banner

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: April 2024

 

জোনাকির ঘুম

...

অপ্রস্ফুটিত অনূভুতি,
নিস্তব্ধতা কেটে
রাতের আধারকে ঘেঁষে বস।
চুপ…
জোনাকিরা ঘুম ঘুম ঘোরে
মৃদু আলো জ্বালিয়ে বলে
“ঘুমোও ত ভাই ”
এখনও প্রভাত ফোটেনি!!!

কামিনী গাছের মগডালের
পাখিটাও আড়মোড়া দেয়,
ওঠ…
ঝিম ধরে শব্দ খুঁজে মরি,
ঝিঁঝিপোকাদের ঠিক তখনই
বোবা ধরে….
নিস্তব্ধতা আবার,
বিরক্তিকর আলসেমি রাত
আকাশের চাঁদ তারারাও
মেঘেদের কোলে লুকিয়ে পড়ে। 

ক্লান্ত পথিক,
পা অবসাদে লুটে,
ঘুম, ঘুম, ঘুম
শক্ত লাঠিতে ঘুণ ধরেছে
কবে কে যানে…

নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ
কতকাল আর…
সুখ, অনুভূতি, ভুল শব্দরা
সেই ছাতা পরা ডায়েরির শেষ
পাতায়।

আজ
মায়াময় পৃথিবী
মৃদু ভালবাসা নেই বলে প্রতিধ্বনি তুলে…
কেন?
রাত,
নদীর সন্ধি 
পথিক বসে রয়
ঠিক মাঝ দরিয়াতে এখনও…
কেন?

হঠাৎ একদিন খেয়াল হল,
লেখকের দেহে প্রাণ নেই,
কই যেন যায়…
জেগে ওঠে মন
এখনই নামবে জোয়ার
আর সে যাচ্ছে ত যাচ্ছে
হারিয়ে যাচ্ছে ….
পানির অতল থেকে অতলে
না ফেরার দেশে
কেন?
হয়ত কলমের কালি শেষ।।

অজান্তেই অট্টহাসিতে 
ডুকরে ওঠে পানির ঢেউ আর বাতাসের
শো শো শো….

হুতুমপেঁচাটা ঐ দূরে ডাকছে
কেন?
বড় বিমর্ষতা করে….
কাঁপিয়ে তোল পৃথিবীকে।

অসমাপ্ত গল্পরা কেন?
মাঝ পথে থমকে দাড়ায়।

...

 

মজবুত “ভালবাসা” পারস্পারিক বন্ধনে

To love means to be actively concerned for the life and the growth of another.
[Irvin D. Yalom]
সাধারণত অধিকাংশ মানুষ মনে করেন যারা অভিনয়ে পারদর্শী বা মানসিক সমস্যা নিয়ে কাজ করেন(সাইকোলজিস্ট), তারা সর্বদা নিখুঁত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এই বিষয়টি পুরোপুরি সঠিক নয়। হ্যা, অভিনেতা সুন্দর অভিনয়ের মাধ্যমে একটি চরিত্রকে দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তোলেন বৈকি। আর সাইকোলজিস্টরা তাত্ত্বিক জ্ঞান আর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে ব্যক্তির সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করেন। কিন্তু তারাও অন্যদের মতই মানুষ। তাদের জীবনেরও ভিন্ন ভিন্ন গল্প আছে। তারাও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করেন।

♥
♥Love is not a battlefield. Your head is.(ভালবাসা নয় কোন যুদ্ধ বরং মস্তিষ্কের যুক্তিবুদ্ধি)

সম্পর্ক জড়িয়ে থাকে ভালবাসা দিয়ে, ভালবাসা মানে যুদ্ধ নয়। যে সব সম্পর্কে অবনতি হয়, সেটাকে চিন্তা করলে, ভালোবাসার সম্পর্কে আবদ্ধ দুজন ব্যক্তির এই ভালোবাসাটাকে যুদ্ধক্ষেত্র রূপে ধরা হয় না, বরং তাদেরকে যুক্তিবুদ্ধির সাথে চিন্তার দ্বন্দ্ব খোঁজা হয়। তাই সব মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ এই, আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা, চিন্তা, নিউরনের খেলা, সংজ্ঞা, ট্রিগার, নিরাপত্তাহীনতা, স্বপ্ন এবং নিজেদের সম্পর্কের প্রতি বিশ্বাস সব কিছুর সমন্বয়ে গঠিত হয় আমাদের ‘ভালবাসা’। “প্রস্ফুটিত ভালবাসা” খুব সুন্দর শব্দ। হ্যা, শেষ পর্যন্ত এটা আমাদের প্রশান্তি অনুভূতি দেয়।
আপনার চিন্তা সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
প্রশ্ন করুন,
What is love?

...
♥There is no such thing as perfect.(পারফেকশন হল একটি আপেক্ষিক শব্দ)

পারফেকশন এর ব্যাপারটা যেহেতু আপেক্ষিক সুতরাং আমার কাছে যা পারফেক্ট, আপনার কাছে তা পারফেক্ট নাও হতে পারে। সামগ্রিক ভাবে বললে, পৃথিবীতে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুই পারফেক্ট নয়। তাই নিজেকে এবং নিজের সঙ্গীকে সামগ্রিকভাবে মেনে নেওয়ার নাম ভালবাসা।

...
♥Love is peeling an onion, not biting an apple.(ভালবাসা পেয়াজ কাটার এর মত, অ্যাপেল মত নয়)

পেয়াজ কাটতে গেলে চোখ দিয়ে পানি আসবে, অস্তিত্ব অনুভূতি থাকে। অনুভূতি প্রকাশিত হয়, যন্ত্রণা বুঝা যায়। অ্যাপেল কাটার মত নিস্প্রাণ নয় ভালবাসা।

...
♥If someone wants to be with you, you will know.(সত্যিকার অর্থে পাশে থাকা মানুষটির উপস্থিতি জানতে চেষ্টা করা)

যদি সত্যিকার অর্থে কেউ যদি আপনার পাশে থাকে, তাহলে আপনিও তার উপস্থিতি অনুভব করতে পারবেন। সে অর্থে আপনার হাতটা কেউ ধরেছে বা ধরবে বলে কোন সিদ্ধান্ত যদি নেওয়া হয়, আপনিও তাকে বোঝার চেষ্টা করুন। বোঝার চেষ্টা করার মাঝেই ভালবাসা লুকায়িত থাকে। সেক্ষেত্রে বন্ধন মজবুত এবং স্থায়ী হয়।

*** ***
♥No one’s ever really “ready” for a relationship.(“প্রস্তুতি নিয়ে” কোন সম্পর্ক গড়ে ওঠে না)

রিলেশনশিপ এর মত ব্যাপারগুল আচমকা হয়, যেটার জন্য সাধারণত মানুষ তাৎক্ষণিক ভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার কোন সময় পায় না।
যেমন, বন্ধুত্ব।
আপনি শুধু অন্তর থেকে তা অনুভব করতে পারবেন।

...
♥Hold love. Don’t grab it.(ভালবাসাকে ধারন করতে হয়, দখল করা যায় না)

ধরুন যদি বলি,
পাখিকে, আলতো করে ধরতে হয়, বেশি শক্ত করে ধরলে কষ্ট/মরে যায়, মানে if I grab it, it’ll die.
ভালোবাসাও তেমনই। নিজের ভিতর অস্তিত্ব অনুভূত হয়, শক্ত করে অধীনে নিলেই উড়ে যায়।

...
♥Don’t stop believing.(বিশ্বাসকে বাঁচিয়ে রাখুন)

বিশাস করা থামিয়ে দিবেন না, তাহলে স্বপ্ন গুলো থেমে যাবে। অবিশ্বাসীদের মনে শুধু সন্দেহের জন্ম হয়।
তাই সর্বদা বিশ্বাস জাগ্রত রাখুন।

মুল:
জন কিম
অনুবাদ:
আফরিন তাসলিমা
সুমাইয়া তাসনিম
ফাতেমা শাহরিন

অপ্রত্যাশিত কিছু ভুল পারিবারিক বন্ধনে

...
পরিবার হচ্ছে একটি চমৎকার সংগঠন।
আমরা পরিবারকে কিছুটা রাষ্ট্রের সাথে তুলনা করতে পারি। যেখানে প্রধানমন্ত্রী থাকেন, প্রেসিডেন্ট থাকেন, আর বাকী সবাই জনগণ।

একটা পরিবারের মুল চালিকাশক্তি হচ্ছে পারস্পারিক বন্ধন। দায়িত্ব, সম্মান আর ভালোবাসাযুক্ত থাকলে, পরস্পরকে চুম্বক আর ইস্পাতের মত দৃঢ়ভাবে আটকে রাখে।
আর Barbara Greenberg ভদ্রলোক একজন সাইকোলজিস্ট তিনি অসংখ্য ক্লাইন্ট দেখেছেন, অতঃপর তার মনে হল আসলে সন্মানিত পরিবারগুলতে কেন যেন আস্তে আস্তে পারস্পারিক বন্ধনগুল নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। ২৫ বছর ধরে তিনি কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করছেন। অনেক বয়সের ব্যক্তিদের দেখেছেন।

তার মতে, বিভিন্ন ধরণের আবেগীয় কষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয় মুলত পরিবারের সদস্যদের কাজ থেকে।

এই পোস্টটি তিনি অনেকগুল জীবনের বাস্তব চিত্র দেখে তা থেকে তুলে এনেছেন Barbara Greenberg।

কিভাবে এই বিভ্রান্তিকর পারিবারিক ডায়নামিক্সের সেটটি সন্নিবেশিত হয়।
যা সত্যিকার অর্থে ভয়ঙ্করভাবে বিভ্রান্তিকর।

আসুন দেখা যাক সেই অপ্রত্যাশিত মূল্যবান কারণগুল,

মডেলিং মডেলিং
***মডেলিং(Modeling)

“””বাবা বাবা….বৃদ্ধ মা ঘর থেকে ডাকছেন ছেলেকে।
ছেলে ঘন্টা খানেক আগে অফিস থেকে এসে
ফ্রেশ হয়ে তার ছোট ছোট বাচ্চাদের সাথে খেলছেন।
জি মা, এই মাত্র অফিস থেকে এসেছি,
ফ্রেশ হয়ে আসি।

♦পাঁচ বছরের আয়ান অবাক হয়ে বলে বসে,
“বাবা তুমি মিথ্যে বলছ”।””””

কিছু পরিবারের সদস্যরা কথা এবং কাজে যখন দ্বিমুখী পদক্ষেপ নেন।
ছেলে বৃদ্ধ মায়ের আবেগ অনুভব করেনি ছোট্ট ছেলেটিও বড় হয়ে তার বাবার আবেগ বুঝতে সমস্যায় পড়তে পারে। ইতিহাস রিপিট নেক্ট ইতিহাস।

সম্ভবত আপনি দেখছেন আপনার মা বাসার কাজের মেয়েটিকে মানুষ হিসেবে প্রাপ্ত সন্মান দিচ্ছেন, সন্তান হিসেবে এই দৃশ্যটির আপনি সাক্ষী। যখন আপনি ক্রমবর্ধমান ঐ পর্যায়ে যাবেন। আপনি তাই করবেন যা শিখছেন। সুতরাং বাড়িতে আমরা এই মডেলিং দেখে দেখে বন্ধন গড়া শিখি।

উচ্ছ্বাস উচ্ছ্বাস

***শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণ(Power and Control)

ধরুণ,
ছোট্ট মেয়ে কণা এবার ছয় বছর।
এই দাদা এক গ্লাস পানি দাও ত।
প্রায় দাদাজান কণাকে এভাবেই বলে দাদাজান এক গ্লাস পানি দাও ত।
কণার বাবা শুনে চমকে উঠে।
তুমি বেয়াদব এর মত তোমার দাদার সাথে কথা বল ঠাস..ঠাস দিব কিন্তু
ভদ্রতা শিখছ না তুমি।
সরি বল, সরি বল দাদাজানকে।
এই যে আমরা দেখি কিছু বাচ্চা বুলিং(অন্য বাচ্চাদের খোটা দেয়, নানান ধরনের কটু কথা, নাম বিকৃতি বা পোশাক আশাক নিয়ে কষ্ট দেয়)
কেন করে তারা এই রূপ পাওয়ার আর অতিরিক্ত কন্ট্রোল পরিবেশে। অর্থাৎ প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের উচ্চ ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণ উচ্চ মাত্রার প্রয়োগের ফলে বাচ্চাদের মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ গড়ে উঠে।

ক্লান্তি ক্লান্তি

***ক্লান্তি(Exhaustion):

“”””হ্যালো
হ্যা শুনছ তুমি।

♦আসসালামু আলাইকুম, কি অবস্থা?

অবস্থা কি বলব? আম্মার কাছে বাবুকে দিয়ে একটু বাথরুমেও যেতে পারি না।
আজকে কি হয়েছে শোন…..

ছেলেটি খুব খুব বিরক্ত প্রথম প্রথম মায়ের নামে কথাগুল শুনলেও
এখন বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন দিন দিন।
বউ ফোন করলে হু হা বললেও ফোন পাশে রেখে দেন।
আগের টান কি কমছে।
নিজের সন্তানরা দাদা দাদী সম্পর্কে কি ভাবছেন???”””

মাঝে মাঝে কেউ কেউ কোন আত্মীয় বা আপনজনের কিছু আচরনে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েন।
তারা এর আচরনের পরিবর্তন এর ব্যাপারে আশাহত হয়ে পড়েন, ভাবেন অনেক সহ্য করেছি আর না। ফলে তাকে অপ্রয়োজনীয়, বাতিল মানুষের তালিকায় ফেলে দেন অজান্তে কারন প্রত্যেকেরই কষ্ট সহ্য করার একটা নির্দিষ্ট সীমারেখা রয়েছে।

নতুন জীবন নতুন জীবন

***নতুনভাবে জীবন শুরু:

“মেয়েটির একটা ছেলের সাথে খুব খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল,
বিয়ের আগে দীর্ঘ সময়ের পরিচিত জায়গা থেকে চলে যেতে হচ্ছে যাতে ছেলে পক্ষ এ বিষয়টি কোন ক্রমে টের না পায়।””

জীবনের কোন বেলায় যখন আমার পরিবার, আমার আশেপাশের মানুষজন, আমার ছোটবেলা এবং আমার অতীত সম্পর্কে অনেক কিছু জানে কিন্তু আমি চাইনা অতীতের কোন কিছুই সামনে আনতে তখন আমি কিভাবে আমার অতীতকে ভুলে জীবনের নতুন গল্প লিখব? একটা পথ হচ্ছে, এসব জানে যারা তাদের থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া।
আপনার পরিবার এবং অন্যান্য সম্পর্ক থেকে অনেক দূরে সরে যায়। সম্ভবত ভুল অতীত স্মরণ করিয়ে দিতে চান না কেউ।
এর একটি উপায় হল সেই সব সদস্যদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া।
যাতে আপনার গল্প পুনর্লিখনে কেউ বাধা হয়ে না দাড়ায়।

বিশ্বস্ততা বিশ্বস্ততা
***বিশ্বস্ততা:
“বিয়ে ত করেছ?
♦জি।
কিছু বিষয় এখন তোমাকে মেনে চলতেই হবে।
♦জি।
তোমার বোনের বাচ্চাদের নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি আর লাফালাফি ছেড়ে দিতে হবে।
♦মানে, কেন?
কেন মানে যে কোন একটা পরিবার এখন বেছে নিতে হবে বুচ্ছো।
♦না।
হয় বাবার বাড়ি নয়ত শশুড় বাড়ি।”

ধরুন আপনি এমন একটা সিচুয়েশন এ পড়লেন যে আপনাকে পুর্বের সম্পর্কের বাচ্চা এবং নতুন সম্পর্কের পার্টনারের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে। এই অবস্থায় সিদ্ধান্ত নেয়া কি সহজ,সাধারনত??
মোটেই না।
কিন্তু অনেকেই এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়।
তখন বন্ধন ভেঙ্গে পড়ে।

