন্দ করেন তা তাদেরকে জানিয়ে দিন।
img20171021_025142
♥সন্তানের পজেটিভ দিক তুলে ধরুণ:

দেখুন ছোট্ট বেলা থেকে একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। সুতরাং বিশ্বব্যাপী সন্তানদের ইতিবাচক কাজগুলোকে দৃঢ়ভাবে বলুন। বাচ্চাদের বলুন, you’re proud of them ।
img20171022_233753
♥আন্তরিক শব্দ ব্যবহার করুন:

আন্তরিক,রোজই সন্তানদের জন্য সুন্দর কিছু আন্তরিক শব্দ জমা করুন। সেই শব্দ তাদেরকে বলুন।
sincere, heartfelt compliments.
img20171022_233720
♥ভুল আচরণকে না বলুন:

সংশোধনের পর আপনার ভালবাসাকে প্রকাশ করুন কিন্তু ভুল আচরণ মেনে নিবেন না। অন্যায় দেখলে না বলুন।

img20171022_233957
সন্তানের ভিতর ভালবাসার বীজ বপন করার মূলমন্ত্র হল
সন্তানকে বুঝতে দেওয়া,তাকে আপনি ভালবাসেন।

 

শিক্ষকের সাথে ফোনালাপ এবং ফেসবুকিং

অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা। আমি আমার একজন শিক্ষককে মোবাইলে কল বা ফেসবুকে যোগাযোগ করার পূর্বে যে “১০টি বিষয়” মেনে চলি:

১/ অন্তত তিনবার চিন্তা করি যে কল করাটি আদৌ কতটুকু প্রয়োজনীয়। কল না করে অন্য কোন ব্যক্তি বা সহজলভ্য মাধ্যম কিংবা গুগলসার্চ করে দরকারি তথ্যটি পাওয়া কিংবা প্রয়োজন পূরণ কি সম্ভব? উত্তর যদি “হ্যা” হয়- তাহলে আর কল করিনা, বিকল্প মাধ্যমের সাহায্য নিই। উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে শিক্ষককে কল করার সিদ্ধান্ত নিই।

২/ চিন্তা করে দেখি এখন ঠিক কয়টা বাজে। রাত ১০ টা থেকে সকাল ১০ টার মধ্যে হলে কল না করার সিদ্ধান্ত নিই। এই সময়ে সাধারণত একজন শিক্ষক ব্যক্তিগত সময় কাটান, বিশ্রাম নেন, পরিবারকে সময় দেন, ডিনার সারেন, ঘুমের প্রস্তুতি নেন, ঘুমান, আর সকালে অফিসে বেরুনোর তাড়ায় থাকেন। কল করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় মনে করি সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১০ টার মধ্যে।

৩/ নিশ্চিত হয়ে নিই মোবাইল একাউন্টে কথা বলার মত পর্যাপ্ত টাকা আছে কিনা, মোবাইলে কথা বলার মতো যথেষ্ট চার্জ আছে কিনা। ব্যালেন্স বা চার্জের অভাবে অর্ধ- কথায় ডিজকানেক্টেড হয়ে যাওয়াটা অসুন্দর মনে করি

৪/ একবার কল দিয়ে শিক্ষক রিসিভ না করলে তৎক্ষণাৎ ২য় বার কল দিইনা। রিসিভ না করার একটাই অর্থ- হয় শিক্ষক এই সময়ে ব্যস্ত আছেন- কথা বলার অবস্থায় নাই অথবা তিনি মোবাইল থেকে দূরে আছেন অথবা এই মুহূর্তে তিনি কথা বলতে চাচ্ছেন না অথবা অপরিচিত নাম্বার শিক্ষক রিসিভ করছেন না।

৫/ সেক্ষেত্রে শিক্ষকের মোবাইলে একটি মেসেজ পাঠাই- পূর্ণ সালাম দিয়ে নিজের নাম, পরিচয়, যোগাযোগের উদ্দেশ্য লিখি এবং শিক্ষক কোন সময় কথা বলার জন্য ফ্রি থাকবেন সেটি জানতে চাই। ফেসবুকে/ইমেইলে মেসেজ পাঠাতে চাইলে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় কথাটি উপস্থাপন করি।

৬/ hi, hello, r u there? how r u? Busy Sir? Free Sir?, ki koren Sir?, kheyechen Sir? ইত্যাদি লিখে মেসেজ আরম্ভ করিনা। আর কল করলে শিক্ষককে ‘আপনি কে বলছেন?’, ‘স্যার আমাকে চিনছেন?’, ‘আমাকে ভুলে গেলেন?’ ইত্যাদি বাক্য দিয়ে কথোপকথন শুরু করিনা। শিক্ষকের সাথে ব্যক্তিগত পরিচয় থাকলেও, এমনকি শিক্ষকের মোবাইলে আমার মোবাইল নাম্বার সেইভড করা থাকলেও শুরুতেই সালাম দিই, নিজের পূর্ণ পরিচয় প্রদান করি, অত:পর জানতে চাই- ‘স্যার/ম্যাম, আপনি কি ফ্রি আছেন? কথা বলা যাবে?’।

৭/ শিক্ষকের এবং আমার দু’জনেরই ভিডিও কলিং এপস্ থাকলেও কখনোই শিক্ষককে ভিডিও কল প্রদান করিনা। পরিবারের সদস্য, স্বামী- স্ত্রী, প্রেমিক- প্রেমিকা, খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছাড়া অন্য কাউকে পূর্বানুমতি ব্যতীত ভিডিও কলিং চরম অভদ্রতা বলে মনে করি।

৮/ শিক্ষকের সাথে ফেসবুকে যুক্ত থাকলে শিক্ষকের পরিবারের পূর্ব অপরিচিত সদস্যদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাইনা, তাদের ইনবক্সে নক করিনা। শিক্ষকের সাথেই আমার সম্পর্ক, উনার ফ্যামিলির সাথে নয়- এটি মনে রাখি।

৯/ নিজের টাইমলাইনের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ছবিতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে শিক্ষককে ট্যাগ বা মেনশন দেইনা।

১০/ শিক্ষকের সাথে সাক্ষাৎ প্রত্যাশী হলে পূর্ব এপয়েনমেন্ট নিয়ে শিক্ষকের অফিসে বা শিক্ষক কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে দেখা করি। শিক্ষক আর আমি একই বিল্ডিং এমনকি পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বাস করলেও শিক্ষকের বাসায় বিনানুমতিতে যাইনা এবং বাসায় সাক্ষাৎ করার আগ্রহ বা অনুরোধ জ্ঞাপন করিনা।

এভাবে আমি ভালো থাকি, আশা করি আমার শিক্ষকগণও ভালো থাকেন।
লেখক: সাঈদ আহসান খালিদ
আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
Courtesy:Taken from facebook wall of Mahadi Ul Morshed

 

“প্যারেন্টিং” আব্রাহাম লিংকনের সেই ঐতিহাসিক চিঠি (ছবিঘর)

img20171021_030936
সুখ
“মানুষ যতটা সুখী হতে চায়, সে ততটাই হতে পারে । সুখের কোনো পরিসীমা নেই। ইচ্ছে করলেই সুখকে আমরা আকাশ অভিসারী করে তুলতে পারি ।”
হ্যা এই উক্তিটি আব্রাহাম লিংকনের।

আব্রাহাম লিংকন ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৮০৯ সালে তার জন্ম। তিনি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি। বিশাল ভুমিকা রাখেন ১৮৬৩ সালে। সেই সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাস প্রথার অবসান ঘটান এবং মুক্তি ঘোষণার মাধ্যমে দাসদের মুক্ত করে দেন।
তার অন্যতম চমৎকার উক্তি হল,
img20171021_033231
বোকা
“তুমি সবসময় কিছু লোককে বোকা বানাতে পারো, কিছু সময় সব লোককে বোকা বানাতে পারো, কিন্তু সব সময় সব লোককে বোকা বানাতে পারবে না ”
তিনি ১৮৬৫ খ্রীস্টাব্দের ১৫ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
রাজনীতি বিজ্ঞান এমনি গবেষকরা বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন আব্রাহাম লিংকনকে।
img20171021_024225
আব্রাহাম লিংকনের চিঠি
আব্রাহাম লিংকন তাঁর পুত্রের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন। যা পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক মর্যাদা লাভ করে। আজও অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে আছে আব্রাহাম লিংকনের সেই চিঠি।
img20171021_030137
জ্ঞান

মাননীয় মহোদয়,

আমার পুত্রকে জ্ঞান অর্জনের জন্য আপনার কাছে পাঠালাম। তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন এটাই আপনার কাছে আমার প্রত্যাশা।
img20171021_025618
সত্যনিষ্ঠ
আমার পুত্রকে অবশ্যই শেখাবেন সব মানুষই ন্যায়পরায়ণ নয়, সব মানুষই সত্যনিষ্ঠ নয়।
♦তাকে এ বিষয়টিও শেখাবেন;
img20171021_030545
নিঃস্বার্থ নেতা
প্রত্যেক খারাপের মাঝেও একজন বীর থাকতে পারে, প্রত্যেক স্বার্থপর রাজনীতিবিদের মাঝেও একজন নিঃস্বার্থ নেতা থাকতে পারেন।
♦তাকে শেখাবেন,
img20171021_034930
মূল্যবান
পাঁচটি ডলার কুড়িয়ে পাওয়ার চাইতে একটি উপার্জিত ডলার অধিক মূল্যবান।
♦আরও বুঝাবেন,
img20171021_031019
উপভোগ
কীভাবে পরাজয়কে মেনে নিতে হয় এবং কীভাবে বিজয় উল্লাস উপভোগ করতে হয়।
img20171021_024647
দূরে
হিংসা থেকে দূরে থাকার শিক্ষাও তাকে দেবেন।
♦যদি পারেন,
img20171021_031217
সৌন্দর
নিরব হাসির গোপন সৌন্দর্য তাকে শেখাবেন। সে যেন একথা বুঝতে শেখে, যারা অত্যাচারী তাদেরকে নীরব হাসির গোপন সৌন্দর্য দিয়ে সহজেই কাবু করা যায়।
img20171021_030319
রহস্য
বইয়ের মাঝে কী রহস্য লুকিয়ে আছে, তাও তাকে শেখাবেন।
♦আমার পুত্রকে শেখাবেন,
img20171021_030226
সম্মানজনক
বিদ্যালয়ে নকল করে পাস করার চেয়ে অকৃতকার্য হওয়া অনেক বেশি সম্মানজনক।
img20171021_031108
পূর্ণ আস্থা
নিজের ওপর তার যেন পূর্ণ আস্থা থাকে, এমনকি সবাই যদি সেটাকে ভুলও মনে করে।
♦তাকে শেখাবেন,
img20171021_035946
ভদ্র
ভালো মানুষের প্রতি ভদ্র আচরণ করতে, কঠোরদের প্রতি কঠোর হতে।
img20171021_030056
পথ
আমার পুত্র যেন হুজুগে মাতাল জনতার পথ অনুসরণ না করে এ শিক্ষাও তাকে দেবেন।
img20171021_040034
সাফল্য
সে যেন সবার কথা শোনে এবং সত্যটা ছেঁকে যেন শুধু ভালোটাই শুধু গ্রহণ করে এ শিক্ষাও তাকে দেবেন।
img20171021_040109
হাসি
সে যেন শেখে দুখের মাঝেও কীভাবে হাসতে হয়।
img20171021_033305
কান্না
আবার কান্নার মাঝে লজ্জা নেই, সে কথাও তাকে বুঝতে শেখাবেন।
img20171021_030010
ঘৃণা
যারা নির্দয়, নির্মম তাদেরকে সে যেন ঘৃণা করতে শেখে।
img20171021_033340
আরাম-আয়েশ
আর অতিরিক্ত আরাম-আয়েশ থেকে সাবধান থাকে।
img20171021_030504
ইস্পাত
আমার পুত্রের প্রতি সদয় আচরণ করবেন কিন্তু সোহাগ করবেন না, কেননা আগুনে পুড়েই ইস্পাত খাঁটি হয়।
img20171021_024722
ধৈর্য
আমার সন্তান যেন বিপদে ধৈর্যহারা না হয়, থাকে যেন তার সাহসী হবার ধৈর্য।
img20171021_025542
ভালবাসা
তাকে এ শিক্ষাও দেবেন, নিজের প্রতি তার যেন পূর্ণ আস্থা থাকে আর তখনই তার সুমহান আস্থা থাকবে মানব জাতির প্রতি।

ইতি
আপনার বিশ্বস্ত;
আব্রাহাম লিংকন।

 

শিশুদের জন্মগত হৃদ্‌রোগ

img20171019_190418
শিশুরাও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হতে পারে। মায়ের গর্ভে থাকাকালীন যদি শিশুর হৃদ্‌যন্ত্রটি বিভিন্ন গঠনগত বা কার্যগত সমস্যা নিয়ে তৈরি হয়, তবে তাকে জন্মগত হৃদ্‌রোগ বলা হয়।

কিন্তু কীভাবে বুঝবেন শিশুর হার্টে কোনো সমস্যা আছে? সব শিশুরই তো জন্মের পর আর হার্টের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না।
img20171019_190659i
সাধারণত এ ধরনের শিশুদের যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে:

* মায়ের দুধ খাওয়ার সময় শিশু হাঁপিয়ে যায়, ক্লান্ত হয়ে যায়, শ্বাসকষ্ট হয়, শরীর অতিরিক্ত ঘেমে যায়

* ঘন ঘন ঠান্ডা-কাশি হয় বা নিউমোনিয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়

* ঘুম কম হয়, যার কারণে মেজাজ খিটখিটে থাকে

* শিশুর স্বাভাবিক ওজন বাড়ে না

* হৃদ্‌স্পন্দন খুব দ্রুত হয়

* জন্মের সময় ভীষণ রকমের কালচে বা নীলাভাব তার ঠোঁটে বা ত্বকে লক্ষ্য করা যায়

* জন্মের সময় স্বাভাবিক রকমের গায়ের বর্ণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করলেও দুই মাস থেকে ছয় মাস বয়সের মধ্যে ধীরে ধীরে শিশুটির ঠোঁট বা চামড়ার রং গাড় নীল হতে থাকে এবং কান্নার সময় একই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হয়

এই উপসর্গগুলো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিনে দু-তিনবারও হতে পারে। ওই মুহূর্তে তাকে উপুড় করে শুইয়ে দিলে তার আরাম হয়। বড় বাচ্চারা হাঁটু গেড়ে বসলেও তাদের স্বস্তি আসে।

* একটু বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বুকে ধড়ফড় করা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বাতজ্বর—এসব বিষয় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
img20171019_190551
প্রধানত দুইভাবে চিকিৎসা করা হয়: বিনা অপারেশনে ও সার্জারির মাধ্যমে।

সঠিক ওষুধ, ডিভাইস বা বোতাম দিয়ে হৃদ্‌যন্ত্রের ছিদ্র বন্ধ করা, চিকন ভাল্ব বেলুনের মাধ্যমে খুলে দেওয়া, জরুরি ভিত্তিতে হার্টের ওপরের চেম্বার দুটির মধ্যে ছিদ্র তৈরি করা ও সাময়িক বা স্থায়ী পেসমেকার প্রতিস্থাপন।

এ ছাড়া সঠিক সময়ে সঠিক সার্জারি শিশুকে সুস্থ করে তুলতে পারে সম্পূর্ণভাবে।
img20171019_190515
শিশুর জন্মগত ত্রুটি যাতে না হয়, সে জন্য প্রত্যেক মা গর্ভবতী হওয়ার তিন মাস আগে এমএমআর টিকা নেবেন। এ ছাড়া মায়ের গর্ভকালীন উচ্চরক্তচাপ বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখিকা:ডা. তাহেরা নাজরিন
কনসালট্যান্ট, পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা
Courtesy: Md Jahirul Islam, Registered Homeopath
E-mail:jahir63@hotmail.com

 

চাকরি ক্ষেত্রে বিষয় বৈষম্য কেন?

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন অনেক বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে যা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য মোটেই যুগোপযোগী নয়। যে দেশে চাকরির বিজ্ঞাপন মানেই বিবিএ-এমবিএ চাওয়া, সে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাপর বিষয়গুলোর মূল্য কি? শেখার জন্য আমরা বা আমাদের সমাজের কয়জন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই? সবাই যাই সার্টিফিকেট অর্জন করে ভাল চাকরি করার স্বপ্ন নিয়ে। আর চাকরি মানেই যেখানে বিবিএ-এমবিএ এবং নামে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয় সেখানে আরবি, ফার্সি, উর্দু কিংবা ওরকম আরো বিষয়গুলিতে পড়ে কতটা কাজে আসবে তা আমাদের জানা নেই। বরং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই সব বিষয়ে ভাল রেজাল্ট করার পরও আমাদের ভাই-বোনেরা হতাশ হচ্ছে চাকরির বিজ্ঞাপনগুলো দেখে।

আমরা কোনো বিষয়কেই ছোট চোখে দেখি না বা কাউকে কারো চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই না বলে যারা বড় বড় কথা বলে তারাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উঁচু স্তরে বসে বিজ্ঞাপন সাজায় বিশেষ কিছু বিষয় ছাড়া যেখানে অন্যরা আবেদনই করতে পারে না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে—বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওই সব বিষয় পড়িয়ে লাভ কি? বন্ধ করে দেওয়াই কি যুক্তিযুক্ত নয়? চাকরি পাওয়ার প্রাথমিক শর্তই যদি হয় বিবিএ-এমবিএ—তাহলে গোড়া থেকেই কেন আমরা সেসব বিষয় নিয়ে পড়ছি না, পড়াচ্ছি না। যে সব বিষয়ের আপাত দৃষ্টিতে কর্মজীবনে না কোনো চাহিদা আছে, না কোনো মূল্য আছে, সেসব বিষয়ে ভর্তি হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতাশাই শুধু বাড়বে। আমরা মনে করি না যে, শুধু বিশেষ কিছু বিষয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই ওই সব চাকরি পাওয়ার যোগ্য আর বাকিরা লবডঙ্কা। চাকরির বাজারে কে কার থেকে এগিয়ে সেটা বুঝতে হলে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সব বিষয়ধারীকে আবেদনের সুযোগ দিয়ে দেখুন। কে কার থেকে ভাল তা তখনই বুঝা যাবে। যোগ্যতার বিচার আপনারা যখন সার্টিফিকেট দিয়ে করেন তখন বাকি বিষয়ধারীদের আর কিইবা করার থাকে।

যারা ২০০৪ সালে এইচএসসি পাস করেছিল তারা এখন অন্যদের তুলনায় আরো ভীষণ রকম বিপদে আছে। সরকার নির্ধারণ করেছিল গ্রেড পয়েন্ট ৫-এর মধ্যে ৩ পেলেই প্রথম শ্রেণি ধরা হবে। সেই দিক বিবেচনা করেই সব চলছিল। ইদানীং দেখা যাচ্ছে- বিজ্ঞাপনগুলোতে গ্রেড পয়েন্ট ৫-এর মধ্যে ৪ থেকে ৪.৫ চাওয়া হচ্ছে। ২০০৪ সালে বা তার আগে পাস করা ছাত্র-ছাত্রীদের কতজন ওরকম গ্রেড পয়েন্ট নিয়ে পাস করেছিল? তাদের বয়স শেষের পথে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই বেকার। যাওবা স্বপ্ন ছিল, এখন গ্রেড পয়েন্টের খড়গের নিচে তারা মরিমরি করছে।

চাকরির বিজ্ঞাপনগুলোতে হাতে গোনা কয়েকটা বিষয় ছাড়া বাকি বিষয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন করার সুযোগটুকুও পাচ্ছে না। এটা সম্ভবত বেকারত্বকে মাথায় পেতে নেওয়া অগণিত ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া এ দেশের কারো চোখে পড়ে না, কারো মাথায় ঢোকে না। হাতে গোনা বিষয়গুলো ছাড়া বাকিরা যদি আবেদন করার সুযোগই না পাবে তবে বন্ধ করে দিন ওই সব বিষয় যার কোনো বাজার মূল্য নেই। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার একবার বলেছিলেন- এ দেশে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে দুটো বিষয়ে পড়তে সুযোগ দেওয়া উচিত। একটা হলো—বিবিএ-এমবিএ যা দিয়ে সে চাকরি করে খাবে, আরেকটা হলো—সে অন্তর থেকে যে বিষয়ে পড়তে ইচ্ছা করে সেটা।

বিসিএস এবং সরকারি কিছু কিছু চাকরি ছাড়া কর্ম জীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। সেগুলো বাদেও পণ্য বাজারজাত করে এমন সব কোম্পানিতে মার্কেটিং-এর চাকরির ক্ষেত্রেও বাকি সব বিষয়কে মূল্যায়নও করা হয় না। গুঁড়ো দুধ বিক্রি করুন আর সয়াবিন তেল বিক্রি করুন- সব ক্ষেত্রেই হাতে গোনা কয়েকটি বিষয় ছাড়া বাকিরা যেন যোগ্যই নয়। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন জেনে শুনে ওসব বিষয়ে ভর্তি করিয়ে পড়ানো হচ্ছে? এটাকি বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানে না? জানার পরও কেন ওসব বিষয় চালু রয়েছে?

হয় চাকরি ক্ষেত্রে এই সব বিষয় বৈষম্য দূর করুন নয়তো চাকরির বাজারে হাতে গোনা যে বিষয়গুলো সবাই মূল্যায়ন করছে সেগুলোর বাইরের সব বিষয় বন্ধ করে দিন। কথায় বলে দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। যে বিষয়ে পড়ে কর্ম জীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয় সেই সব বিষয়ে পড়ার চেয়ে না পড়াই কি ভাল নয়?

ঢালাওভাবে এ প্লাসের বন্যা শুরু হওয়ার আগে যারা এইসএসসি পাস করেছিল তাদের কথা বিবেচনা করে সর্বক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট ৩ প্রাপ্তদের আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে। যে কোনো চাকরির ক্ষেত্রে (ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ক্ষেত্র বিশেষ বাদে) প্রাথমিক আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ের বেড়াজাল রাখা চলবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশে ওগুলো এক একটা এনালগ সিস্টেম ছাড়া আর কিছু নয়। প্রাথমিক আবেদনের সুযোগ সবারই থাকা উচিত। তারপর ধাপে ধাপে কেউ মেধার বলে টিকে গেলে সে যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। চাই সে আরবিতেই পড়ুক আর সংস্কৃতিতেই পড়ুক। আর না টিকলে সে বিবিএ-এমবিএ হলেও বাতিল বলে বিবেচিত হোক এটাই সবার কাম্য।

মূলত আমাদের দেশে কর্মমুখী শিক্ষার বড়ই অভাব। কারিগরি শিক্ষাই বলি আর অন্যান্য বিষয় বলি- কোনোটাই মূলত এদেশের অধিকাংশ কাজের সঙ্গে খাপ খায় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছার পর এ দেশ যেদিন উন্নত দেশে পরিণত হবে সেদিন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইচ্ছা মতো যে কোনো বিষয় নিয়ে পড়লেও কোনো সমস্যা থাকবে না। কারণ তখন কর্মসংস্থানের কোনো অভাব থাকবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করলে নীতিনির্ধারকদের আরো কড়া হতে হবে। চাকরিদাতারা কেন অন্য সব বিষয়কে আবেদনের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করছে তার জবাব চাইতে হবে। সেই সঙ্গে সরকার নির্ধারিত গ্রেড পয়েন্ট তিনের বদলে কেন ৪ বা ৪.৫ চাওয়া হচ্ছে, তাও খতিয়ে দেখতে হবে। পাঁচটা বিষয়কে প্রধান্য দিয়ে বাকি ত্রিশটা বিষয়কে পায়ে মাড়িয়ে গেলে দেশে একদিন বেকারত্ব এতো বেড়ে যাবে যে জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ তখন বেকার হয়ে বসে থাকবে। এদেশের আকাশ সেদিন বেকারের দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে উঠবে। সে ভার সইবার মতো শক্তি তো আমাদের নেই।

জাজাফী
www.zazafee.com
লেখক :শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সংগৃহীত

 

আজকের রান্নার স্বাদ-১

বাড়ির অন্যতম প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলো রান্নাঘর। গৃহিনীদের সারাদিনের অর্ধেকের বেশি সময় কাটাতে হয় এখানে। আপনাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস যা আপনাদের রান্নাকে মজাদার করে তুলবে।
img20171019_184414
♦মাংসে পিঁয়াজ কুচি
মাংশ জাতীয় যে কোন খাবারর রান্না করারর সময় শেষে বেরেস্তা (পেঁয়াজ কুচি ভাজি) দিয়ে দিন। স্বাদ বেড়ে যাবে।
img20171019_184438
♦ডিম সিদ্ধ
ডিম সিদ্ধ করতে পানিতে সামান্য লবন দিন। ডিম খেতে সুস্বাদু হবে। গরমাবস্থায় ডিম ছিলবেন না, ঠান্ডা করে ছিলুন এতে খোসায় লেগে ডিম নষ্ট হবে না। আর লেবুর রস দিতে ভুলবেন না, তাহলে খোসা ছিলতে সুবিধা হবে।
img20171019_183023
♦হাড়ির ঢাকনা
চুলায় হাড়ি পাতিলে ঢাকনা থাকলে তা খালি হাতে ধরবেন না। গরম থাকলে হাত পুড়ে যেতে পারে। ঢাকনা ধরার ব্যপারে অধিকাংশ সময় আমরা সাবধান থাকি না।
img20171019_183114
♦ভর্তা
মরিচটা ভাল করে গুড়ো করুন। তারপর ভর্তার উপকরণ দিয়ে চামুচ ব্যবহার করুন।কারণ ভর্তা বানাতে মরিচ খালি হাতে ঢলবেন না, হাত জ্বলে আপনি কষ্ট পেতে পারেন।
img20171019_183147
♦মাছ ভাজি
মাছ ভাঁজতে কড়াই থেকে একটা নিদিষ্ট দূরে থাকুন। অথবা চুলা কমিয়ে দিন। মাছে পানি থাকলে কিংবা ফুটে আপনার গায়ে/চোখে তৈলের চিটকা পড়তে পারে। সাবধানে কাজ করবেন। দূর থেকে নাড়ুন।
img20171019_183225
♦শুকনো মরিচ ভাজা
শুকনা মরিচ ভাজলে বা পুড়লে বাতাসে একটা ঝাঁজ তৈরী হয় এতে হাচি, কাচি এসে নাস্তা নাবুদ হয়ে যেতে পারেন। ভাজার সময় রান্নাঘরের দরজা জানালা ভাল করে খুলে দিন। প্রয়োজনে এডজাষ্টার ফ্যান থাকলে তা চালিয়ে দিন। ছিমের পাতা মুড়িয়ে ভাজলে হাচি হয় না।
img20171019_183320
♦ভাজিতে অতিরিক্ত তেল
ভাজিতে তেল বেশী পড়ে গেলে ভাজি কড়াই, প্যানের এক দিকে সরিয়ে কড়াই/প্যান কাত করে রেখে দিবেন ১৫/২০ মিনিট। তারপর ঐ কাত করা অবস্থাতেই ভাজিগুলো বাটিতে নিয়ে নিবেন। আর ঐ বাড়তি তেল পরে অন্য ভাজিতে ব্যাবহার করতে পারবেন। মাংসের তরকারীতেও যদি তেল বেশী হয়, উপর থেকে চামচ দিয়ে তেল উঠিয়ে পরে ভাজিতে ব্যাবহার করলে ভালো লাগে।
img20171019_183354
♦রান্নার স্বাদ বাড়াতে এলাচ গুড়ো
এলাচ সম্পুর্ণ গুড়ো করে ব্যবহার করা ভাল। গোটা এলাচ কামড়ে পড়লে খাওয়ার মজাই নষ্ট হয়ে যায়। আবার এলাচ ভালো করে না ফাটালে তো সুগন্ধই হবেনা।