এর ফলে আত্মীয়তার বন্ধনে, অর্থাৎ বাবা-মার সাথে সন্তানদের, ভাই-বোনদের মাঝে এবং এরূপ অন্যান্য নিকট আত্মীয়দের (ফুপু, মামা, খালা) একে অপরের সাথে দিন, মাস, বছর এবং এমনকি কখনো কখনো সারা জীবনের জন্য আর সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকে না।

বন্ধন বন্ধন
আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষা এবং পারিবারিক বৈষম্য নিয়মনীতির সংশোধন করা দরকার। তা না হলে ইতিহাস ঘেটে দেখা যাবে এর ক্ষতিকর দিক আছে। যে সম্পর্কের পুনর্বিবেচনা করার সামান্য ইচ্ছা এবং শক্তি রয়েছে।সেখানে সহযোগিতা করা দরকার।
আপনি আপনার পারিবারিক গতিবিদ্যার নির্দিষ্ট সেট বুঝার চেষ্টা করুন। তা প্রত্যেকের সৌভাগ্য বয়ে আনবে।

লেখক:
Barbara Greenberg,
Ph.D
clinical psychologist
অনুবাদ:
Amina Anzum Mishu
&
Fatema Shahrin

 

বাহারি কুশন

চেয়ারের এক কোণে পড়ে থাকার যুগ শেষ। শুধু কুশন দিয়েই এখন ঘরের চেহারায় আনা যায় নতুনত্ব। কুশন সাজিয়ে রাখার পরিবেশনাতেও যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন ঢং। বড় সোফা হোক বা নিচু, ঘরে ডিভান-শতরঞ্জি, যা-ই রাখা হোক, কুশন থাকবেই।

বসার ঘর ছাড়াও শোয়ার ঘর আর শিশুর ঘরে কুশন রাখতে পারেন। থাকতে পারে ঘর বা বারান্দার এক কোণে রাখা দোলনাটাতেও। নানান স্থানে ব্যবহারের উপযোগী কুশন পাবেন অনায়াসেই। শুধু অন্দরসজ্জার বাকি দিকগুলো খেয়াল রাখুন কুশন কভার কেনার সময়, তাহলে ঘর সাজানোর সময় আর আলাদা করে ভাবতে হবে না। কোন ঘরে কোন স্থানে ব্যবহার করতে চাইছেন, এর ভিত্তিতে কুশনের আকার বেছে নিতে হবে। কুশন কভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কতটা সময় বা সুযোগ পাচ্ছেন, এর ওপর নির্ভর করবে কোন উপকরণে তৈরি কভার আপনার জন্য ভালো।

একটি জায়গার জন্য ভিন্ন নকশায় তৈরি একই রঙের কুশন কভার বেছে নেওয়া যায়। ভিন্ন রঙের কাপড়ে একই নকশা থাকলে তা-ও সুন্দর দেখাবে। এমনকি রং বা নকশায় মিল না থাকলেও অন্তত একই কাপড়ে তৈরি কুশন ব্যবহার করা উচিত। একেবারেই মিল না রেখে নানান ধরনের কুশন বেছে নিলে তা ভালো দেখায় না।

ঘরভেদে কুশন কাভার ব্যবহারের নির্দেশনাবলি জানালেন অন্দরসজ্জাবিদ গুলসান নাসরীন চৌধুরী

 বসার ঘর
মাঝারি আকারের বসার ঘরে শুধু সোফা আর চেয়ার রাখার সুযোগ থাকে। এমন ঘরে শুধু সোফাতেই কুশন রাখতে পারবেন। সোফার আকার-নকশা অনুযায়ী কুশন ও এর কাভার বেছে নিন। বেত, কাঠ বা বাঁশের তৈরি সোফা থাকলে দেশজ নকশার কুশন কভার বেশ লাগে। গ্রামীণ চেক, হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, কাঁথা স্টিচ বা অ্যাপ্লিক বেছে নিতে পারেন। কুরশি কাঁটার কাজ করা থাকলেও ভালো দেখাবে। পর্দা ও অন্যান্য আসবাবের দিকেও খেয়াল রাখুন কুশন কাভার বেছে নেওয়ার সময়।

ভিক্টোরিয়ান ধাঁচের সোফা (গদিওয়ালা, বড় সোফা) থাকলে কৃত্রিম তন্তুর তৈরি কাপড়ের কুশন কভার মানানসই। এ ছাড়া কাতান, সার্টিন, লেস, নেটের কুশন কভার বেছে নিতে পারেন। সোফার জন্য সাধারণত ১৪ বাই ১৪ থেকে ১৮ বাই ১৮ আকারের কুশন ব্যবহার করা হয়।

বসার ঘরটা বড় হলে সোফা ছাড়াও থাকতে পারে ডিভান বা শতরঞ্জি। ডিভান থাকলে নকশিকাঁথা বা নকশিকাঁথার চাদর বিছিয়ে কাঁথা স্টিচ বা নকশিকাঁথার কুশন কভার দিয়ে সাজানো যায়। রঙিন শতরঞ্জিতে বড় কুশন মানায়। ২০ বাই ২০ থেকে শুরু করে ২৮ বাই ২৮ আকারের কুশন ব্যবহার করতে পারেন।

শোয়ার ঘরে
শোয়ার ঘরে বালিশের সামনে কুশন রাখতে পারেন কিংবা বালিশ ছাড়াই শুধু কুশন ব্যবহার করতে পারেন। অনেক দেশেই শোয়ার ঘরে বালিশের পরিবর্তে শুধু কুশন রাখার প্রচলন রয়েছে। বালিশ না রাখলে অবশ্যই ভালো মানের কুশন ও কাভার ব্যবহার করা উচিত। ভালো মানের দেশীয় সুতি কাপড় কিংবা চায়নিজ বা জাপানিজ কাপড়ের কুশন কিনতে পারেন। বালিশ থাকলে এর কভারের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কুশনের আবরণ বেছে নিন। একটু হালকা রঙের কাপড়ই এই ঘরটার জন্য ভালো।

শিশুর ঘরে
শিশুর ঘরে কুশন কভার রাখলে ওর মানসিকতার দিকে লক্ষ রেখে সেটি বেছে নিন। প্রজাপতি, টেডি বিয়ার, সিনড্রেলা বা ফুটবলের নকশায় তৈরি কুশন কভার হতে পারে ওদের পছন্দসই। বিছানায় তো রাখতেই পারেন, শিশুর ঘরে ডিভান থাকলে সেখানেও এমন কুশন রাখা যায়। এই ঘরের জন্য একটু গাঢ় রঙের কাপড় বেছে নেওয়া ভালো, নইলে সহজেই নোংরা হয়ে যেতে পারে।

 অন্য যেথায় একটু আরাম
বাড়িতে আলাদা লিভিং রুম থাকলে সেখানে নানান আকৃতির কুশন রাখতে পারেন। চারকোনা বা কোলবালিশের আকৃতির কুশন জড়িয়ে একটু শান্তিতে বসতে পারেন। আড্ডা চলতে পারে বড় কুশনের ওপর বসেও।

 কেমন করে মেলাই
গুলসান নাসরীন চৌধুরী জানালেন, রং-বেরঙের কুশন কভার দেখতে ভালো লাগে। তবে কোনো এক দিক থেকে একটু মিল রেখেই রং বেছে নেওয়া উচিত। হয়তো একই কাপড়ের তৈরি কুশন বেছে নেওয়া হলো; কোনোটাতে লালের ওপর লাল গোলাপ, কোনোটাতে হলুদের ওপর হলুদ গোলাপ আবার কোনোটায় বেগুনির ওপর বেগুনির গোলাপের নকশা থাকল। আবার হয়তো ঘরের একটা দেয়াল সি গ্রিন; এই ঘরের চারটি সোফার কুশনের কভারগুলোর প্রতিটিই সি গ্রিন রঙের, তবে একটিতে হ্যান্ড পেইন্ট করা রয়েছে সাদা গোলাপ, একটিতে সাদা বেলি, একটিতে সাদা রজনীগন্ধা আর অন্যটিতে ফুটিয়ে তোলা সাদা দোলনচাঁপা; অসাধারণ দেখাবে।

 যত্নের কথাও ভাবুন
ব্যস্ত জীবনে যত্ন নিয়ে সুতি কাপড় পরিষ্কার করা, ধোয়ার পর শুকানো ও ইস্ত্রি করার সময় মেলা ভার। তাই কৃত্রিম তন্তুর কাপড় বেছে নিতে পারেন। চট করেই পরিষ্কার করা হয়ে যাবে, বাড়তি ঝামেলা নেই। তাই নিজে কেমন সময় পাবেন কুশন কভারের যত্ন নেওয়ার, সেটিও খেয়াল রাখুন কুশন কভার কেনার সময়।

 কোথায় পাবেন, কেমন দাম?
বাজার ঘুরে পাওয়া গেল বৈচিত্র্যময় সব কুশন কভারের খোঁজ। ফ্যাশন হাউস আড়ং, মায়াসির, নিপুণ, বিবিয়ানা, যাত্রায় পাবেন নানান নকশার কুশন আবরণ। ফুল বা পাতা; বাহারি নকশা—সবই পেয়ে যাবেন একটু খুঁজলে। পাট ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপকরণে তৈরি কুশন-আবরণ পাবেন ফ্যাশন হাউস যাত্রায়। প্রিন্টের, এমব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক করা কুশন কভার রয়েছে আড়ংয়ে, মিলবে সুতি বা সিল্ক যেকোনো কাপড়ই। এর বাইরে অন্য ধাঁচের কুশন কভার পাবেন ক্ল্যাসিক্যাল হোম টেক্সে। মখমলের নকশা করা বা চুমকি বসানো কুশন কভার পাবেন এখানে। আধুনিকতার ছোঁয়া পাবেন এখানকার কুশন কভারে, জ্যামিতিক আকারের ব্যবহারে একটু অন্য নকশায়। এ ছাড়া নিউমার্কেট, চাঁদনি চক আর গাউছিয়া মার্কেটেও পাবেন বিভিন্ন ধরনের কুশন কভার। আকার, কাপড়ের ধরন ও নকশাভেদে প্রতিটির দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে।

 

পুরনো কাপড় পুনর্ব্যবহারযোগ্য হবে কাঁথায়

যদি নির্দিষ্ট সময় ধরেই বলতে হয়, তবে বলা যায় ছয় মাস বা এক বছর অন্তর অন্তর প্রায় সব বাড়িতেই জমে যায় কিছু পুরনো কাপড়। পুরনো জিন্স, শার্ট, টি-শার্ট, ওড়না বা টাইগুলো একসঙ্গে জমিয়ে রাখা হয়। বলা ভালো, সাধারণ এসব বাজেয়াপ্ত কাপড় বর্জ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখে তুলনামূলক কম। বর্জ্য কম উৎপাদন যেমন পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ, তেমনি প্রক্রিয়াজাতকরণের উপযুক্ত উপকরণগুলো পুনর্ব্যবহার করতে পারাও সবুজ জীবনযাপনের অংশবিশেষ। তাই পুরনো এসব কাপড় দিয়ে যদি ব্যবহার উপযোগী কাঁথা তৈরি করা যায়, তাহলে একই সঙ্গে পণ্য পুনর্ব্যবহার, বাজেয়াপ্ত থেকে রক্ষা করা ও কেনাকাটার খরচ কমানো— এ তিন ভূমিকায় আপনি থাকতে পারছেন।

পুরনো টি-শার্টের সামনে বা পেছনে যদি কোনো নকশা বা লেখনী থাকে, তাহলে সেগুলোকে নির্দিষ্ট মাপে কেটে সংরক্ষণ করুন। অর্থাত্ আপনার সংগ্রহে যদি পাঁচটি টি-শার্ট থাকে, তাহলে সবগুলোর নকশাকার অংশকে ৫ ইঞ্চি বাই ৫ ইঞ্চি এ মাপে বা এর থেকে বড় মাপে কেটে নিন। উপর-নিচ বা পাশাপাশি রেখে সেলাই করুন। শার্টের ক্ষেত্রে স্ট্রাইপ বা রঙের মিল করে নিতে পারেন। আপনার কাপড়ের ধরনের সামঞ্জস্যও রাখা যেতে পারে। সবগুলো টুকরো তৈরি হয়ে গেলে সেগুলো একসঙ্গে সেলাই করে বানিয়ে ফেলতে পারেন নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বা আপনার পছন্দের আকারের কাঁথা। এভাবে পুরনো টাই এমনকি টি-শার্টের ট্যাগও কাজে লাগানো সম্ভব নান্দনিক কাজে।

 

বাতাস বিশুদ্ধ রাখবে শখের ঝাড়বাতি

আলো ঘর সাজানোর অনুষঙ্গের মধ্যে অন্যতম। শুধু ঘর আলোকিত করার জন্যই নয়, ঘরের সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রেও আলোকসজ্জার জুড়ি মেলা ভার। বহুকাল আগে থেকে আলোর ব্যবহার হয়ে আসছে ঘর সাজানোর কাজে। তাই তো অভিজাত কিংবা শৌখিন কারো বাড়িতে দেখা মেলে আকর্ষণীয় ঝাড়বাতির। অনুষঙ্গটি দ্রুত ঘরের চেহারা পাল্টে দিতে পারে।

পরিবেশবাদীরা হয়তো এতক্ষণে ভাবা শুরু করেছেন, এতে শক্তির তথা বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে ভীষণ। আবার সেসব ঘরের ভেতরের পরিবেশ গরম করে ফেলছে মুহূর্তেই। কিন্তু এমন যদি হয়, আপনার ঘরের সিলিংয়ে ঝোলানো ঝাড়বাতিটি ঘরের ভেতর বাতাস বিশুদ্ধ করার কাজটি করছে আপনাতেই। তাহলে অবাক লাগবে নিশ্চয়ই। আবার প্রাকৃতিক উপায়ে যদি ঘরের ভেতরের বাতাস বিশুদ্ধ করা যায়, তাহলে তো সেটাই ভালো।

সৌন্দর্য বর্ধনকারী ঝাড়বাতি আবার কাজ করবে বাতাস বিশুদ্ধকারক হিসেবেও। এমন কিছুই তৈরি করেছেন লন্ডনের এক নকশাকার ও প্রকৌশলী জুলিয়ান মেলসিওরি। তিনি তৈরি করেছেন এমন একটি ঝাড়বাতি, যা শুধু ঘরকে আলোকিতই করবে না, সঙ্গে চারপাশের বাতাসও বিশুদ্ধ করবে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া লন্ডন ডিজাইন উইকে এটি প্রদর্শিত হয়েছে। ঝাড়বাতিটিতে ব্যবহার করা কাচের টুকরো পরিপূর্ণ করা হয়েছে সবুজ শৈবালে, যা কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন নির্গমন করে।

সবাই যখন ঘর সাজানোর প্রতিটি অনুষঙ্গে পেতে চান সবুজের ছোঁয়া, সেদিক থেকে বাদ যাবে কেন সিলিংয়ে ঝোলানো সুন্দর ঝাড়বাতিটি। সেদিক বিবেচনায় জুলিয়ানের তৈরি করা ঝাড়বাতিটি শুধু পরিবেশবান্ধব আলোর উত্সই নয়, সঙ্গে অনেকখানি সৌন্দর্য বিলাবে ঘরময়। ঝাড়বাতিটিতে ব্যবহার করা সবুজ শৈবাল নকশায় জুড়ে দিয়েছে অনন্যতা। মজার বিষয়, বিশেষ এ বাতি ব্যবহার করা যাবে ঘরে কিংবা ঘরের বাইরে যেকোনো স্থানে, যেখানের বাতাস বিশুদ্ধ করার প্রয়োজন।

বাইরে থেকে হঠাত্ দেখলে ঝাড়বাতিটিকে বেশকিছু পাতা ছড়িয়ে বসে থাকা ঝুলন্ত গাছের মতোই মনে হবে। ঝুলে থাকা বাতিটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি বেশকিছু নকল পাতা। যদিও সেসব পাতা বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে আসল যেকোনো পাতার মতোই।

জুলিয়ান শুধু একজন নকশা প্রকৌশলীই নন, সেসঙ্গে তিনি প্রথম সারির একজন জৈব রাসায়নিক প্রযুক্তি গবেষকও। বেশ কয়েক বছর আগে তিনি ‘আর্টিফিশিয়াল লিফ’ নামে একটি পরিকল্পনা হাতে নেন। এর পেছনে বেশ সময় ব্যয় করেন। ধীরে ধীরে সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তৈরি করেন অভিনব এ ঝাড়বাতি। মাইক্রোবায়োলজিক্যাল লাইফ ফর্মের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে অক্সিজেনে রূপান্তর করে, ফটোসিনথেসিস প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে জুলিয়ানের বায়োনিক লিফ প্রস্তুত করা হয়েছে। বলা চলে, এসব একত্র হয়েই সুন্দরের আধার ঝাড়বাতিটি প্রস্তুত হয়েছে।

সূত্র: ইনহ্যাবিট্যাট

সন্তানের উৎসাহ এবং উদ্দীপনা বাড়ানোর কিছু উপায়!