 

দাম্পত্য -৯

আজকে দাম্পত্যের সবচাইতে স্পর্শকাতর বিষয়টা নিয়ে লিখব, যেটা নিয়ে কেউ কথা বলে না। যা নিয়ে অভিযোগ মনে আনাও পাপ, মুখে আনলে ত শেষ! এ বিষয়টা বাদ দিয়ে দাম্পত্য নিয়ে বুলি কপচানো রীতিমত হঠকারিতা, কারণ বিয়ের আগ পর্যন্ত এ নিয়ে মানুষের জল্পনা কল্পনার শেষ থাকে না।

অন্তরঙ্গতা। সোজা ভাষায় শারীরিক সান্নিধ্য। যা নিয়ে বিয়ের আগে মেয়েদের উদ্বেগ, শংকা, লজ্জা মেশানো আকাঙ্ক্ষা, আর ছেলেদের কল্পনা, পরিকল্পনা – কোন কিছুই বাধা মানতে চায়না – তা নিয়েও যে বিয়ের পরে দ্বন্দ্ব অভিযোগের অবকাশ থাকতে পারে, তা বিশ্বাস করা অবিবাহিতদের জন্য কঠিন বৈকি। বিবাহিতদের মধ্যেও অভিযোগগুলো দানা বাঁধলে তারা একরকম ধামা চাপা দিয়েই রাখতে চান। এর মূল কারণ, এসব বিষয়ে লজ্জার বাঁধ ভেঙে কথা বলা রীতিমত অসম্ভব, কারণ নিজের স্বামী/স্ত্রীর সম্পর্কে এতটা খোলামেলা আলোচনা করা তাঁকে অসম্মান করারই সামিল। তাছাড়া এমন মানুষ আশপাশে পাওয়াও বেশ কঠিন যে একই সাথে উদার মনের, সমাধান জানে, গোপনীয়তা বজায় রাখবে এবং যার সম্পর্কে বলা তাকে আগের মতই সম্মান করবে।

শারীরিক অন্তরঙ্গতা দম্পতির মাঝে এক নিগূঢ় যোগাযোগের মাধ্যম। এ যেন ছোটবেলার ‘কোড ওয়ার্ড’ দিয়ে কথা বলার মত। আশপাশে আরো অনেকে থাকলেও তাদের নিজস্ব হাসি, ঠাট্টা, ছেলেমানুষি আনন্দের ভাগ দিতে হবে না কাউকেই। শরীরি আনন্দের মূর্ছনাকে তুলনা করা যায় অনন্য সাধারণ সঙ্গীতের সাথে – যার বোদ্ধা সমঝদার পুরো পৃথিবীতে মাত্র দু’জন। শরীরের সান্নিধ্য তাই অনেক সময় মনকে আরো কাছাকাছি এনে দেয়।

কিন্তু, আর সব পার্থিব সৌন্দর্যের মতই এতেও কদাকার কুচ্ছিত বেসুরো তান ঢুকে যেতে পারে। বিয়ের আগে মিডিয়ার কল্যাণে ভালবাসার যে রূপটি আমাদের মধ্যে গাঁথা হয়ে যায়, তা ভীষণ রোমান্টিক, ভীষণ সুন্দর। সত্যিকারের জীবনে দৈহিক ভালবাসা সবসময় তেমনি করে নাও আসতে পারে। বইয়ের পাতায় বা রূপালি পর্দায় অন্তরঙ্গতা যেভাবে আসে ভালবাসার চিত্ররূপ হয়ে – বাস্তব সবসময় তেমন নাও হতে পারে। দৈহিক মিলন শুধুই কাছে আসার আকুতির প্রকাশ না, এটি একটি জৈবিক চাহিদাও। আর সব সাইকেল এর মত নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এই চাহিদাও পূরণ করা প্রয়োজন। কিন্তু সমস্যা এখানে না। সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় যখন স্বামী/স্ত্রী বিয়ের আগের ধরে রাখা এক মাইন্ডসেট নিয়ে আশা করে থাকেন প্রতিবারই ভালবাসা তার পূর্ণরূপ নিয়ে মহাকাব্য রচনা করবে। চাহিদা কিন্তু তার প্রয়োজন পূরণের দিকেই নিবদ্ধ থাকে, আর তার কারণে উপক্রমণিকার অংশটুকু খুব অল্প, বা অনুপস্থিত থাকতে পারে কখনও কখনও। যে মানুষটি স্বপ্নে এই সময়টুকু কে নিয়ে অনেক কাব্যগাঁথা রচনা করেছে, সে বাস্তবতার এই ধাক্কায় বিমূঢ় হয়ে যেতে পারে।

ফলাফল, ‘আমি কেবলই তার প্রয়োজন পূরণের মাধ্যম, আমার প্রতি তার কোন আকর্ষণ নেই…’ এ ধরণের উপসংহার টানা। এমনকি, হীনম্মন্যতা, অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতা, তুচ্ছ কারণে অভিযোগ – এধরণের ব্যাখ্যাতীত আচরণের অনেকটাও এ ধরণের অতৃপ্তি থেকে আসে।

এখানে উভয়পক্ষকেই বুঝতে হবে, শারীরিক সান্নিধ্যের উৎস দুইটি। ভালবাসা/ কাছে আসার আকুলতা, এবং পিওর বায়োলজিক্যাল নিড। সম্পর্ক যত পুরনো হয়, প্রতিটা আবেগ প্রকাশের পেছনে মূল কারণটা বোঝা সহজ হয়ে যায়। অনেক দম্পতিই করেন কি, শরীরের প্রয়োজনে কাছে আসার আহ্বান কে শ্রদ্ধা করেন না। ভেতরে জমে থাকা রাগের ঝাল মেটান অপরজনের প্রয়োজন কে উপেক্ষা করে। ক্লান্তি, ব্যস্ততার অজুহাত দেখান। এই প্রয়োজনটুকু পূরণ করতে যেহেতু অপরজনের সহযোগিতা অপরিহার্য, তাই উপেক্ষা অনুরোধকারীকে একই সাথে আহত ও অপমানিত করে।

আমাদের দম্পতিরা অনেক সময়ই জানেন না, সাড়া না দেয়াটা কি আদৌ অপরাধের পর্যায়ে পড়ে কিনা। একজন হয়ত ব্যাপারটাকে গুরূত্বই দিচ্ছেনা, আর অন্যজন আহত অহংবোধ নিয়ে মনে মনে দূরে সরে যাচ্ছে। আজকালকার দিনে অহর্নিশ মানুষকে ব্যস্ত রাখার অনেক উপকরণ আছে, তাই সঙ্গ না থাকলেও অনেক কিছুর মাঝে ডুবে থাকা যায়, সঙ্গী হয়ত টেরও পাবে না কবে সে অনেক দূরে চলে গেছে। তার মানে এই না যে, নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন দাম থাকবে না। উপেক্ষাকে একটু বদলে ‘সম্মান ও কারণ দর্শনপূর্বক অসম্মতি’ তে বদলে দিলেই দূরত্বের ভয়টা ঘুচে যাবে।

বিবাহিত মেয়েদের কমন অভিযোগ, ও আমার প্রতি আগের মত আকর্ষণ বোধ করেনা। ছেলেদের অভিযোগ ও গৃহিণী হতে গিয়ে প্রেমিকা হতে ভুলে গেছে। ভাল কাপড় পরে না, সুগন্ধি মাখে না… কিছু বললে ঘরকন্নার দশটা অজুহাত দেখায়।

এসব সমস্যার সমাধান বাইরের কারো কাছ থেকে আশা করা বোকামি। প্রতিটা দম্পতির যোগাযোগের ধরণ স্বতন্ত্র। তাই স্ত্রীকে নিজে নিজেই বুঝতে হবে, তার দাম্পত্যের জন্য কোনটা বেশি প্রয়োজন, পরিচ্ছন্ন ঘরদোর, না পরিচ্ছন্ন পোশাক আশাক। স্বামীর ও তেমনি বুঝতে হবে, একজন লেখক কেবল নিজের খেয়াল খুশিমত লিখে গেলেই পাঠকের কাছে গ্রহণীয় হয়না, পাঠকের চাহিদারও মূল্যায়ন করতে হয়। তাছাড়া সাহিত্যে ছোটগল্পের প্রয়োজন যেমন আছে, তেমনি উপন্যাসের ও আছে। একটি সার্থক উপন্যাস অনেক ছোটগল্পের প্লট তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।
(পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতার” সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

বাংলা মুভি- “ঢাকা অ্যাটাক”

অনেকগুল মুভি অক্টোবর মাস জুড়ে মুক্তি পাচ্ছে। প্রতিটি সিনেমাই গল্প, নির্মাণ বা স্টার কাস্ট আলাদা আলাদা। একঝাঁক সিনেমার মুক্তি কাছাকাছি সময়ে খুব কমই হয়।

মুক্তির হল ইতিমধ্যে দীপংকর দীপনের ‘ঢাকা অ্যাটাক’।

ঢাকায় একাধিক খুন ও বোমা বিস্ফোরণের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অবস্থান চিত্রিত হয়েছে।

এই ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ, মাহিয়া মাহি, এবিএম সুমন এবং কাজী নওশাবা আহমেদ।

ঢাকা অ্যাটাক হল ২০১৭ সালের বাংলাদেশি রোমাঞ্চকর নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছেন দীপংকর দীপন এবং রচনা করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সানী সানোয়ার। ছবিটি প্রযোজনা করে থ্রি হুইলারস ফিল্মস, স্প্ল্যাশ মাল্টিমিডিয়া ও কিউ-প্লেক্স কমিউনিকেশন এবং পরিবেশনা করে টাইগার মিডিয়া লিমিটেড।

৬ অক্টোবর মুক্তি পাওয়ার পর থেকে এ সপ্তাহের শেষে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ‘ঢাকা অ্যাটাক’ দর্শকদের পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছে। ক্রমান্বয়ে দর্শক সংখ্যা বাড়ছে। নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন,

প্রথমটি হলো, ১৩ অক্টোবর থেকে রাজধানীর অন্যতম সিনেপ্লেক্স ব্লকবাস্টার সিনেমাস (যমুনা ফিউচার পার্ক)-এ ছবিটি প্রতিদিন পাঁচটি করে শো চলবে। যা গেল সপ্তাহে তিনটি ছিল। দীপন জানান, দর্শক চাহিদা ও চাপ সামলানোর কথা ভেবেই সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয় এবং এমন খবরে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ টিম বেজায় খুশি।
অন্যদিকে প্রথম সপ্তাহে ছবিটি সারা দেশের ১২২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেও নতুন সপ্তাহে (১৩ অক্টোবর) সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০-এ। এটিও একটি সিনেমা আকাশছোঁয়া সফলতা পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম সিঁড়ি বলে মনে করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।

দু দিনে টিকিট সেল ৭ কোটি ৪ লাখ টাকার হয়েছে ।

৭ কোটি টাকার ওপর টিকিট বিক্রি অর্থাৎ ছবিটি দুই দিনে বেশ ভালোই আয় করেছে এবং সমান্তরালভাবে ভালো আয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।
সুত্র: ইন্টারনেট।

 

সম্পর্কের অ্যালফাবেট -১

IMG_20171018_022332
এই লেখাটি psychiatrist এর লেখা যার নাম Abigail Brenner। তিনি ছুটি কাটাচ্ছিলেন এমন একটা সময়ে কয়েকজন , “বৃদ্ধ বয়স্ক” কাপেলদের তিনি ইন্টার্ভিউ নেন। যারা একসঙ্গে এত বছর দাম্পত্যজীবন কাটিয়েছেন ।তাদের দাম্পত্যজীবনের রহস্য খুঁজতে গিয়েই লিখে ফেলেন এই আর্টিকেলটি—-সর্ম্পকের অ্যালফাবেট (A to Z)।
img20171018_022917
A থেকে Z পর্যন্ত প্রতিটি অ্যালফাবেটককে খুঁজে পাওয়া যাবে এই আর্টিকেলে।

সম্পর্কের অ্যালফাবেট (A to Z):

IMG_20171018_021214
♦Adaptable
(সব পরিস্থিতিতে মানানসই)

‘নিজেকে সব রকম পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলার যোগ্যতা। জীবনযাপনের জন্য এই বৈশিষ্ট্য খুব অপরিহার্য। কারণ সময়ের সাথে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে তা মেনে নেওয়ার ক্ষমতা। জীবনের ছোট বড় পরিবর্তন সহ্য করার জন্য প্রয়োজন শক্তি, দৃঢ়তা এবং মেনে নেওয়ার অদম্য ক্ষমতা।’
img20171018_015518
♦Benevolent
(শুভাকাঙ্ক্ষী বা সবার কল্যাণ প্রত্যাশা)

‘একজন আন্তরিক কল্যাণকামী মানুষই ভালবাসা শব্দটা বুঝেন সঠিকভাবে। সত্যিকার অর্থে মানুষের প্রতি মানুষের দরদমাখা ভালবাসার প্রকাশ, মানুষকে অনন্য করে তোলে। সব জীবনসঙ্গী চান তার পাশে থাকা মানুষটি প্রতিটি মুহুর্ত্বেই তার প্রতি আন্তরিক এবং সহানুভূতিশীল থাকুক।’
img20171018_015335
♦Conscientious
(কর্তব্যবোধ বা বিবেকবান)

‘সম্পর্কে হেটে নিয়ে যেতে হলে, অবিরত বা অপরিবর্তনশীল দুজনের মনোযোগ প্রয়োজন। কাজ বা দায়িত্ব, এবং কৃপনতা করা বন্ধনকে আকর্ষণীয় করার জন্য। কৃপনতা বলতে ‘আমি আমার সঙ্গীকে ভালবাসি, যা অন্য খাতে ব্যয় করার ব্যাপারে আমি ভীষণ কৃপণ।’ ভালবাসার অর্জন হল, তা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এবং সবচেয়ে পছন্দসই উপায়ে হাটতে দেওয়া।’
img20171018_015207
♦Dedicated
(নিবেদিত বা উত্সর্গীকৃত বলতে উজাড় করে দেওয়া)

‘এই গুণটি আপনার নিজের এবং আপনার একান্ত নিজের, যা হয়ত জন্মের পর পর পাওয়া গুন। আপনার প্রতিশ্রুতি, সম্পূর্ণরূপে অঙ্গীকার এবং নিজেকে শেয়ার করা যেখানে থাকবে পুরো শক্তি, বাসনা, এবং প্রেম যা আপনি অনুভব করবেন পাশাপাশি অন্যরা। হ্যা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর পিছনেই রয়েছে ভবিষ্যত।’

img20171018_015058
ভালো লাগার স্বীকৃতি দেয়াটা কঠিন হোক কিংবা সহজ, পরিস্থিতি অনুকূলে থাক কিংবা প্রতিকূলে, গোপন কিংবা প্রকাশ্য, স্পষ্ট কিংবা অস্পষ্ট ভালোবাসা হোক না কেন? প্রতিটি সম্পর্ক হবে প্রাণবন্ত। সর্বাবস্থাতেই ভালোবাসা হবে কল্ল্যাণকামী। ভালোবাসার মতোই ভালোবাসার ভাঁজে ভাঁজে, খাঁজে খাঁজে রাগ, অভিমান, অধিকারের অস্তিত্বও বিদ্যমান থাকবে। সম্পর্কে একটু যত্ন নিলে প্রতিটি সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।

(“সম্পর্কের অ্যালফাবেট -২” পরবর্তী পর্বের জন্য অপরাজিতার সাথেই থাকুন)
img20171018_015653
মুলে: Abigail Brenner
ফাতেমা শাহরিন

 

বউয়ের ভয়

বউ দোষারোপ করতেন, বউয়ের বিরক্তিকর খুঁতখুঁতে আচরণের জন্য দশ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন ৬২ বয়সের ব্রিটেনের বাসিন্দা ম্যালকম অ্যাপলগেট। বিয়ের পরে স্ত্রী বিভিন্ন উপায়ে তার জীবনকে একেবারে নাজেহাল করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিন বছর ধরে সেই খিটখিটে আর রগচটা নারীর সাথে আর কোন ভাবে থাকতে না পেরে, কোনো পথ খোলা না পেয়ে পালিয়ে যান বনে। বন বাসে জীবনকে উপভোগ করতে থাকেন তাই কাটিয়ে দেন পাক্কা ১০ বছর।

লন্ডনের ‘ইমাউস গ্রিনউইচ’ নামে একটি বাস্তুহীনদের আশ্রয়দাতা সংস্থাকে জানিয়েছেন সম্প্রতি তার জীবনের গল্পটি এভাবেই ষাটোর্ধ্ব এই বয়স্ক ভদ্রলোক।
img20171017_233906
তিনি তার বাড়ি থেকে হেটে হেটে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন কারণ তার সাইকেলটি চুরি হয়ে যায় পথে।
১০ বছর সুতরাং অ্যাপলগেটের পরিবারের সবাই ভেবেছেন তিনি মারা গেছেন। হঠাৎ ভাইয়ের কাছ থেকে এত বছর পর ফোন পেয়ে চমকে যান অ্যাপলগেটের ভাই।

অ্যাপলগেটের গল্পটি তার মুখের ভাষাতেই তুলে ধরা হয়েছে ‘ইমাউস গ্রিনউইচ’-এর ওয়েবসাইটে। সেখানে ডেইলি মেইল ​​রিপোর্টাদেরকে অ্যাপলগেট বলেন, ‘বিয়ের পর আমার জীবন দিন দিন বিশৃঙ্খল হতে থাকে। আমি যতই কাজ করতাম, আমার স্ত্রী ততই রেগে যেত। আমি বেশিক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকি, এটি সে পছন্দ করত না।’

‘তার এই কর্তৃত্বপরায়ণ ভাব দিন দিন মাত্রাধিক হারে বেড়ে গিয়েছিল। আমার বউ চাচ্ছিলেন,আমি যেন কাজ কমিয়ে দেই। তিন বছর তার সঙ্গে এক ছাদের নিচে কাটানোর পর সিদ্ধান্ত নিই,নিজের ভালোর জন্যই চলে যেতে হবে। এরপর কাউকে,এমনকি আমার পরিবারকেও না জানিয়ে,আমি সবকিছু গুছিয়ে বের হয়ে যাই… একেবারে ১০ বছরের জন্য হারিয়ে যাই।’

অ্যাপলগেট আরো বলেন, ‘পালানোর পর কিংসটনের কাছে একটি জঙ্গলে আস্তানা গাড়ি। এ সময় স্থানীয় বৃদ্ধদের জন্য একটি কমিউনিটি সেন্টারের বাগানে কাজ করেছি।’

‘ভালোই কাটছিল দিনগুলো। কিন্তু পরে ইমাউস গ্রিনউইচের কথা শোনার পর ভেবে দেখি, সেটিই আমার জন্য উপযুক্ত স্থান। সেখানে গিয়ে আমি একটি সাক্ষাৎকার দিই এবং থাকা শুরু করি।’

কিন্তু পরিবার ছাড়া থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও পরবর্তীতে বোনকে চিঠি দেন এবং তার পরিবার তাকে খুঁজে বের করেন।
img20171017_233720
বর্তমানে তার ভাষ্যমতে,
“We now have a great relationship again.”

সুত্র: Fox News.

 

দাম্পত্য -৮

স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের কোন না কোন সময়ে একটা জটিলতা সামনে আসেই, তা হচ্ছে আর্থিক দ্বন্দ্ব। হয় স্বামী যথেষ্ট খোরপোস দেয়না, অথবা স্ত্রী প্রয়োজন ও বিলাসিতার মধ্যে পার্থক্য বোঝে না, অথবা বাবার বাড়িতে টাকা পাঠানো নিয়ে সমস্যা হয়, অথবা দেনমোহর এখনও কেন দেয়নি – তা নিয়ে অসন্তুষ্টি… টাকাপয়সাজনিত দ্বন্দ্বের উদাহরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না। এই বিষয়টার সবচেয়ে কঠিন দিক হচ্ছে, আলোচনাটা খুব দ্রুত উত্তপ্ত রূপ নেয়, এবং এক পর্যায়ে স্বামী/স্ত্রী এমন কোন মন্তব্য করে বসে যে অপরজন প্রায় বাকি জীবন সে দগদগে ঘা বয়ে বেড়ায়। আমার এক বন্ধু খুব সুন্দর একটা কথা বলে, (যদিও আমি তার সাথে একমত না,) সম্পর্ক হচ্ছে একটা ভাস্কর্যের মত, প্রতিটা ঘটনা একটা একটা ছাপ রেখে দেয়, এবং তা ভাস্কর্যটাকে নতুন রূপ দেয়। ওর কথা মত ধরলে আমি বলব, টাকাপয়সাজনিত উত্তপ্ত এই মন্তব্যগুলো হচ্ছে হাতুড়ির এক ঘায়ে নাক মুখ খসিয়ে দেয়ার মত। একবার মেরে ফেললে পরে গড়ে তুলতে অনেক বেগ পেতে হয়।

এই সমস্যা নিয়ে লেখা খুব কঠিন ব্যাপার, কারণ এত ডালপালা ছড়ানো যে, কাকে দিয়ে কোথা থেকে শুরু করব, সেটা বোঝাই দায়। মোটা দাগে কয়েকটা দিক আলোচনা করি, বাকিগুলো আশা করি একই ছাঁচে ফেলা যাবে।

১. মাসিক খরচের সাথে বরাদ্দকৃত অর্থের ব্যবধান: যে কোন কারণেই হোক, মাস শেষে আয় ও ব্যয়ের হিসাব মেলেনা। এ অবস্থায় একজন অপরজনকে অতিরিক্ত খরুচেপনা বা অতিরিক্ত কিপ্টেমির জন্য দোষারোপ করতে পারে।

২. আয়ের উপর একচেটিয়া অধিকার: স্বামী স্ত্রী দু’জনেই চাকুরিজীবি হলে নিজের আয়ের উপর কতটুকু কর্তৃত্ব থাকবে – এটা নিয়েও চলতে পারে মনোমালিন্য। এমন দেখেছি, স্ত্রী এর চাকুরির বিশ ত্রিশ বছর পরেও বেতনের টাকাটা নিজ চোখে দেখার সুযোগ হয়না, স্বামী প্রবর হিসেব মত ব্যাংক থেকে তুলে আনেন, এবং তাঁর বিচার বিবেচনায় খরচ করেন। আবার এমনও দেখেছি, একজনের ব্যাংক ব্যালেন্স অপরজন জানেন না, সংসারের খরচের কতভাগ কে দেবে তা নির্ধারিত হয় আয়ের উপর নির্ভর করে… এ ছাড়া কার টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে – এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার অধিকারটাও অপরজন রাখেন না।

৩. আত্মীয়স্বজনদের সাহায্য বা দান খয়রাত করার ব্যাপারে উভয়পক্ষের সমর্থন না থাকা: হিংসা হোক, স্বার্থপরতাবশতঃ হোক, ক্ষোভ হোক, যথাযথ হোক – যে কোন কারণেই স্ত্রী বা স্বামী অপরপক্ষের আত্মীয় স্বজনের জন্য যে টুকু অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা নিয়ে স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন না।

৪. অনেক আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে ধার নেয়া টাকা আর কখনও পরিশোধ করেন নি, বা বিয়ের দেনমোহর এখনও শোধ করেন নি, এবং এ অভিযোগগুলো উঠে আসছে জীবনের বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতে, কেবলই প্রতারণার অভিযোগ হয়ে।

বিষয়গুলো লেখার সময় আমি যেন চোখের সামনে অনেক উদাহরণ দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু লেখার ভাষায় যখন প্রকাশ করছি, নিজের কাছেই ছোট লাগছে, মনে হচ্ছে, দাম্পত্যের মধ্যে এমন সংকীর্ণতা চিন্তা করাই পাপ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সত্যি, সংসারের প্রথম দিকে না হলেও, কোন না কোন সময় এমন অনেক দুঃখজনক ঘটনাই ঘটে, যা কিনা হৃদয় কে স্তব্ধ করে দেয়, অপরজনের প্রতি সম্মান নামিয়ে দেয় শূন্যের কোঠায়, এর রেশ চলে বছরের পর বছর, প্রকাশ্যে, অপ্রকাশ্যে, শ্লেষাত্মক কথায় বা নির্লিপ্ত উদাসীনতায়।

সমাধান? আমি আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে বলার যোগ্যতা তেমন রাখিনা। যখন সমাধান বলতে যাব তা হয়ত জটিলতার তুলনায় হাস্যকরই শোনাবে। তবু লিখছি, কারণ দাম্পত্য সিরিজের পুরোটুকুই নতুন দম্পতিদের জন্য, যারা এখনও এসব সমস্যার তুঙ্গে ওঠেন নি। তবে সচেতন না হলে একদিন যে উঠবেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বর্তমান সময়ে চাহিদার সাথে সঙ্গতির সামঞ্জস্য রাখা প্রতিটা পরিবারের জন্যই খুব কঠিন। এ জন্য যেটা করা যেতে পারে, স্বামী স্ত্রী একটা সময় করে বসে নিজেদের মাসিক আয় কতটুকু সেটার সাথে সাথে কোন খাতে আয়ের কতটুকু খরচ করবেন এমন একটা বাজেট করতে পারেন। সেখানে মুদি খরচ, কাপড়, বাসা ভাড়া, চিকিৎসা – এমন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর হিসেব করে, বাকি যে টাকাটা থাকে তার কত পার্সেন্ট উপহার, বিনোদন ইত্যাদিতে খরচ করবেন সেটা দু’জনে মিলে ঠিক করতে পারেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই, এসব বিভিন্ন খাতে দু’জনের চাওয়ার পার্থক্য থাকতে পারে। স্বামী হয়ত চাইছেন আধুনিকতম ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রটা কিনবেনই, যত টাকাই লাগুক। স্ত্রী হয়ত ভাবছেন, আর যাই হোক, ফেসিয়ালের খরচটা বাদ দেয়ার কোন উপায়ই নেই। সুতরাং, প্রথমবার বাজেট তৈরি করতে গেলে এরকম খুঁটিনাটি প্রায় সবকিছু নিয়েই তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যটা স্পষ্ট হবে। এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে, কেনাকাটা বা খরচের ব্যাপারে বড়রাও ছেলেমানুষের মতই গোঁ ধরেন। ত, সেক্ষেত্রে উষ্ণ বাক্ বিতন্ডায় না জড়িয়ে অন্যজনকে তখন খুবই ঠান্ডামাথায় বোঝাতে হবে। কথোপকথনটা চাই কি এমনও হতে পারে –