ধরুন আপনার সন্তান হঠাৎ কোনো অপরাধ করে ফেললো। অপরাধ করার ফলে তার মধ্যে শাস্তি পাওয়ার চেয়েও বেশি যে ভয়টি কাজ করে তা হলো, আপনার ভালোবাসা হারিয়ে ফেলার ভয়। তাই তাকে জানতে দিন শত অপরাধ করার পরেও সে আপনার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবে না।

...
“বাহ! তোমার ঘর তো খুব পরিষ্কার!” “বিছানা গুছিয়ে ফেলেছো? দারুণ!” “তোমার কাপড়গুলো কী চমৎকার ভাঁজ করেছো! সাবাশ!” – এইসব ছোট ছোট কথায় আপনার সন্তান তার প্রতি আপনার আস্থা আর সমর্থন টের পায়। এগুলোর মাধ্যমে সে বুঝতে পারে তার চেষ্টার কদর করা হচ্ছে। এছাড়াও যে কোনও ইতিবাচক কথায় বাচ্চারা তৃপ্তি পায়। ফলে তাদের মাঝে ভালো কাজ গুলো বার বার করার স্পৃহা জন্মে।

...
আমরা মানুষ, আর মানুষ মাত্রেই ভুল হয়। বাচ্চাদের কাছে ভুল স্বীকার করার এবং ক্ষমা চাওয়ার সৎসাহস থাকা জরুরী। এতে তারা বুঝতে পারবে যে আমরা তাদের সম্মান করি ও গুরুত্ব দেই। এতে বাচ্চারা শেখে যে, কেউ ভুল করলে তার ক্ষমা চাওয়া উচিৎ, এবং একই ভুল বার বার করা উচিৎ নয়।

।।।
নেতিবাচক অনুভুতি চেপে রাখলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাজনিত মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাচ্চাদের রাগ করার অধিকার আছে। বাচ্চারা ব্যথা পেলে বা হারানো খেলনার জন্য মন খারাপ করলে তাদের কাঁদতে দেয়া উচিৎ। নেতিবাচক অনুভূতি বা তার প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসলে শিশুর স্বকীয়তা এবং স্বতঃস্ফূর্ততার ওপরেই নিষেধাজ্ঞা।
পিতামাতা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব বাচ্চাকে শেখানো কীভাবে কারো ক্ষতি না করেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করা যায়।

...
ভয় পাওয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার- এটা বাচ্চাকে বুঝতে দেয়া জরুরী। দুনিয়ার সবাই-ই কিছু না কিছু নিয়ে ভয় পায়, আর ভয়কে জয় করা ভা ভয় সত্ত্বেও সামনে এগিয়ে যাওয়াই সাহস। আপনার বাচ্চা যদি কিছু নিয়ে ভয় পায়, তাহলে তাকে আপনার নিজের ছোটবেলার গল্প বলুন, বলুন আপনি কী নিয়ে ভয় পেতেন, আর কিভাবে সেই ভয়কে সামলে নিয়েছিলেন।

...
শিশুর পছন্দকে প্রাধান্য দিন। এতে করে সে শিখবে কিভাবে নিজের মনের কথা শুনতে হয়, আর কিভাবে তার বিশ্বাস, ইচ্ছা বা আগ্রহের সাথে যায়না এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হয়। যেসব বাচ্চাকে সব কিছুই পছন্দ করে দেয়া হয়, তারা বড় হয়ে নিষ্ক্রিয়, নির্ভরশীল এবং সহজেই অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে।
শিশুদের কাছে প্রশ্নহীন আনুগত্য চাওয়ার আগে ২০ বছর পরের কথা ভাবুন। আপনি কি তাকে এমন মানুষ বানাতে চান, যে নিজের মনের কথা না শুনে অন্যরা যাই বলে তাই শোনে?

---
বাচ্চাকে তার পূর্ববর্তী সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দিন। এতে সে তার নিজের ক্ষমতা উপলব্ধি করতে পারবে এবং আরও সফল মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।

পজেটিভ প্যারেন্টিং ট্রেইনার গ্রুপ,
লাইফস্প্রিং(মেন্টাল হেলথ ইন্সটিটিউট),ঢাকা
https://www.facebook.com/lifespringinstitute/

তেষ্টা..

যদি আবার ভালবাসতে হবে বলিস,
তবে বলে দিই,
ও আমার আর হবেনা।
অমন উজাড় করে দেবার মন
আমার আর নেই এখন।
যা পারিনা,
তা পারবো বলে আর
বসতে চাইনা ভদ্রলোকদের আসরে।
আজকাল বড্ড উছন্নে গেছি জানিস!
মনে আর ভদ্রলোকদের জন্য মায়া হয় না…
আমার কেবল অভদ্রদের মায়া হয় ইদানিং।
যত ছোটলোক, নিচুজাত, অচ্ছুতদের মায়া হয়…
আমি কেবল ভালবেসে ফেলি পথকে।
ঘরকে আর পারিনা…
আমার কেবল যুগ যুগ ধরে
হেটে যেতে মন চায় পৃথিবীর পথে।
কেবল মনে হয়,
হাটতে থাকি,
হাটতে থাকি…..
হাটতে হাটতে একদিন লুটিয়ে পড়ি
পথের প্রশান্ত বুকে।
পথের ধূলায় ঢেকে যাবে
আমার মুখোশের গায়ে লেগে থাকা যুগান্তরের ক্লান্তি।
আমার আসল-নকল সবটা ঢেকে যাবে তাতে…।
আমার সমস্ত রেখে যাবো পথের কাছে।
সমস্ত অর্জন, প্রাপ্তি, আমিত্ব…
শেষ নিঃশ্বাসে পথের কোলে মাথা রেখে
মস্তিষ্কের স্নায়ু হাতড়ে খুঁজবো
তরল আবেগগুলো,
নিষ্কলঙ্ক ভালবাসাগুলো,
সে সময়গুলো;
যখন সবাইকে ভালবাসতাম খুব!
নিস্প্রাণ নেত্রজোড়ায়
দুধের সরের মত ভেসে থাকবে নিস্পাপ অনুভূতিরা।
আমৃত্যু এত অমৃত পান করেও
তেষ্টায় খুব ছটফট করবো হয়ত,
কিন্তু তাতে কি?
এক জীবনে কারইবা তেষ্টা মেটে!

...

সুমাইয়া তাসনিম
(সাইকোলজি)

ধোঁয়া মাখা সময়

....

ভালোবাসা?
কই গেল হাস্যমাখা সব মুখ
রাত্রির বাইরে জলন্ত গ্রাম
শান্ত এবং শান্ত
মন…
ফিরে যা দূরে।

....

কান্না ঢাকা মেঘ বৃষ্টি
মানুষ, মানুষ এবং কোথায় মানুষ বল
ধোঁয়া মাখা বিকাল
ফোঁটা ফোঁটা লাল ঢেউ
শান্ত এবং শান্ত
মন…
ফিরে যা দূরে।

রক্তের ঝড়
রক্তের ঝড়

বসন্ত এর প্রেমময় দুপুরের গান
স্বপ্ন পাগল মন
হারিয়ে গেলি কোথায় বল
শান্ত এবং শান্ত
মন…
ফিরে যা দূরে।

বসন্তের ঢেউ
বসন্তের ঢেউ

ঘুম,
কিভাবে ঘুমাও তোমরা রোজ?
অজস্র শব্দ, চিৎকার, কান্না
অবুঝ আমার ভোর
চোখ বোঝ
ব্যর্থ চেষ্টা
শান্ত এবং শান্ত
মন…
ফিরে যা দূরে।

জলন্ত আগুন
জলন্ত আগুন

সময় মরেছে কবে
রংবেরঙের পাখনা ডানার
স্বপ্নে আলিঙ্গন
অর্থহীন ধূসর আকাশ
শান্ত এবং শান্ত
মন…
ফিরে যা দূরে।

কবে আসবে ভোর
কবে আসবে ভোর

অন্যকে ক্ষমা করে দিতে হবে-শেষ পর্ব

অন্যকে ক্ষমা করে দিতে হবে এ জন্য নয় যে তারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য,
বরং এ জন্য যে আপনি শান্তিতে থাকার যোগ্য”
জীবনের তিক্ততা,শত্রতা, আক্রোশ,বিষাক্ততাকে ছেড়ে দিন,চলে যেতে দিন(let go)।
আমরা পৃথিবীতে যখন আসি তখন কষ্ট,যন্ত্রনা,প্রতারনা,বিশ্বাস- ঘাতকতা,আক্রোশ,শত্রুতা সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না।

১। যারা আঘাত করে তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করুন:
ক্ষোভ,ক্রোধ,আক্রোশ,অপমান বোধের কারনে এ রকম ভালোবাসা দেখানো কঠিন মনে হতে পারে।
তবে নিজের মনের শান্তির জন্যই আমাদেরকে তেমনটি করতে হবে।
মার্টিন লুথার কিং(জুনিয়র) বলেছেন” অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার দূর করা যায় না।এক মাত্র আলোই তা করতে পারে।ঘৃনা দিয়ে ঘৃনা দূর করা যায় না।এক মাত্র ভালোবাসা দিয়েই তা করতে হয়।”
অন্যকে ক্ষতি করতে চেয়ে আমরা কিন্তু অবশেষে নিজেরই ক্ষতি করে বসি।
যখনই নেতিবাচক স্পন্দন (negative vibe)প্রকাশ করবেন,তখন আপনি নিজের স্পন্দনকেই নীচে নামিয়ে আনবেন।
আপনি যা আপনার কাছে তেমন কিছুই আকৃষ্ট হবে।
তাই প্রতিশোধ পরায়নতা আপনার নিজের কষ্ট পীড়নকে বাড়িয়ে তুলবে।
যার প্রতি এই ঘৃনা আক্রোশ, তার এতে কিছু যায় আসে না।
যে পর্যন্ত ঘৃনা,আ্ক্রোশ থেকে নিজেকে মুক্ত করে,;ভালোবাসা, দয়া,করুনায় ফিরতে না পারবেন,ততক্ষন আপনি প্রকৃত ” মুক্তি” পাবেন না।
তাই যারা আপনাকে আহত করেছে, আঘাত করেছে,অপমান করেছে বা ছোট,হেয়,তুচ্ছ করেছে; যত কঠিনই হোক তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে ভালোবাসতে হবে
(গত কালই এক বৃদ্ধা মহিলাকে চেম্বারে দেখলাম।তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ বড় ধরনের ডিপ্রেশনে ভুগছেন।তার স্বামী অনেক আগেই অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করে একই বাড়ীতে বসবাস করছেন।স্বামীর কাছ থেকে সারা জীবন আঘাত,অপমান আর অবহেলাই পেয়ে এসেছেন।
গত কয়েক মাস যাবৎ স্বামীর ২ য় স্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামীর মনো মালিন্যের কারনে ২ য় স্ত্রী বাসা ছেড়ে চলে যান।ফলে স্বামীর খাওয়া দাওয়ার ভার তার উপর পড়ে।এই দায়িত্ব পালন করতে তার মন চাচ্ছে না।যে তাকে এত অবহেলা,নির্যাতন করেছে,নিজ হাতে রান্না করে তাকে খাওয়াতে কিছুতেই মন চাচ্ছে না।কিন্তু বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে।কেননা তার আশ্রয়ে আছে এবং লোক লজ্জা।
সঙ্গে তার মেয়ে ছিল।আমি তাকে নিজের মনের শান্তির জন্যই পুরনো ঘৃনা,আক্রোশ মুছে ফেলে স্বামীকে ক্ষমা করে দেওয়া যায় কিনা তা ভেবে দেখতে বললাম।তার মেয়েও আমার সঙ্গে একমত হলেন।কিন্ত্ ওনাকে নারাজ মনে হলো।
উল্লেখ্য উনার ডিপ্রেশন এতে আরো গভীর হয়েছে ও ঔষধ তেমন কাজ করছে না।)
তবে এই ক্ষমা করে দেওয়াটি রাতারাতি করতে হবে তেমন নয়।অল্প অল্প করে ভালোবাসতে চেষ্টা করে আপনি ক্রমাগত ভাবে দেখবেন ইতিবাচক ফল পাচ্ছেন।
***
মূলত: আবেগগত যন্ত্রনার প্রতি আমাদের এক ধরনের “নেশা” তৈরী হয়ে যায়।আমরা এই নেশা আকড়ে ধরে থাকি।
কিন্তু যখনই কষ্ট পাওয়ার নেশা ছাড়তে পারবো আমরা প্রকৃত ভাবে স্বাধীনতার স্বাদ উপলব্দি করতে পারবো।
2। নিজের সর্বোত্তম রুপটি অর্জনের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন:(Focus on becoming best version of yourself)
মনে রাখবেন” আহত মানুষ অন্য মানুষকে আহত করে।নিরাময় প্রাপ্ত মানুষ অন্যকে নিরাময়ের চেষ্টা করে।”
পৃথিবীতে এত যন্ত্রনা,,কষ্ট চলমান রয়েছে,কেননা যারা আহত হয়েছেন,আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন,তারা সে যন্ত্রনাকে “জীবন্ত” করে রেখেছেন।এ ভাবে অন্য জনের মধ্যে তা সন্চালিত করে দিচ্ছেন।( গোত্রে গোত্র যুদ্ধ,ধর্মে ধর্মে যুদ্ধ,এমনকি পরিবারে পরিবারেও ব্যক্তি ব্যক্তিতে যুদ্ধ একারনেই চলে আসছে)
মনের ও আত্মার স্বাচ্ছন্দ্য,সহজতা বিনষ্ট হওয়ার এই অসুখ এ ভাবে সন্চালন হওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।
*** অন্যকে ছিড়ে-ফুড়ে তছনছ করে দেওয়ার দিকে সব দৃষ্টি নিবদ্ধ না করে,বরং নিজকে নির্মান করার দিকে আমাদের বেশী নজর দিতে হবে।
৩। মনে রাখবেন চূড়ান্ত নিখুত হওয়ার প্রত্যাশা, অবাস্তব অপ্রত্যাশিত:
আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে মানুষ ভুল করে এবং এ রকম ভুল অহরহই হয়।
যদিও এ রকম ভুলের কিছু ক্ষেত্রে খারাপ পরিনতি হয়ে থাকে(যেমন ঐ মহিলার স্বামীর ভুল), কিন্তু বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সে সব দূর্ঘটনাবশত ঘটে থাকে,উদ্দেশ্যমূলক নয়।
আমরা প্রত্যেকে টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত
এবং আমাদের বেশীর ভাগই ইচ্ছাকৃত ভাবে অন্যের জন্য মন্দ কিছু করতে চাই না।
মনে রাখতে হবে আমরা একই সমুদ্রে সাতার কাটছি এবং একই স্রোতের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি।
আমরা সবাই চাচ্ছি এই ঢেউয়ের মাঝে কোন রকমে মাথা উপরে রেখে ভেসে থাকতে।
এরই মাঝে আমরা কিছু ভুল করে বসি।
মানষকে ভুল করতে এলাউ করুন এবং এ ভাবে ভুলের মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তুলতে সাহায্য করুন
এবং মনে রাখুন সম্ভবত আপনিও একই ভুল করেছিলেন( ঐ মহিলারও কি কোন ভুল ছিল না?)।
অন্যকে ক্ষমা করা সহজ হবে যদি মনে রাখেন আপনার মতন তারাও মানুষ এবং মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকে।

*** ক্ষমা করার সময় বলুন
” আমি ক্ষমা করে দিচ্ছি ও নিজকে মুক্ত করছি।
আমি উজ্জলতর এক ভবিষত্যের দিকে আমার যাত্রাকে অগ্রসর করছি।

প্রফেসর ডা. মো. তাজুল ইসলাম
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
কমিউনিটি এন্ড সোশাল সাইকিয়াট্রি বিভাগ, জাতীয় মানসিক স্বাস্হ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
ই- মেইল:drtazul84@gmail.com

 

এই সময়ে ঘর পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে

বর্ষাকাল চলে গেলেও বৃষ্টির রাজত্ব এখনও ফুরায়নি। রোদ যেমন উঁকি দিচ্ছে ঠিক তেমনি মহাসমারোহে চলে আসছে বৃষ্টিও। ঝুম বৃষ্টিতে নাকাল হচ্ছেন অনেকেই। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালি আচরণের প্রভাব পড়ে আমাদের আবাস্থলেও। আমাদের শখের ঘর-দুয়ার, আসবাবপত্র সবকিছু যেন হয়ে ওঠে স্যাঁতস্যাঁতে। তাই এসময়ে ঘরের ভেতরকার পরিবেশ সতেজ রাখতে আপনাকে করতে হবে কিছু কাজ।

দেয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে কোনো আসবাবপত্র রাখবেন না। এতে আসবাবপত্র ড্যাম হয়ে যায়, যাতে বাসা বানায় ঘুনপোকা। তাই দেয়াল থেকে দূরত্ব বজায় রেখে আসবাবপত্র রাখুন। আরও সম্ভব হলে আসবাবপত্রের পেছনের অংশ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখুন।

আলমারিতে বা ওয়ারড্রবে কাপড় রাখলে তার সঙ্গে রাখতে পারেন নেপথোলিন। এর কারণে পোকামাকড় থাকবে আসবাবপত্র এবং কাপড় থেকে অনেক দূরে। এর সঙ্গে দামি আসবাবপত্রের নিচে টিনের বা কাচের পাত্রে এক টুকরা সালফার বা গন্ধক রাখতে পারেন। যা পোকামাকড় থেকে আসবাবপত্রকে মুক্ত রাখবে।

আসবাবপত্রের ক্ষেত্রে কাঠের বদলে হার্ডবোর্ডের আসবাবপত্র ব্যবহার করা উচিত। কারণ বোডের ভেতরের অংশ ফাঁপা। এতে ঘুনে ধরার প্রবণতা যেমন থাকে না তেমনি এটি সহজে নষ্টও হয় না। সঙ্গে সঙ্গে যত্ন খুব সহজে নেয়া যায়। তাই আপনি ইচ্ছা করলে কাঠের বানানো আসবাবপত্রকে হার্ডবোর্ডের আবরণ দিতে পারেন।

ঘরের এক কোণে হিটার রাখতে পারেন, যা ঘরকে রাখবে শুষ্ক। এটি আপনি রাখতে পারেন লিভিং রুম, ড্রয়িংরুম এবং গেস্ট রুমে।
ঘর অন্ধকারাচ্ছন্ন হলে ঘরে একের অধিক লাইট ব্যবহার করা উচিত। এতে ঘরের আর্দ্রতা যেমন বাড়বে তেমনি মনে হবে আপনি বাইরেই আছেন। এর সঙ্গে করতে পারেন সেলিং এ লাইট। যাতে পর্যাপ্ত আলো ঘরে থাকে। কর্নারেও এসব লাইটের ব্যবস্থা করতে পারেন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার বিকল্প নেই। তাই যতটা সম্ভব ঘরে আলোর ব্যবস্থা রাখুন এবং ঘরকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। এতে আপনি যেমন থাকবেন সুস্থ তেমনি আশপাশে পরিবেশ হবে সুন্দরভাবে বসবাসের যোগ্য।

 

আলুর দম তৈরির রেসিপি

বিকেলের নাস্তায় কিংবা রাতের খাবারে লুচি কিংবা রুটি-পরোটার সঙ্গে আলুর দম খেতে বেশ। তবে অনেকেই আলুর দম তৈরির সঠিক রেসিপি জানেন না। রেসিপি জানা থাকলে ঘরে বসেই তৈরি করে নিতে পারেন মজাদার এই আলুর দম। রইলো রেসিপি-

উপকরণ: আলু ১০টি, পিয়াজ বাটা -১ চামচ, আদা+রসুন বাটা -১ চামচ, টমেটো পেস্ট -২ চামচ, মরিচ+হলুদ গুরা-১/২ চামচ, গরম মসলা -১/২ টেবিল চামচ, ধনিয়া গুড়া-১/২ টেবিল চামচ, জিরা গুড়া-১/২ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ ৪ টি, ধনেপাতা কুচি-৩ টে চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ৩ টেবিল চামচ।

প্রণালি: প্রথমে আলু খোসা ছাড়িয়ে লবণ ও সামান্য হলুদ গুড়া দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার একটি কড়াইতে তেল দিয়ে সব মশলা দিয়ে কষাতে হবে। কষানো হলে আলুগুলো দিয়ে ঢেকে দিয়ে সামান্য পানি দিতে হবে। ১৫মিনিট পরে ঝোল শুকিয়ে এলে নামানোর আগে ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ দিয়ে নামিয়ে পরোটা অথবা লুচির সাথে পরিবেশন করুন।

 

রঙ বাংলাদেশে শারদ উৎসবের পোশাক

বর্ষা থিতিয়ে এসেছে। চারপাশের উজ্জ্বল সবুজের মাঝে মাথা তুলেছে কাশের দল। রোদ আর ছায়ার লুকোচুরির মধ্যেই তরতরিয়ে বাড়ছে তারা। আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা শুরু হয়েছে।

হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি সত্বেও প্রকৃতি প্রস্তুত শারদ উৎসবকে স্বাগত জানাতে। আর কদিন পরেই বাঙালি মেতে উঠবে উদযাপনে। প্রকৃতির মতো উচ্ছ্বল এখন সবাই উৎসবের রঙে রঙ মেলাতে।

শারদ উৎসবে ফ্যাশনের ছোয়া দিতে দেশের অন্যতম শীর্ষ ফ্যাশন হাউজ ‘রঙ বাংলাদেশ’ নিয়ে এসেছে পোশাকের বিশেষ কালেকশন। কেবল বড়দের নয়, ছোটদের পোশাককে সমান গুরুত্ব দিয়ে আকর্ষণীয় করা হয়েছে।

রঙ বাংলাদেশ বরাবরই বিভিন্ন থিমে সংগ্রহ সাজিয়ে থাকে। এবারো সেই ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। শারদীয় আয়োজনকে সুন্দর করতে থিম হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে পদ্ম, শিউলি, নানা ধরনের ক্যালিওগ্রাফি, দুর্গার অলংকার ও গনেশের অবয়।

লাল, সাদা, অফহোয়াইট, মেরুন আর গেরুয়াকে উপজীব্য করে সাজানো এবারের সংগ্রহে নকশাকে মনোগ্রাহী করতে আরো ব্যবহার করা হয়েছে কমলা, ফিরোজা, ক্রিম, টিয়া, নীল, অ্যাশ, সোনালী হলুদ ও মেজেন্টা।

বড়দের জন্য রঙ বাংলাদেশ-এর শারদ সংগ্রহে রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিস, লং স্কার্ট-টপস, সিঙ্গেল কামিজ, শর্ট ও লং পাঞ্জাবি, উত্তরীয়, ধুতি, শার্ট, টি-শার্ট ও ফতুয়া।

আর শিশু কিশোরদের সংগ্রহের এবারের থিম পদ্ম, শিউলি, ক্যালিওগ্রাফি আর দুর্গার শোলার অলংকার। মূল রঙ অফহোয়াইট, হলুদ আর বাসন্তীর সঙ্গে আরো ব্যবহার করা হয়েছে লাল, মেজেন্টা, সবুজ ও নীল। মেয়েদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি এই পূজায় তৈরি করেছে ফ্রক, কামিজ আর থ্রিপিস।
এ সময়ের আবহাওয়া উষ্ণ আর আর্দ্র। তাই শারদসংগ্রহের বেশিরভাগ পোশাক সুতি কাপড়ে তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি এই কালেকশনকে উৎসবময় করতে আরো ব্যবহার করা হয়েছে বলাকা সিল্ক, হাফ-সিল্ক, জয়সিল্ক, এন্ডি কটন এবং এন্ডি সিল্ক। ষষ্ঠী থেকে দশমী, কুমারী পূজা থেকে সিঁদুর খেলা, ধুনুচি নাচ থেকে প্রসাদ বিতরণ, প্রতিদিন সন্ধ্যা আর সকালের অঞ্জলি থেকে ভাসান- প্রতিটি উপলক্ষ্যকে বর্ণময় আর আনন্দময় করতে সেভাবেই দৃষ্টিনন্দন পোশাক তৈরি করা হয়েছে।

এবারের এই উৎসব সংগ্রহে নকশা ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন ধরনের ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে। নানা ধরনের প্রিন্টের ব্যবহার এই কালেকশনের মূল বৈশিষ্ট্য। নকশার চাহিদা অনুযায়ী কারচুপি, মেশিন ও হ্যান্ড এম্বয়ডারির পাশাপাশি তাই ব্যবহার করা হয়েছে ব্লক ও স্ক্রিন প্রিন্ট।

পূজা কালেকশনে রঙ বাংলাদেশ-এর শাড়ি কেনা যাবে: সুতি শাড়ি ৮৫০-৪,০০০ টাকা, হাফ সিল্ক ২,২৫০-৮,৫০০ টাকা, মসলিন ১০,৫০০-২০,০০০ টাকা।

সালোয়ার-কামিজ ২,০০০-৪৫০০ টাকা, সিঙ্গল কামিজ ৮৫০-৩,০০০ টাকা, স্কার্ট-টপস ১,২০০-২,৫০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৮৫০-৪,০০০ টাকা, টি-শার্ট ৩৫০-৫০০ টাকা, পলো শার্ট ৬৫০-১,২০০ টাকা, শার্ট ৬৫০-১,৮০০ টাকা, ফতুয়া ৭৫০-১,২৫০ টাকা, উত্তরীয় ৩৫০-৫০০ টাকা, ধুতি ৬৫০-১,০৫০ টাকা, ব্লাউজ পিস ৩০০-৫০০ টাকা, আনস্টিচড ১,৫০০-৪,০০০ টাকা, অলংকার সামগ্রী ৫০-২,০০০ টাকায় পাওয়া যাবে।

শিশু কিশোরদের পোশাকের ক্ষেত্রে পাঞ্জাবি ৬০০-৮৫০ টাকা, ফ্রক ৬০০-১,০৫০ টাকা, শার্ট ৫০০-৭০০ টাকা, সিঙ্গল কামিজ ৬০০-১,০৫০ টাকা, শাড়ি ৯৫০-১,১৫০ টাকায় পাওয়া যাবে। এছাড়া পাওয়া যাবে ঘর সাজানোর জন্য নানা সামগ্রী।

পূজার পোশাক, গয়না ও ঘর সাজানোর সামগ্রী রঙ বাংলাদেশ-এর সবগুলো শাখা ছাড়াও, ঘরে বসে অনলাইনেও (www.rang-bd.com) কেনার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে রয়েছে ক্যাশ অন ডেলিভারির সুবিধা। এছাড়া প্রিয়জনকে উপহার দেয়ার জন্য রয়েছে গিফট ভাউচার, যার মাধ্যমে প্রিয়জন নিজের পছন্দ মতো কেনাটাকা করতে পারবে।

ঘুম ভাঙা প্রশ্ন

..... …..

মাঝেমাঝে সময় আসে,
যখন খুব প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে।
অন্যকে নয়,নিজেকেই।
কিন্তু অনেক উত্তরের প্রচণ্ড উপস্থিতির কথা চিন্তা করে
প্রশ্নের ঘুম ভাঙাতে ইচ্ছে করে না।
ঘুম ভাঙা প্রশ্নগুলো বড্ড বদমেজাজি হয়,
উত্তরের তোয়াক্কা করে না।
নিজের অস্তিত্বের অহংকার টিকিয়ে রাখতে
উত্তরের টুঁটি চেপে ধরে।
অনেক উত্তরের প্রচ্ছন্ন উপস্থিতির মাঝে
নিজের রহস্যময়তার জাল বুনে যায়।
উত্তরসমুহের পিতৃত্ব স্বীকার করে না এমন প্রশ্নগুলো,
ক্রমাগত ভীড় করে রূপোপজীবি অবচেতন মনে।
অতঃপর সচেতন মনে জন্মের দোষ বয়ে বেড়ায়
জন্মেই পরিচয়হীন একগুচ্ছ ভিন্ন ভিন্ন উত্তর।

স্বপ্ন স্বপ্ন

Ivanhoe Mukit

ঘূর্ণিপাক মেঘ

ঘোলা মেঘের জল
এমন কার হৃদয় আছে বল
কার এমন মন খারাপ
মন হাসে,
কে বলেছে ঠিক হয়ে যাক সব
কবে কে দাড়িয়ে শুনতে চায়,
পথের ঐ হাক ডাক….
কিসের টানে সহজ হবে সব
কিসের টানে আসবে ছুটে।
মাঝ দরিয়া ক্লান্ত মাঝি
শোন,
মিথ্যা আশায় বসবে আর না কেউ
স্বপ্নের ঘোর…
ঠিক ঠিক কাটবে একদিন।
কি কারণে হারিয়ে গেলাম,
খোঁজ রাখে কে,
কবে কে কার বল।
সেদিনের বিকেলের ছায়ায়
কোন পাতাদের খোঁজে
কোন বাগিচার মায়ায়
অজস্র পাখি হারিয়ে যায় রোজ।
ধূর…
মেঘ করেছে,
বিষাদ মাখা আকাশ
হতাশারা সব পায়ের নিচে ঘুমায়।
ধর,
কড়া রোদে মেজাজ বড্ড বাজে
কই কেউ ত বুঝে নাই,
কেউ বুঝে নাই কখন রাত্রী জাগে।
অবুঝ পৃথিবী,
ডুব কারে কয় শোন….
কে শোনে কার কথা,
থাক না এসব,
হাজার গল্পে হোক,
এবার জীবন নিখোঁজ।

 

সেল্ফ এস্টিম পর্ব ৬: ক্রিটিকের সাথে পাল্লা দেয়ার উপায়

এই পর্বে ওভার জেনারালাইজেশন ও গ্লোবাল লেবেলিং এর বিরূদ্ধে কী করা যায় সে নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগের পর্ব তে বলা হয়েছিল এ দুটো ক্ষেত্রে একটা ব্যর্থতাকে টেনে টেনে পুরো জীবনের/ব্যক্তিত্বের উপর দাগ ফেলা হয়। এই যেমন, মিটিং এ দেরি করে আসলাম, আমার মত অলস, অকর্মণ্য পৃথিবীতে কেউ নেই। বাসায় সুন্দরভাবে মেহমানদারি করতে পারলাম না, আমি জীবনেও ঘরকন্না শিখব না।

ওভারজেনারালাইজেশন গন্তব্য
ওভারজেনারালাইজেশন গন্তব্য

ওভারজেনারালাইজেশন যখনই মনের মধ্যে হতে চাইবে, এ প্রশ্নগুলো করতে হবে,

১. আমার এই চিন্তার ভিত্তি কী? ২. আমার কাছে কি এই সিদ্ধান্তে পৌছানোর জন্য পর্যাপ্ত তথ্য আছে? ৩. ঘটনাটা থেকে আমি যে উপসংহার টানছি, তার বদলে অন্যভাবে কি ভাবা যায়? ৪. গৎবাঁধা মন্তব্য না করে, পরিষ্কারভাবে বল, একদম পয়েন্ট আকারে। ৫. ভবিষ্যৎ দেখার দায়িত্ব তোমাকে কে দিল?