‘বুঝলাম, এই মুহুর্তে একটা এস এল আর না থাকলেই নয়। কিন্তু তুমি চিন্তা কর, আমরা প্রতি মাসে সঞ্চয় করি আয়ের মাত্র বিশ শতাংশ। একটা এসএলআর প্রায় আমাদের পাঁচ মাসের সঞ্চয়ের সমান। আর সঞ্চয়ে তোমার খরচের জন্য বরাদ্দ আছে অর্ধেক, তার মানে, তুমি এখন একটা এস এল আর কিনলে আগামী দশ মাস আর কিছু কিনতে পারছ না। তুমি যদি মনে কর, এস এল আরটা দশ মাসের আর সব কিছুর ছাড়ের সমান, তাহলে কিনতে পার।

বা স্ত্রীর ক্ষেত্রে কাজিনের বিয়ের দাওয়াত উপলক্ষে পার্লারে তিন হাজার টাকা খরচ করা যদি সত্যিই প্রয়োজনীয় মনে হয়, তিনি স্বচ্ছন্দে করতে পারেন, যদি তাঁর জন্য বরাদ্দ খরচের মধ্যেই থাকে। বরাদ্দের বাইরে গিয়ে করতে হলে কান্নাকাটি বা রাগারাগি নয়, যুক্তিপূর্ণভাবে আয়ের উৎসটা দেখিয়ে তারপরই করতে হবে।

শুধু বাজেট করেই ক্ষান্ত হওয়া যাবে না, প্রতিমাসের নির্দিষ্ট দিনে বসতে হবে হিসাব নিয়ে, এ মাসে লক্ষ্যের কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি। যে খাতে পারিনি, সেখানে আর কী কী পরিবর্তন আনতে হবে। এ পর্যায়ে চলবে আরেক দফা দোষারোপ.. কিন্তু তার পরেও, শেষ পর্যন্ত যে সিদ্ধান্তটা নেয়া হবে, সেটা নিয়ে বাকি মাস আর কোন অভিযোগ থাকবে না। একই ভাবে, তিন চার মাস পর আবারো বিশদভাবে রিভিউ করা যেতে পারে, আদৌ আমাদের বাজেট টা বাস্তবসম্মত ছিল কি না। যদি না হয়, আনা যেতে পারে আরো বড় পরিবর্তন, চাই কি কোন মাসে সব রকমের বিনোদন কাট ছাঁট করে দিলেন, অন্য মাসগুলোর সাথে ব্যালেন্স করার জন্য। এরকম অনেক আইডিয়াই আসবে, যদি প্রতি মাসে নিয়ম করে স্বামী স্ত্রী খরচের বিষয়টা আলাপ করেন।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে, নিজের আয়ের উপর কতটুকু অধিকার থাকবে সেটাও অনেক সময় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে স্পষ্ট থাকে না। নতুন দম্পতিদের মধ্যে অনেকে এটাই বুঝে উঠতে পারেন না, জয়েন্ট একাউন্ট না রেখে আলাদা একাউন্ট করতে চাওয়াটা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে কি না। আবার ‘আমি রোজগার করি, আমি খরচ করি – এখানে তুমি বলার কে?’ এমন ভাবভঙ্গিও থাকে অনেকের। আমি বলছি না, এর কোনটাতেই কোন সমস্যা আছে। যদি স্বামী স্ত্রী উভয়েই কোন একটা নির্দিষ্ট সেটিং এ স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, তাহলে এখানে বলার কিছু নেই। তবে আমার মনে হয়, সংসারের গোড়ার দিকেই এ বিষয়ে কার দৃষ্টিভঙ্গি কী – সেটা স্পষ্ট জেনে নেওয়া ভাল, তা না হলে অকারণে দুঃখ পেতে হবে।

শেষ যে ব্যাপারটায় জোর না দিলেই নয় – স্বামীর বা স্ত্রীর উপর নির্ভরশীল অনেক আত্মীয় থাকতে পারেন, বিশেষ করে বাবা মা ভাই বোন – এদের জন্য খরচ করাটা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। কিন্তু এই ন্যায়সঙ্গত কাজটাকেও রীতিমত জুলুমের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন অনেকে, যদি আগে থেকেই এখানে সীমারেখা টানা না হয়। কীভাবে এই ভাল কাজটি জুলুম হয়ে যেতে পারে? যদি আপনি এ কাজগুলোতে আপনার জীবনসঙ্গীকে অংশীদার না করেন, তবে একটা সময় তার মনে অভিমান হতে পারে, ‘আমি কি এতই খারাপ, যে আমাকে জানিয়ে করলে আমি বাধা দিতাম?’ তারপর এই অভিমান থেকেই শুরু হবে মুখ গোমড়া করা, অকারণে কঠোর বাক্য বিনিময় – ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাল কাজ মিলে মিশে করার মধ্যে খুব বড় রকমের আনন্দ আছে, এবং তা পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাও বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। তাই বলি, রোজগার আপনার নিজের হলেও, আত্মীয় আপনার রক্তের সম্পর্কের হলেও, জীবনসঙ্গীর অনুমতি চান, এতে করে সে সম্মানিত বোধ করবে। আর আপত্তি করলে, আপত্তির কারণ জেনে তা নিয়ে কথা বলতে পারেন, বা আপনার কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে না হলে পাত্তা না দিতে পারেন, তবু যে আপনি অনুমতি চাইলেন, এটাই অনেক বড় প্রভাব রাখবে আশা করি।

সত্যি বলতে কী, দাম্পত্যের আনন্দগুলোর অনে…ক রকমের রং, রস, রূপ রয়েছে। কেন জানি আমরা অস্বচ্ছলতাকে অজুহাত বানিয়ে এরকম সব আনন্দের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করতে চাই। মানি, অর্থ না থাকলে অনেক স্বপ্নই পূরণ হয়না, অভিযোগের ঝুলিটাও ভারি হতে থাকে। কিন্তু সরবরাহ যেখানে সীমিত, ব্যবস্থাপনার ত সেখানেই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সফল ব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপ হচ্ছে ম্যাচিউর কমিউনিকেশন। আর্থিক ব্যাপারস্যাপারগুলো নিয়ে বসলেই এ জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রকট হয়। তাই বলি, এধরণের আলোচনার প্রয়োজনীয়তাটা শুধু টাকাকড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না, পরস্পরকে বুঝতেও অনেক বড় ভূমিকা রাখে।

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

‘নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি’- অভিনয় ছেড়ে ইসলামের পথে হাটব

নূর বুখারী (৩৫) পাকিস্তানের শোবিজ অঙ্গন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী এবং টিভি হোস্ট। এই সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক হয়েছেন।

মূলত তার হিজাব পড়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে তিনি তার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করেন।

কে এই নূর বুখারী:

নূর বুখারী (লাহোর, পাঞ্জাবী, উর্দু) একজন পাকিস্তানি অভিনেত্রী, পরিচালক এবং মডেল। তিনি উর্দু এবং পাঞ্জাবি লোলিউড চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন সম্প্রচারে কাজ করে আসছেন দীর্ঘ দিন। তিনি মুলত তার ছবি “ইসক পজেটিভ” মধ্যে “রাজ্য” চরিত্রের জন্য বিখ্যাত।

নূর বুখারী ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তানী চলচ্চিত্রে একটি শিশু তারকা হিসেবে আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে তার অভিনয় কর্মজীবন শুরু করেন। ইদানীং তাকে ঘিরে সাংবাদিক মহলে গুন্জন শোনা যাচ্ছে। কারণ তিনি হিজাব পরিধান অবস্থায় কয়েকটি ছবি প্রকাশ করনে।

জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বলছেন যে, তিনি ভবিষ্যতে কোনো সিনেমা বা টিভি শো না করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

চতুর্থ বারের মত, কয়েক সপ্তাহ আগে তার বর্তমান জীবনসঙ্গীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ভাবা হচ্ছে।

জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’কে বলেন, ‘আমি এমন একটি সময় অতিক্রম করছি; যেটি আমাকে মানসিক আঘাত এবং অন্যান্য কষ্টের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলছে। এ সম্পর্কে আর ভাবতে চাই না আমি।’

সাক্ষাৎকারে তিনি তার ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। ইসলাম সম্পর্কে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন। নূর বুখারী বলেছেন, ‘ইসলামের পথে আসতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মহান আল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ট হওয়ার বিষয়টি ব্যক্তি চাইলেই বাছাই কৃত হতে পারেন না, বরং আল্লাহই আপনাকে যদি পছন্দ করেন তবেই সম্ভব। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাকে পছন্দ করেন।’

পাকিস্তানি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ‘ললিউডে’ নূর বুখারী তার ক্যারিয়ারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি যে কোনো পেশার মাধ্যমেই খ্যাতি ও শ্রদ্ধা অর্জন করা যায় এবং আমি আমার কঠোর পরিশ্রম ও সততার কারণেই ললিউডে এই জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছি।’

তবে, দর্শক নন্দিত এই তারকা পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে চলচ্চিত্রে সাফল্য উপভোগ সত্ত্বেও তিনি আর শোবিজ জীবনে ফিরছেন না।

তিনি বলেন, ‘আমি চলমান সকল প্রকল্প থেকে ইতিমধ্যে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি এবং এতে আর অংশ নিচ্ছি না।’

তিনি জানান, তিনি এখন নিয়মিত হিজাব পরছেন এবং হিজাব ছাড়া কখনো ঘর থেকে বাইরে বের হবেন না। এটায় তার সিদ্ধান্ত।

নূর বুখারী এখন থেকে কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান সমূহ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি একজন পরিবর্তিত নারী। আমার দর্শনসমূহও পরিবর্তিত হয়েছে। আমার পরিশ্রম আমাকে আল্লাহ’র কাছাকাছি নিয়ে এসেছে এবং আমি আমার এই রূপান্তর সবার সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার পাশাপাশি, এই পথ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে চাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি ধর্মীয় অনুষ্ঠান করবো। বিশেষত ইসলামিক প্রক্রিয়ার মধ্যে ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে শিখব।’

সূত্র: উইকিপিডিয়া, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এবং
নিয়ো।

 

প্রতিটি সন্তানকে ভালবাসুন সমানভাবে….

শিশুর আগমনী বারতা অবশ্যই সবাইকে করে আনন্দে উদ্বেলিত। কিন্তু, যদি তা হয়,দ্বিতীয় /তৃতীয় সন্তান,তবে আনন্দের পাশাপাশি তা কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করে আমাদের।প্রথম সন্তান দ্বিতীয় সন্তানকে কিভাবে নেবে,
তা নিয়ে বাবা মাদের চিন্তার শেষ নেই। এটা খুব কমন যে,

প্রথম সন্তান-
প্রচন্ড রেগে যাচ্ছে,বলছে,ওকে রেখে আসো/ফেলে দিয়ে আসো /তোমরা আমাকে একটুও ভালোবাসো না।
আবার,বাবামার অগোচরে,বড় সন্তান অনেক সময় ছোট সন্তানকে মার দিয়ে বসে।
কিছু ক্ষেত্রে,এমনও হয়,বড় সন্তানের (বয়স ৩-৬) খাওয়া,ঘুম,টয়লেট ট্রেনিং সব অভ্যাস এলোমেলো হয়ে যায়।
বাবা মায়েরা হয়ে পড়েন দিশেহারা।কি করবেন।একদিকে নতুন শিশুর জন্য মায়ের শরীরও থাকে ক্লান্ত।বাবাও দৌড়াদৌড়ি করে হয়ে থাকেন বিধ্বস্ত।
এসময়,বাবা মায়ের একটু চতুর সিদ্ধান্তই দুই সন্তান লালন পালনে করতে পারে বেশ সাহায্য।কিছু টিপস

ছোট সন্তানের আগমনী বারতা শুরু থেকেই আপনার বড় সন্তানকে দিন।হতে পারে গল্পের ছলে/রোল প্লেয়িং খেলার মাধ্যমে/পুতুল খেলার ছলে।ওকে তৈরি করুন,হুট করে যেন কিছু না হয়।

বড় সন্তান রেগে গেলে,তার রাগ প্রকাশ করতে চাইলে,তার কথা শুনুন।যেমন,সে যদি,বলে,আমার কোন ভাই বোন না থাকলেই ভালো হত।আপনি বলুন,আসলেই,আমারো ছোট বেলায়,এমন মনে হত।মাঝে মাঝে,বাবা মা শুধু আমারো একা পেতে ইচ্ছে করত। – আপনার এটুকু কথা,এটকু আশ্বাস আপনার সন্তানের মন ভালো করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

কখনওই বড় সন্তানকে জোড় করবেন না,ছোট সন্তানকে ভালোবাসার জন্য।ওকে নিজে বুঝতে দিন।একা থাকলে/কিছু না করার মত সময়ে,ওরা দুজন খেলার সংগি হবে, এটা উপলব্ধি করতে দিন।

প্রতিটা শিশুরই ইমোশনাল ব্যাগটা ভালোবাসায় পূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। এটা কঠিন,যে,একে তো নতুন শিশুর ঝক্কি,তার উপর,আরেকজনের রাগ জেদ সহ্য করা।কিন্তু,আমাদের বাবা মায়েদের নিজেদের সন্তানদের ভালোর জন্য আমাদের সহ্য শক্তি বাড়াতে হবে।প্রতিদিন বড় সন্তানকে আপনার একান্ত কমপক্ষে দশ মিনিট সময় দিন।শুধু আপনি আর সে। তাকে বলুন আপনি তাকে ভালোবাসেন।তাকে জড়িয়ে ধরুন।আদর করুন।তার কথা,গান,কবিতা শুনুন,ঠিক আগের মত করে।

দু’সন্তান এক সাথে কান্না জেদ করলে,আপনি নিজে আগে,বড় করে একটু শ্বাস নিন।তারপর, বড় সন্তানকে আদর করুন,এবং,তাকে বলুন,ছোট্ট বাবু কষ্ট পাচ্ছে,ওকেও আদর করতে হবে।দু জনকে এক সাথেই আদর করতে চেষ্টা করুন।

মূলত,ছোট শিশুটি বুঝবেনা/মনে রাখবে না,আপনি কাকে আগে কোলে নিয়েছেন, আদর দিয়েছেন। কিন্তু,আপনার বড় সন্তানটি মনে রাখবে।এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।আপনার প্রতি আস্থা বাড়বে।আর একবার,সে তার আস্থা ফিরে পেলে,ছোট ভাই/বোনটিকেও সে আপন করে নিবে।

ছোট সন্তানের কাজে বড় সন্তানকে নিয়োজিত করুন/হতে দিন।এবং তার প্রশংসা করুন এ জন্য।তাকে আরো উৎসাহ দিন।আর বড় সন্তান যদি,তার সব কাজে খুব বেশি আপনার সাহায্য চায়,নিজেকে অনবরত বলতে থাকুন,এ সময় খুব দ্রুতই পার হয়ে যাবে।আর সন্তানকে সাহায্য করতে চেষ্টা করুন।

দুই সন্তানকে কাছাকাছি রাখতে চেষ্টা করুন।ধরুন, বড় জনকে,গল্পের বই/খেলনা দিয়ে ছোট জনের কাছেই রাখুন।আপনি দুজনকে দেখতে থাকুন।

বড় সন্তান,ছোট সন্তানকে চিমটি/খামচি দিতে চাইলে/মারতে চাইলে,আপনি নিজে দুজনের মাঝে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে দৃঢ় স্বরে বলুন,তুমি ওকে মারবে না।পরে আদর করে,বুঝিয়ে বলবেন।
বড় সন্তানকে শাস্তি /মার দিয়ে কোন লাভ হয় না।এতে তার মনের ক্ষোভ বাড়বে।সে আরো অবাধ্য হয়ে উঠবে।

দুই সন্তানের মাঝে বন্ধুত্ব স্থাপনে আপনার ভূমিকাই প্রধান।বড় সন্তানটির একটিই ভয়,বাবা মা তাকে আর আগের মত ভালোবাসবে না।এর মূল মন্ত্র একটিই,ভালোবাসুন।আদর করুন। গুরুত্ব দিন।

পজেটিভ প্যারেন্টিং
ট্রেইনার গ্রুপ,
লাইফস্প্রিং(মেন্টাল হেলথ ইন্সটিটিউট),ঢাকা
https://www.facebook.com/lifespringinstitute/

 

রূপের জন্য রূপচর্চা…

ত্বক
2017-10-14_14.41.22
♣♣♣সমপরিমান তুলসী পাতার রস ও লেবুর রস
একসঙ্গে মিশিয়ে দুই বেলা নিয়মিত দিতে পারেন।
দাগ কমে যাবে।
2017-10-14_14.44.26
♣♣♣অতিরক্ত শুষ্কতা থেকে মুক্তি পেতে মধু,
দুধ ও বেসনের পেষ্ট মুখে লাগান নিয়মিত।
এতে ত্বকের বলিরেখা ও দূর হয়ে যাবে।
2017-10-14_14.47.56
♣♣♣টমেটোর রস ও দুধ একসঙ্গ মিশিয়ে মুখে লাগালে রোদে জ্বলা কমে যাবে।
img20171014_145457
♣♣♣মুখের ব্রণ আপনার সুন্দর্য নষ্ট করে। এক্ষেত্রে রসুনের কোয়া ঘষে নিন ব্রণের উপর। ব্রণ তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যাবে।

ঠোট
img20171014_145554
♣♣♣ঠোটেঁ কালো ছোপ পড়লে কাঁচা দুধে তুলো ভিজিয়ে ঠোটেঁ মুছবে এটি নিয়মিত করলে ঠোটেঁর কালো দাগ উঠে যাবে।

হাত
images(132)
♣♣♣হাড়িঁ-বাসন ধোয়ার পরে হাত খুব রুক্ষ হয়ে যায়। এজন্য বাসন মাজার পরে দুধে কয়েক ফোঁটা লেবু মিশিয়ে হাতে লাগান। এতে আপনার হাত মোলায়েম হবে।
2017-10-14_15.11.42
♣♣♣কনুইতে কালো ছোপ দূর করতে লেবুর খোসায় চিনি দিয়ে ভালো করে ঘষে নিন। এতে দাগ চলে গিয়ে কনুই নরম হবে।
images(137)
♣♣♣যাদের হাত খুব ঘামে তারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে লাউয়ের খোসা হাতে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ।

পা
img20171014_145437
♣♣♣পায়ের গোড়ালি ফাটলে পেঁয়াজ বেটে প্রলেপ দিন এ জায়গায়।
img20171014_145355
♣♣♣হাত পায়ের সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখতে হাতে ও পায়ে আপেলের খোসা ঘষে নিন। এতে হাত ও পা অনেক বেশী সতেজ দেখাবে।

সাবিরা নাজনীন রুমী

 

Confidence বা আত্মবিশ্বাস -১

Confidence শব্দটা কিন্তু বেশ জটিল।
আসুন আগে জানি কত ধরণের অর্থ বহন করতে পারেন তিনি,
img20171012_185145

♦নিজেকে এবং নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে বিন্দু মাত্র সন্দেহ পোষণ না করে, নিজেই নিজেকে বিশ্বাস করা

♦নিজের অস্তিত্ব বা অনুভূতিকে বিশ্বাস করা

♦খুব সুন্দর আস্থাবান সম্পর্ক গড়ে তোলা

♦Confidence হচ্ছে কোন ব্যক্তির মাঝে থাকা একটি সুপ্ত প্রতিভা যার বিনিময়ে অন্যান্যরা সেই ব্যক্তিকে ভালবাসে।
img20171014_022829
বর্তমান সমাজে Confident হওয়ার কোন বিকল্প নেই। আর এ কারণে Confidence এর উপর কয়েকটি পর্ব লিখার চিন্তা চলছে।
আসুন জানি
img20171012_185734What Is Confidence”
খুব সাধারণ একজন ব্যক্তির সফল হবার যোগ্যতার প্রতি নিজের প্রতি নিজের যে বিশ্বাস তাই হচ্ছে Confidence. Confidence কেউ কাওকে দিতে পারে না, নিজে নিজেই অর্জন করতে হয়। যেকোনো কাজে সফল হতে হলে Believe in Yourself হওয়া কোন বিকল্প নেই।

Believe in Yourself
আজকের পর্বটাতে নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাস নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
img20171014_023206
Confidence অর্জন করা কোন এক বা একাধিক আর্টিকেল এর ব্যাপার নয়। ব্যাপার হচ্ছে দীর্ঘদিনের চর্চা এবং অভ্যাস।

♦♦আপনি বিশ্বাস করুন, কাজটি আপনি সবচেয়ে সুন্দরভাবে করতে পারবেন
img20171014_022956
সফলতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হচ্ছে Confidence। সুতরাং নিজেকে আগে বিশ্বাস করতে হবে। অনেকে আছেন যারা Confidence অন্যের মাঝেই দেখতে ভালবাসেন। নিজের ভিতরের অভাবকে না দেখে। নিজেই নিজেকে তুলে ধরতে পারেন হবে।

img20171010_080942
♦♦নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপন

♦পোষাক,
পরিচ্ছন্নতা, হালকা সুগন্ধী আপনার স্মার্টনেস কেবল অন্যের চোখেই না আপনার নিজের চোখেও নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

♦হাটা
মেরুদণ্ড সোজা ও মাথা উচু করে হাঁটুন। মাথা নিচু করে কুজো হয়ে হাঁটবেন না।

♦কথা বলুন চোখের দিকে তাকিয়ে
যখনই কারো সাথে কথা বলবেন তার চোখে চোখ রেখে কথা বলা।

মানুষজনের সাথে মিশুন ও নেটওয়ার্ক বাড়ান।
img20171014_022905

(Confidence এর সাথে প্রতিটি পর্ব পড়ুন।যে কোন একটা পর্ব আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতা” সাথে থাকুন)
রেফারেন্স:Psychology Today, Google, Wikipedia.

Fatema Shahrin
psychology

 

আধখানা বিষণ্ণ চাঁদ…

লাইটপোস্টের আলো সাদা হলে ভাল্লাগেনা…
সোডিয়ামের হলদে আলোয় যে আচ্ছন্নতা আছে এনার্জি সেভিং বালবগুলোর ঔজ্জল্যে সেটা নেই…

হুট করে মন কেমন হু হু করে ওঠে। মগ্ন হয়ে যেতে চায় অতলান্ত অসমাপ্ত ভাবনাগুলোর আরো গভীরে…

রাত-বিরাতে হঠাৎ চায়ের নেশা উঠল। অথচ ঘরে আজকেই চাপাতা থাকবেনা। এমনই হয় আরকি…

ফুটপাথে লাইটপোস্টের আলোতে দাঁড়িয়ে জিহবা পুড়িয়ে চা পান করছি আর চাঁদ দেখছি, তখন রাত দশটা।
আধখানা বিষন্ন চাঁদ…

মনের কোনো বিরাম নাই, এগারোটায় ফের মনে হল কুয়াশায় ভিজে হাটতে।

ছোটবোনটাকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম। বাসায় এই একজন মানুষ আছে যে আমাকে কখনো না বলেনা কিন্তু তথাপি আমি তার থেকে একধরণের দূরত্ব বজায় রেখে চলি। পিচ্চিটা আমার ভাল-খারাপ সমস্তটার অনুকরণ করে। খুবই বিব্রতকর ব্যাপার…

কলোনীর জনশূন্য রাস্তায় হাটছি। একহাতে জুতো আর অন্য হাতে একথোকা হাসনাহেনা। পা জমে যাচ্ছে অথচ মনে হচ্ছে সারারাত এভাবে কুয়াশায় ভিজতে ভিজতে হাটি।

যখন নিঝুম রাতে সবকিছু চুপ, নিস্প্রাণ নগরীতে ঝিঁঝিঁরা ঘুম… রাত জেগে শিশিরের শব্দ শুনি তখন…. নিয়মগুলো ভাঙ্গতে থাকি একেরপর এক…
img20171012_185416

সুমাইয়া তাসনিম
সাইকোলজি

 

দাম্পত্য – ৭

দাম্পত্য সিরিজটা আদৌ আর চালাব কি না তা নিয়ে সবসময়েই দোনোমনায় থাকি। কিন্তু পথ চলতে চলতে একেকটা বিষয় চোখে পড়ে, যা নিয়ে প্রায় প্রতি পরিবারেই কিছু না কিছু সমস্যা হয়, তখন মনে হয়, নাহ! লিখি। আর কিছু না হোক, বিষয়টা নিয়ে চিন্তা ত করা হবে।

স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা এত বেশি জড়ানো, একে অপরকে নিয়ে, আর তার মাঝে আবেগ ভালবাসার দাবি এত বেশি, যে কোন মূহুর্তে আবেগটুকু, চাওয়াটুকু বদলে যেতে পারে ঈর্ষায়। এরকম দম্পতি প্রচুর আছে, বোঝাপড়া খুব ভাল, একজন অপরজনকে ভালও বাসে অনেক, কিন্তু তাদেরই কোন এক বিপরীত লিঙ্গের বন্ধু বা সহকর্মীর সাথে হৃদ্যতাটা একটু বাড়াবাড়ি মনে হয়। সব ঠিকঠাক, কেবল ঐ বন্ধুটির সাথে মিশলেই স্ফুলিঙ্গের মত ভেতরে জ্বলে ওঠে কী যেন। এই ঈর্ষা বুঝিয়ে বলাও যায়না। ব্যাখ্যা করা যায়না, ঈর্ষান্বিত ব্যক্তিটি হয়ত ‘আমি তোমাকে খুব ভালবাসি’ এই যুক্তিতে সাফাই গাইতে চাইবে, কিন্তু অপরজন এটিকে দেখবে হীনমন্যতা, বিশ্বাসের অভাব – এভাবেই। এখানে অন্যান্যবারের মত উভয়পক্ষ নিজেকে খোলাখুলি ব্যক্ত করলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছেনা। এবং অবধারিতভাবে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা কমে যাচ্ছে।