ধরা যাক, সূচি সবসময় মনে করে,

– আমাকে কেউ পছন্দ করেনা – বন্ধুরা কেউ আমাকে দাওয়াত দেয়না – সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে – আমি একটা গাধা স্টুডেন্ট – পুরো পৃথিবীতে আমার একটাও বন্ধু নেই – আমার সারা জীবনেও কোন বন্ধু হবে না

সূচির এক্ষেত্রে যা করা উচিৎ –

প্রথমেই মনটাকে একটা ধমক দেয়া উচিৎ, এইসব ফালতু চিন্তা মনে আসার জন্য। ধমক দিলে কিছুক্ষণের জন্য ক্রিটিকের বিরূদ্ধে লড়াই করার সাহস পাওয়া যায়। তারপর নিজেকে প্রশ্ন করা উচিৎ, এরকম সারাজীবনের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার জন্য আমার হাতে কী প্রমাণ আছে? সারা পৃথিবীতে আমার একটাও বন্ধু নেই – আমি সারা পৃথিবীর সবার সাথে মিশি নি। আমি পুরো পৃথিবী ঘুরে দেখিনি! আমাকে ‘কেউই’ পছন্দ করেনা কথাটা কি ঠিক? হ্যা, সঞ্চিতা আমাকে দেখতে পারেনা, মুহায়মিন ও না। কিন্তু রূপন্তি আমাকে ভীষণ ভালোবাসে! হ্যা, দুই দুইটা ক্লাশমেটের জন্মদিনে আমাকে দাওয়াত দেয়নি, কিন্তু সেদিন ও তো পিকনিকের প্ল্যান সবাই মিলে করলাম! তারপর আত্মীয়দের বাসায়, পাশের বাসার আপুর ঐখানে তো আমি প্রায়ই যাই! সুতরাং, আমাকে কেউ পছন্দ করেনা, কেউ দাওয়াত দেয়না – এগুলি ঠিক কথা না। আমার কোন বন্ধু নাই, এটাও ঠিক না! হয়ত যেমনটি চাই তেমন বন্ধু নেই, কিন্তু একেবারে নেই এটা মিথ্যা কথা! সুতরাং এইসব দুঃখবাদি চিন্তাভাবনা আমাকে বাদ দিতে হবে! আমি মোটেও এত একা নই, যতটা আমি ভাবি।

আর আমি গাধা স্টুডেন্ট না। আমি ছবি আঁকতে পারি খুব ভালো। আমার ক্রিয়েটিভিটি আছে। আমি এদের স্ট্যান্ডার্ডে ভালো করতে পারিনা ঠিকই, কিন্তু আমার পছন্দের ফিল্ডে আমি খুব ভালো করি। ক্রিয়েটিভিটি মুখস্ত বিদ্যার চেয়েও অনেক বেশি দামি।

পাশাপাশি, সূচি যদি মনে করে সে মোটা, নাকটা বিচ্ছিরি, অসামাজিক, তখন মনে মনে নিজেকে ধমক দিতে হবে, বলতে হবে, আমি ছোট ব্যাপারকে বড়সর করে ফেলছি। মোটা বললে যদি মন খারাপ হয়, তখন বলতে পারে, টার্গেট ওজনে আসার জন্য আমাকে ষোল কেজি কমাতে হবে।

আমি এই, আমি সেই – এই চিন্তাটা দূর করতেই হবে। তাতে করে সত্যিটা মিথ্যে হয়ে যাবেনা। কিন্তু বিষয়টাকে মোকাবেলা করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

আমার নিজের বেলায় যেমন, আমি বলতে ভালোবাসি আমি নিওফোবিক (নতুন যে কোন কিছুকেই আমি ভয় করি।) কথাটা সত্যি, পিএইচডি শেষ করে চাকুরি খুঁজতে ইন্টারভিউ দিতে হবে, আমি কখনও ইন্টারভিউ দেইনি, তাই ওটা ভাবতেই ভয় করে, মনে হয় আমাকে কেউ কখনও চাকরি দেবেনা। কনফারেন্সে প্রথমবার পোস্টার প্রেজেন্ট করতে কেমন দুরু দুরু বুক – অথচ ব্যাপারটা কিছুই না! প্রথমবার ক্লাশে লেকচার দিতে গিয়ে ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসার অবস্থা।

যাই হোক, সেল্ফ ক্রিটিক এর এই পর্যায়ে পেছন ফিরে দেখি, জীবনে নতুন কাজের সংখ্যা কম না। রিসার্চ প্রজেক্ট নিয়েছি এমন একটা, ডিপার্টমেন্টে আর কেউ আগে করেনি। সোশ্যাল ওয়ার্ক এর নতুন কোন সুযোগ আসলে যেটুকুই হোক অংশ নেয়ার চেষ্টা করেছি। আর অত কিছু কেন, নতুন পরিবেশে, নতুন দেশে টিকে থাকতে পারে যে, তার আর কিছু নিয়ে ভয় করার দরকার আছে?

মোকাবেলা
মোকাবেলা

নতুন জিনিস দেখলে এখনো ভয় লাগে, কিন্তু আবার পুরনো সফলতা মনে করে মনকে সাহস দিলে, আর একটু একটু করে একধাপ করে এগোলে জিনিসটাকে মোকাবেলা করা যায়। এতদিন পর্যন্ত নতুন কাজের কথা কেউ বললেই পিছিয়ে যেতাম, মনকে বলতাম, আমি নিওফোবিক, আমার সময় লাগবে। তারপর ফেলে রাখতাম অনেকদিন। এখন মনে হচ্ছে, তার বদলে এভাবে ভাবতে হবে, আগে করিনি? জানিনা কেমন হবে? ঠিক আছে, আরো একটু জেনে বুঝে নেই। পুরনো কাজগুলিও তো একসময় নতুন ছিল। শুরু না করলে তো ওগুলো চিরকাল নতুনই থেকে যেত!

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

 

সেল্ফ এস্টিম পর্ব ৫: এস্টিম ধ্বংসকারী চিন্তাগুলো

গত কয়েক পর্ব মন দিয়ে পড়লে আশা করা যায় ক্রিটিক কে ভাল করে চেনা, ও তার সাথে ফাইট করার একটা মোটামুটি আন্দাজ হয়ে যাবে। ক্রিটিক কে চেনার ও বোঝার শেষ নেই। যতই চেনা যাবে, ততই মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে হবে, হায় আল্লাহ! আমি ত এগুলোর সবগুলোই করি! হ্যা, ক্রিটিক অমনই চতুর। কখনও লজিক, কখনও ইনটুইশন, কখনও পর্যবেক্ষণের ভেক ধরে মনের ভেতর হানা দেয়। বস্তুতঃ একটা বাস্তব ঘটনাকে অবাস্তব পন্থায় বিশ্লেষণ করার এই পুরো প্রক্রিয়াটাই ক্রিটিক ভদ্রলোকের ছলচাতুরি ছাড়া আর কিছু না। এই পর্বে ক্রিটিকের কয়েকটা অতিপরিচিত কৌশল আলোচনা করা হবে।
ওভারজেনারালাইজেশন
ওভারজেনারালাইজেশন

১. ওভারজেনারালাইজেশন: একটা ঘটনা থেকে পুরো পৃথিবীর সমুদয় ঘটনার প্রতি জেনারেল ধারণা করা। একটা ইন্টারভিউ খারাপ হল, ধরে নেয়া, আমি জীবনেও ভাল ইন্টারভিউ দিতে পারব না। একবার প্রেজেন্টেশনে হাঁটু কাঁপল, ঘোষণা করে দেয়া, বক্তৃতা আমার জন্য না।

ক্রিটিক ওভারজেনারালাইজেশন টেকনিক ব্যবহার করছে কিনা তা বুঝতে পারবেন যদি সে ঘন ঘন ‘never’, ‘always’, ‘all’, ‘every’, ‘none’, ‘nobody’, ‘everyone’, ‘everybody’ – এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে থাকে।

 গ্লোবাল লেবেলিং
গ্লোবাল লেবেলিং

২. গ্লোবাল লেবেলিং: একটা ঘটনা থেকে পুরো ব্যক্তিত্বটার উপরে একটা জেনারেল ধারণা করা। যেমন, ভাইভা বোর্ডে ভাল উত্তর দিতে পারলাম না, ‘আমি একটা স্টুপিড, আনস্মার্ট গাধা।’ ওভারজেনারালাইজেশনের মতই, তবে এখানে ঘটনার বদলে মানুষটাকে বাজে বাজে বিশেষণ দেয়া হয়।

গ্লোবাল লেবেলিং হচ্ছে কিনা বুঝতে পারবেন, যদি আপনার ক্রিটিক আপনার চেহারা, পারফর্মেন্স, বুদ্ধিমত্তা, সোশ্যাল স্কিল নিয়ে কমন, আজেবাজে মন্তব্য করতে থাকে। এই যেমন, ‘আমি একটা অকর্মণ্য কুঁড়ে অলস’, ‘আমি কিছুই পারিনা’, ‘আমাকে দিয়ে কিছু হবেনা’, ‘আমি একটা স্পাইনলেস’, ‘আমার ফ্যামিলি একটা আজাব।’
চিন্তার ফিল্টারিং
চিন্তার ফিল্টারিং

৩. ফিল্টারিং: এই প্রক্রিয়ায় ক্রিটিক বাস্তব ঘটনার সবগুলো আলো শুষে নিয়ে কেবল অন্ধকারটাই দেখায়। আপনি কেবল বিশেষ কয়েকটা মন্তব্যই শুনতে পাবেন, বাকিগুলো কর্ণকুহরে প্রবেশও করবে না। একটা ফাটাফাটি প্রেজেন্টেশন দিলেন, বস একফাঁকে বলল, তোমার বক্তব্যে coherence কম। ব্যাস! এত বছর ধরে প্রেজেন্টেশন দিয়েও যদি একটা গুছানো প্রেজেন্টেশন দিতে না পারি, তাহলে করছি টা কী? এই নিয়ে মন খারাপ, ছোট হয়ে থাকা, আপসেট থাকা, লেবেলিং করা… ইত্যাদি ইত্যাদি। এদিকে বস যে এতগুলো তথ্যের উপস্থাপনকে প্রশংসা করলেন, প্ল্যানটা সুন্দর বললেন, এত পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ দিলেন – এগুলো মনের কোথাও ঠাঁই পেলনা।

ফিল্টারিং হতে থাকলে প্রশংসাগুলো মনে হতে থাকে বানিয়ে বানিয়ে বলা, আর সমালোচনাগুলো অনেক মৃদু আকারে বলা। এক ফোঁটা সমালোচনা তখন বড় একটা কাজের ফলাফলকে ম্লান করে ঐ অতটুকুর মধ্যেই নিয়ে আসে।

পোলারাইজড থিংকিং
পোলারাইজড থিংকিং
৪. পোলারাইজড থিংকিং: পোলারাইজড চিন্তাভাবনায় পৃথিবীটা আপনার কাছে সম্পূর্ণ সাদা আর কালো। প্রতিটা ঘটনা, কাজ হয় মন্দ নাহয় ভালো। আপনি নিজেকে সাধু নয় চোর, সফল বা লুজার, হিরো বা ভিলেইন – এভাবে চিত্রিত করে ফেলেন।

মনের ভেতর ভাবনাগুলো যদি এমন হয়, ‘স্কলারশিপটা না পেলে আমার জীবন শেষ’, ‘বউ ভাল না বাসলে বেঁচে থেকে আর লাভটা কী’… তবে বুঝবেন আপনি পোলারাইজেশন জ্বরে আক্রান্ত।

 সেল্ফ ব্লেইম
সেল্ফ ব্লেইম

৫. সেল্ফ ব্লেইম: সব ঘটনার দোষ আপনার। সবকিছুর জন্য আপনি পরোক্ষভাবে হলেও দায়ী। নিদেনপক্ষে আপনার ভাগ্য দায়ী। রাস্তায় অভাবনীয় জ্যামের কারণে মিটিং এ দেরি হল, আপনার দোষ। আপনার স্বামী আপনার সাধের এক্সপেরিমেন্টের রান্নাটা পছন্দ করল না, আপনার দোষ।

সেল্ফ ব্লেইম আপনার ভাল দিকগুলোর ব্যাপারে আপনাকে পুরোপুরি অন্ধ করে দেয়। আপনার চালানো তিনটি প্রজেক্টের দুটি সফল আর একটি চরমভাবে ব্যর্থ হলে আপনি আজীবন তৃতীয়টির জন্য নিজেকে দায়ী করে গেলে, আর বাকি দুটোর জন্য সমভাবে গর্ববোধ না করলে আপনার মাঝে সেল্ফ ব্লেইম রোগ আছে।

পারসোনালাইজেশন
পারসোনালাইজেশন
৬. পারসোনালাইজেশন: পার্সোনালাইজড জগতে আপনি নিজেই আপনার জগত হয়ে বসে থাকেন। প্রতিটা ঘটনাই যেন আপনাকে ঘিরে আবর্তিত। কিন্তু আপনার হাতে কোন কন্ট্রোল নেই। আপনি হতভাগা, সবাই আপনাকে কষ্ট দেয়।

পারসোনালাইজেশনের মধ্যে একধরণের সেল্ফ অবসেশন বা নার্সিসিজম আছে। ঘরভর্তি মানুষের মধ্যে ঢুকলেন, সাথে সাথে আর সবার সাথে তুলনা করা শুরু করে দিলেন, কে আমার চেয়ে বেশি স্মার্ট, কার চেহারা বেশি ভাল, ইত্যাদি ইত্যাদি। কেউ বলল, ‘ভাল লাগছে না’, আপনি ধরে নিলেন আপনার সাথে তার বিরক্ত লাগছে।

মাইন্ড রিডিং
মাইন্ড রিডিং
৭. মাইন্ড রিডিং: আমি অন্যের ভাব বুঝতে পারি। সে কী ভাবছে আমি জানি। আমি থিসিস দেরি তে জমা দিলাম, সুপারভাইজরের থমথমে ভাব। পরিষ্কার বলে দেয়া যায় তিনি আমার উপর বিরক্ত। আমার শাশুড়ি জানতে চাইলেন এতক্ষণ কোথায় ছিলাম। তার মানে উনি হিসাব চাচ্ছেন আমি কোথায় কোথায় গিয়ে ঘরের কাজ ফাঁকি দিচ্ছি।

মনের মধ্যে যদি, ‘আমি জানি’, ‘আমি শিওর’, ‘আমার মনে হচ্ছে’, ‘আমি এগুলি ভাল বুঝি’ – ইত্যাদি ইত্যাদি চিন্তা আসে, তাদের ঝেঁটিয়ে বিদেয় করে দিন। এসব আপনার সাইকিক পাওয়ার না, ক্রিটিকের হাতিয়ার।

 ইমোশনাল রিজনিং
ইমোশনাল রিজনিং
৮. ইমোশনাল রিজনিং: প্রবল দুঃখের সময় আবেগতাড়িত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া। কোন ঘটনায় ক্রিটিক হয়ত এসে কানে কানে বলল, ‘কুঁড়ে, অলস।’ আপনার হালকা একটা মন খারাপের ভাব হল। মন খারাপ ভাবটা বাড়তেই থাকল।

ক্রিটিক এইবার আবার এসে বলবে, ‘তুমি যা মনে কর, তুমি ত তাই। তোমার নিজেকে অলস মনে হচ্ছে, তুমি ত আসলেই অলস।’ এর মধ্যে আপনি হয়ত ভুলেই বসে আছেন, ‘অলস’ আপনি আপনাকে বলেন নি, ক্রিটিক বলেছে। এই পুরো চিন্তার শুরুটা ক্রিটিক কে দিয়ে। মাঝপথে মন খারাপকে পুঁজি করে ক্রিটিক আপনার সেল্ফ এস্টিমটাকে নাড়া দিয়ে গেল।

Ref: Self Esteem by McKay and Fanning
নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

সমকামিতা বর্তমান সমাজের বড় ফ্যাশন

ছোটবেলায় সন্ধি বিচ্ছেদে পড়েছিলাম দম্পতি = জায়া + পতি। ‘জায়া’ মানে স্ত্রী আর ‘পতি’ মানে স্বামী। তাহলে দুইটা ছেলে “বিয়ে” করলে তাদেরকে কি পতি পতি বলা উচিত? আর দুইটা মেয়ে করলে জায়া জায়া?
এ কেমন বিচার?