আমি সবসময়েই কোন সমস্যা দেখলে তা সমাধান করার আগে উৎসটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। আমার কাছে মনে হয়েছে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে স্বামী আর স্ত্রীর সীমানাটা যদি ভিন্ন হয়, তখন এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। ধরুন আপনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি/বুয়েটে পড়েছেন, সহপাঠীর সাথে এক রিকশায় ওঠা আপনার জন্য খুবই সাধারণ ব্যাপার। আপনার স্বামী/স্ত্রী হয়ত এ ব্যাপারটায় অভ্যস্ত না, তার কাছে দৃষ্টিকটু লাগছে। মানসিক টানাপোড়েনে বন্ধুর সাথে কথা বললেন অবলম্বন চাইতে, বন্ধুর স্বামী/স্ত্রী হয়ত ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবে নিল না। আপনার স্ত্রী সোশ্যালাইজ করতে পছন্দ করে, আপনি ভালবাসেন নিজের মত থাকতে, আপনার পছন্দকে সম্মান জানিয়ে স্ত্রী যদি একাই সোশ্যালাইজ করতে শুরু করে, কিছুদিনের মধ্যে একটু ঈর্ষা, একটু সন্দেহ মনে চলে আসতেই পারে।
এজন্য এই বিষয়ে পরিষ্কারভাবে কথা বলা খুবই জরুরি, সমস্যা শুরুর আগেই। সবচেয়ে ভাল হয় বিয়ের আগেই না হলে সম্পর্কের শুরুর দিকেই কথা বলে নিলে। এমনি এমনি কোন প্রসঙ্গ ছাড়া আলোচনা করা ত কঠিন, আপনি চাইলে বানিয়ে বানিয়ে আপনার কোন বন্ধুর উদাহরণ দিতে পারেন, ‘ওদের এমন হচ্ছে, তুমি কি মনে কর?’ তখন এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি আসবে, হয়ত অপরজন বলবে, ‘বিয়ের পরে এত মেলামেশা কী?’ অথবা, ‘বিশ্বাস থাকলে এগুলো আবার কোন সমস্যা নাকি?’ – এভাবে আপনি জানতে পারবেন নারী পুরুষের স্বাচ্ছন্দ্যের ঠিক কোথায় আপনার অবস্থান আর কোথায় আপনার সঙ্গীর।

দ্বিতীয় যে কারণটা আমার মনে হয়েছে গুরূত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে ইনসিকিউরিটি। আপনার সঙ্গী/সঙ্গিনীর সর্বাবস্থায় আপনিই একমাত্র অবলম্বন আর থাকছেন না – এই বোধটা খুব ভয়ের। আমি ছাড়া আরও কারো সান্নিধ্য তার ভাল লাগতে পারে – এ ব্যাপারটা মানতে যেন খুব কষ্ট হয়। এ ধরণের ঈর্ষা শুধু বিপরীত লিঙ্গের মানুষদের মধ্যেই সীমিত থাকে না, টেলিভিশন, বই, পোষা প্রাণী, এমনকি নিজের সন্তানদের প্রতিও ঈর্ষা আসতে পারে। এই ঈর্ষাটা মূলতঃ ওখান থেকে আসে, যেখানে আপনি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন আপনার জন্য বরাদ্দকৃত সময়টুকু অন্য কেউ/ কিছু নিয়ে যাচ্ছে।

এ সমস্যা প্রতিরোধের উপায় কী? প্রথমেই চেষ্টা করতে হবে ইনসিকিউরিটি বোধটা দূর করতে। ছোটখাট সারপ্রাইজ, উপহার, তার পছন্দের কোন কাজ (যা আপনি আগে কোনদিন করেন নি) – এসব তার কাছে এই মেসেজটা পৌছাবে যে আপনি তার ছোটখাট সব ভাললাগার দিকেই লক্ষ্য রাখেন। ঈর্ষার উৎস যদি হয় কোন অভ্যাস, বা কোন বন্ধু, সচেতনভাবে তার সামনে কাজ দিয়ে প্রমাণ করুন যে প্রায়োরিটি লিস্টে ওসব কখনোই তার উপরে না। যেমন টিভি দেখার সময় সে কোন কথা বললে টিভিটা বন্ধ করে তার দিকে ঘুরে কথাটা শুনুন। বই পড়ার বেলায় বই বন্ধ করে মুখ তুলে তাকান। কয়েকবার এমন করলে সে মেসেজ পেয়ে যাবে, এর পর থেকে আপনি নরম সুরে বললেই হবে, আমি একটু পরে করি? সহজ! আর যদি ঈর্ষাটা কোন মানুষের বিরূদ্ধে হয়, চেষ্টা করুন এমন কোন ঘটনা এড়িয়ে চলতে যেখানে আপনার স্বামী/স্ত্রী বনাম বন্ধু – এদের মধ্যে কোন একজনের প্রোগ্রাম বেছে নিতে হয়। একই ট্রিকস বাচ্চাদের জন্যেও প্রযোজ্য। বাচ্চারা ঠিকই বুঝে ফেলে বাবা মা তাদের চেয়ে টেলিভিশন কে বা অন্য কিছুকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে কিনা। প্রতিশ্রুতি করে সেটা ভাঙলে কিছুতেই আপনার উপর শ্রদ্ধা বাড়বে না, এটা নিশ্চিত।

ঈর্ষার প্রথম কারণটা আমি মনে করি সমাধান করা বেশি কঠিন। যে রক্ষণশীল তার যেমন নিজের পক্ষে অনেক ভাল ভাল যুক্তি আছে, যে উদার, তারও আছে। অনেক সময় দেখা যায় মানুষ রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গিটাকেই ন্যায্য বলে ধরে নেয়, অপরজন তখন একই সাথে অপমানিত ও অসহায় বোধ করে। এই বোধ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে থাকা খুবই বিপদজনক।কারণ তখন স্বাভাবিক আবেগ ভালবাসার পথ রূদ্ধ হয়ে যায়।

ত কী করতে হবে? যে রক্ষণশীল, তাকেই সহনশীল হতে হবে। কারণ জোর জবরদস্তি করে নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা বোকামি। সম্ভব হলে সরাসরি বলতে পারেন, ‘এই কাজগুলো আমি সহজভাবে নিতে পারিনা। আমার মধ্যে প্রচণ্ড ঈর্ষা তৈরি হয়, যা আমি নিয়ন্ত্রণ এ রাখতে পারিনা।’ তখন অপরপক্ষ স্বাভাবিকভাবেই বলতে পারে, ‘এটা তোমার সমস্যা, আমি কেন তার জন্য বন্ধুত্ব নষ্ট করব?’ আপনি তখন বুঝিয়ে বলতে পারেন যে ‘একটা পরিবার খুব রক্ষণশীল থেকে খুব উদার – যে কোন অবস্থানে থেকেই চলতে পারে। এটা আমার বা তোমার সমস্যা নয়, এটা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যের সমস্যা। আমি চেষ্টা করব তোমার মত করে চিন্তা করতে, কিন্তু তুমিও চেষ্টা কর এমন কোন সমস্যা যেন না হয় সেটা খেয়াল রাখতে।’ এর পাশাপাশি আপনি যাকে নিয়ে ঈর্ষান্বিত হন, তাকে নিয়ে আরো বেশি বেশি চিন্তা করে দেখুন, সে মানুষটার সব কিছুই কি খারাপ? নাকি একটু দু’টো কাজ আপনার ভাল লাগেনা। তখন আপনার সঙ্গীকে আরো পরিষ্কার করে বলতে পারবেন, ঠিক এই বিষয়গুলো তে আমার আপত্তি। কেন আপত্তি সেটাও চিন্তা ভাবনা করে নিশ্চিত হয়ে নিন। আপনি যদি এতখানি পরিশ্রম করেন, আপনার সঙ্গী বুঝতে পারবে যে আপনি সত্যিই সমস্যা সমাধানে আন্তরিক। তখন তার তরফ থেকেও আন্তরিকতা বাড়বে।

পরিশেষে, একটা চমৎকার দু’আ করুন দু’জনে মিলে, হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে যে ভুল পথে আছে তাকে তুমি শুধরে দাও, আর যে সঠিক পথে আছে তাকে ধৈর্য ধরার শক্তি দাও।

(পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতার” সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

রুদ্রের ছবি ঘর…

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ একজন প্রয়াত বাংলাদেশী কবি ও গীতিকার যিনি “প্রতিবাদী রোমান্টিক” হিসাবে খ্যাত। আশির দশকে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠে যে কজন কবি বাংলাদেশী শ্রোতাদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি তাদের অন্যতম। 
কয়েকটি লাইনে তাকে দেখার চেষ্টা …..
img20171012_004438
কারো কারো স্বপ্নের সিন্দুকে থাকে আজীবন তালা,
আর কেউ ফলবান বৃক্ষের মতোন
হয়ে ওঠে বিপুল সমৃদ্ধ–
img20171012_004739
তবু শেষমেশ একটি নীলাভ প্রজাপতির জন্যও
যে যার স্মৃতির ফ্রেমে কষ্টকে বাঁধিয়ে রাখে।
img20171010_233630
দুঃখ আর স্মৃতিরা খুব বেশি দীর্ঘজীবী হয়
জীবনের অধিকাংশ অনুর্বর ভূমিতে।
img20171012_004631
যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’
সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।
img20171012_005449
প্রতিদিন কিছু কিছু ইচ্ছা মরে যায়
অনিচ্ছাকৃত মরে যেতে হয়
অযত্নে মরে যায়।
img20171012_004601
প্রতিদিনই কিছু কিছু ইচ্ছারা
নির্বাসিত হতে বাধ্য হয়
নির্বাসিত হয়।
img20171012_004532
ব্যর্থ প্রেমের মতো কিছু কিছু ইচ্ছা
স্মৃতির অসুখে ভোগে দীর্ঘদিন,
img20171012_005857
কিছু কিছু ইচ্ছা স্বইচ্ছায় হত্যা করি
ইচ্ছার হননে বিবর্ন হই বারবার
তবু হত্যা করতেই হয়।

 

আগন্তুক…

একটা ট্রেন মিস হয়ে গেলেও চান্স থাকে পরের ট্রেনটা পাবো,কিন্তু জীবনে এমনও সুযোগ আসে যা একবার মিস হয়ে গেলে আর কোন দিন দ্বিতীয়বার সুযোগ আসবে কি আসবেনা সেটা কেউ জানেনা।ন্যু ক্যাম্প থেকে আধা কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থিত লা নুয়েভা মার্কুয়েসা রেস্তোরায় একাকী একটা টেবিলে বসে আছি।স্পেন,ইতালী থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ান খাবারও পাওয়া যায় এই হোটেলে।ওসব জিবে জল আনা খাবারের কোনটার প্রতিই আমার মন নেই।এমনকি মন নেই চোখ ধাধানো ডেকোরেশান আর নানা দেশ থেকে আগত পযর্টকদের দিকেও।দক্ষিনের দেয়াল ঘেসে বসে থাকা অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত সুন্দরী এলসার দিকেও তাকাতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।সুদুর বাংলাদেশ থেকে বয়ে আনা মনটা পড়ে আছে আধা কিলোমিটার দূরত্বে থাকা ন্যু ক্যাম্পে।যে মনটা একই সাথে ব্যাথিত না পাওয়ার যন্ত্রনায়।বার বার মনে হয় যদি মনের সাথে সাথে পুরো মানুষটিকেই ন্যু ক্যাম্পের কোন একটা চেয়ারে হেলান দেওয়া অবস্থায় দেখতে পেতাম তবে ভাল হত।কিন্তু সে কপাল নিয়ে হয়তো আসিনি আমি।

বিষয়টি খোলাশা করে বলা দরকার।বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক এক সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছি ফুটবলের স্বর্গরাজ্য বার্সেলোনায়।লা নুয়েভা মার্কুয়েসার দক্ষিনের দেয়াল ঘেসে বসে থাকা অস্ট্রেলিয় সুন্দরী তরুনী এলসাও একই সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছে। সাত দিনের জন্য এসেছি এখানে।বার্সেলোনায় এসে ন্যু ক্যাম্পে খেলা না দেখে যাওয়া মানে অমূল্য কোহিনুর হাতে পেয়ে অবহেলায় ছুয়ে না দেখার মত।সম্মেলন গত কালই শেষ হয়েছে, হাতে আছে আজ এবং আগামী কাল।বাংলাদেশের আকাশ অতিক্রমের আগেই খোঁজ নিয়ে জেনেছি সম্মেলন শেষ হওয়ার পরেরদিনই ভাগ্য ক্রমে ন্যু ক্যাম্পেই এল ক্লাসিকো আছে।মনে মনে পণ করেছিলাম সম্মেলন শেষ করে হাতে যে দুদিন সময় থাকবে তার একদিন ন্যু ক্যাম্পে এল ক্লাসিকো দেখে কাটাবো।কিন্তু সবার স্বপ্ন সত্যি হয়না।

ঢাকার ফুটপাতের পাশে গড়ে ওঠা হোটেলে আলমারির কাঁচের ফাক দিয়ে নানা রকম মিষ্টি দেখার পরও সেসব যেমন পথ শিশুদের ভাগ্যে জোটেনা বরং স্বপ্নই থেকে যায়, ঠিক একই ভাবে আমার স্বপ্নও নিরবে খুন হয়।ক্রিড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্রর কাছ থেকে অনেক বার শুনেছি ন্যু ক্যাম্পের টিকেট পাওয়া আর হাতে আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ পাওয়া একই কথা।সে সব কথা মাথায় রেখে বার্সেলোনার মাটিতে পা রেখে সম্মেলনে যোগ দেবার আগেই ন্যু ক্যাম্পের একটা টিকেট হাতে পাওয়ার জন্য বার কয়েক ঢু মেরেছি।অনলাইনেও অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু সব টিকেট আগেই বিক্রি হয়ে গেছে।

কোন টিকেট নেই জানার পর মনটা বিষিয়ে উঠেছে।আহ কী শান্তি ঢাকাতে। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা চলাকালিন সময়েও দু একটা টিকেট পাওয়া যায়।কিছু না হোক ব্লাকেও টিকেট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এখানে? ভেবেছিলাম উন্নত দেশ হলে কি হবে, হয়তো দু একটা টিকেট এখানেও ব্লাকে পাওয়া যাবে।নাহ পাওয়া যায়নি এমনটি বলতে চাইছিনা।পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু সেই টিকেটের যে দাম তা দিয়ে হয়তো ঢাকা থেকে বার্সেলোনা দুবার যাওয়া আসার প্লেন ভাড়া হয়ে যাবে।বাড়িয়ে বলছি হয়তো কিন্তু নিদেন পক্ষে সে টাকা দিয়ে অন্তত একটা পালসার মটর সাইকেল কেনাই যাবে বলে মনে হয়েছে।ওই পরিমান অর্থ আমার নেই।ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়া আসার ভাড়াই কখনো ছিল কিনা সন্দেহ আছে, সেখানে অতগুলো টাকা আমি কোথায় পাবো।বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে এসেছি সম্মেলনে অংশ নিতে।সাথে খরচ বাবদ যা বাজেট ছিল তা থেকে হয়তো একটু কৃপণতা করতে পারলে ন্যু ক্যাম্পে এল ক্ল্যাসিকোটা দেখাই যেত। কিন্তু টিকেটের দুর্ভিক্ষ আমার ভাগ্যকে সুপ্রন্ন হতে দেয়নি।

বিয়ের আসর থেকে বর পক্ষ উঠে চলে গেলে কনের বাবার যে অবস্থা হয় আমার অবস্থা হয়েছে সেরকম।ন্যু ক্যাম্পের এতো কাছে এসেও খেলা দেখা হচ্ছেনা ভেবে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেছে।আসলে যেখানে এক মাস আগে থেকেই টিকেট বিক্রি হয়ে যায় সেখানে আমি খেলার মাত্র চার পাঁচদিন আগে টিকেটের আশা করে বরং বোকামীই করেছি বলে মন্তব্য করলেন এক স্প্যানিশ ভদ্রলোক।ন্যু ক্যাম্পের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার স্বপ্নটা স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে বাকি জীবন।এতো কাছে এসে যে স্বপ্নটা ধরা দেয়নি সেটা বাকি জীবনে ধরা দেবে বলে মনে হয়না।মনের অবস্থা তখন এমন হয়েছে যেন মনে হচ্ছে প্রিয়জন ছেড়ে গেছে আমাকে।ফুটবল পাগল এই আমার কাছে ন্যু ক্যাম্পের আকাশের নিচেয় এসেও ন্যু ক্যাম্পের গ্যালারিতে না বসতে পারাটা নিশ্চই তার থেকে কোন অংশেই কম বেদনার নয়।তখন আমার কাছে ন্যু ক্যাম্পই আমার প্রেমিকা।যে কাছে থেকেও অনেক দূরে।যার ছোয়া পাওয়ার আশা বুকে নিয়ে পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর দেশ আমার সোনার বাংলার আকাশ পাড়ি দিয়ে সাত সমুদ্র তের নদীর এপারের এই দেশটিতে এসেছিলাম সে আমাকে ছুতে দেয়নি।ন্যু ক্যাম্প আমাকে বঞ্চিত করেছে ভালবাসা থেকে।

লা নুয়েভা মার্কুয়েসায় বসে আমার মনের মধ্যে শুধু ন্যু ক্যাম্পে যেতে না পারার ব্যাথা বার বার মনকে উতলা করে তুলছে।টেবিলে রাখা প্রন স্যুপ থেকে সুবাশিত ধোয়া ওঠা থেমে গেছে সেই কখন তা বুঝতেই পারিনি।আমি যখন চিন্তার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি আর প্রেমিকা হারা প্রেমিকের মত হৃদয়ের ক্ষত নিয়ে বসে আছি লা নুয়েভা মার্কুয়েসার টেবিলে একাকী তখন সামনের চেয়ারটা টানতে টানতে বসার অনুমতি চাইলেন এক বৃদ্ধ লোক।তার কথাতে সম্বিত ফিরে পেয়ে তাকে বসার অনুমতি দিলাম।দেখে মনে হতে পারে যেন আমি মাস্টার মশাই আর আমার সামনে বসতে চাওয়া লোকটা আমার ছাত্র এবং সে বসার অনুমতি চাইছে।এই দেশটা বড়ই সুন্দর।এখানকার মানুষের আতিথেয়তার কথা নাইবা বললাম কিন্তু এদের ভদ্রতা সত্যিই মুগ্ধকর।হোটলের চেয়ারগুলো সবার জন্যই সমান অথচ সেখানে বসার জন্যও এরা কী সুন্দর ভদ্রতা করে অনুমতি চাইছে অপর প্রান্তে বসে থাকা সুদুর বাংলাদেশ থেকে আসা ন্যু ক্যাম্পে যেতে না পারার দুঃখে জর্জরিত এক তরুনের কাছে।

তার কথাতেই বুঝলাম তিনি স্প্যানিশ।আমার প্রনস্যুপের বাটিটার দিকে তাকিয়ে তিনি ইংরেজীতেই বললেন স্যুপতো ঠান্ডা হয়ে গেছে খাওনি কেন? তোমাকে বিষন্ন লাগছে কেন?তার কথাতে মনে পড়লো স্যুপের অর্ডার দেওয়ার পর সেই কখন স্যুপ দিয়ে গেছে তা খেয়ালই করিনি।

আমি স্যুপের চামচ নিয়ে খেতে যাবো তখন ভদ্রলোক খেতে নিষেধ করলেন।ওয়েটারকে ডাকলেন।স্প্যানিশে ওয়েটারকে কামারেরো বলা হয়।ওয়েটার এসেই তাকে সালাম দিল।ওদের কায়দায় এবং তিনি তখন ওয়েটারকে বললেন আমার স্যুপটা পাল্টে গরম স্যুপ পরিবেশণ করতে।ওয়েটার তার কথা মত সত্যি সত্যি মুহুর্তেই আমার স্যুপটা বদলে গরম স্যুপ দিয়ে গেল।আমি খেতে খেতে বৃদ্ধকে দেখতে লাগলাম।তিনি সম্ভবত প্রভাবশালী কেউ নয়তো এই রেস্তোরার নিয়মিত কাষ্টমার। তা না হলে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অধিকাংশ ওয়েটারই তাকে সম্মান দেখাতো না।এসবের পরও আমার মনটা ঠিকই পড়ে ছিল ন্যু ক্যাম্পে।মাত্র ঘন্টা খানেক পরই খেলা শুরু হবে।ন্যু ক্যাম্পের আকাশের নিচেয় থেকেও সেখানে যাওয়া হচ্ছেনা আমার এর থেকে বড় ব্যথার আর কি থাকতে পারে।এসব ভাবছি আর আনমনে স্যুপের চামচে চুমুক দিচ্ছি।হঠাৎ খেয়াল করলাম সামনে বসা বৃদ্ধ ভদ্রলোক আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।তিনি সম্ভবত বেশ খানিকক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। চোখে চোখ পড়তেই সেটা সরিয়ে না নিয়ে জানতে চাইলেন আমি কি কোন বিষয়ে খুব চিন্তিত কিনা।

মনে মনে ভাবলাম ন্যু ক্যাম্পে খেলা দেখার স্বপ্ন মরে গেছে এটা তাকে জানাই আবার মনে হলো তাকে জানিয়ে লাভ কি? তাতে বরং দুঃখটা আরো বাড়বে বই কমবেনা।দুঃখের সময় কেউ যখন শান্তনা দেয় তখন বরং দুঃখ কমে না গিয়ে আরো বেড়ে যায়।আমি কিছু বলছিনা দেখে তিনি আবারও জানতে চাইলেন। পরে ভাবলাম এতো করে যখন বলছে তাকে বলাই যেতে পারে।আমি বিষয়টা জানালাম।তিনি তেমন কিছু বললেন না।আপন মনে ধোয়া ওঠা কফিতে চুমুক দিলেন।মনে মনে রাগ হলো।এই দেশের মানুষ দেখছি বেশ কৃপন।

বিনা পয়সায় একটু সহানুভুতি দেখাবে,টিকেট পাইনি বলে যে কষ্ট পাচ্ছি তার জন্য একটু শান্তনা দেবে তার কোন নাম গন্ধ নেই?আমাদের দেশ হলে কেউ কি এরকম করতো?চারদিকে যতজনকে দেখা যেত সবাই শান্তনা দিত।বলতো এবার পাওনি তো কি হয়েছে পরে নিশ্চই পাবা।সুযোগতো বলে কয়ে আসেনা। দেখবা হুটকরে একদিন সুযোগ চলে এসেছে।আর এই স্পেনের এই বুড়ো মানুষটা মুখে টু শব্দটিও করলো না?মনে মনে ভাবলাম লোকটার সাথে আর কোন কথাই বলবো না। আমি আপন মনে স্যুপ খেতে লাগলাম।একটিবার শুধু তার দিকে তাকালাম।সে আগেই কফি শেষ করেছে।কি কারণে যেন কফি শেষ হওয়ার পরও তিনি টেবিল ছেড়ে চলে না গিয়ে বসে থাকলেন।

আমি স্যুপ খাওয়া শেষ করে টেবিল ছেড়ে উঠলাম।আশ্চর্য আমার সাথে সাথে বৃদ্ধ লোকটাও উঠলেন।আমি কাউন্টারে গিয়ে বিল পরিশোধের জন্য মানিব্যাগ বের করতেই কাউন্টার থেকে ইংরেজীতে জানানো হলো বিল দিতে হবেনা।কেন দিতে হবেনা জানতে চাইলে তিনি পাশের বৃদ্ধকে দেখিয়ে বললেন আপনি ওনার অতিথি তাই আপনার থেকে কোন বিল নেওয়া হবেনা।আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম।একটু আগেই সমবেদনা কিংবা শান্তনা দেয়নি বলে মনে মনে যাকে আমি কৃপণ বলেছি সে আমার স্যুপের বিল দিয়ে দিচ্ছে।তখন তার প্রতি আমার মুগ্ধতার সীমা নেই।তিনি আমাকে নিয়ে লা নুয়েভা মার্কুয়েসা থেকে বেরিয়ে এলেন।

ঠিক তখন খেয়াল হলো আমাকে যেমন তিনি বিল দিতে দেন নি তেমন তিনি নিজেওতো কোন বিল দিলেন না।তিনিকি সেটা ভুলে গেছেন?আর ভুলে গেলেওতো রেস্তোরার ম্যানেজার ভুলে যাবার কথা নয়।তখন মনে পড়লো সব ওয়েটার তাকে যে সম্মান দেখাচ্ছিল তার রহস্য হতে পারে তিনিই লা নুয়েভা মার্কুয়েসার মালিক।বার্সেলোনার সব থেকে সুন্দর হোটেলের একটি হলো এটি আর সেটির মালিক নিজের অতিথি হিসেবে আমাকে স্যুপ খাইয়েছেন ভাবতেই আনন্দে প্রায় আত্মহারা হয়ে উঠলাম।

জানার লোভ সামলাতে না পেরে আমি বলেই ফেললাম যে আপনিতো রেস্তোরার বিল দিতে ভুলে গিয়েছেন।তিনি তখন বললেন না ভুলিনি আসলে ওরা খাতায় লিখে রাখবে। মাস শেষে বিল নিয়ে নেবে।আমি একটা আগ বাড়িয়ে বললাম যে আমার মনে হচ্ছিল আপনিই এই জনপ্রিয় রেস্তোরাটির মালিক। বৃদ্ধ তখন আমার অনুমানকে নাকোচ করে দিয়ে জানালেন যে তিনি ওই রেস্তোরার মালিক নন বরং নিয়মিত কাস্টমারদের একজন।তখন মনে হলো তার কথাটাই যুক্তিযুক্ত এবং যেহেতু নিয়মিত কাষ্টমার তাই সব ওয়েটারই তাকে চেনে এবং সম্মান করে।লা নুয়েভা মার্কুয়েসা থেকে বেরিয়ে আমি আমার হোটেল ক্যাটালোনিয়া অ্যাটিনাসে যাবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। ওই হোটেলেই আমি উঠেছি। যেহেতু ন্যু ক্যাম্পে যাওয়া হলোনা সেহেতু হোটেলে ফিরে যাওয়াই সমুচিত হবে বলে মনে করলাম।বৃদ্ধকে বিদায় জানিয়ে হোটেলে ফিরবো বলতেই তিনি বললেন তার সাথে যেতে,তাকে একটু সময় দিতে।

কেন তাকে সময় দিতে হবে কিংবা কোথায় সময় দিতে হবে তা জানার দরকার হলোনা।অপরিচিত একটা তরুণকে যিনি নিজের টাকায় স্যুপ খাওয়াতে পারেন এবং যিনি বয়সে বাবার সমান কিংবা তার চেয়ে বড় তাকে একটু সময় দিলে আমারতো কোন সমস্যা নেই। তাছাড়া হোটেলে ফিরে গিয়েওতো অলস বসে থাকতে হবে। আবার মনে হলো এই বিদেশ বিভূইয়ে অপরিচিত লোকটাকে সময় দেওয়াকি ঠিক হবে?হোক সে যতই বৃদ্ধ কিংবা যতই সে আমাকে স্যুপ খাওয়াক।কি মনে করে তার গাড়িতে উঠে বসলাম।একটা বক্সস্টার এস ৭১৮ মডেলের পোর্শে কার দেখেই মনে হলো লোকটা বেশ টাকাওয়ালা।আমার মত এক শুটকো তরুনকে কিডন্যাপ করেও তার কোন লাভ নেই।সুতরাং বিনা দ্বিধায় গাড়িতে উঠে বসলাম।তিনিই ড্রাইভ করছেন আর আমি পাশে বসে আছি।এই ধরনের গাড়ি আমি শুধু হলিউডের সিনেমাতেই দেখেছি।ঢাকাতে এসব গাড়ি কল্পনাও করা যায়না।

দশমিনিটের ব্যবধানে গাড়িটা থেমে গেল।তিনি আমাকে গাড়ি থেকে নামতে বলে নিজেও নামলেন।আমি গাড়ি থেকে নেমেই স্তব্ধ হয়ে গেলাম।গাড়ি থেমেছে ন্যু ক্যাম্পের সামনে।তিনিকি তবে আমার কাটা ঘায়ে আরো একটু নুনের ছিটা লাগানোর জন্য সোজা ন্যু ক্যাম্পেই নিয়ে আসলেন।পরক্ষণেই হোটেলের কথা মনে করে চিন্তাটা মাথা থেকে সরিয়ে নিলাম।দেখিইনা বৃদ্ধ স্প্যানিশ কি করেন। গাড়িটা পার্ক করে আমাকে নিয়ে ন্যু ক্যাম্পের গেট দিয়ে ঢুকে গেলেন।অন্যরা যখন লাইন ধরে এগোচ্ছিল ভদ্রলোক তখন লাইন ছাড়াই এগিয়ে গেলেন।গার্ড এবং সংশ্লিষ্টরা কেউ কেউ তার সাথে হ্যান্ডশেক করলো।আমি এই বৃদ্ধ কে এবং তার ক্ষমতা আসলে কতটুকু তা বুঝতে চেষ্টা করে খেই হারিয়ে ফেলছিলাম।একবার মনে হলো তিনি সম্ভবত ন্যু ক্যাম্পের বড় কোন কর্মকর্তা আবার মনে হলো সম্ভবত স্পেনের সব থেকে ধনীদের একজন তিনি তাই সবাই তাকে ওরকম সমীহ করছেন।তিনি হাটতে হাটতে বললেন আমার কাছে দুটো টিকেট আছে আজকের এল ক্ল্যাসিকোর।সাথে আমার ওয়াইফ আসার কথা ছিল কিন্তু সে অন্য একটা কাজে আটকে পড়ায় আমি একাই আসলাম।হোটেলে যখন তোমার খেলা দেখার ইচ্ছের কথা জানতে পারলাম তখন ভাবলাম তোমাকেই সাথে নিই।আমি অবাক হয়ে বললাম আপনিতো চাইলে এই টিকেটটা পাঁচশো ইউরোতেও বিক্রি করতে পারতেন, তাহলে আমাকে ফ্রি নিচ্ছেন কেন?

আমার কথা শুনে বৃদ্ধ একটু হাসলেন। তার পর বললেন তোমার ফুটবলের প্রতি যে ভালবাসা দেখেছি তাতে তোমাকে দেওয়াই শ্রেয় মনে হয়েছে। আর তা ছাড়া টিকেটতো আমার কেনা লাগেনি। ফ্রি পেয়েছি।তবে হ্যা সাধারণ ভাবে এই টিকেটের দাম কিন্তু ৫০০ ইউরো না! আমি জানতে চাইলাম তাহলে এটার দাম কত? তিনি আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে দিয়ে জানালেন এই টিকেটের দাম ৪ হাজার ডলার। আর ব্লাকে বিক্রি করলে এটা সাড়ে চার হাজার থেকে ছয় হাজার ডলারে বিক্রি হবে।

সামান্য সময়ের পরিচয়ে একজন আরেকজনের জন্য এতো ডলারের টিকেট ফ্রিতে দিতে পারে তা কল্পনায়ও সম্ভব না আর আমি বাস্তবে দেখছি। তবে মনে হলো তিনি যেহেতু ফ্রি পেয়েছেন তাই অন্য কাউকে সেটা দিয়ে দিতেও ওনার গায়ে লাগছেনা। তবে চিন্তা একটা থেকেই গেল। কে এই ভদ্রলোক যে তাকে এরকম দুটো ভিআইপি টিকেট ফ্রিতে দিয়েছে। আবারও মনে হলো তিনি নিশ্চই প্রভাবশালী কেউ নয়তো স্পেনের সেরা ধনীদের একজন। এর মাঝেই বেশ কয়েকজন এসে তার সাথে দেখা করে গেল। স্প্যানিশে কি সব বললো তার মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝতে পারিনি।

খেলা দেখলাম খুব আয়েশ করে। ন্যু ক্যাম্পের কথা উৎপল শুভ্রর মুখে যেরকম শুনেছি ঠিক তাই। অনেক উচুতে বসে যারা খেলা দেখছে আমি নিশ্চিত তারা কার পায়ে বল কিংবা কে কোথায় দৌড়াচ্ছে তা বুঝতে পারছেনা। অত উচু থেকে দেখতে পাওয়ার কথাও নয়। জায়ান্ট স্ক্রিন থাকায় কেউ কেউ সেটা দেখে খেলোয়াড় চিনছে নতুবা কেউ কেউ সাথে করে দুবীর্ন নিয়ে এসেছে। আমরা ভিআইপি টিকেটধারী হওয়ায় জায়ান্ট স্ক্রিন কিংবা দুবীর্ন কোনটারই দরকার পড়েনি। খেলার উত্তেজনায় আমি তখন কম্পমান। যেন মেসি রোনালদো নয় আমি নিজেই খেলছি। বৃদ্ধ লোকটাও মাঝে মাঝে উত্তেজিত হচ্ছেন এবং আশ্চর্য ভাবে তিনিও আমার মতই বার্সেলোনার সমর্থক। তবে ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হওয়ায় খেলা ড্র হলো। বেরিয়ে যাওয়ার জন্য উঠতেই বৃদ্ধ আমাকে থামালেন।তিনি বললেন আরেকটু সময় অপেক্ষা করতে।বৃদ্ধর ছেলে আসবেন তার সাথে দেখা করে তার পর ন্যু ক্যাম্প ত্যাগ করবেন।আমি বিনা বাক্য ব্যায়ে মেনে নিলাম। যার কল্যাণে আমার আজীবনের অধরা স্বপ্ন সত্যি হলো এই ন্যু ক্যাম্পে বসে এল ক্ল্যাসিকো দেখলাম তার জন্য একটু কেন এক বছরও অপেক্ষা করা যায়।

কিছুক্ষণ পর বৃদ্ধর ছেলে আসলেন। বৃদ্ধ পরিচয় করিয়ে দিলেন এটা আমার ছেলে। আমার মুখে তখন কোন কথা নেই। আকাশের ওপরে আকাশ তারও ওপরে আরেকটা আকাশ যেন আমার মাথার উপর এক সাথে ভেঙ্গে পড়েছে।বৃদ্ধ তার যে ছেলেকে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন তাকে যে আমি আগে থেকেই চিনি। আমার সামনে দাড়ানো বৃদ্ধর সেই ছেলেটির নাম জর্ডি আলবা। বার্সেলোনা ফুটবল দলের বিখ্যাত খেলোয়াড় তিনি।
img20171011_183238

জাজাফী
ওয়েবসাইটঃ www.zazafee.com
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

 

বাবা মায়ের দুঃখ গুলি

img20171011_101743
বিশ্ব প্রবীণ দিবস চলে গেল। বাংলা ট্রিবিউনে ওল্ডহোমের উপর একটি ফিচার পড়ে মনটা ব্যাথায় ভরে উঠলো।
পাঁচ সন্তানের পাঁচজনই আমেরিকা,
কানাডা,অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন টাকার অভাব নেই কিন্তু ঠাই হয়নি মায়ের। আশ্রয় নিয়েছেন ওল্ড হোমে। বাদ পড়েনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের জ্ঞানী অধ্যাপক। সমাজের উচ্চশ্রেনীর অনেকের বাবা মা আজ আশ্রয় নিয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। ক্রমাগত ভাবে বাড়ছে ওল্ডহোম।

আক্ষেপ করে এক মা বললেন “প্রকৃতি কাউকে ক্ষমা করবে না”। ওরাও নিশ্চই একদিন এখানেই আসবে। এটা শুনে মনে পড়লো নচিকেতার গাওয়া বৃদ্ধাশ্রম গানটির কথা।যেখানে মা অপেক্ষায় আছেন আরো কটাদিন বেঁচে থাকার যেন তার সন্তানও বৃদ্ধাশ্রমে ঠাই নিবেন সেই দৃশ্যটি তিনি দেখে যেতে পারেন।ওল্ডহোম বিষয়টি প্রতিটি সন্তানের জন্য কলংঙ্ক।

ছোটবেলায় আমরা যখন অসহায় ছিলাম তখন বাবা মাই ছিলেন আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। ঠিক তেমনি বাবা মায়ের বয়স হলে ছেলে মেয়েরাই তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন হওয়ার কথা কিন্তু আমরা অমানুষ হয়ে গেছি। বাবা মাকে বোঝা মনে করে ফেলে রেখে আসছি ওল্ড হোমে।

আমি তখন খুব ছোট। বাবা পুকুরে সাতার কেটে গোসল করতেন। আমি বলতাম বাবা আমিও পুকুরে নামবো। বাবা পুকুর থেকে উঠে এসে আমাকে তুলে ধরতেন তার পর ছুড়ে মারতেন পুকুরের পানিতে! আমি প্রায় ডুবেই যেতাম। অনেক পানি খেতাম। বাবা তখন আমাকে তুলে নিতেন। এভাবে অনেক বার বাবা আমাকে মাঝ পুকুরে ছুড়ে মেরেছেন। আমি অবিরাম পানি খেয়েছি আর ডুবতে ডুবতে বাবা আমাকে টেনে তুলেছেন। আমার মনে হত বাবা আমাকে ভালবাসলে নিশ্চই ওভাবে ছুড়ে ফেলতেন না।

ভাইয়ার একটা সাইকেল ছিল। আমি চাইতাম সেই সাইকেল চালানো শিখবো। বাবাকে অনেকবার বলার পর বাবা আমাকে সাইকেলে চড়তে দিলেন। নিজে পিছনে ধরে রাখলেন।আমি খুব বিশ্বাস করে সাইকেলে উঠে বসলাম। প্যাডেল করলাম আস্তে আস্তে। বাবা তখন হুট করে সাইকেলে ধাক্কা দিয়ে ছেড়ে দিলেন। আমি কিছুদুর গিয়ে পড়ে গেলাম। হাটু ছুলে গেল। এভাবে বাবা আমাকে অনেক বার সাইকেলে চড়িয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন। আমি ভাবতাম বাবা যদি আমাকে ভালবাসতো তবে নিশ্চই আমাকে ওভাবে সাইকেলে বসিয়ে দিয়ে ছেড়ে দিতেন না।

আমি জুতার ফিতা বাঁধতে পারতাম না। বাবাকে বলার পরও বাবা আমার জুতার ফিতা বেঁধে দিত না। অথচ আমার অন্য বন্ধুদের বাবা তাদের জুতার ফিতা বেঁধে দিত। বাবা আমার পাশে বসে বার বার বলতেন এভাবে বাঁধো ওভাবে বাঁধো কিন্তু নিজে বেঁধে দিতেন না। আমি ভাবতাম বাবা যদি আমাকে ভালবাসতেন তবে নিশ্চই ছোট বেলা আমার জুতার ফিতা বেঁধে দিতেন।

বাবার চা খাওয়ার খুব নেশা ছিল।নিজে একা একা চা বানিয়ে খেতেন।আমি যখন বলতাম বাবা আমাকেও এক কাপ দাওনা প্লিজ। বাবা কিচেন দেখিয়ে দিতেন। বলে দিতেন কি কি করতে হবে। নিজের বানানো এককাপ চা খাওয়ার পরও বলতেন আমার জন্যও এক কাপ বানাসতো। বাবা যদি আমাকে ভালবাসতো তবে নিজে যখন চা বানিয়েছিল আমার জন্যও এক কাপ বানাতো।

বাবা খুব গাছে চড়তে পারতো।আমারও খুব লোভ হত। বাবাকে বলতেই বাবা আমাকে কাঁধে করে নারকেল গাছের বেশ উপরে নিয়ে যেত। তার পর বলতো গাছ জড়িয়ে ধরতে। আমি যখনি জড়িয়ে ধরতাম বাবা আমাকে ফেলে রেখে তরতর করে নিচে নেমে যেত। আমার কান্না পেতো। আমি তখন আস্তে আস্তে হেচড়েপেচড়ে নিচে নামতাম আর আমার বুকটা ছুলে যেত। বাবা যদি আমাকে ভালবাসতো তবে ওরকমটি করতে পারতো না।

এক প্যারেন্টস ডেতে বাবাকে নিয়ে বলতে বলা হয়েছিল আমাকে। আমি তখন এসব কথা বলেছিলাম। এ গুলোই ছিল বাবার বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ। পরদিন বাংলা মিস ক্লাসে এসে বললেন আজ আর আমি পড়াবোনা। তোমাদের সাথে গল্প করবো।তোমাদেরকে কিছু প্রশ্ন করবো তোমরা যারা উত্তর জানো তারা হাত উচু করবা আর না জানলে চুপ থাকবা। তিনি প্রশ্ন করলেন তোমাদের মধ্যে কে কে সাতার কাটতে পারো? আমি সাথে সাথে হাত উচু করলাম। মিস আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলেন। আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখি আর কেউ হাত উচু করেনি।তার মানে তারা কেউ সাতার কাটতে পারেনা। এর পর মিস একে একে প্রশ্ন করলেন কে কে সাইকেল চালাতে পারো, কে কে গাছে চড়তে পারো, কে কে নিজে নিজে জুতার ফিতা বাঁধতে পারো ইত্যাদি ইত্যাদি। দেখা গেল আমি ছাড়া আর কেউ হাত উচু করছেনা।

মিস আমাকে কাছে ডেকে নিয়ে কাঁধে হাত রেখে বললেন তুমি কি বুঝতে পারছো কিছু? আমি বুঝতে পারলাম।আমার অগচরে বাবা আমাকে সব শিখিয়েছেন।আমার চোখেও তখন পানি চলে এসেছিল।সেদিন বাড়িতে গিয়ে দেখি আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরে অনেক ক্ষণ কেঁদেছিলাম। বলেছিলাম বাবা তুমিই পৃথিবীর সেরা ।

হয়তো কারো কারো বাবা তাকে মাসে দু মাসে আগ্রার তাজমহল,মিশরের পিরামিড কিংবা নায়াগ্রা ফলস দেখাতে নিয়ে যায়।হয়তো কারো কারো বাবা তাকে আইফোন সিক্স থেকে শুরু করে অন্য সব না চাইতেই দেয়।আবার কারো কারো বাবা হয়তো সন্তানকে কিছুই দিতে পারেনা।এমনকি দুবেলা পেটভরে খাবারও দিতে পারেনা।কিন্তু বাবাদের ভালবাসার কোন কমতি নেই।যে বাবা সন্তানকে আলিশান বাড়ি দিচ্ছেন ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছেন প্যারিসে,ভেনিসে ট্রয় নগরিতে সেই বাবা তার সন্তানকে যেমন ভালবাসেন বাসতে চান ঠিক তেমনি ভাবে যে বাবা মা তার সন্তানের মুখে পেট পুরে খাওয়ার মত খাবারটুকুও তুলে দিতে পারছেন না তারাও তাদের সন্তানকে একই রকম ভালবাসেন।শুধু ভাগ্যের দরুন বাকিদের মত দেখাতে পারেন না।

বাবারা আসলে সন্তানের কাছে তেমন কিছু চায়না।যদিও সন্তান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হল তারা যেমন আমাদের অসহায় কালে আমাদের আগলে রেখেছিলেন তেমনি তাদের অসহায় কালে আমরাও তাদের যেন আগলে রাখি।এবার একটা গল্প বলি শুনুন, এক বৃদ্ধ লোক একটা মোবাইল মেকানিকের কাছে তার মোবাইলটা দিয়ে বললেন দেখতো বাবা আমার মোবাইলটার কি সমস্যা।কল আসেনা। মোবাইল মেকানিক ভাল করে দেখে বললেন চাচা আপনার মোবাইলেরতো কোন সমস্যা নেই। বৃদ্ধা তখন মোবাইলটা হাতে নিতে নিতে বললেন মোবাইল যদি ঠিকই থাকবে তবে এই মোবাইলে আমার ছেলে মেয়েদের ফোন আসে না কেন?বৃদ্ধর চোখে তখন অবিরাম অশ্রুধারা।

তার সন্তানেরা তাকে ছেড়ে গেছে ওল্ড হোমে। তাদের কারো কারো আছে আলিশান বাড়ি ঠিক যেমনটি আমরা এবারের প্রবীণ দিবসে বাংলাট্রিবিউনের করা ফিচারে দেখতে পেলাম। মায়ের একধার দুধের দাম শরীরের চামড়া কেটে জুতা বানিয়ে দিলেও শোধ হয়না বলে আমরা শুনেছি। অন্ধকারে ভয় পেয়ে যে মাকে জড়িয়ে ধরতাম সেই মাকে কি করে আমরা ওল্ডহোমে ফেলে যাই জানা নেই। একটিবারও কি কখনো আমরা ভেবে দেখেছি আমাদের সেই সব দিনের কথা।

যে বাবার গলাজড়িয়ে না ধরলে ঘুম আসতো না।যে মা হাতে তুলে খাইয়ে না দিলে খাওয়া হত না।যে মায়ের আঁচলের তলে ছিল আমাদের সব থেকে নিরাপদ ভূবন সেই মা বাবাকে কি করে সন্তান হয়ে আমরা ভুলে যাচ্ছি তা ভাবতেই মনে হচ্ছে ধরণী দ্বিধা হও।নিজের স্ত্রী সন্তান যদি বাড়িতে থাকার যায়গা পায়,দু বেলা দু মুঠো ভাত পায় তবে জন্মদাতা পিতা মাতা কেন পাবেনা?

ইউরোপ আমেরিকার কথা বাদ দিতে চাই।আমাদের দেশে আইন করা উচিত কেউ যদি বাবা মাকে ওল্ডহোমে রেখে আসে তবে তাদের জেল জরিমানা করা হবে। এতো নীতি বাক্য বলে লিখে ভাষণ দিয়ে যখন ওই সব সন্তানদের মনে বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব বুঝানো যায়নি তখন আইন করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।লোকে যেমন বলে সোজা আঙ্গুলে ঘি ওঠেনা অনেকটা সেরকম।অন্তত তার পরও বাবা মা নিজের সন্তান পরিবারের সাথে থাকুক আমি এমনটিই চাই।পৃথিবীতে কোন মা বাবাকে যেন উহ শব্দটিও করতে না হয় সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করি। আজ থেকে পণ করি নিজে খেয়ে না খেয়ে হলেও বাবা মাকে দেখে রাখবো ভালবাসবো। পৃথিবীর সব দুঃখী বাবা মার কাছে সেই সব অপরাধী সন্তানের হয়ে ক্ষমা চাই।
img20171011_101840
———–
বাবা মায়ের দুঃখ গুলি

জাজাফী
উত্তরা,ঢাকা-১২৩০
০১ অক্টোবর ২০১৭
দৈনিক ইত্তেফাকে ৩ অক্টোবর ২০১৭ প্রকাশিত

 

দাম্পত্য – ৬

পরিবারে একজন পুরুষের সবচেয়ে প্রিয় দুইটি নারী – মা আর স্ত্রীর মধ্যকার বিবাদের অনেকটাই চলে ভালবাসার দাবি তে। নতুন দম্পতিরা সত্যিই বুঝতে পারেন না, একে অপরকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে গিয়ে তারা আর সবার থেকে কতটা আলাদা হয়ে গেছেন। একটা ফ্রেন্ড সার্কেলে দুজন জুটি বেঁধে গেলে অন্যদের কেমন হিংসে হয় এটা একটু কল্পনা করলে বুঝতে পারবেন
‘কাছের মানুষটা পর হয়ে গেছে’ – এই উপলব্ধি পরিবারের অন্যদের কতটা কষ্ট দেয়।
img20171010_233209
মানি, নতুন দম্পতির পরস্পরকে জানা ও চেনা প্রয়োজন। কিন্তু তা কি আর সব কিছু থেকে নিজেকে আলাদা করে তারপর?
img20171010_233519
দুটো গাছ একজন আরেকজনের উপর ভর করে বেড়ে উঠবে। তার জন্য কি শেকড়গুলি সব উপড়ে তবেই এক হতে হবে? লতাগুলো হয়ত পরস্পরের বাহুডোরে থেকে কিছুই টের পাবেনা। কিন্তু মাটির কান্না? মাটি সে শূন্যতা ভরবে কী দিয়ে?

তিল তিল করে বুক চিরে যে আদরের ফসল এত বড় হয়েছে, তার উপস্থিতি ছাড়া মাটির ত আর কিছুই নেই! সে বাঁচবে কী নিয়ে?
img20171010_232901
আমরা সহজে বলি, বাবা মায়েরা আমাদের যথেষ্ট ‘স্পেস’ দেয়না। সত্যি কথা কী, স্পেস দেয়ার জন্য মায়ার বাঁধন একটা একটা করে ছিঁড়ে রিক্ত শূন্য হয়ে, তবেই স্পেস তৈরি করা যায়। স্পেস মানে ত খালি জায়গা, তাই না? যে জায়গাটা বাবা মা মনোযোগ দিয়ে যত্ন দিয়ে ঘিরে রেখেছিল, স্পেস দেয়ার জন্য সেখান থেকে তাদের নিজেদের গুটিয়ে নিতে হবে, তাই ত?
img20171010_233238
গাছের উপমায় আবারো ফিরে আসি। শেকড় আর লতানো বাহু – দুটোর টানই তীব্র। দুটোর জন্যই তার আকর্ষণ অসীম। মমতাময়ী মা যেভাবে খাবার জন্য পীড়াপীড়ি করত, অসুখ হলে অস্থির হত – ওই আনন্দগুলি ত অন্যরকম! অমনি করে ভালবাসা পাওয়ার ইচ্ছে ত কোনদিন মরে না।
img20171010_233259
আর স্ত্রী? তার জন্য একটা পুরুষ জীবন দিতে পারে। তার যা আছে সবকিছু বিনিয়োগ করতে পারে।

ভুল হয়ে যায় তখনই, যখন ভালবাসায় অবুঝ হয়ে এই মানুষগুলো তাদের আপন আপন গন্ডি ছেড়ে আরও অনেকটা দখল করে নিতে চায়। তাই পুরুষটিকে হতে হবে খুবই সচেতন। মা যেন কখনও না ভাবে ছেলেটা বদলে গেছে। আগের মত করে সময় দিতে না পারলেও আদুরে গলায় ‘মা তোমার ঐ রান্নাটা অনেকদিন খাইনা’, বা ‘মা আমার মাথায় একটু হাত রাখ’ – এ ধরণের কথা বলে ছোট ছেলেটা হয়ে গেলে মায়ের অনেক দুঃখ দূর হয়ে যাবে।
img20171010_233147
মায়ের বয়স হয়েছে, তিনি চান বউ সংসারের দায়িত্ব নিক, কিন্তু এত যত্নে গড়ে তোলা সিস্টেম একটা আনাড়ি মেয়ের হাতে তুলে দেয়ার আগে তিনি চাইবেন মেয়েটাকে তার সিস্টেমে অভ্যস্ত করিয়ে নিতে। কিন্তু সুপারভাইজিং, ট্রেনিং বেশ কঠিন কাজ। অনেক ধৈর্য আর সহনশীলতা দরকার হয়। বিভিন্ন কারণে গুরুজনেরা এই বয়সে অনেক সময় বুঝতেও পারেন না কোন কথাটায় কতটুকু কষ্ট পেতে পারে ছেলেমেয়েরা।
img20171010_233107
এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সেনসিটিভিটি এর মাত্রা বদলায়। যুক্তি দিয়ে সরাসরি ভুল ধরাটা আমাদের প্রজন্মে কমন, উনারা হয়ত খুবই আহত হন। আবার স্বভাব চরিত্র নিয়ে একটু খোঁচা মেরে কথা বলাটা উনাদের কাছে হয়ত নিছক রসিকতা, আমরা ভীষণ অফেন্ডেড হই।

যাই হোক, নতুন বউয়ের এ ধরণের আচরণে কষ্ট লাগবে। স্বভাবতই সে সবার আগে স্বামীকে খুলে বলবে।
img20171010_233011
স্বামীর দায়িত্ব এখানে রিঅ্যাক্ট না করে পুরোটা শোনা, মা যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে অকপটে স্বীকার করা, তারপর মায়ের দোষগুলোর পিছনে ওনার ভাল নিয়ত টুকু দেখানোর চেষ্টা করা, বা বুঝিয়ে বলা যে এটা জেনারেশন গ্যাপ ইত্যাদি। এতে দুটো সুবিধা আছে। স্ত্রী বুঝবে এটা একটা সমস্যা, আর তা সমাধান করার জন্য সে একা নয়, আরেকটি সহানুভূতিশীল মন তার পাশে আছে।

মায়ের দোষ ছেলে স্বীকার করলে স্ত্রী তখন ব্যাপারটাকে একটা সমস্যা হিসেবেই দেখবে, অন্যায় হিসেবে না। এতে করে সমস্যার সমাধান না হোক, সমস্যাটা আপনাদের মধ্যকার বন্ধন আরো দৃঢ় করতেই সাহায্য করবে।

আবার এদিকে মা খুবই কষ্ট পাবেন যদি ছেলে এসে তার দোষ ধরিয়ে দেয় বা বউয়ের দোহাই দেয়। আগে থেকে বাবা মা সমালোচনা গ্রহণ করতে অভ্যস্ত না হলে বিয়ের পরে সে চেষ্টা করতে যাবেন না। বরং এভাবে শুরু করতে পারেন, ‘কী মা, তোমার বউ নাকি এটা এটা করেছে!’
img20171010_233715
মায়ের প্রতি আপনার আবেগ যেন প্রকাশ পায়, বউয়ের নাম ধরে না বলে ‘তোমার বউ’ বলার মাধ্যমে তাদের দুজনের সম্পর্কের উপর জোর দিন (নিজেকে আড়াল করে), এটা করেছে – বলার মাধ্যমে হালকা একটা দোষারোপের ভঙ্গি করুন। এতে করে মায়ের মনে ‘ছেলে আমার কথা শুনবে না’ এই ধরণের ডিফেন্সিভ ভাবটা থাকবেনা। উনি মন খুলে কথা বলতে পারবেন। আপনি আন্তরিকভাবে শুনলেই উনার মনটা অনেক শান্ত হয়ে যাবে। সমস্যা যদি ঘরের কাজ সংক্রান্ত হয় তাহলে কাজটা আপনি শুরু করুন, স্ত্রীকে আগে থেকেই রাজি করিয়ে রাখবেন যাতে সেও জয়েন করে।
img20171010_233546
বউ শাশুড়ি ঘটিত সমস্যা ত আর হাদীস এ নেই, কিন্তু তার সূত্রপাত যেখানে, ভালবাসা জনিত ঈর্ষা, তার উদাহরণ কিন্তু ঠিকই আছে। আয়িশা (রা) এর ঘরে মেহমানদের জন্য রাসুলুল্লাহ (স) এর অপর স্ত্রী খাবার পাঠিয়েছিলেন। আয়িশা (রা) রাগে খাবার সহ বাটি মাটিতে ফেলে দেন। কী অস্বস্তিকর অবস্থা! রাসুলুল্লাহ (স) করলেন কী, ‘তোমাদের মা ঈর্ষায় পড়েছেন’ বলে নিজেই ভাঙা টুকরাগুলো মাটি থেকে তুলতে লাগলেন। মেহমানদের সামনে অপমান করা হয়েছে মনে করে রাগ করলেন না, শাস্তি দিলেন না, মেহমানদের কাছে বললেন ‘তোমাদের মা’; আবার অপর স্ত্রীর বাটি ভেঙে তার উপর অন্যায় করা হয়েছে, এ জন্য আয়িশা (রা) এর ঘর থেকে একটা বাটি নিয়ে উনাকে ফেরত দিলেন।
img20171010_232834
কে ঠিক আর কে বেঠিক সে বিচার করতে যাবেন না ভুলেও। দুজনেই অবুঝ, দুজনেই আপনাকে খুব ভালবাসে, দুজনেই চায় আপনার ঘরটাকে সুখ দিয়ে ভরিয়ে তুলতে। আপনার কাজ শান্তিপূর্ণ মধ্যস্থতা করা। শেকড় থেকে জীবনীশক্তি আর সঙ্গী গাছের থেকে দৃঢ়তা পেলে একটি গাছ ফুলে ফলে ছায়ায় কত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারবে চিন্তা করে দেখেছেন?

(পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতার” সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

(১০ অক্টোবর) বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস হল “পৃথিবীর সকলের মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং সচেতনতার পথ।”
img20171010_075948
১৯৯২ সাল থেকে প্রতিবছরের মত ১০ অক্টোবর পালিত হচ্ছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। । কিছু দেশে এই দিনকে মানসিক রোগ সচেতনতা সপ্তাহের অংশ হিসাবে পালন করা হয় । সেই ১৯৯২ সময় ১৫০টি দেশের সমন্বয়ে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেন্টাল হেল্থ- এর উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস।

গত সাত বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় কি কি ছিল?
আসুন এক নজরে দেখে আসি…
img20171010_070808
২০১৭ সালের প্রতিপাদ্য:
‘কর্মস্থলে মানসিক স্বাস্থ্য’

মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বাড়বে,এই সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এবারের মূল উদ্দেশ্য।
img20171010_070451
২০১৬ সালের প্রতিপাদ্য:
‘সবার জন্য প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা’

বর্তমান বিশ্বব্যাপী মানসিক রোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরায়ন, আর্থসামাজিক অবস্থা, মানসিক চাপ,বংশগতি ও অন্যান্য শরীরবৃত্তিক ও মনোসামাজিক মানসিক রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির অন্যতম দুটি কারণ। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়।
img20171010_070054
২০১৫ সালের প্রতিপাদ্য:
‘মানসিক স্বাস্থ্য মর্যাদাবোধ’

মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও মানুষ। তাদের সমাজে অন্যান্য ব্যক্তির মতো সম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
img20171010_065721
২০১৪ সালের প্রতিপাদ্য:
‘সিজোফ্রেনিয়ার সাথে বসবাস’

সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা অনেকেই অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কারণে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা পায় না। সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্তরা যাতে সবচেয়ে ভালো সেবা এবং এই রোগ থেকে উত্তরণের সুযোগ পায়, সে জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
img20171010_065458
২০১৩ সালের প্রতিপাদ্য:
“মানসিক স্বাস্থ্য এবং বয়োজ্যেষ্ঠ”

মানসিক স্বাস্থ্য এবং বয়োজ্যেষ্ঠ বা বয়স্কদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্মিলিত বিষয়গুল নিয়ে খোলা বা উন্মুক্ত আলোচনায় উত্সাহিত করা। এবং প্রয়োজনে সহায়তা এবং প্রাথমিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোরদার।
img20171010_065101
২০১২ সালের প্রতিপাদ্য:
“বিষণ্নতা: একটি বিশ্বব্যাপী সঙ্কট”

পুরুষের চেয়ে নারীদের মধ্যে বিষণ্নতার হার প্রায় দ্বিগুণ। বিষণ্নতার কারণে ব্যক্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, শিক্ষাগত, পেশাগত ও সামাজিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্বাভাবিক কর্মতৎপরতা ব্যাহত হয়।
img20171010_064845
২০১১ সালের প্রতিপাদ্য:
“মানসিক স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ”

মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য যদি বিনিয়োগ বৃদ্ধি
এবং কার্যকরী ও সম্মানজনক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়, তবে জনসংখ্যা জনসম্পদে রূপান্তরিত হবে। ফলে তা মানব ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে কল্যাণকর হবে।
img20171010_064238
২০১০ সালের প্রতিপাদ্য:
“নগরায়ণ: জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ”

ঐতিহাসিকভাবে,শহর হল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি ইঞ্জিন,সংস্কৃতি কেন্দ্র। কিন্তু যখন মানব সম্ভাব্যতা অসীম হয়, তখন সম্পদ সীমিত। নগরায়ণ সমস্যার সৃষ্টি করে, কিন্তু সমাধান করতে হলে এখনই ভাবতে হবে।
img20171010_080942
বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস’ পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে দেশব্যাপী সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয় প্রতি বছর।
রেফারেন্স: Wiki, WHO.

ফাতেমা শাহরিন

 

দাম্পত্য -৫

দম্পতি মানে কী? আভিধানিক অর্থে জায়া আর পতি।
img20171009_155336
সুখী দম্পতি মানে তাহলে একজোড়া সুখী চড়াই চড়ানি – সমীকরণটা যদি এত সহজ হত, তাহলে চারপাশে শুধু সুখেরই বন্যা বইত।
img20171009_155508
বিয়ের সাথে সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে চলে আসে শ্বশুরবাড়ি, আত্মীয় স্বজন। বিয়ে হলে একটা ছেলেকে বা একটা মেয়েকে একই সাথে অনেকগুলো বন্ধন তৈরি করতে হয়। এদের একেকটার ডাইমেনশন একেক রকম। যেমন শ্বশুর শাশুড়ির চাহিদার সাথে শ্যালক সম্বন্ধীয় আত্মীয়ের চাহিদার মিল নেই।
img20171009_155137
একটা নতুন বউ বা নতুন জামাই, বিয়ের অনুষ্ঠানে যেমন হাসি খুশি, লাজুক একটা ভাব নিয়ে সম্পর্কের বাঁধনে জড়ায়, নানা ধরণের আত্মীয়ের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে তা থেকে একটু সরে আসলেই অনেক সমালোচনার শিকার হতে হয়।
img20171009_154613
আজকের লেখাটা শুধু ছেলেদের উদ্দেশ্য করে লিখব। আমি জানি, বিয়ের আগে ছেলেরা খুবই ভয় পেয়ে যায় তার সবচেয়ে প্রিয় দু’জন মানুষ, মা আর স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক কেমন হবে তাই নিয়ে। অনেক ছেলেই এই অশান্তির ভয়ে বিয়ে করতেও চায়না।
img20171009_155101
তারা বুঝেও উঠতে পারেনা কী এমন হয়ে গেল সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে, যে ঘরে পা দিয়েই মায়ের ছলছল চোখ, স্ত্রীর অগ্নিবর্ষণ (অথবা উল্টোটা) দেখতে হচ্ছে। প্রথম প্রথম হয়ত আপনি আসাতে পরিস্থিতি বদলাবে, কিন্তু মনটাকে বদলাবে কে? মায়ের কাছে বউয়ের নামে অসন্তোষ, বউয়ের কাছে মায়ের নামে গঞ্জনা – এসব শুনে শুনে ছেলেটার ত মানুষের উপর থেকে সম্মানটাই উঠে যাওয়ার কথা। প্রথম প্রথম ছেলেটার মন খারাপ থাকে, নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়, একটা সময় বুঝতে পারে, উপেক্ষা করাটাই সহজতম পন্থা। দুইজন কে আলাদা আলাদা তাল দিয়ে মন রক্ষা করলেই সুন্দর শান্তি থাকবে ঘরে। আর সব মেয়েলি ব্যাপার নিয়ে ছেলেদের মাথা ঘামাতে নেই। তাদের সমস্যা তারাই সমাধান করুক, এ সময়টা বরং আমি একটু ঘুমিয়ে নেই।
img20171009_154819
আমি দাবি করছিনা আমি এই হাজার বছরের সমস্যার কোন ইনস্ট্যান্ট সমাধান নিয়ে এসেছি। আমি চাই আপনি আপনার ভূমিকাটাকে একটু যাচাই করুন। একজন সন্তান হিসেবে, একজন স্বামী হিসেবে, একটা পরিবারের প্রধান হিসেবে (শ্বশুরেরা সাধারণত মৌনী ঋষি হন – সময় মত খাবার, গরম পানি আর সংবাদপত্র পেলেই তাদের চলে তাই ফ্যামিলি ম্যানেজমেন্ট এর হর্তাকর্তা হিসেবে) আপনার কি আরো কিছু করার ছিল? আমি জানি এটা এমন এক সমস্যা যা নিয়ে অফিসের কলিগের সাথে আলাপ করা যায়না। বন্ধুরাও হয়ত ধৈর্য ধরার উপদেশ দিয়েই দায় সারবে। কিন্তু আপনি কি আরো একটু বুদ্ধি খরচ করে আরো একটু বেশি ইফোর্ট দিয়ে পরিবেশটাকে বদলাতে পারতেন? নিদেনপক্ষে আপনার মা ও স্ত্রীর মধ্যে দূরত্বটা একটু ঘুচাতে পারতেন?
img20171009_155838
প্রথমেই বলি, ছেলেরা ভুল আশা করে যে তার স্ত্রী তার মাকে ঠিক তার মত করেই ভালবাসবে। যদি না পারে, তাহলে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, মেয়েরা এত সংকীর্ণমনা কেন? কিন্তু ব্যাপারটা যে অসম্ভব যে কোন মানুষের জন্যই! মায়ের সাথে সম্পর্কটা গড়ে ওঠে অনেক বছরের আদর ভালবাসার উপর ভিত্তি করে। সন্তানের দোষ মায়ের চোখে ধরা পড়ে না, তেমনি বাবা মায়েরও অনেক অন্যায় ছেলে মেয়েরা দেখেও না দেখার ভান করে।
img20171009_154106
অন্য মানুষের জন্য ত এটা করা যায়না। একটা ছেলে কি পারবে তার স্ত্রীর মাকে আপন মায়ের সমান ভালবাসতে? হ্যা, সার্ভিস হয়ত আপন মায়ের সমান দেয়া যায়, কিন্তু দোষ ক্ষমা করার বা উদারতার রেঞ্জটা কিন্তু এখানে কমই হবে, আর এটা খুবই ন্যাচারাল। মানতে কষ্ট হলে নিজেকে দিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে পারেন। শ্বশুরবাড়িতে এক মাসের জন্য থেকে আসুন। জামাই হিসেবে না, ছেলে হিসেবে। বাজার করে দিন, বিল দিন, শ্যালিকাকে পড়ান, সংসারের খরচপাতির ব্যবস্থা করুন, শাশুড়িকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান, তখনই বুঝতে পারবেন অন্য একটা পরিবারে গিয়ে ব্যক্তিত্ব বজায় রেখে দিনের পর দিন সবাইকে খুশি রাখা কত কঠিন।
img20171009_162454
দ্বিতীয়ত, একজন ভাল মা মানেই একজন ভাল শাশুড়ি না। একজন চমৎকার মানুষ মানেই একজন ভাল বৌমা না। একজন ভাল লেখক যেমন ভাল প্রশাসক না – তেমনি একেকটা সম্পর্কের ডাইমেনশন একেকরকম, দায়িত্বগুলিও ভিন্ন। সেজন্য আপনার ফেরেশতাসম মা শাশুড়ি হিসেবে ব্যর্থ হলে বুক ভেঙে যাওয়ার কোন কারণ নেই। যে মেয়েটা ফুল দেখত, গান গাইত, চিঠি লিখত, বিয়ের পর ঘরে এসে চরম পলিটিক্স শুরু করলে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয়ার দরকার নেই।
img20171009_163212
তৃতীয়ত, মা আর স্ত্রী – এদের মধ্যে যে বন্ধন তা আপনাকে কেন্দ্র করেই রচিত। এই সম্পর্ক কোন খাতে বইবে – সেটাও অনেকটা নির্ভর করছে আপনার সাথে তাদের সম্পর্ক কেমন তার উপর। এটা একটা টাগ অব ওয়ারের মত, দুটো নারী তাদের সমস্ত কিছু দিয়ে একটা প্রতিযোগিতায় নেমেছে, পুরস্কার আর কিছু না, আপনার অখন্ড মনোযোগ। বাস্তবিক, আমার মনে হয়, ছেলেটার একটা ক্লোন করে যদি দু’জনের হাতে দুটো ধরিয়ে দেয়া যেত – তাহলে বেশ হত।
img20171009_154519
চতুর্থ, এরকম সিলি বিষয় নিয়ে এরা এমন করে কেন – এরকম একটা উঁচুদরের চিন্তা করে গা বাঁচিয়ে চলার অবকাশ নেই। সিলি বিষয়গুলি মোটেও সিলি না, কারণ এর কারণে পরিবার নামক দেয়ালটায় বড়সড় ফাটল দেখা দিচ্ছে। আপনি কি শুধু এক কোণে দাঁড়িয়ে দেখবেন, আর মাঝে মধ্যে দুই পক্ষেই হাত লাগাবেন? এর বেশি কি আপনার কিছু করার নেই?

(পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতার” সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

বেঁচে থাকার আকুল আকুতি….(সুইসাইড নোট)

জীবন সুন্দর… আকাশ বাতাস পাহাড় সমুদ্র সবুজ বনানী ঘেরা প্রকৃতি সুন্দর আর সবচেয়ে সুন্দর এই বেচে থাকা।
img20171008_140038
তবুও কেন যেন জীবনকে জীবন দিতে ইচ্ছে করে না?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মানুষের আত্মকথা——
img20171008_133632
আমি প্রায়ই মৃত আইডিগুলোতে ঘুরে বেড়াই। বিশেষ করে যারা সুইসাইড করে তাদের।
প্রতিটি আইডি প্রায় একই রকম।
মাত্র ছয়মাসের স্টাটাস পড়লেই বোঝা যায়
কি প্রচন্ড “ডিপ্রেশন” তাকে গ্রাস করে রেখেছিল।
img20171008_133023
কি চেয়েছিল তারা-
♣প্রত্যেকই হয়ত একটু সহানুভূতির আশায়,
♣কাউন্সিলিং এর আশায়,
♣খড়কুটো আকড়ে ধরে হলেও বেঁচে
থাকার নেশায়,
♣বারবার লিখে গেছে,
কি লিখত তারা:
♣তার মন ভালো নেই।
♣কেউ কেউ সরাসরিই দিনের পর দিন
সংকেত দিয়ে গেছে,
♣এই পৃথিবীতে সে আর বেশিদিন নেই।
img20171008_140513
♣♣♣আমি অবাক হয়ে দেখেছি,
মৃত আইডি বিবাহিত হলে,
তার বেশিরভাগ বন্ধুই,
দাম্পত্যকলহ ভেবে এড়িয়ে গেছে।
অথচ সেই একই আইডির পোস্ট করা
ছবিতে লাইক,কমেন্ট উপচে পরেছে।
♣♣♣আর মৃত আইডি আনম্যারিড হলে,
সেখানেও একই।
যা কয়েকটা কমেন্ট আছে,সেগুলি এরকম-
♣দোস্ত কবে মরবি?
♣বুদ্ধি না পাইলে ফুনাইস।
♣চল্লিশার দাওয়াত দিয়ে যান।
♣স্মাইলি ইমো
♣মিলাদের আইটেমে কিন্ত লাড্ডু চাই।
………..আরো ব্লা ব্লা ব্লা।
img20171008_132955
আর যখন সব শেষ,রিপ্লাইয়ের আশা নেই।
তখন তাদেরই কষ্টে ভরা কমেন্ট,
♣কিভাবে পারলি?
♣ক্যামনে ভুলব তোকে?
♣তুই এত বোকা?
♣একবার খুলে বলতি,
♣আমরা কি ছিলাম না?
আসলে কি ছিল কেউ? আমি বলছি না,এই হাহাকার মিথ্যে। আমরা হয়ত না বুঝেই ফানি কমেন্ট করি
বা ইগনোর করি।
কিন্তু আমার বন্ধুর মৃত্যুর জন্য,
আমি কি একটু হলেও দায়ী না?
img20171008_141251
প্রতিটি মানুষেরই দুঃখ কষ্ট থাকে। তবে একেকজনের দুঃখ কষ্ট গ্রহন করার ক্ষমতা একেকরকম।
♣কেউ হয়ত হাসিমুখে স্বামীর মারের দাগকে
বাথরুমে পরে যাওয়ার দাগে পাল্টে নেয়।
♣আবার কেউ হয়ত স্বামির চোখে,সামান্য
অবহেলার আভাস পেলেও ভেঙে পড়ে।
…….কারো কষ্টই কিন্ত কম না।
কষ্ট পাওয়ার ধরন আলাদা হতে পারে
কিন্ত বুকের পোড়াটা মনে হয় সবারই এক।
আজ পাবলিকলি বলছি,
গত কয়েকটা বছর ধরে আমি প্রচন্ড
ডিপ্রেশনে ভুগছি। একপ্রকার বাধ্য হয়ে আমাকে গত চারটা মাস ধরে ডিপ্রেশনের ঔষধ খেতে হচ্ছে।
img20171008_133531
♣কতদিন যে রাতদিন মিলিয়ে আমি
চারঘন্টার বেশি ঘুমাতে পারিনা!!!
♣আমার ক্লান্তি,
♣আমার অবসন্নতা,
♣আমার ভালো লাগেনা রোগ
♣আমাকে ধীরে ধীরে নিঃশ্বেষ করে দিচ্ছে।
♥♥ভাবছেন দাম্পত্য কলহে আছি?
কসমকেটে বলছি, না না না…
♣টুকটাক মান অভিমান সবার যেমন থাকে,
আমাদেরও আছে।
তাহলে কেন এই ডিপ্রেশন ??????
আমি জানিনা,সত্যিই জানিনা। হয়ত এর কারনঃ
★আব্বুর হঠাৎই চলে যাওয়া।
★খুব প্রিয় কিছু মানুষের অকাল মৃত্যু।
★অতীতের জালে আটকে থাকা।
★নিজের জন্য সময় বের করতে না পারা।
★প্রতিদিনকার একঘেয়ে রুটিন।
★অতিরিক্ত আবেগ।
★নিজের মা কে পরাধীনতার শেকলে বাধা
দেখতে দেখতে বড় হওয়া।
★বাবার বাড়ি বলতে কিছু না থাকা।
★ভাইবোন নেই, মনটা উজাড় করে কথা
বলার কেউ নেই।
★সারাটা বছর সুখে দুখে খুশিতে
img20171008_135019
মা কে জড়িয়ে থাকি।আর আমার কাছে ঈদ মানে এখন,এক আতংকের নাম।কারন তখন মাকে এখানে সেখানে রেখে আমি ঈদ করতে যাই।
★আমার কিছু চেয়ে নিতে,বলে বলে করে নিতে
♣একেবারেই ভালো লাগে না।
চাইলে,বললে তো রাস্তার মানুষও
এগিয়ে আসে।
♣যে আমার আপন,কাছের,
সে আমাকে বুঝে নিতে না পারলে,
আমি বুঝাই না।
শুধু অভিমান জমা করি।

★মনটা এখনও প্রচন্ড শিশু,ছটফট করে,
আল্লাদে গদগদ করে।
শরীরটা? এত্ত বড় বড় দায়িত্ব কর্তব্য করে।
★আমার বর,
প্রচন্ড বাস্তববাদী, ওয়েল প্লানার,
হঠাৎই ইচ্ছে হলো তাই!!!
আমার জীবনে নাই!!নাই!!!নাই!!!!
★ডিপ্রেশন যে একটা রোগ
তা আমার পরিবার একেবারেই বুঝেনা।
♣আমার মা মনে করে,
ঝাপিয়ে পরে সংসার সামলালেই আমি
হাবিজাবি চিন্তা করতে পারব না।
♣আমার বর মনে করে,
ফেসবুকই আমার মাথা নষ্ট করছে।
আগে তো এরকম ছিল না।
★আমার বরের কাছে,জীবন মানে,
দৌড়াও,ছুটে চল,দুই হাতে কামাও,চার হাতে জমাও।
এদিক সেদিক ভবিষ্যতে তাকানো যাবে।
♣আমার কাছে,জীবন মানে,
শুধু ছুটে চলা না।
শুধু দম নেয়া না।
আজই যদি না থাকল,কাল দিয়ে কি করব? জীবন মানে বেঁচে থাকা।
♥♥এটুকু পড়েই হাপিয়ে গেছেন?
ভাবছেন এগুলো ডিপ্রেশনের কারন!!
মানুষ কত বড় বড় দুঃখ বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়!!
ঐ যে আগেই বলেছি, একেকজনের কষ্টের ধরন একেকরকম।
♥♥কেউ কেউ একটি ঘাসফুল না দেখার কষ্টে, মরে যেতে চায়।
আমরা একজন আরেকজনের মনস্তত্ত্ব,
কতটুকুই বা বুঝি?????
img20171008_133313
আমি প্রবলভাবে বিশ্বাস করি,আমাদের দেশে বোধসম্পন্ন মেয়েরা,একদম দেয়ালে পিঠ না ঠেকে গেলে
মুখ খোলে না।
♣বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টায়,
♣দিশেহারার চূড়ান্ত পর্যায়ে,
♣লোকলজ্জার মাথা খেয়ে সংকেত পাঠায়।
কাল থেকে আমার মন এত্ত খারাপ,এত্ত খারাপ
যে, মনে হচ্ছে দূরে কোথাও চলে যাই।
♥♥তারপর একবুক আশা নিয়ে
অপেক্ষায় থাকে ঘুরে দাড়ানোর।
অজানা আকুতি,বুঝতে চায়,কেউ আছে।
শুনতে চায়,দূর বোকা,আমরা আছি না?
img20171008_133718
(আমাদের আসেপাশে অনেক ভাই বোন ডিপ্রেশনে ভুগছেন। সুতরাং তাদের সাথে কথা বলা এবং তাদের পাশে দাড়ানো এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব।)

আসুন তাদের পাশে দাড়াই।

লিখেছেন: ডাঃ মোঃ জোবায়ের মিয়া
সহকারী অধ্যাপক(সাইকিয়াট্রি)
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর।
email: zubayer_miah@yahoo.com

 

সে বাংলাদেশেই ফিরে এসেছিল

পড়াশোনার জন্য এক বাঙ্গালী নারী গেলেন আমেরিকাতে। সেখানেই পড়াশোনার সময় পরিচয় হলো এক আমেরিকান ছেলের সাথে। তার সাথে তার বন্ধুত্ব হলো ভালবাসা হলো এবং বিয়েও হলো। সেখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মেয়েটি। এদিকে বাংলাদেশে বাবা মা ভাই বোন কত করে বুঝালো কিন্তু সে শুনলো না। তার পর? মেয়েটির সাথে আমেরিকান ছেলেটির বিয়ে হলো।

img20171008_003707
স্থায়ী ভাবে ম্যানহাটনে বসবাস শুরু করলো এবং এক বছরের মাথায় তাদের ঘর আলো করে এক ফুটফুটে ছেলে শিশুর জন্ম হলো। ছেলেটি ছিল রাজপুত্রের মত সুন্দর। তাকে যে দেখতো সেই কোলে নিয়ে আদর করতে চাইতো। ছোট্ট রাজপুত্রটিও সবার কোলে যেত।

একটু একটু করে রাজপুত্রটি বড় হতে লাগলো আর তার বন্ধু বাড়তে শুরু করলো। ক্লাসে সবাই তার বন্ধু,অন্য ক্লাসের সবাইও তার বন্ধু। এতো সুন্দর দেখতে আর এতো স্মার্ট যে তাকে দেখে ছেলে মেয়ে সবাই তার বন্ধু হতে চাইতো। সে কাউকে নিরাশ করতো না।

img20171008_003757
স্কুলের পড়ার ফাঁকে ফাঁকে সে বিশ্বের ইতিহাস নিয়ে জানতে চেষ্টা করতো।
তার পর যখন জানতে পারলো ১৯৭১ সালে সেই একই জাতি স্বাধীনতার জন্য নয় মাস যুদ্ধ করেছে তাও প্রায় নিরস্ত্র হাতে এবং অস্ত্রধারীদের ভুলুন্ঠিত করে বিজয় পতাকা ছিনিয়ে নিয়েছে তা তাকে আরো বেশি মুগ্ধ করলো।
সেই যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ মা বোনের সমভ্র্ম আর ত্যাগের ইতিহাস তার ছোট্ট চোখে পানি এনে দিল। সে বাসায় ফিরে দেখলো বাবা বাসায় আছে কিন্তু মা অফিসে। সে নিজের রুমে গিয়ে অঝরো কাদতে শুরু করলো। বাবা তার একমাত্র ছেলেকে কাদতে দেখে খুবই অবাক হয়ে তার পাশে বসে জানতে চাইলো তুমি কাঁদছো কেন? সে তখন বললো বাবা আমি বেশ কিছুদিন ধরে বিশ্ব ইতিহাস পড়ছিলাম হঠাৎ একটা দেশের ইতিহাস পড়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি তাই আমার চোখে জল তাই এতো কান্না। একটা জাতি এতোটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারে তা কল্পনাতীত।
এরই ধারাবাহিকতায় গ্রেড সিক্সে ওঠার পর সে জানতে পারলো বাংলাদেশের কথা এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের কথা।

img20171008_004329
একটা জাতি মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে তা ভেবে সে খুবই অবাক হলো।
তার পর যখন জানতে পারলো ১৯৭১ সালে সেই একই জাতি স্বাধীনতার জন্য নয় মাস যুদ্ধ করেছে তাও প্রায় নিরস্ত্র হাতে এবং অস্ত্রধারীদের ভুলুন্ঠিত করে বিজয় পতাকা ছিনিয়ে নিয়েছে তা তাকে আরো বেশি মুগ্ধ করলো।

img20171008_005441
সেই যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ মা বোনের সমভ্র্ম আর ত্যাগের ইতিহাস তার ছোট্ট চোখে পানি এনে দিল। সে বাসায় ফিরে দেখলো বাবা বাসায় আছে কিন্তু মা অফিসে। সে নিজের রুমে গিয়ে অঝরো কাদতে শুরু করলো। বাবা তার একমাত্র ছেলেকে কাদতে দেখে খুবই অবাক হয়ে তার পাশে বসে জানতে চাইলো তুমি কাঁদছো কেন? সে তখন বললো বাবা আমি বেশ কিছুদিন ধরে বিশ্ব ইতিহাস পড়ছিলাম হঠাৎ একটা দেশের ইতিহাস পড়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি তাই আমার চোখে জল তাই এতো কান্না। একটা জাতি এতোটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারে তা কল্পনাতীত।

img20171008_003850
বাবা জানতে চাইলেন সেই দেশটা সেই জাতির নাম কি? ছেলেটি বললো বাঙ্গালী আর বাংলাদেশ।