বর্তমানে অনেক মহল এসব হালকা কথায় হয়ত বড়ই বিরক্ত হয়ে উঠবেন।

বিয়ে বন্ধন বিয়ে বন্ধন

আপাতত ব্রিটেনে হয়ে যাওয়ায় প্রথম “মুসলিম গে বিয়ে” নিয়ে যার পর নাই সমকামিরা অনেকেই উচ্ছ্বাসিত। কোন আসল বিয়েতে কাচ্চি বিরিয়ানি খেলেও বোধ হয় তারা এতটা আনন্দ অনুভব করতেন না। আফটার অল, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে যদি নিজেদের সম্মতিতে একসাথে যৌনকর্ম করার লাইসেন্স চায় তো করুক না। ওদের তো অধিকার দেয়াই উচিত। আপনার আমার ক্ষতি কী তাতে!

ভাবুন তো একবার, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোন,
বাবা-মেয়ে বা মা-ছেলে যদি নিজেদের সম্মতিতে এ রকম যৌনকর্ম করার লাইসেন্স চায় তো তাদেরও তো করতে দেয়া উচিত? তাই নয় কি?
নাকি তাদেরকে করতে দিবেন না, আপনার এসব ভেবে বমি আসতেছে? আপনার বমি আসলে কি ঘটনাগুল থেমে থাকবে?
তাদের “অধিকার” তখন কিভাবে অর্জিত হবে?
‘মুসলিম গে বিয়ে’ কথাটায় মুসলিম শব্দটা শুনছেন?

তার মানে গে সাপোর্টাররা যদি হিপোক্রিট না হয়। অবশ্যই হিপোক্রিট। তাহলে তারা ভাই-বোন, বাবা-মেয়ে বা মা-ছেলের মধ্যে যৌনকর্ম সমর্থন করবে না আগামীকাল তার কি নিশ্চয়তা আছে?

এসব কি “আধুনিকতা” কই রাখবেন এই সমাজকে?

অনেক বুদ্ধিমান প্রগতিশীল আবার দাবি করে গে/লেসবিয়ান হওয়া নাকি “প্রাকৃতিক”, এতে কারো কোন হাত নেই সবই জেনেটিক অর্থাৎ জন্মগত।

চলুন দেখি বিজ্ঞান কী বলে?

কোন কিছু জেনেটিক কারণে হয় না পরিবেশগত কারণে হয় তা নির্নয় করার জন্য বিজ্ঞানের সবচেয়ে কার্যকরী মেথড হলো “মনোজাইগোটিক” যমজদের নিয়ে গবেষণা। কারণ তারা একই ভ্রূণ থেকে জন্ম হয় বলে তাদের জেনেটিক কোড একদম বা প্রায়একই রকম।

তো সমকামিতা হওয়া যদি জেনেটিকই হয়, তাহলে তো একজোড়া যমজের মধ্যে যদি একজন সমকামী হয় তাহলে তো আরেকজনও সমকামী হবে। আর একজন সমকামী না হলে আরেকজনও হবে না। যেহেতু দুজনের জেনেটিক কোড একদম একই, তাই ত?

১০০% ক্ষেত্রে না হলেও তার মধ্য থেকে ৮০-৯০% ক্ষেত্রে তো এমন হওয়ার কথা?

Can you guess what was the real percentage that researchers have found?

আমেরিকার বিখ্যাত Columbia University-এর গবেষক, Peter Bearman এবং Yale University-এর গবেষক, Hannah Brückner আবিষ্কার করলেন ছেলে যমজদের ক্ষেত্রে এই রেট মাত্র ৭% আর মেয়ে যমজদের ক্ষেত্রে মাত্র ৫%! (American Journal of Sociology. Volume 107 (5): Page 1179–1205)। তাহলে এটা কি জেনেটিক্স কারণে। নিজেকে প্রশ্ন করুন?

তাহলে ৮০-৯০% হওয়ার কথা ছিল। আর সেখানে ৫-৭% দেখা যাচ্ছে! তার মানে বোঝা গেল, “সমকামিতা প্রাকৃতিক” এই দাবি পুরাটায় অযৌক্তিক।

এটা একটা সমস্যা।
সবচেয়ে বড় কথা মানসিক সমস্যা।
সমস্যাকে সমাধানের প্রথম ধাপ হলো সমস্যাকে সমস্যা বলে স্বীকার করে নেয়া। সমস্যাকে অস্বীকার করে কখনোই তা সমাধান করা সম্ভব নয়।

অবশ্য অনেকেই মানতে চাইবেন না সমকামিতা কোন “মানসিক সমস্যা”। যেহেতু বর্তমানে তা উঠানো হয়েছে।

Homosexuality Mental Disorder Homosexuality Mental Disorder

সমকামী এবং তাদের সাপোর্টকারী গোষ্ঠী মানতে চাইবেন, কি চাইবেন না কিন্তু American Psychological Association(APA) ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত সমকামিতাকে “Mental Disorder” হিসেবে গণ্য করে এসেছে।
তাহলে ১৯৭৪ সালের দিকে এমন কী হলো? না কোন বৈজ্ঞানিক কারণে নয়। এটায় তারা বুঝেই Disorder রেখেছিল।

সমকামীদের আন্দোলন সমকামীদের আন্দোলন

১৯৭০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিস্কোতে চলছিল APA এর অধিবেশন। গে সাপোর্টাররা সেই অধিবেশনে ঢুকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে এবং সাইকিয়াট্রিস্টদের বিদ্রূপ-উপহাস করতে শুরু করে। তাদের নেতা Frank Kameny যে একজন সাইকিয়াট্রিস্ট না হয়েও সাইকিয়াট্রিস্টদের অধিবেশনে ঢুকে মাইক ছিনিয়ে নেন।

তার মত ছিল,
“সাইকিয়াট্রি হলো আমাদের মূর্তিকার শত্রু। সাইকিয়াট্রি আমাদের উপর নিষ্ঠুর যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সাইকিয়াট্রির উপর যুদ্ধ ঘোষণা করছি।” ( Homosexuality and American Psychiatry: The Politics of Diagnosis (1981) by Ronald Bayer; Princeton University Press; page 105)

পরবর্তীতে তীব্র রাজনৈতিক চাপের মুখে APA সমকামিতাকে Mental Disorder হিসেব থেকে বাদ দিতে বাধ্য হয়, তার স্বপক্ষে যথেষ্ট scientific evidence না থাকা সত্ত্বেও।

মানুষের মানসিক সমস্যা বা মনঃ বিকৃতি থাকতে পারে। তার মানে এই না যে সেই বিকৃতিকে আমরা হ্যা বলে দিব, আরো উৎসাহ দিতে থাকাটা স্বাভাবিক নয়। সেই বিকৃতি কিভাবে আরোগ্য করা যায় তার পথ খুঁজতে হবে। আর যদি আরোগ্য সম্ভব না হয় তাহলে ভবিষ্যতে কারো জানি এমন না হয় বা তার থেকে অন্য কারও যাতে না ছড়ায় সেই ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর সেখানে যদি উল্টা একে সমর্থন করা হয়, এবং স্বীকৃতি দেয়া হয়, তাহলে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে?
পারিবারিক বন্ধন হুমকির সম্মুখীন হবে। আর সমাজে তা ছড়িয়ে পরবে।

৭০ এর দশক থেকে যদি সমকামিতাকে ব্যাধি হিসেবে অস্বীকার করা শুরু না হতো তাহলে গত ৫০ বছরের বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার মধ্যে এর প্রতিকার/প্রতিষেধক আবিস্কার হয়ে যেত। আজ সমকামীরা আরোগ্য লাভ করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারত। সমাজে সমকামিতার ভয়ানক অধ্যায় দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দাম্পত্যকলহ আর বিবাহবিচ্ছেদ এর মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। এই সমস্যার ব্যাপারে সচেতনা বৃদ্ধি করা দরকার
সমস্যাকে সমস্যা বলুন
সমস্যাকে সমস্যা বলুন

সচেতনায় সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

Zeesan Rahman Chowdhury
Psychology (DU)
Master of Business Information System
University of Canterbury

অন্যকে ক্ষমা করে দিতে হবে- ১ম পর্ব

শান্তিই শক্তি শান্তিই শক্তি

অন্যকে ক্ষমা করে দিতে হবে এ জন্য নয় যে তারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য,
বরং এ জন্য যে আপনি শান্তিতে থাকার যোগ্য”
……………………………………………………………..
জীবনের তিক্ততা,শত্রতা, আক্রোশ,বিষাক্ততাকে ছেড়ে দিন,চলে যেতে দিন(let go)।
……………………………………………………………..
ভাসমান সুখ ভাসমান সুখ

আমরা পৃথিবীতে যখন আসি তখন কষ্ট,যন্ত্রনা,প্রতারনা,বিশ্বাস- ঘাতকতা,আক্রোশ,শত্রুতা সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না।
যতই জীবন পরিক্রমায় ঘাত- প্রতি ঘাতের মধ্যে যেতে থাকি ততই এ সব কষ্টকর,অপ্রীতিকর অনুভূতি গুলো আমাদের মনে জমা হয়।
যদি সঠিক সময়ে, দ্রত এ সব কষ্টদায়ক,পীড়াদায়ক,বিষাক্ত ও তিক্ত অভিজ্ঞতা গুলোকে মন থেকে সরিয়ে দিতে না পারেন,সে গুলো ক্রমাগত জমতে থাকবে ও জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলবে।
ঘৃনা,আক্রোশ জমা রাখলে আমরা আক্ষরিক অর্থেই “অসুস্হ” হয়ে পড়বো।
এর ফলে মন তার সহজতা ও স্বাচ্ছন্দ্য হারাবে( dis-ease of mind)। ফলশ্রতিতে অনেক শারীরিক রোগের উৎপত্তি হয়।
প্রথম দিকে অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়ার ব্যাপারটি কঠিন মনে হতে পারে।
কিন্তু জীবন সুস্হ ও সুখী রাখতে হলে,জীবনে এগিয়ে যেতে হলে এটি প্রয়োজনীয় এবং জীবন যন্র্রনার প্রলেপ ঝেড়ে ফেলতে এটি জরুরী।
Eckhart Tolly তার ” the power of now”বইতে এ ব্যাপারে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
এই টিপস গুলো আপনার ” আবেগগত ক্ষত” গুলোকে নিরাময় করতে এবং আপনার অন্তরাত্মায় পুনরায় আনন্দের আলো প্রবেশ করতে সাহায্য করবে।

মেনে নিন মেনে নিন

১। বর্তমানে যে রকম আছেন,স্রেফ সেটি মেনে নিন,সে রকমটি থাকুন। পরিবর্তনের বাড়তি চেষ্টা করবেন না
( don’t try,just be):
………………………………………………………………
নিজের উপর আস্হা রাখুন এবং এ বিশ্বাস রাখুন যে সব সময়েই আপনার ভিতর রয়েছে ” অবিশ্বাস্য রকমের সুপ্ত শক্তি”। ( incredible potentiality)।
অতীতের কষ্ট যন্ত্রনাকে যেমন ধরে রাখবেন না,তেমনি নিজের জীবন অগ্রগতির সমালোচনা করে নিজেকে বাড়তি কষ্ট দিবেন না।
*** লম্বা করে শ্বাস নিন এবং মনে রাখবেন আপনি নিজকে যতটুকু কৃতিত্ব দিচ্ছেন,প্রকৃত পক্ষে আপনি তার চেয়ে বেশী কৃতিত্বের দাবীদার।

………………………………….
অহেতুক চিন্তা নয়অহেতুক চিন্তা নয়

২। চিন্তার সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করবেন না,স্রেফ নীরবে সে গুলো পর্যবেক্ষন করুন(don’t identity with any thoughts- just silently observe them):
…………………………………………………………..
আমাদের মস্তিষ্কে উদ্ভুত চিন্তা গুলো স্বতস্ফুর্ত ভাবে বুদবুদের মতন আসতে থাকে।( অটোমেটিক থট)
এ গুলো থেকে আমরা বিযুক্ত থাকতে পারি না।নিজেদেরকে সে চিন্তা গুলোর সঙ্গে যুক্ত করে ফেলি।
ফলে সে চিন্তা গুলো বাস্তব ও সত্য মনে হয়।
অথচ এ রকম চিন্তার বেশীর ভাগই অবাস্তব ও অসত্য।
National Science Foundation গবেষনা করে দেখেছেন এক জন মানুষের মনে প্রতি দিন গড়ে ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার চিন্তা উদ্ভুত হয়।
এর ৮০% হচ্ছে নেতিবাচক চিন্তা
এবং ৯৫% বার বার ঘুরে ফিরে মনে আসতে থাকে
তার মানে আমরা আসলে চিন্তা করি না, আমাদের নিছক সে গুলো বার বার মনে পড়ে।
এই সত্বস্ফুর্ত চিন্তা গুলোকে নিজের মনে করা ঠিক হবে না।
এ গুলো আসবে আবার চলে যাবে( যদি আমরা যেতে দেই)।
আমরা অহেতুক মনো কষ্টে ভুগি এই চিন্তা গুলোকে বাস্তব ও সত্যি মনে করে।
আমাদের ইগো চেষ্টা করে এই নেতিবাচক চিন্তা গুলোকে নিয়ন্ত্রন করতে।
কিন্তু সে তা পারে না।
তাই চিন্তার সঙ্গে যুদ্ধ না করে, পিছিয়ে আসুন।
এ সব চিন্তাকে বিতাড়িত বা পরিবর্তনের চেষ্টা না করে এ গুলোকে শুধু নৈর্বক্তিক ভাবে অবলোকন করুন,পর্যবেক্ষন করুন।
নিরবে দেখুন নিরবে দেখুন

মনে রাখবেন আপনার প্রকৃত সত্বা রয়েছে আপনার হৃদয়ে ও আত্মায়,আপনার ব্রেইনে নয়।
তাই চিন্তার দিকে নয়,নজর দিন নিজের অনুভূতির দিকে
যখনই তা করতে পারবেন আপনার চিত্ত উচ্চতর ফ্রিকোয়েন্সীতে স্পন্দিত হতে থাকবে(vibrate in higher frequency)।
ফলে ধ্বংসাত্বক,ক্ষতিকারক ও বিষাক্ত চিন্তা গুলো আপনার মনে কম আসবে।
*** মনে রাখবেন আপনার ব্রেইনে কোন চিন্তা ঢুকবে সেটি হয়তো আপনি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন না,কিন্তু সে চিন্তার প্রতি কি ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন,সেটি আপনি নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।
ভালবাসুন ভালবাসুন

প্রফেসর ডা. মো. তাজুল ইসলাম
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
কমিউনিটি এন্ড সোশাল সাইকিয়াট্রি বিভাগ, জাতীয় মানসিক স্বাস্হ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
ই- মেইল:drtazul84@gmail.com

সেল্ফ এস্টিম পর্ব ৪: ক্রিটিক কে মোকাবেলা

ক্রিটিকের সাথে ফাইট করার বেস্ট উপায় হচ্ছে তার উদ্দেশ্য, অভিসন্ধি বুঝে ফেলা। এই যেমন একটা সিগারেট কোম্পানি যদি গবেষণা টবেষণা করে বের করে যে তামাকের সাথে ফুসফুসের ক্যান্সারের কোন সম্পর্ক নেই, আমরা স্বভাবতই বিশ্বাস করতে চাইব না, কারণ তার উদ্দেশ্যই ভাল ছিলনা। আর উদ্দেশ্য অসাধু থাকলে কাজের মধ্যে কতরকমের ভুল জিনিস ঢোকানো যায়, তা সদ্য একটা প্রাইভেট ইউনির বিজ্ঞাপন দেখলেই বোঝা যায়।

ত তৃতীয় পর্ব থেকে আমরা ত জেনেছিই ক্রিটিকের মূল উদ্দেশ্য কীভাবে খুঁজে বের করতে হবে। এবার আসি জানার পরেও মগজের ভেতর তার কথোপকথন কীভাবে বন্ধ করা যায়।

প্রথমে সবচেয়ে কঠিন পন্থাটাই বলি। ক্রিটিকের সাথে কথা বলা। কীভাবে, একটা উদাহরণ দিচ্ছি:

আমার পরিচিত এক ছোট আপু বিভিন্ন সমস্যার কারণে দু’বছরের মাস্টার্স কোর্সটায় সেরকম কাজ করতে পারেনি। সময় শেষ হওয়ার পর তার এখন এতই খারাপ লাগছে, সে ঠিক করেছিল দু’বছরে যত টাকা স্কলারশিপ হিসেবে পেয়েছে সেটা ফেরত দেয়ার অফার করবে। তাছাড়া যতবারই পুরনো নিজের সাথে এখনকার নিজেকে মেলায়. মন থেকে ক্রিটিক বারবার করে বলে, ‘আমি কিচ্ছু পারব না, আমার সব শেষ হয়ে গেছে, আমার কত সখ ছিল পিএইচডি করব, সোশ্যাল ওয়ার্ক করব, আমি কিছুই করতে পারিনা, আমার কোন যোগ্যতাই নেই… ইত্যাদি ইত্যাদি।’ তার অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছিল, যে কোন ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার সাহসটাই তার চলে গিয়েছিল, নিজের সম্পর্কে ভাল চিন্তা করতে, একটু খুশি হতেও তার অপরাধবোধ হত। হতাশার চেয়েও বেশি অপরাধবোধ আর আত্মবিশ্বাসের অভাব তাকে শেষ করে দিচ্ছিল।

ক্রিটিক কে মোকাবেলা করার জন্য তাকে কিছু টিপস দিয়েছিলাম –

প্রথমেই পারিবারিক সমস্যাগুলোতে সে যেভাবে হাল ধরেছে সেদিকে উল্লেখ করে বললাম, এগুলো তোমার মানসিক শক্তি নির্দেশ করে। এ বিষয়টা নিয়ে মোটামুটি তার সাথে বেশ খানিকটা কথা বলে তাকে কনভিন্স করলাম যে একজন স্বাবলম্বী মানুষ হিসেবে তার অনেক গুণ আছে এপ্রিসিয়েট করার মত। একাডেমিক লাইফে এই গুণগুলোর অনেকগুলিই দরকার পড়ে। এরপর তাকে কিছু মেন্টাল এক্সারসাইজ দিলাম, নিজেকে প্রশ্ন করতে –

– আমাকে দিয়ে কিছু হবেনা, এই কথার ভিত্তি কী? – আমি দুই বছর কোন রিসার্চ করি নি।

– কেন করনি? পারনা দেখে? – না, বিভিন্ন সমস্যার কারণে

– এখন সমস্যা না থাকলে করতে পারবে? – মনে হয় পারব।

– তার মানে তুমি পারনা এই কথাটা ঠিক না, বলতে পার সুযোগ হারিয়েছ।

তারপর আবারো প্রশ্ন কর –

– আমার পক্ষে কি পাগলের মত কাজ করে ডিগ্রীটা নেয়া সম্ভব? – হ্যা/ না

– যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অন্য জায়গায় মাস্টার্স/পিএইচডির জন্য চেষ্টা করা সম্ভব? – হ্যা/ না

– যদি মাস্টার্স/পিএইচডি না করি, তাহলে কি আমার পক্ষে মানুষের জন্য কাজ করার সব সুযোগ শেষ হয়ে যাবে? আমার জন্য কোনটা বেশি হতাশার? ডিগ্রী না পাওয়া, নাকি মানুষের জন্য কাজ করতে না পারা? যদি ডিগ্রী না থাকে তাহলে অন্যান্য আর কী কী উপায়ে আমি কাজ করতে পারি? তার সুবিধা অসুবিধাগুলো কী?

ত এই পরামর্শ অনুযায়ী সেই বোন আরো সুন্দর করে কাজটা করেছে। প্রথমেই ট্র্যাক করেছে তার কোন সিদ্ধান্ত কোন ঘটনার উপর ভিত্তি করে করা। এই যেমন বোর্ড পরীক্ষার সময় যে কোন সমস্যা উপেক্ষা করে ঠিকই ভাল করেছে, এখন পারছে না, তার মানে তার আগের গুণগুলো আর নেই। সে যখন বলতে গিয়েছে, এখন ত সমস্যা আগের চেয়ে অনেক বেশি ছিল, মন তাকে উল্টো বুঝিয়েছে, কাজ না পারলে সবাইই অমন বলে।

দ্বিতীয়ত, কাজ করেনি, এই অপরাধবোধ থেকে তার এ ধারণা হয়ে গেল, সে শুধু টাকা নষ্ট করেছে, আর এখন এর প্রায়শ্চিত্ত করতে তাকে হন্যে হয়ে টাকা রোজগার করতে হবে, ফেরত দেয়ার জন্য। মাঝখান থেকে মাস্টার্স যে করা আর সম্ভবই না, সেটা নিশ্চিত করে ফেলল ক্রিটিক ভদ্রলোক।

ত এবার যখন ক্রিটিক তাকে বলল, ‘আমি কিছু পারবনা’, তখন সে উল্টো বলল, আমার এই এই গুণগুলো আছে, কেন বলছ পারবনা? ক্রিটিক মিনমিন করে বলল, দুই বছর ত পারনি। সে উত্তর দিল, ‘হুম! কিন্তু এই দুই বছরে আমি অনেক মানসিক শক্তি অর্জন করেছি। প্ল্যান না করে, চেষ্টা না করতে দিয়ে কেন আগে থেকেই বলছ পারব না?’

ব্যাস! ক্রিটিক চুপ!

এর পরের ঘটনা আরো চমৎকার, লেখার লোভ সামলাতে পারছি না। সেই আপু থিসিস এর পুরো প্রেশারটাকে ছোট ছোট ভাগ করে পাঁচটা জার্নাল পেপার লেখার মত করে নিল। রিয়েলিস্টিক প্ল্যান, কবে কোথায় সাবমিট করবে, এরকম করে প্ল্যান।

গুছিয়ে সুপারভাইজরের কাছে প্রেজেন্ট করল, কীভাবে কোন কাজটা করতে চাইছে। সুপারভাইজর এরকম এপ্রোচ দেখে জানাল কন্সেপ্টটা বুঝতে ও বেশ খানিকটা সময় নিলেও, উনি ওর প্ল্যানিং এ খুবই খুশি। আগ বাড়িয়ে বললেন তার কাছে পিএইচডি করার জন্য। শুধু তাই না, এরই মধ্যে ওর দুটো কনফারেন্সে পেপার অ্যাক্সেপ্টেড হয়েছে, অন্যসময় হলে সে হয়ত ভাবত,
কনফারেন্স পেপারই ত, জার্নাল পেপার ত আর না – কাজের কাজ না করে এসব করে কী হবে? কিন্তু এখন সে এই ঘটনাগুলোকে স্টেপিং স্টোন হিসেবে নিচ্ছে।

ক্রিটিক এত নাজুক, যে ঘুরে দাঁড়ালে তার ক্ষুদ্রতা দেখে রীতিমত দুঃখ হয়। হ্যারি পটার এ অমন ছিল না – যার যার ভয়গুলো এক একটা রূপ নিয়ে আসে, তারপর মন্ত্র পড়ে রুখে দাঁড়ালেই হাস্যকর হয়ে যায় – ঠিক একই কাহিনী। আমরা সবাই ক্রিটিকের সাথে ফাইট করার যোগ্যতা রাখি, এতে কোন সন্দেহ নেই। সাহসটা রাখি ত?
সাহস

নুসরাত রহমান
পিএইচডি(বায়োলজি)

কবি হাবীবাহ্ নাসরীন সাহিত্যে প্রণোদনা পুরস্কার পেলেন

কবি হাবীবাহ্ নাসরীন কবি হাবীবাহ্ নাসরীন

এ বছর সাহিত্যে প্রণোদনা পুরস্কার পেলেন কবি হাবীবাহ
নাসরিন। মুলত সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার ২০১১ সাল থেকে সাহিত্যে “প্রণোদনা পুরস্কার” দেওয়া শুরু করে।সে বছর এ পুরস্কার প্রদান করা হয় নব্বই দশকের অন্যতম কবি সৌমিত্র দেবকে।

কবি হাবীবাহ্ নাসরীনের রচিত কবিতাগ্রন্থ “কবিতা আমার মেয়ে” ও উপন্যাস “তুমি আছো তুমি নেই” এর জন্যে স্বীকৃতি পাচ্ছেন।

আনুষ্ঠানিকভাবে জনপ্রিয় এ লেখিকার কাছে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

‘হাবীবাহ নাসরিন বলেন-‘পাঠকের ভালোবাসা একজন লেখকের বড় অর্জন। আর প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিও নিশ্চয়ই তারই অংশ বিশেষ। লেখকরা স্বীকৃতির জন্য লেখেন না, তবু তরুণদের উৎসাহিত করতে এ ধরণের সম্মাননা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। আমার জীবনের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি হিসেবে সাহিত্য প্রণোদনা পুরস্কার স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

পেশায় সাংবাদিক হাবীবাহ্ নাসরীন লাইফস্টাইল ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত আছেন দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল “জাগোতে”। এছাড়াও অনেক পত্রিকায় কাজ করেছেন।

কবি হাবীবাহ্ নাসরীনকে অপরাজিতা পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন।

 

জাজের চোখে যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালায় অসঙ্গতি

পুরনো নীতিমালা সংশোধন করে যৌথ প্রযোজনার ছবির জন্য নতুন নীতিমালা আসছে শিগগির। সম্প্রতি নতুন নীতিমালার একটি খসড়াও প্রকাশ করেছে সরকার। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ২০১২ সালের নীতিমালার ভিত্তিতে নতুন নীতিমালাটি তৈরি করা হয়েছে।

তবে এই নীতিমালায় কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরেছে দেশের শীর্ষ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। জাজ মাল্টিমিডিয়া এই খসড়ার কিছু অসঙ্গতি ও তাদের মতামত তুলে ধরেছে তাদের ফেসবুক অফিসিয়াল পেজে।

প্রতিষ্ঠানটি তাদের ফেসবুক অফিসিয়াল পেজে লিখেছে-

যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের নীতিমালা – ২০১৭ (প্রস্তাবিত)
গ.
(০২) যেকোনো ব্যবসায় ব্যবসায়ী তার কিছু গোপনীয়তা রাখবে। তাই বিনিয়োগের পরিমাণ জানা একজন প্রযোজকের জন্য অবশ্যই অস্বস্তিকর। তাছাড়া সিনেমা সম্পূর্ণভাবে শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক বাজেট করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যেমন, বৃষ্টি বা শিল্পীর অসুস্থতার কারণে শুটিং ৩ দিন বেড়ে গেলে, সিনেমার খরচ ১০ লক্ষ টাকা বেড়ে যায়। যা কখনই পূর্বে অনুমান করা সম্ভব নয়।

(০৪) যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের বিদেশি প্রযোজকের প্রদত্ত অনুমতি / ছাড়পত্র / এন্ডোরসমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। এবং তা প্রিভিউ কমিটিকে সিনেমা দেখানোর সময় তা দাখিল করতে হবে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন দ্বারা সত্যায়িত করা, যৌথ প্রযোজনার প্রক্রিয়াকে জটিল করবে।

(০৬) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য চলচ্চিত্রের পরীক্ষা ও পর্যালোচনার কমিটিতে অবশ্যই শিল্পী সমিতির প্রতিনিধি থাকার কোনো প্রয়োজন মনে করি না। কারণ চলচ্চিত্রে একজন শিল্পী শুধু মাত্র পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করে। তাই শিল্পী সমিতির প্রতিনিধিত্ব এই প্রক্রিয়ার শুধু জটিলতাই বাড়াবে।

(০৭) চলচ্চিত্রের প্রযোজক অথবা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে বাছাই কমিটির সভায় উপস্থিত থাকতে দেওয়া বঞ্চনীয়।

(০৯, ১০ ও ১১) যৌথ প্রযোজনায় নির্মাণের জন্য আবেদন পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে বিএফডিসি তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে এবং মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। বিএফডিসির সিদ্ধান্ত পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে, মন্ত্রণালয় তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বাধ্য থাকবে। আবার কেন ফাইল বিএফডিসি তে আসবে? এর কোনো প্রয়োজন নেই। এতে শুধুই সময় ক্ষেপণ মাত্র। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনই চূড়ান্ত অনুমোদন বলে বিবেচনা করতে হবে।

(ঙ)
(০১) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রের কাহিনী মৌলিক হতে হবে, কিন্তু যদি কোনো সিনেমার অবলম্বনে বানানো হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে কপি রাইটের পত্র দাখিল করতে হবে।

(০২) চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নিয়োযিত পরিচালক, মুখ্য অভিনয় শিল্পী এবং কলাকুশলীর সংখ্যা, যৌথ প্রযোজকগণ যৌথ প্রযোজনা চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন। চলচ্চিত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যে কোনো একজন পরিচালক হলেই হবে। তবে শিল্পী ও কলাকুশলী সমানুপাতিক হারে হবে।

(০৪) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের লোকেশন কাহিনী ও চিত্রনাট্যের প্রয়োজন অনুসারে হবে।

(০৫) এই পয়েন্ট সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে। অনেক সময় অনুমোদন পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। কিন্তু ব্যস্ত আর্টিস্টের শিডিউল চলে যাবে বলে প্রযোজক শুটিং করতে বাধ্য হন।

(০৬) যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার ৪৫ দিন অতিক্রান্ত না হলে চলচ্চিত্র প্রিভিউয়ের জন্য জমা দেয়া যাবে না।

(১০) যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদেশি নির্মাতাগণের সঙ্গে ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা ও ফেরত নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সহজিকরণের জন্য বিদেশি যন্ত্রপাতি আনা ও নেওয়ার জন্য বিএফডিসির অনুমোদনই যথেষ্ট।

(যেখানে বড় বড় গার্মেন্টস ও অন্যান্য আমদানি রপ্তানিতে অভিজ্ঞ্য ফ্যাক্টরি হিমসিম খায় ও দীর্ঘ সময় লাগে, সেখানে আমদানি রপ্তানিতে অনভিজ্ঞ চলচ্চিত্র প্রযোজক গণ কীভাবে এত সব অফিসের সম্মুখীন হবে?)