ছেলের কথা শুনে বাবা চুপ করে গেলেন।তাকে চুপ থাকতে দেখে ছেলেটি বললো বাবা তুমি হঠাৎ চুপ করে গেলে কেন? তুমি কি বাংলাদেশ সম্পর্কে জানো? আমার খুব ইচ্ছে ওই দেশটাতে একবার ঘুরতে যাবো। বাবার চোখেও তখন জল এসে গেল। বাবা বললেন ওই দেশটা তোমার রক্তে মিশে আছে। তোমার মম ওই দেশেই জন্মেছে!!
বাবার কথা শুনে ছেলেটি ভীষণ ভাবে চমকে উঠলো। তার এগার বছরের জীবনে সে কোন দিন মমকে এসব কথা বলতে শোনেনি। মম দেখতে একটু অন্যরকম তা বলে মম কখনো মুখে একটা বাংলা কথাও উচ্চারণ করেনি। মমের উপর তখন তার ভীষণ রাগ হলো। অফিস থেকে ফিরে আসার পর সে আর মমের সাথে কথা বললো না। তার যে ভীষন অভিমান হয়েছে। মম জানতে চাইলেন আমার রাজপুত্রটার আজ মুড অফ কেন? আমার সাথে আড়ি দিছে কেন? সে তখন ভীষন রাগ দেখিয়ে বললো I hate you mom, I really hate you. ছেলের কথা শুনে ভীষন রকম চমকে উঠলেন মহিলাটি। তিনি ভাবতেই পারেননি তার ছেলে তাকে ঘৃণা করতে পারে। তিনি তখন জানতে চাইলেন কেন তুমি আমাকে ঘৃনা করো?

img20171008_004226
সে তখন বললো পৃথিবীর সব থেকে সেরা দেশে তুমি জন্মেছ সব থেকে সেরা জাতীর মানুষ তুমি অথচ কোন দিন সেটা আমাকে বলোনি। আমি ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি পড়তে গিয়ে সেই দেশ সেই জাতি সম্পর্কে জেনে আবেগে কেঁদেছি।

img20171008_004437
বাসায় ফিরে যখন জানলাম তুমি সেই দেশে সেই মাটিতে সেই আলো বাতাসে জন্মেছ অথচ কোন দিন সেই পরিচয় কাউকে দাওনি এমনকি আমাকেও দাওনি তখন তোমাকে আমার ঘৃণা করতেই ইচ্ছে হয়েছে। এমন সোনালী ইতিহাস যারা মনে রাখেনা যারা পরিচয় দিতে লজ্জা পায় তারাতো ঘৃণা পাওয়ারই যোগ্য।

ছেলেটির কথা শুনে মহিলার চোখে বহুকাল পর শ্রাবণ ধারা নেমে এলো। তার মনে পড়ে গেল বাংলাদেশের কথা,নিজের বাবা মা ভাই বোনের কথা। সে তখন ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে স্যরি বললো। ক্ষমা চাইলো। ছেলেটি তখন বললো তোমাকে ক্ষমা করতে পারি যদি তুমি আমাকে সেই সোনার দেশে নিয়ে যাও। মা তাতে রাজি হলেন। বাবার তখন খুবই ব্যস্ততা আর ছেলেটির তখন সামার ভ্যাকেশান শুরু হচ্ছে সেই বিশাল

img20171008_004401
ছুটিতে সে মাকে সাথে করে পৃথিবীর সব থেকে সেরা জাতির দেশ তার মায়ের দেশ বাংলাদেশে চলে আসলো।
বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ঘুরলো অনেক বন্ধু হলো। এক মাসের ছুটি যখন প্রায় শেষ তখন মা বললেন এবার তো আমাদেরকে আমেরিকাতে ফিরে যেতে হবে। ছেলেটি বললো যেতে হয় তুমি যাও আমি যাব না। এই দেশটা ছেড়ে আমি পৃথিবীর আর কোথাও যাবনা। আমি বাংলা শিখবো বাংলায় লিখবো বাংলায় পড়বো বাংলায় কথা বলবো। যে ভাষার জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে সেই ভাষায় কথা বলতে না পারলে আমার জীবনটাই বৃথা হয়ে যাবে। তার মা তাকে কোন ভাবেই রাজি করাতে পারলেন না শেষে তিনি আমেরিকাতে ফোন করে ছেলেটির বাবাকেও বিষয়টা জানালেন তখন তিনি বললেন ঠিক আছে ও তাহলে বাংলাদেশেই থাকুক আমিও না হয় বাংলাদেশে চলে আসবো।

img20171008_003733
তার পরেরটুকু সব ইতিহাস। ছেলেটি বাংলাদেশে থেকে গেল, বাংলাদেশের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি হলেও পাশাপাশি বাংলা শিখতে শুরু করলো। একদিন দুদিন করতে করতে সে বাংলা এতো ভাল ভাবে আয়ত্ব করলো যে কেউ বলতেই পারবে না জাজাফী নামের সেই ছেলেটি ক’দিন হলো বাংলা লিখতে শিখেছে।
—-
লেখকঃ জাজাফী
www.zazafee.com

 

অমনোযোগীতা বাচ্চাদের বৈশিষ্ট্য (প্যারেন্টিং)

বাচ্চাদের সমস্যাগুলো নিয়ে লেখালেখি করা দরকার। সেই চিন্তা ভেবে এই লেখার সুত্রপাত।
আপনি আপনার পর্যবেক্ষণ করুন। অল্পতেই উত্তেজিত হওয়া,ভাঙ্গচুর করা,ছোট ভাইকে পিটানো,অতিরিক্ত জিদ করা,বন্ধুদের সামান্য দুষ্টুমিকেও সহ্য করতে না পারা ইত্যাদির কারণে সে ঘরে ও ঘরের বাইরে সবাইকে সব সময় ব্যস্ত রাখছে কিনা।
কিছু পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হল,

img20171007_162252
স্কুলে বা স্কুলের বাইরে অন্যকাজে গভীর মনোযোগ দিতে না পারা। প্রায়ই ভুল করা বা বিস্তৃত বিষয় বুঝতে কষ্ট হওয়া।

img20171007_162656
কোন কাজে এমনকি খেলাধূলার ক্ষেত্রেও একটানা বেশিক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা। বার বার একটা থেকে আরেকটা কাজ করা।

img20171007_162532
যখন তাকে উদ্দেশ্য করে কোন কথা বলা হয় তখন তার দিকে তাকালে মনে হয় সে সেসব কথা মনোযোগ দিয়ে কখনও শুনছে না।

img20171007_162423
অমনোযোগীতার কারণে নির্দেশমত স্কুলের পড়া ও লেখা এবং অন্যান্য কাজ ঠিকমত করতে না পারার কারণে কপ্লেইন করা।

img20171007_162927
যেসব কাজ করতে চিন্তাভাবনা ও শৃঙ্খলতা দরকার সেসব কাজ করতে অসুবিধাবোধ করা।

img20171007_165205
যেসব কাজে দীর্ঘক্ষণ মনোসংযোগ দরকার যেমন পরীক্ষার সময়, দীর্ঘ লেকচার শোনা, এক্সপেরিমেন্ট করা,হোম ওয়ার্ক করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনীহা,অপছন্দ বা ঠিকমত করতে না পারা।

img20171007_162953
লেখাপড়া কিংবা খেলার জন্য দরকারি জিনিস যেমন বই, খাতা, পেন, পেন্সিল, এডমিট কার্ড, খেলনা ইত্যাদি প্রায়ই হারিয়ে ফেলে।

img20171007_164413
খুব সহজেই মনোযোগ ভিন্ন দিকে সরে যায়।যেমন পড়ার টেবিলে বসে পড়ছিল, ঠিক ঐ সময় দরজার পাশ দিয়ে কেউ যাচ্ছে সাথে সাথেই তার মনোযোগ সেদিকে চলে যায়।

img20171007_164348
দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই কথা-বার্তা ভুলে যায়। এবং এর জন্য সে প্রায় ধমক খায়।

img20171007_162215
রেফারেন্স:DSM-5

Fatema Shahrin

 

দাম্পত্য -৪

আমার বিয়ের আগে একটা মাত্র উপদেশ পেয়েছিলাম আমার এক কাজিনের থেকে, সে বলেছিল, যত যাই হোক, তোদের একটা কমন পয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট রাখবি। যাতে তোদের শখের জিনিসটা নিয়ে আলোচনা করতে পারিস, দেখবি অনেক ঝড়ের মধ্যেও ওটা তোদের কাছাকাছি রাখবে।

img20171007_122856
আমি এত ভাল বুঝি নাই। কমন পয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট – আমাদের ত আনকমন ইন্টারেস্ট খুঁজে পাওয়াই কষ্ট বেশি। এক সাবজেক্টে পড়াশুনা করেছি, এখনও একই জায়গায় একসাথে পড়ি, কমন না কী? সবই ত কমন। যাই হোক, মূল্যবান উপদেশটার মাথা মুণ্ডু হদিস করতে না পেরে শিকেয় যত্ন করে তুলে রেখেছিলাম। ল্যাব এ জয়েন করার পর আমার সুপারভাইজর কাপলটাকে দেখে খুউব ভাল লাগত। ভদ্রলোক বেশ আলাভোলা সাইন্টিস্ট, ভদ্রমহিলা খুব কেয়ারিং, অর্গানাইজড। আমরা বাসায় এসে বলাবলি করতাম, আমরা ওদের মত কাপল হব, হ্যা?

img20171007_123050
একই ওয়ার্কপ্লেসে কাজ করাটা অনেকটা ঘরের কাজ ভাগাভাগি করে করার মত। পারস্পরিক সমঝোতা তৈরি হওয়ার সুযোগ অনেক বেড়ে যায়। উল্টোটাও হতে পারে, ব্যক্তিত্বের সংঘাত আরো বেড়েও যেতে পারে, কারণ ভুলগুলো আরো বেশি চোখে পড়বে।
কিন্তু ভলান্টারি কাজ একসাথে করার মধ্যে যে আনন্দ তার কোন তুলনা হয়না। এতে ত কোন কিছু পার্থিব লাভ বা ক্ষতি নেই, তাই ভুলচুক হলেও অত গায়ে লাগেনা। আবার কাজটা না করলেও ত সে পারত – এরকম একটা মেন্টালিটি থাকে, তাই ছোট্ট কাজকেও খুব মহৎ লাগে। অন্যের জন্য স্বার্থ ছেড়ে কাজ করার একটা বাই ডিফল্ট ভাল অনুভূতি আছে, সেটা প্রিয় মানুষটার সাথে ভাগাভাগি হলে আনন্দটা বহুগুণ বেড়ে যায়। হয়ত কোনদিন ভাল করে চোখ মেলে দেখেন নি, যে তার ভেতর এত মহত্ত্ব আছে। আর কিছু না, ছোট্ট একটা চ্যারিটিও দুজন মিলে প্ল্যান করে করলে হঠাৎ একটা উপলব্ধি আসে, ‘কীসের জন্য তেল নুন চাল ডাল নিয়ে ঝগড়া করছি? আমরা একসাথে ত আছি অ-নে-ক উপরের লেভেলের কাজ করার জন্য।’ আমার সত্যিই মনে হয় আল্লাহ এরকম ইফোর্ট দেখলে এত খুশি হন যে নিজ উদ্যোগে তখন ঘরটা শান্তি দিয়ে ভরে দেন। আর ভাল কাজ একসাথে মিলে করলে খুব গর্বও হয়, আমার বউ/ স্বামী আর দশজনের মত না, সে অন্যদের কথা ভাবে, সে স্বার্থপর না।

Square_07102017_124236
অনেক দম্পতির নানা কারণে ঘরের বাইরে ভলান্টারি কাজ করার সুযোগ নেই। আসলে বাইরে যাওয়ার দরকারও নেই। সন্তান মানুষ করার কাজটাকে যদি কেউ জাস্ট আল্লাহ কে খুশি করার উদ্দেশ্যে পূর্ণ ইফোর্ট দিয়ে করে, তাহলে এর চেয়ে বড় চ্যারিটি আর হয়না। কিন্তু এই প্যারেন্টিং ইস্যু তে এসে দম্পতিরা সবচেয়ে বেশি ধরা খেয়ে যান। তারা এটাকে ঘাড়ের উপর চেপে বসা একটা বোঝা মনে করেন। যদি ভাবতেন একটা নতুন মানুষের জীবনের ট্র্যাক ঠিক করে দেয়ার জন্য আল্লাহ আমাদের দুজন কে এক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাহলেই হয়ে যেত। স্বামী স্ত্রী করেন কি, একজন আরেকজনের উপর রাগ উঠলে বাচ্চাদের সামনে বা বাচ্চাদেরই উপর প্রতিশোধ নেন। অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টো। বাচ্চারা শিখে ফেলবে এই ভয়ে রাগ টা কপ করে গিলে ফেলা, কারণ shaping up someone’s personality is a far more superior task than winning in this psychological tug of war.

img20171007_130734
নিদেনপক্ষে অন্য মানুষটার শখের বিষয়টাতে আন্তরিকভাবে উৎসাহ দিলেও হয়। এই যে বিখ্যাত লেখকরা প্রায় সময়ই অদৈহিক ভালবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, বেশির ভাগ সময় এটার শুরু হয় তাদের যার যার সৃষ্টি নিয়ে উঁচুমানের মত বিনিময় থেকে।

জাগতিক বিষয়াদি হয়ত তার স্ত্রী সামলাচ্ছে, কিন্তু ভাবনার জগতে, সৃষ্টির জগতে সে একদম একা। অন্তত ‘প্রথম আলো’ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথের স্ত্রীর বর্ণনা পড়ে আমার ওরকমই মনে হয়েছে। এক জনপ্রিয় সাহিত্যিক তার স্ত্রী সম্পর্কে লিখেছিল, ওর অনেকগুলো মুগ্ধ করা গুণের মধ্যে একটা হল আমি টুকরো টাকরা কাগজে যাই লিখি ও যত্ন করে একটা বাক্সে গুছিয়ে তুলে রাখে, যদি পরে কাজে লাগে! এক অভিনেত্রী তার স্বামী এক্সিডেন্ট এ মারা যাওয়ার পর দুঃখ করে বলছিলেন, আমার সম্পর্কে কাগজে যত রিপোর্ট আসত সব সে সংগ্রহ করে লেমিনেট করে রাখত।

img20171007_122556
লেখার শুরুতে যে বলেছিলাম, ম্যাজিক স্পেল বা তালিসমান – আমি নিশ্চিত এটাই সে জিনিস। আপনাদের মধ্যে যত সমস্যাই থাকুক, খুঁজে এমন একটা কাজ বের করুন, যেটা দুজনের কাছেই নিঃস্বার্থ ভাল কাজ মনে হয়। যদি সেটা হয় ধর্মচর্চা বা প্রচার, তাহলে ত কথাই নেই। একসাথে করে দেখুন, সঙ্গের মানুষটার জন্য নতুন করে ভালবাসায় বুকটা ভরে যাবে। মনে হবে, s(he) may not be the perfect person of the world, but s(he) is perfect in my world.

দাম্পত্য – ৩
http://oporajitabd.com/?p=8495
দাম্পত্য – ২
http://oporajitabd.com/?p=8468
দাম্পত্য – ১.
http://oporajitabd.com/?p=8455

(পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতার” সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

জাপানের মা, জাপানের সন্তান (প্যারেন্টিং)

প্রথম আলো পত্রিকায় “জাপানের মা, জাপানের সন্তান (প্যারেন্টিং)” নামে চমৎকার একটা আর্টিকেল বের হয়। সেই আর্টিকেলটায় তুলে ধরা হল।

img20171006_132548
জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছর পড়াশোনা করেছি। এ সময় নানা রকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি জাপানি ভাষা বেশ ভালোভাবে শেখায় তাদের অনেক কাছাকাছি যেতে পেরেছিলাম।

img20171006_135829
অবাক হয়েছি সন্তানদের প্রতি জাপানি মায়েদের আদর-ভালোবাসা দেখে। সন্তান জন্মের আগে থেকেই সন্তানকে
♦কীভাবে লালন-পালন করতে হবে,
♦তাকে কী খাওয়াতে হবে,
♦কোন ঋতুতে কী ধরনের পোশাক পরাতে হবে,
♦ছোটখাটো সমস্যা হলে বাড়িতে বসেই কী করে তার সহজ সমাধান করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন।
জাপানে বেশির ভাগ লোক শিক্ষিত, তাই তাদের জন্য এটি করা সহজ।

img20171006_132519
মায়ের বুকের দুধ যে শিশুর জন্য একমাত্র উপযোগী খাবার- তা জাপানি মায়েরাও মেনে চলেন। কর্মজীবী মায়েরা বিরতির সময় শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে গিয়ে শিশুকে বুকের দুধ খাইয়ে আসেন। বেশি দূরে হলে বুকের দুধ প্যাকেট করে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে রেখে আসেন। আমি জাপানের চিকিৎসক মায়েদেরও এমনটি করতে দেখেছি।

img20171006_132329
বেশির ভাগ বাড়িতে দেখেছি দাদা-দাদি থাকেন। কোনো কোনো বাড়িতে দাদা বা দাদির একজন থাকছেন। পরিবারের সব সদস্য বয়স্কদের দিকে খেয়াল রাখেন। সন্তান যদি মায়ের কাছে থাকতে না পারেন তার দেখাশোনা করার উপযোগী কর্মী রেখে দেন।

img20171006_132440
আরেকটি বিষয় আমার খুব ভালো লেগেছে। এক বছর বয়স হওয়ার আগেই শিশুরা জাপানে পাবলিক লাইব্রেরির সদস্য হতে পারে। মা তার সন্তানের নামে প্রতি সপ্তাহে তিনটি বই ধার করতে পারেন। একটু বড় হওয়ার পর মা সন্তানকে নিয়মিত লাইব্রেরিতে নিয়ে আসেন। গল্প ও ছবির বই পড়ে শোনান। হাঁটিহাঁটি পা পা করছে এমন শিশুও দেখেছি সেলফ থেকে নিজের পছন্দমতো ছবি অথবা ছড়া গল্পের বই এনে মায়ের হাতে দিচ্ছে পড়ে দেওয়ার জন্য।
এভাবে বইয়ের প্রতি খুব ছোটবেলা থেকে একটা আগ্রহ সৃষ্টি হয়ে যায়। ছুটির দিনে লাইব্রেরিতে ছোটদের রূপকথার গল্প বলার জন্য কর্মী থাকেন। শুধু তাই নয়, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে যেসব শিশু থাকে, তাদেরও বই পড়ে শোনানো হয়। তিন বছর বয়স হলে প্রতি মাসে বাধ্যতামূলক একটি করে বই কিনতে হয়। ছোটবেলা থেকে এই আগ্রহ জন্মায় বলেই হয়তো বাস বা ট্রেনের জন্য অযথা বসে না থেকে বই পড়তে দেখেছি ওদের।

img20171006_132200
স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে মায়েরা শিশুকে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে ওঠা-বসা, আচার-ব্যবহার, আদব-কায়দা (বড়দের সঙ্গে শ্রদ্ধাভরে কথা বলা এবং ভক্তি করা জাপানি সমাজের আরেকটি বৈশিষ্ট্য) নিজ হাতে খাওয়া ও নিজে বাথরুমে যাওয়ার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।

img20171006_132252
জাপানে মনে করা হয় যে প্রতিটি ভালো ছাত্রের পেছনে একজন নিবেদিত মা থাকেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি নিজে নিয়মিত সন্তানকে পার্কে, সাঁতারের ক্লাসে এবং পিয়ানো অথবা নৃত্যের ক্লাসে নিয়ে যান। মা রাতে সবার পরে বিছানায় যান কিন্তু ভোরে ওঠেন সবার আগে। কারণ প্রত্যেকের পছন্দমাফিক আলাদা টিফিনবাক্স প্রস্তুত করার জন্য তার বেশ সময় প্রয়োজন হয়।

তিনি খুব সতর্কতার সঙ্গে সন্তানের স্কুল এবং গ্রুপ কোচিং নির্বাচন করেন।

img20171006_132126
কাজ থেকে ফিরে বাড়ির কাজে সাহায্য করেন, ভালো বইয়ের খোঁজ রাখেন। প্রয়োজনে সন্তানের জন্য আরও বেশি কাজ করেন। যাতে সন্তানের পড়তে কষ্ট না হয়। সে জন্য জাপানি মাকে যথার্থই ‘কিউইকু মামা’ অর্থাৎ ‘অ্যাকাডেমিক মাদার’ বলা হয়ে থাকে।

সৌজন্যেঃ দৈনিক প্রথম আলো & মহীয়সী

ডা. লুৎফুন নাহার
লেখক: চর্ম, অ্যালার্জি ও লেজার বিশেষজ্ঞ সেন্ট্রাল হাসপাতাল, গ্রিনরোড, ঢাকা

 

দাম্পত্য -৩

কমফোর্ট আর স্বস্তি একটা ঘরে সুখের ফোয়ারা বইয়ে দিতে পারে সত্যি, কিন্তু এর বাইরেও দাম্পত্য জীবনে অনেক কিছুই করার আছে।

..
স্বামী স্ত্রী উত্তম বন্ধু রূপে শুধু একে অপরকে নিরাপত্তাই দিয়ে যাবে জীবনভর, এর বাইরে আর কিছু নয় – ব্যাপারটা এমন নয়। আর চাহিদা অনুযায়ী পরিপূর্ণ আরাম না পেলেই যে সংসার উচ্ছন্নে যাবে – তাও না। পুরোপুরি স্বতন্ত্র দু’জন মানুষের আচরণ সব সময়ই পছন্দ মত হবে – এমন ভাবাটা ঠিক না। পদে পদে কমফোর্ট নষ্ট হবে, কমিউনিকেশন এর সব চেষ্টা ব্যর্থ হবে, ক্ষুদ্রতা দেখে বুক ভেঙে যাবে – সম্মানের বদলে জায়গা করে নেবে করুণা – এমন অনেক কিছুই হতে পারে। তখন কি আল্লাহর প্রতিশ্রুত শান্তি সে ঘর থেকে হারিয়ে যাবে? বিয়ের উপর যে এত বার করে গুরূত্ব আরোপ করা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (স) যে বলেছেন, দ্বীন এর অর্ধেক হচ্ছে বিবাহ – তা কি দুটো ব্যক্তিত্বের অসামঞ্জস্যেই ভুল হয়ে যাবে? তা কী করে হয়?

..
আমার কাছে মনে হয় দাম্পত্যের দ্বিতীয় স্তরের পূর্ণতা আসে যখন স্বামী স্ত্রী সত্যি সত্যি একে অপরকে পূর্ণতা দেয়ার জন্য চেষ্টা করে। যখন একজন অপরজনের দোষত্রুটি গুলি চিহ্নিত করে সেগুলি বদলানোর জন্য কাজ করে। আমি ফাইন্যান্সিয়াল ব্যাপার কিচ্ছু বুঝি না, আমার স্বামী ধৈর্যের সাথে অল্প অল্প করে একটু করে কাজ দিয়ে আমাকে মানুষ করার চেষ্টা করছে। অপর দিকে তার লেখা নিয়ে একটা ভীষণ রিপালশন কাজ করে। আমি চেষ্টা করছি প্রতি সপ্তাহে ছলে বলে কৌশলে যে করেই হোক একটা করে তার কাছ থেকে লেখা আদায় করতে। ও লেখায় সরগর না হলে কি আমার ঘর ভেঙে যাবে? আমার কী দায় পড়েছে ওকে দিয়ে লেখাতে? কিন্তু আমরা ত আগামী অনেকগুলো বছর ইনশাল্লাহ একসাথে থাকব, আল্লাহ ছয়শ কোটি মানুষের মধ্যে থেকে আমাদের দুজন কেই এক সাথে জীবন কাটানোর সুযোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে কি আল্লাহর এতটুকু প্ল্যান ছিলনা, যে আমার উইকনেস ও দূর করবে, ওর টা আমি?

..
একই কথা স্পিরিচুয়ালিটির বেলায়ও। স্পিরিচুয়ালিটি আর স্বামী স্ত্রী নিয়ে ভাবতে গেলে আমার কেবল একটা উদাহরণই মনে আসে। লতানো গাছ দেখেছেন, ঐ যে ছোট ছোট আঁকশির মত বের হয়ে একটা কিছু ধরে বেয়ে ওঠে? এমন দুটো গাছ যেন পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে একজন আরেকজনের থেকে সাপোর্ট নিয়ে দ্রুত উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। এই গাছ দুটোর একটা শক্ত দৃঢ় ভিত্তির উপরে দাঁড়ানোও হতে পারে, আরেকটা তার উপর ভর দিয়ে উপরে উঠবে। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর একজন বেশি প্র্যাক্টিসিং, অপরজন কমও হতে পারে, সেক্ষেত্রে সাপোর্ট দিয়ে দিয়ে টেনে তুলতে হবে। ভেবেই দেখুন না, কী একটা জুটল কপালে – এই ভেবে কপালকে দোষ না দিয়ে এভাবেও ত দেখা যায় – আল্লাহ আপনার স্ট্রেংথ জানেন, আল্লাহ পারফেক্ট কম্প্লিমেন্ট খুঁজে দিয়েছেন আপনার জন্য। এখনকার যে অশান্তি হচ্ছে, তা হচ্ছে এ কারণে যে আপনি আপনার করণীয় সবটুকু করছেন না। আপনার কথা ছিল অনেক বেশি নিজেকে উন্নত করার, আর উদাহরণের মাধ্যমে ধৈর্য ধরে অপরজন কে শেখানোর। আপনি তা না করে আরো ভাল কিছু পেতে পারতেন এই আফসোস এ মাথা কুটে মরছেন।
এমনকি ভাল, আরো ভাল – এই মাপকাঠিটাও ত মানুষের জন্য অসম্পূর্ণ। সে হয়ত বিচার করার সময় একটা স্বভাবের দোষ ধরে ভাগ্যকে ধিক্কার দিচ্ছে। অন্যদিক দিয়ে হয়ত তাদের মধ্যে এত সুন্দর সামঞ্জস্য – যেটা তার কাছে এতই ন্যাচারাল যে টেরও পাচ্ছেনা এর মূল্য কত।

...
আগের লেখায় একটা পাথরের কথা বলেছিলাম না? আপনি হয়ত আপনার সম্পর্কের এবড়ো খেবড়ো অংশটাই শুধু দেখছেন, একটু সময় নিয়ে উল্টে দেখুন, তার অনেক ভালো দিকও চোখে পড়বে।

..
রাসুলুল্লাহ (স) ত বলেছেন, স্ত্রীদের সাথে নরম আচরণ কর, কারণ তার এক আচরণ তোমার অসন্তুষ্টির কারণ হলেও, অন্য আচরণ তোমায় সন্তুষ্ট করবে। স্বামীদের জন্য এটা আরো বেশি সত্যি। কারণ আমরা স্ত্রীরা অভিযোগে মুখর হতে খুবই পারদর্শী।
আমি ঘরের কাজে অপটু, বাইরের কাজে অকর্মণ্য। ভাবনার জগতে ক্রীড়ণক, বাস্তব জীবনে জড়ভরত। আমার অতি প্র্যাক্টিকাল স্বামীর অভাবে আমি অর্ধেক না, এক চতুর্থাংশ হয়ে থাকতাম বোধহয়। কিন্তু আমার যেটুকু অগুণ আছে তাই দিয়ে ঠেলেঠুলে এমন একটা জায়গা করে নিয়েছি যে জানি ওই জায়গার দখল পাকাপাকি ভাবে আমার হয়ে গেছে। গুণ যেখানে কম, অধ্যবসায়ের সেখানে পুরো ব্যবহার ত করতেই হবে, তাই না? তাই ওর অদক্ষতাগুলোতেই আমার যত জোর। আল্লাহকে ধন্যবাদ ও দেই, অন্তত একটা কিছু যোগ করার মত যোগ্যতা ত আমার আছে। যদি কমফোর্টই সুখের একমাত্র ইয়ে হত, তাহলে আমি ফেল করতাম নির্ঘাত।

১
এক রাতে প্রচণ্ড গরমে পুরো আড়াই ঘন্টা লোডশেডিং ছিল আমাদের এলাকায়। খুব দেশ দেশ লাগছিল সময়টাকে। আমরা অন্ধকার ঘরে মনের সুখে গপ্পো করেছি অনেকক্ষণ। লোডশেডিং হওয়াতে আমাদের মনে এতই ফুর্তি হয়েছিল, গল্পের ফাঁকে সে নিজে গান বানিয়ে সুর দিচ্ছিল। আমি তখন ওকে বললাম, আমি তখন ওকে বললাম, Thanks to Allah, He joined a composer with a singer, a speaker with a writer, a philanthropist with a pure mind.

(পরের পর্বের জন্য অপরাজিতার সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

ডিম কাহিনী

..

ডিম পেড়েছে শিয়াল মশাই
ডিম পেড়েছে হাতি
ডিম পেড়েছে পাশের বাড়ির
আবুল মিয়ার নাতি।

তাল মিলিয়ে ডিম পেড়েছে
দোয়েল-কোয়েল-টিয়ে
কে জিতে আর কে হারে
চিন্তা এটাই নিয়ে।

হঠাৎ করে উটপাখিটা
পাড়ল বিশাল ডিম
জয়ী হয়ে নাচছে যে তাই
টিম ডিমা টিম ডিম।

...

Sumaiya Barkatullah
Zoology

 

দাম্পত্য – ২

দাম্পত্য জীবনে হারমনি প্রতিষ্ঠা করা এমন না যে একটা তুড়ি বাজালাম আর হয়ে গেল। ইনফ্যাক্ট প্রতিদিনের কাজকর্মের মুখ্য উদ্দেশ্যই আমাদের হওয়া উচিৎ হারমনি আনা, যতক্ষণ এক সুরে সুর বাজে, মনে হয় এর বেশি আর কী চাওয়ার আছে জীবনে? কিন্তু মানুষ ত অনেক ভাবেই দুজনে মিলে সুখে থাকতে পারে, তাই না?
স্বার্থপরের মত, ভোগবিলাসীর মত, অন্যায়কারীর মত – এদের হারমনিও ত হারমনি। কিন্তু তাতে স্বর্গীয় সুখ কই? ফেরেশতাদের ডানা বিছানো ‘সুকুন’ কই? আল্লাহ যে বলেছেন অমন পরিবারে তিনি রহমত নাযিল করেন, ফেরেশতারা সে পরিবারের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন?

আস্তে আস্তে মনে হল,
দাম্পত্য নিয়ে মানুষ তিন স্তরে সন্তুষ্ট থাকতে পারে।

..
এক, একজন আরেকজনের কমফোর্ট হবে। তা শুধু খাবার দাবার, আর অন্যান্য শারীরিক কমফোর্ট ই না। দু’জনের নিজস্ব জগতের অশান্তি শেয়ার করে হালকা হবে, বাইরে অনেক অপমান সহ্য করে ঘরে এসে নিশ্চিন্তে মাথা গুঁজতে পারবে। এমন নিরাপত্তা আর প্রশান্তি পেলে একটা সংসারে আসলে আর কিছু লাগেনা।

্্
রাসুলুল্লাহ (স) তাঁর পনের বছরের বড় (এ নিয়ে দ্বিমত চলছে আজকাল) স্ত্রীর কাছে এতটাই নিরাপত্তা, সম্মান আর ভালবাসা পেয়েছিলেন, খাদিজা (রা) মারা যাওয়ার অনেক বছর পরেও তাঁর কথা ভেবে রাসুলুল্লাহ (স) এর চোখে পানি চলে আসত। আসবেই ত। জিবরাইল (আ) কে প্রথমবার দেখে উনি ভয়ে এত উপর থেকে নেমে ঘরের মধ্যে এসে চাদর দিয়ে মুড়িয়ে টুড়িয়ে স্ত্রীকে বলেছিলেন ‘আমাকে কি জ্বীন এ ধরেছে?’ উনার স্ত্রী কোত্থেকে জানবে উনার কী হয়েছে? উনি কি ফেরেশতা মারফত আগে খবর পেয়েছিলেন? উনি যা জানতেন তা হল, মুহম্মদ (স) কত অসাধারণ মানুষ। এরকম একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে উনি রেফারেন্স টানলেন রাসুলুল্লাহ (স) এতিমদের কত যত্ন করেন, কত সত্যবাদী ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব কথা এখানে বলা কি খুব প্রাসঙ্গিক ছিল?
“খাদিজা (রা) যা করেছেন তা হল উনি রাসুলুল্লাহ (স) এর নিজের সম্পর্কে ভয়, শঙ্কা দূর করে দিয়েছেন তাঁর সম্পর্কে অনেক পজিটিভ কথা বলে।”

..
আমরা আমাদের পার্টনারের ভঙ্গুর সময়ে কতটুকু ভাল কথা বলি?
আর আউট অব কনটেক্সট প্রশংসা? অসম্ভব! আউট অব কনটেক্সট অভিযোগ করা যায়, কিন্তু প্রশংসা? কদ্যপি নহে!
আমার বাসায় হিটার ঠিক করতে এক ইলেক্ট্রিশিয়ান এসেছিল, ভদ্রলোক খুব কথা বলতে পছন্দ করেন, কথায় কথায় বলেছিলেন, তোমাদের মেয়েদের আমি হিংসা করি। you don’t know the power of your words. শুধু মুখের কথা দিয়ে you can bring a lion out of a mouse.
খাদিজা (রা) এর মত প্রজ্ঞা যদি সব ছেলেমেয়ের থাকত, শুধু কথা দিয়েই কত শান্তি তৈরি করতে পারত ঘরে।
একই ভাবে মন খারাপ হলে তার টেক কেয়ার করা,
বাইরে অপমান জনক একটা কিছু ঘটলে ঘরের মানুষটা আরো অনেক বেশি kindness দিয়ে তার মনের জোর ফিরিয়ে আনা – এ বিষয়গুলোতে অনেক বেশি যত্নশীল হওয়ার দরকার আছে।

..
ছেলেরা বোঝে না মেয়েদের কমফোর্ট কেবল ভাল শপিং করতে পারার স্বাধীনতার মধ্যেই না। এপ্রিসিয়েশন একটা ছেলের জন্য যতটা ইন্সপায়ারিং, একটা মেয়ের জন্য তার চেয়েও বেশি।
অনেক সময়ই মেয়েটার চিন্তাভাবনা বা বাইরের কাজে ম্যাচিউরিটি ছেলেটার মত হয়না, তখনও বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নেয়া মেয়েটার মানসিক শক্তি বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকায় মেয়েটার বাইরে এক্সপ্লোর করার সুযোগ সমানভাবে হয়না। এর প্রভাব যদি তার চিন্তায়, আচরণে পড়ে, আর তার কারণে স্বামীর থেকে তিরস্কৃত হতে হয়, তাহলে মেয়েটার কী দায় পড়েছে সংসারের ঘানি টানতে?
সে ও ত স্মার্ট হওয়ার, আধুনিক হওয়ার জন্য সময় ব্যয় করতে পারে, ঘরে সময় না দিয়ে।

..

এই সব খুঁটিনাটি অনেক কিছুই দুই পক্ষে মনের মধ্যে জমা হয়।
তার কিছু কথা বলে, কিছু ক্ষমা করে, আর পুরোটা আল্লাহর থেকে রিটার্ণ পাওয়ার আশায় মন থেকে মুছে ফেলে কমফোর্ট বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
ও! কমফোর্ট এর কথা এতবার বলেছি, একটা কথা বলিনি,
“পুরোনো জামার awesome উদাহরণটা খুব সংক্ষেপে কুরআনে আছে। husband and wife are garments for each other. তাও রোজার নিয়মের দুইটা আয়াতের মাঝখানে দেয়া।”

..
নোমান আলি খান এর ব্যাখ্যা করেছেন খুব সুন্দর করে, রোজায় ইফতার, সেহরি, তারাবী, কুরআন পড়া – এসব রুটিনের মধ্যে স্বামী স্ত্রী একে অপরকে যেন কভার করে যাতে দুজনই সমানভাবে স্পিরিচুয়ালি এগোতে পারে। লিংক টা এখানে পাবেন।
http://www.youtube.com/watch?v=t6Cd08mUjvU

(পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতার” সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

দাম্পত্য-১

আমার বিয়ের পর থেকে বিবাহ নামক সম্পর্কের বাঁধনটা নিয়ে অনেক ভেবেছি। ধুম ধাম করে বড় করে মেহেদী, বিয়ে, রিসেপশন এর পরে কী হয়? জমকালো সাজে বউটা বেশ আনন্দের সাথে নতুন ঘরে পা রাখে। তারপর কী হয়? আনুষ্ঠানিকতার লৌকিকতা যত ফিকে হয়ে আসে, মেহেদীর নকশা যত মিলিয়ে যেতে থাকে, বউটাও কি তত মেয়ের মত হয়ে মিশে যায় এই পরিবারে?

..
অচেনা বা অর্ধচেনা মানুষটি কি তার বাকি সব বন্ধনের অভাব ভুলিয়ে দিতে পারে?
বিয়ের আগে আমার একমাত্র বিবাহিত বান্ধবীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম,
বিয়েটা আসলে কী বলত?
তুই তোর বরকে কি মাথায় করে রাখিস? কোন কিছু পছন্দ না হলে কী করিস?
বাবা মায়ের কথা যেমন আমরা পছন্দ না হলেও মেনে নেই, এখানেও কি তুই তাই করিস?
নাকি বন্ধুর মত মতে না মেলা পর্যন্ত গলা ফাটিয়ে তর্ক করিস?
ওর কোন একটা কাজ অন্যায় দেখলে তুই কীভাবে সামলাস? ইত্যাদি ইত্যাদি।
আচ্ছা পাঠক, বলুন ত, আপনাদের মধ্যে কি একজনও আছে যে বিয়ের আগে এসব ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে আসে?
একজনও কি আছে যে বলতে পারে, না, আমার মা আমাকে এগুলো শিখিয়ে দিয়েছেন? ছেলেদের অবস্থা ত আরো ভয়াবহ। ছেলেকে স্বামী হওয়ার জন্য প্রস্তুত করার দায়িত্ব বাবার, এইটাত বাবারা কল্পনাই করতে পারেন না। মাঝে মধ্যে মনে হয়, এ যুগের বাবারা কি জীবিকা ছাড়াও জীবনে শেখার কিছু আছে এটা জানেন?

..
বেশির ভাগ ছেলেমেয়েরই যেটা হয়, একগাদা অবাস্তব স্বপ্ন নিয়ে তারা সংসার শুরু করে। মেয়েটা মনে করে দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা ছেলেটার চিন্তা জুড়ে থাকবে শুধু সে। তার চাওয়া পাওয়ার দিকে শতভাগ মনোযোগ থাকবে। অপর দিকে ছেলেটা দেখে কল্পনার পরী জোছ্না রাতে গল্প করতে আসলেই বেশ লাগে। সিন্দাবাদের ভুতের মত ঘাড়ে চেপে থাকলে অসহ্য বোধ হয়। ফলাফল, মেয়েটার অভিযোগ, আর ছেলেটার উদাসীনতা। স্বপ্নের নীড় স্বপ্নের দেশেই পড়ে থাকে। এর সাথে যদি অভিভাবকদের অন্যায় ব্যবহার যোগ হয়, তখন এই স্বপ্নকাতর কপোত কপোতীর কী যে দশা হয় বলাই বাহুল্য। একটা সময় হয়ত মেয়েটার মন কঠোর হয়ে যায়, ছেলেটা নিজের মত করে ভাল থাকতে শিখে যায়, দুজনেই কষ্টগুলোকে একা একা সামাল দিতে শিখে যায়। দূর দেশে কেঁদে মরে অপূর্ণ স্বপ্নগুলো। তার কান্না ভুলতেই বোধ করি এত এত বাস্তবতায় নিজেকে বেঁধে ফেলতে হয়।
যাই হোক।

...
আমি কখনও চাইনি আমার বা আমার বন্ধুদের দাম্পত্য জীবন এমন হবে। তাই শুধু খুঁজতাম একটা তালিসমান, একটা ম্যাজিক স্পেল – যেটা ফলো করলে স-ব সমস্যা নিমিশেই ফিনিশ হয়ে যাবে।

...
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে একটা মনে গেঁথে থাকার মত মন্তব্য শুনেছিলাম ড: মুহম্মদ জাফর ইকবালের মুখে, একটা অনুষ্ঠানে মনে আছে বলেছিলেন, “যে এই সম্পর্কটা একটা পুরনো জামার মত।” আমার এই তুলনাটা এত ভাল লেগেছিল! শুনেই মনে হয় কমফোর্ট আর কমফোর্ট। আমার বান্ধবীও বলল, প্রবলেম হলে মনে জমায় রাখবি না। কথা বলে সলভ করবি। বলে ফেললে দেখবি শান্তি।

..(1)
আমি প্রথম প্রথম তাই করতাম। কিন্তু ফলাফল দেখে বুঝলাম এ পদ্ধতি সবসময় সবার জন্য না।
কখনো কখনো একটু নিরবতা অনেক কথা বলে। দুজনের মতে না মিললে আমার মনে হাজার যুক্তি দাঁড়িয়ে যেত, তা বলার জন্যে আর ঠিকটাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে যেন আর তর সইত না। অঙ্ক কষে দুইয়ে দুইয়ে চার না মিললে হতবুদ্ধি হয়ে যেতাম। আমি ত ঠিক ই বলেছি। ঠিক বললেই ঠিক হয় না কেন? আবার দেখলাম আমি ভুল করলে প্রাণপনে মনটা চায় একটু যেন রেহাই দেয় ও, কিছু যেন না বলে। বুঝলাম, আমার ন্যায়ের ঝাণ্ডার চেয়ে ওর নিরব সহিষ্ণুতা অনেক বেশি শক্তিশালী।

♥
কিন্তু চুপচাপ থাকার পক্ষে কোন রেফারেন্স পাচ্ছি না ত! আর এটা কেমন কথা? দোষ দেখলে খালি চুপ করে থাকলে হবে? কত সময় কাজে ঝামেলা লেগে যায়, কথা পছন্দ হয়না, তখন শুধু চুপ থেকে চোখের পানি ফেলব নাকি? আর এভাবে আদৌ ত কোনদিন কেউ কাউকে উপরে তুলতে পারবনা, উল্টা মনে অনেক অভিমান জমা হবে। কী করি? উত্তরটা একদিন পেয়ে গেলাম কুরআনের পাতা উল্টাতে উল্টাতে। তাফসিরে একটা কোণে ছোট্ট করে লেখা,
“spouses are to establish peace and harmony.”
এই হারমনি নিয়ে চিন্তা করতে থাকলাম, করতেই থাকলাম।
হারমনি মানে কী?
হারমনি মানে এক সুরে গাঁথা,
ছন্দ মিলিয়ে চলা।
একসাথে মিলে সুন্দর একটা গান রচনা করা। একসাথে, একই ছন্দে তালে তাল মিলিয়ে একটা কিছু তৈরি করা – এমনভাবে যেন কোথাও কর্কশ সুর না বাজে। আমার এই বিজ্ঞ জজ সাহেবের ভূমিকা কি হারমনি তৈরি করছে? মোটেও না। তার মানে কি যেভাবে চলে চলুক বলে তালে তাল মিলিয়েই যাব? অবশ্যই না।
দুটো ভিন্ন স্কেলের কম্পোজিশন কে এক জায়গায় আনতে হলে কখনও তর্ক, কখনও ধৈর্য, কখনও একটু অভিমান – অনেক কিছুই ব্যবহার করতে হয়।
যা বুঝেছি,
“সায়েন্স এর জটিল বিষয়াদি বুঝতে যেটুকু বিদ্যা খরচ হয়, হিউম্যান সাইকোলজি বুঝতে তার চেয়ে অনেক বেশিই কসরত করতে হয়।” কিন্তু সবশেষে যে তানটা বাঁধা হবে তার চমৎকারিত্বে আশ্চর্য হয়ে যেতে হবে। এ যেন একটা ঝড়ো হাওয়ার মত, শক্তিকে শক্তি দিয়ে বাধা দিয়ে প্রলয় আরো বাড়াতেও পারেন, বাঁশির মধ্য দিয়ে বইয়ে অপূর্ব সুর ও তুলতে পারেন।

Waiting Waiting
(পরের পর্বের জন্য “অপরাজিতার” সাথেই থাকুন)

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

শিশুদের বয়সানুযায়ী কাজের তালিকা

...
অনেকক্ষেত্রে আমরা বাবা মায়েরা সন্তানের প্রতি ভালোবাসার দরুন, তাদের দিয়ে কোনো কাজ করাতে চাইনা,ভাবি বড় হলে তখন করবে।ভাবুন তো,কোনো কাজ না পারা ছেলে/মেয়েটি দেশে/বিদেশে হল লাইফে কিভাবে কি করবে?অথবা,আপনার স্বামী/স্ত্রীই যখন একেবারেই প্রচন্ড আদরে বড় হওয়া,কোনো কাজ না পারা মানুষ হোন, আপনার কেমন লেগেছে /লাগবে?
সন্তানকে নিয়ে একসাথে কাজ করলে বরং বাবামার সাথে সন্তানের বন্ধুত্ব বাড়ে।সম্পর্ক হয় গভীর। আমরা বয়স অনুযায়ী আমাদের সন্তানদের ঘরের কাজ ভাগ করে দিতে পারি।

...
২-৩ বছর

এ বয়সে শিশুরা সব কাজ করতে চায়,ঘর ঝাড়া থেকে রুটি বানানো সব।বাধা দেবেন না।করতে দিন,যদি সন্তানের ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকে।এতে তার কাজে আগ্রহ বাড়বে।আর বিরক্ত হওয়া যাবে না।
মূলত এ বয়সে,শিশুদের কিছু নিয়ে আসতে বলুন,বা,নির্দিষ্ট কিছু রেখে আসতে বলতে পারেন।যেমন,শিশুর নিজের ডায়পার নিয়ে আসা,ও ফেলে আসা।
খেলনা গুছাতে বলা।
ময়লা কাপড় বালতিতে ধুতে দেয়া।
খাবার টেবিলে ম্যাট বিছাতে দেয়া।
কম ধূলাযুক্ত স্থান মুছতে দেয়া।

...
৪-৫ বছর

নিজের খেলনা একাই গুছানো
বিছানা গুছানো
নিজের রুম গোছানো
হালকা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার বানানো, যেমন স্যান্ডউইচ বানানো
রান্না ঘর গুছাতে সাহায্য করা,যেমন হাড়ি,পাতিল, প্লেট জায়গা মত রাখা
ছোট,নিচু,আসবাবপত্র মুছতে দেয়া
গাছে পানি দেয়া

10-11
৬-৭ বছর

ময়লা ফেলা
চারকোণা কাপড় (টাওয়েল,রুমাল) ভাজ করা
জিনিষ মিলিয়ে রাখা,যেমন,মোজা মিলিয়ে রাখা
রান্নার কাজে সাহায্য করা – সবজি(মটরশুঁটি, আলু,পটল,গাজর) ছেলা
সন্তানকেও খাবার বানাতে দেয়া – সালাদ, কাস্টারড বানানো
বাগান করতে দেয়া
নিজের রুম নিজে ঝাড়ু দেয়া ও মোছা
মাকড়শার ঝুল ঝাড়া
বাথরুমে টয়লেট পেপার রাখা

...
৮-৯ বছর

বাল্ব /লাইট লাগানো বা বদলানো
কাপড় ধোয়া,ভাজ করা ও গুছিয়ে রাখা
বাজার করতে সাথে নিয়ে যাওয়া ও বাজার গুছিয়ে রাখা
খাবার টেবিল নিজে নিজে গুছানো
নিজের প্লেট,গ্লাস নিজে ধোয়া
আসবাবপত্র মোছা
রান্না ও বেক করা,যেমন,ডিমের জরদা বানানো, কেক/বিস্কুট বানানো
হ্যান্ডওয়াস রিফিল প্যাক ভরা

...
১০-১১বছর

নিজের বাথরুম ধোয়া
সিম্পল খাবার রান্না করা
রান্নাঘর নিজে গুছানো, হাড়ি,পাতিল ধোয়া
ছোট সেলাই করা – বোতাম লাগানো, হেম দেয়া
বাজার করা টুকটাক

...
১২বছর ও তার উপরে

কাপড় আয়রন করা
ছোট ভাইবোন কে দেখে রাখা
সবধরনের রান্না করতে দেয়া
পুরো বাসা ঝাড়ু দেয়া,মোছা
ইলেক্ট্রনিক কাজ করা
বাজারের লিস্ট করা ও নিজে বাজার করা
বাসা মেরামতের কাজে সাহায্য করা

কাজের ক্ষেত্রে ছেলে মেয়ে ভাগ করা উচিৎ না।শিশুরা কাজ ভাগ করে না,আমরা ওদের এই ভুল ধারণা দেই,এটা মেয়ের কাজ আর এটা ছেলের….

পজেটিভ প্যারেন্টিং
ট্রেইনার গ্রুপ,
লাইফস্প্রিং(মেন্টাল হেলথ ইন্সটিটিউট),ঢাকা
https://www.facebook.com/lifespringinstitute/

 

আসুন মৃত্যু সম্পর্কে কিছু জানি

অদৃশ্যমান অদৃশ্যমান
মৃত্যু (Death) মানে জীবের জীবনের সমাপ্তি। জীববিজ্ঞানের ভাষায় প্রাণ আছে এমন কোন জৈব পদার্থের (বা জীবের) জীবনের সমাপ্তিকে মৃত্যু বলে। মৃত্যু হচ্ছে এমন একটি অবস্থা (state, condition) যখন সকল শারিরীক কর্মকাণ্ড যেমন শ্বসন, খাদ্য গ্রহণ, পরিচলন, ইত্যাদি থেমে যায়। কোন জীবের মৃত্যু হলে তাকে আমরা বলি মৃত।

মারা যাবার পরপরই পার্শ্ববর্তী পরিবেশের প্রভাবে দেহ ঠান্ডা হয়ে যায়। মৃত্যুর খানিক বাদেই রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। আর তারপরে দেহের যে পচন শুরু হয়,
তার জন্য দায়ী এনজাইম ও ব্যাক্টেরিয়া।

মৃত্যু আসলে স্থায়ী জীবনে প্রবেশের দরজা। মৃত্যুর মাধ্যমেই আমরা পরকালের জিন্দেগীতে প্রবেশ করি।

...
মৃত্যুর ইসলামিক দৃষ্টিকোণঃ
মৃত্যু সম্পর্কে ক্বুরআনের কিছু আয়াত,

সূরা আলে ইমরানের ১৮৫ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন,
“সমস্ত প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন তোমাদের পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে।”

সূরা আলে ইমরানের ১৪৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে
“আল্লাহর আদেশ ছাড়া কারো মৃত্যু হয় না। এটা এমন এক পরিণতি যা সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ আছে।”

সূরা আলে সূরা সাবা ৩০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“বলুন, তোমাদের জন্যে একটি দিনের ওয়াদা রয়েছে যাকে তোমরা এক মহূর্তও বিলম্বিত করতে পারবে না এবং ত্বরান্বিত ও করতে পারবে না।”

সূরা লুক্বমান ৩৪  নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“নিশ্চয়ই কিয়ামত (-এর ক্ষণ) সম্পর্কিত জ্ঞান কেবল আল্লাহরই কাছে আছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তিনিই জানেন মাতৃগর্ভে কী আছে। কোন প্রাণী জানে না সে আগামীকাল কী অর্জন করবে এবং কোন প্রাণী এটাও জানে না যে, কোন ভূমিতে তার মৃত্যু হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত, সবকিছু সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন।”

সূরা আলে সূরা জুমার ৩০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“নিশ্চয় তোমারও মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে।”

সূরা আলে সূরা আশশুরা ৮১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন।”

সূরা আলে সূরা ওয়াকিআ ৬০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই।”

সূরা আলে সূরা কাহফ ১৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেই তুমি টালবাহানা করতে।”

সূরা আলে সূরা কাহফ ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“আমি জীবন দান করি, মৃত্যু ঘটাই এবং আমারই দিকে সকলের প্রত্যাবর্তন।”

সূরা আলে সূরা হাজ্জ্ব ২৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“আমিই জীবনদান করি, মৃত্যুদান করি এবং আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।”

সূরা আলে সূরা আল আ’রাফ ১২৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“তারা বলল, আমাদেরকে তো মৃত্যুর পর নিজেদের পরওয়ারদেগারের নিকট ফিরে যেতেই হবে।”

সূরা আলে সূরা আনকাবুত ৫৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।”

সূরা আলে সূরা আল ইমরান ১৫৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“আর তোমরা মৃত্যুই বরণ কর অথবা নিহতই হও, অবশ্য আল্লাহ তা’আলার সামনেই সমবেত হবে।”

সূরা হাদীদ ২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম।”

সূরা মুনাফিকুন ১১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।”

মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে মৃত্যু বাক্যটি ১০৮টি আয়াতে ১১৮বার উচ্চারিত হয়েছে, তার মধ্যে মাত্র কয়েকটি আয়াত আপনাদের সামনে পেশ করা হল। প্রতিটি প্রাণীই মরণশীল। ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে স্থায়ী নয় কেউ-ই।
রেফারেন্স:উইকিপিডিয়া,কোরআন।
অপেক্ষা অপেক্ষা

ফাতেমা শাহরিন
‘সাইকোলজি’