এদিকে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (চলচ্চিত্র) ইউছুব আলী মোল্লা খসরা নীতিমালা প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সব বিষয়ই রাখা হয়েছে খসড়াটিতে। এখন এ বিষয়ে আমরা সকলের মতামত নিচ্ছি। ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মতামত নেওয়া হবে। অন্তর্ভুক্ত করার মতো যদি কোন মতামত পাওয়া যায় তবে তা যুক্ত করে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হবে।’

সবশেষে জাজের দাবি, নীতিমালায় এসব অসঙ্গতি দূর করা না গেলে যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণ সম্ভব নয়। দর্শকদের ভালো ছবি উপহার দেয়া সম্ভব নয়। যার ফলে ভালো ছবি না হলে দর্শকরা হলে ফিরবে না, যার জন্য সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাবে।

 

জীবন ও সম্পর্কের বৈধ মাধ্যম বিয়ে

ইসলাম জীবন ও যৌনতার বাস্তবতাকে অকপটে স্বীকার করে। বিয়ের মাধ্যমে পাশবিক বিশৃঙ্খলামুক্ত জীবন ও যৌনতাকে ইসলাম বৈধতা দিয়েছে।

যৌনতার উশৃঙ্খলতাসহ বিশ্ব মানবতাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখতেই আল্লাহ তাআলা শান্তির দূত হিসেবে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রেরণ করছেন। নাজিল করেছেন পবিত্র কুরআনুল কারিম।

কথা-বার্তা, আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা, স্বভাব-চরিত্রসহ সর্বক্ষেত্রেই কুরআনের আলোকে প্রিয়নবি দেখিয়েছেন সঠিক পথ। যৌনতাকে পাশবিকতায় না নিয়ে মানব বংশ বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ করতে এবং পাশাবিক উন্মাদনায় উদ্বুদ্ধ না হয়ে বিয়ে প্রথার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেছে ইসলাম।

জীবন ও যৌনতার উত্তম ব্যবস্থা হলো বিয়ে। যে সব কারণে যৌনস্খলনের সৃষ্টি হয়, বিয়ের মাধ্যমে সে সবের প্রতিবিধান তথা সমাধান করেছে ইসলাম।

এক কথায় যৌন চাহিদা পূরণের বৈধ আয়োজনকে ইসলাম একেবারেই সহজ করেছে। তাইতো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে বিয়ে খরচ কম ও সহজ, সে বিয়েই বরকতপূর্ণ।’ (বয়হাকি)

যুবকদেরকে প্রতি প্রিয়নবির আহবান

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বিয়ের ফলে যুবকদের দৃষ্টি অবনত থাকবে আর গুপ্তাঙ্গ থাকবে পবিত্র। যে যৌন ক্ষমতার যথার্থ প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল মানব অস্তিত্ব ও তার পবিত্রতা। সে যৌনতার ব্যাপারে অপবিত্রতা তথা পাশবিকতার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে ইসলাম।

আবার লোভাতুর দৃষ্টি ও অবাধ মেলামেশা যেহেতু যৌনাপরাধের মূল উৎস, তাই এগুলোকে ইসলাম পরিষ্কারভাবে নিষেধ করে দিয়েছে।

সুস্থ ও সুশৃঙ্খল পথে যৌন কামনা পূরণের মাধ্যমে বৈধ মানব বংশ বৃদ্ধির প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বলেন, ‘তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহর কর্তব্য হয়ে যায়। আর তারা হলো-
>> আজাদি চুক্তিবদ্ধ গোলাম- যে তার রক্তমূল্য আদায় করতে চায়।
>> পবিত্রতার মানসে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ ব্যক্তি এবং
>> আল্লাহর পথের মুজাহিদ। (তিরমিজি)

পরিশেষে..
যেহেতু বিয়ের মাধ্যমে একজন মু’মিন বান্দা আল্লাহর সমীপে পবিত্র ওয়ে ওঠার পথ খুজে পায় এবং বিয়ে করা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামসহ সব নবি-রাসুলের আদর্শ। তাই জীবন যৌনতার পরিশুদ্ধতায় বিয়ের মাধ্যমে যুবকের চরিত্র পবিত্র রাখা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর যুবকদের যৌনতার পাশবিক বিশৃঙ্খলা থেকে হেফাজতে করে বিয়ের মাধ্যমে উত্তম যৌন সম্পর্ক স্থাপনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

যেসব কারণে কখনোই সফল হতে পারবেন না আপনি

সাফল্যের মুকুট মাথায় পরতে কে না চায়? প্রত্যেকটি মানুষই কঠোর পরিশ্রম করে সফলতা অর্জন করার জন্যে। কেউ সফল হয় আবার কেউবা ব্যর্থতাকেই আপন করে নেয়। কিন্তু এটি মোটেই কাম্য নয়। আমাদের প্রত্যেক কাজের শেষে থাকে ভালো-মন্দের কারুকার্য।

আমরা অনেকেই কোন কাজে ব্যর্থ হয়ে গেলে মুষড়ে পড়ি, ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাই। কিন্তু আপনি কি জানেন সবকিছুরই একটি কারণ আছে? আপনি যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ব্যর্থ হচ্ছেন, সেটিরও একটি কারণ আছে। একটু সময় নিয়ে নিজেকে বুঝুন ও জানুন, দেখবেন সবকিছু খুব সহজ হয়ে গিয়েছে এবং সফলতার মুকুট আপনি পরিধান করতে পারছেন।

আজকের ফিচারে আপনাকে জানানো হবে কোন কোন কাজগুলোর জন্য আপনি প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছেন এবং এগুলো চলতে থাকলে আপনি কখনোই সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌছবেন না। চলুন তবে জেনে আসা যাক-

আপনি জানেন না সফলতা ব্যাপারটা আসলে কি

সফলতা অর্জন না করার অন্যতম প্রধান কারণ হলো আপনি জানেনই না সফলতা কী! হয়তো আপনি অনেক বেশি সিনেমা দেখেন সেখান থেকে কোন ধারণা নিয়ে নিজের মধ্যে সাফল্যের সংজ্ঞা আয়ত্ব করে নিয়েছেন। যখন অন্য কারো মুখে সাফল্যের কথা আপনি শোনেন, সেটা কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে না-ও খাটতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং, সফলতা অর্জন করার জন্য নিজে বুঝতে চেষ্টা করুন সফলতা কী।

কোন ব্যাপারে আপনি উদ্যমী আপনি জানেন না

আপনি সব সময় এক ধারণা থেকে অন্য ধারণায় ঝাঁপিয়ে বেড়ান, যেটি শুনতে একটু ভালো লাগে সেদিকেই আপনার মনোযোগ গিয়ে পড়ে। অপরাহ উইনফ্রে একবার বলেছিলেন, ‘উদ্যম হলো শক্তি। উদ্যমী হওয়ার দরুণ আপনি যে শক্তিটা পাচ্ছেন সেটিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন’। তিনি এটি অনুধাবন করতে পেরেছেন যে কোন বিষয়ে উদ্যমী না হওয়া সত্ত্বেও আপনি যদি সেটি নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন তবে বেশিদূর পৌছতে পারবেন না।

নিজের জীবনকে পরীক্ষা করুন। কোন ব্যাপারটা আপনাকে আনন্দিত করে তোলে, কোন বিষয়ে আপনি উদ্যমী সেটি বুঝতে চেষ্টা করুন। একেবার শুরু করলেই দেখবেন, সাফল্য আপনার দ্বারপ্রান্তে পৌছে গিয়েছে।

আপনি কাজে সময় দিতে চান না

আপনি হয়তো ম্যালকোম গ্ল্যাডওয়েল এবং তার ১০,০০০ ঘণ্টার নিয়মের কথা শুনেছেন। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবিষ্কার করেছেন যে পৃথিবীর সবচেয়ে সফল ব্যক্তিগণ কঠোর পরিশ্রমেই তাদের সময় ব্যয় করেছেন। তারা তাদের কারুশিল্প এবং গবেষণায় সময় বিনিয়োগ করেছেন। ব্যর্থ হলেও বারংবার চেষ্টা করে গিয়েছেন। আপনি চেয়েছেন বলেই যে সাফল্য আপনার দ্বারপ্রান্তে চলে আসবে, এমনটা কিন্তু নয়। আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কেবল তখনই আপনি সফল হবেন।

আপনি সঠিক মানুষের সঙ্গে মেশেন না

জিম রনের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে, ‘আপনি যে পাঁচজনের সঙ্গে মেশেন, তাদেরই প্রতিফলন আপনি’

আমাদের এমন মানুষের সঙ্গে মেশা উচিৎ যাদের প্রত্যেকের লক্ষ্য সাফল্য অর্জন করা। যখন আপনার চারপাশ ইতিবাচকতায় পরিপূর্ণ থাকে, তখন সহজেই আপনি সফলতার পথে অগ্রসর হতে থাকবেন। এতে করে আপনি অসংখ্য সফল ব্যক্তিবর্গের সঙ্গেও মিশতে পারবেন। এভাবে আপনার একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে।

আপনার মানসিকতা ইতিবাচক নয়

আশেপাশের সবকিছু আপনার কাছে অসহ্য মনে হয়। আপনি সাফল্যের ছিটেফোঁটাও কোথাও দেখেন না। পৃথিবীর কোথাও ইতিবাচকতার বিন্দুমাত্র আপনি খুঁজে পান না। আপনি যখনই নিজের মানসিকতা বদলে নেতিবাচকতা থেকে দূরে নিয়ে যাবেন, তখনই আপনি নতুন এক জগতের সন্ধান পাবেন। সুতরাং, নিজেকে এবং নিজের চিন্তা-ভাবনাগুলোকে ইতিবাচক করার চেষ্টা করুন।

সবশেষে এই বলা যায় যে, ওপরের বৈশিষ্ট্যগুলো যদি আপনার চরিত্রে থেকে থাকে, তাহলে সেগুলোকে বদলে ফেলুন আজই। নিজেকে পুনরায় গঠন করা শুরু করুন। সফলতা অর্জন করার যে পন্থাসমূহ রয়েছে, সে অনুযায়ী চলতে শুরু করুন। আপনিই জয়ী হবেন।

 

কালাই-রুটির মনোয়ারা বেগম

আধো আলোছায়ায় বসে আছেন মনোয়ারা বেগম। বয়স জিজ্ঞাসা করামাত্রই হেসে বলেন, ‘বয়স বুলতে (বলতে) নেই।’ কালাই-রুটি বানান কবে থেকে? একগাল হেসে বললেন, জন্মের পর থেকে বানাচ্ছি। রাজশাহী শহরে সাহেববাজার এলাকায় নিয়মিত কালাই-রুটি তৈরি করেন তিনি। এলাকায় পরিচিত মুখ। খুব যত্ন নিয়ে বানাচ্ছেন কালাই-রুটি। তাঁর হাতের রুটি একবার নয়, বারবার খেতে আসে সবাই। বানানোর নিয়ম জিজ্ঞাসা করতেই বললেন মনোয়ারা বেগম, ‘আপনারা পাইরবেন নাহ। আগে হামরা (আমরা) তো মাষকলাই ডাল দিতাম বেশি আর আটা দিতাম সামান্য। কিন্তু সব জিনিসের দাম বাইরে যাওয়ায় আমরা এইর মধ্যে কলাই আর আটা মিশাই। দুই কেজি আটার সঙ্গে দুই কেজি কালাইর ডাল দিই। কাঁচা পানি আর একটু লবণ দিয়ে আটার সঙ্গে ভালো করে মিশাই। এরপর মোটা করে রুটি বানাই। মাটির পাত্রে এই রুটি সেঁকতে হয়। খড়ির চুলায় তাতে স্বাদ পাওয়া যায় ভালো।’

রুটির সঙ্গে সামান্য মরিচ আর বেগুনপোড়া ভর্তা। বরেন্দ্রভূমিতে সন্ধ্যাকালীন নাশতা হিসেবে বেশ জনপ্রিয় এই খাবার।

হাসিখুশি মানুষ। সদা হাস্যোজ্জ্বল চেহারা। কিছুক্ষণ পরপর পান মুখে দেন। পানের মুখে কথা বলতে বলতে গান গেয়ে ওঠেন নিজের পছন্দের।

মনোয়ারা বেগমের এক মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলেমেয়েরা অন্য কাজ করে। তাঁর স্বামী কৃষিকাজ করেন পদ্মার চরে। মায়ের কাছ থেকে শেখা রুটি বানানোর কাজ মনোয়ারা বেগম একাই করেন। মনোয়ারা বেগমের পরিবারে এই রুটি ছিল মূল খাবার। তাঁর মা বানাতেন আর সব ভাইবোন মিলে সকালে খেতেন। রুটি বানাতে বানাতে সেই গল্পই করলেন এই প্রতিবেদকের কাছে।

পরিবারে দুজনের জন্য যে টাকা লাগে তা হয়ে যায় এই রুটি বিক্রি করে। প্রতিদিন ৪০০ টাকার আটা-ডাল কেনেন। বেচা-বিক্রি তেমন নেই, কোনো দিন শ পাঁচেক বা হাজারখানেক টাকা পাওয়া যায়। তবে বৃষ্টির দিনে হাজার টাকার বিক্রি হয়। কারণ বৃষ্টির দিনে শখ করে মানুষ গরম কালাই-রুটি বেশি খায়।

মনোয়ারা বেগম কালাই-রুটি বানান বছরের পর বছর ধরে। তাই তো তাঁর নিজের মনে হয় তিনি বোধ হয় জন্মের পর থেকেই এই কাজ করছেন। আর তাই হয়তো তাঁর এই কাজে ক্লান্তি নেই।

 

মেজবানি গরুর মাংস রান্না করার পারফেক্ট রেসিপি

চট্টগ্রামে বিখ্যাত মেজবানি মাংস আক্ষরিক অর্থেই অতুলনীয় একটা খাবার। যিনি একবার খেয়েছেন, আজীবন তাঁর মুখে লেগে থাকবে এর স্বাদ। তবে হ্যাঁ, মজাদার এই খাবারের “সিক্রেট” রেসিপি কিন্তু বাবুর্চিরা দিতে চান না। তাই ঘরেই যতই রান্না করুন না কেন, ঠিক যেন বাবুর্চির হাতের স্বাদ মেলে না।

চিন্তা নেই, এখন থেকে আপনার রান্না মেজবানি মাংসও হবে ঠিক বাবুর্চিদের মতই। কেননা আমি নিয়ে এসেছি সেই দারুণ সহজ রেসিপি। এই রেসিপিতে আপনি সহজেই আনতে পারবেন সেই অসাধারণ সুস্বাদ।

উপকরণ:

গরুর মাংস ২ কেজি (ছোট টুকরা করে ভালো করে ধুয়ে পানি ঝড়িয়ে নেয়া)

২ কাপ পেঁয়াজ কুচি করা। ও ১ কাপ পেঁয়াজ বাটা।

তেল ১/২ কাপ (সয়াবিন + সরিষার)

আড়াই টে চামচ আদা বাটা

দেড় টে চামচ রসুন বাটা

১ চা চামচ করে শাহি জিরা ও ধনিয়া গুঁড়া।

১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া

ঝাল বিহীন স্পেশাল শুকনা মরিচ গুঁড়া ৩-৪ টে চামচ বা পরিমান মতো (আমি এখানে কাশ্মিরি শুকনা মরিচ গুঁড়া ব্যবহার করেছি। এটায় ঝাল কম হয়ই বাট কালার টা অনেক সুন্দর হয়। চট্টগ্রামে ব্যবহার করা হয় মিষ্টি মরিচ গুঁড়া। )

৮-১০ টা কাঁচা মরিচ (বা নিজের পরিমাণ মতো)

১ টে চামচ চিনি

৩/৪ টা তেজ পাতা।

৪/৫ টা ভাজা আলু (ইচ্ছা। আপনি খেতে চাইলে দিতে পারেন)

মেজবানি মাংস স্পেশাল মশলা:

২-৩ টা এলাচ,

২ টুকরা দারচিনি (১” সাইজ),

৪-৫ টা লবঙ্গ,

১/৮ পরিমাণ জায়ফল,

১/২ চা চামচ জয়ত্রি,

গোলমরিচ ৫-৬ টা,

১/২ চা চামচ পোস্তদানা সব একসাথে পানি দিয়ে বেটে পেস্ট করে নিতে হবে।

প্রনালি:

  • -পেঁয়াজ কুচি, চিনি ও তেজপাতা ছাড়া বাকি সব উপকরণ মাংসের সাথে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রাখতে হবে
  • -একটা পাত্রে তেল দিয়ে পেঁয়াজ ও তেজ পাতা দিয়ে হালকা লাল হওয়া পর্যন্ত ভাজতে হবে।
  • -ভাজা হয়ে গেলে এবার মাখান মাংস দিয়ে কিছুক্ষণ কষাতে হবে। ৪-৫ মিনিট।
  • -এবার বেশি করে পানি দিয়ে ঢেকে দিন। অল্প আঁচে রান্না করতে হবে। ১ ঘণ্টার মতো।
  • -রান্না করার সময়ই ঢাকনা টা ভালো করে সিল করে নিতে হবে।
  • -হয়ে গেলে নামানর আগে ভাজা আলু দিয়ে দিন।

মনে রাখুন

  • -সব মশলা ভালো করে পেস্ট করতে হবে।
  • -মাংস ভালো করে পানি ঝড়িয়ে নিতে হবে।
  • মাংসের পিস ছোট ছোট হতে হবে।
  • -সবচেয়ে জরুরি রান্নার পাত্রের ঢাকনা অবধাকনা ভাল করে সিল করে নিতে হবে। ও অল্প জ্বালে রান্না হবে।

 

লা রিভে বর্ণিল পোশাক

বাংলাদেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ড লা রিভের শো রুম ও ওয়েবসাইটে এসেছে বর্ণিল সব পোশাক। ছোট বড় সবার জন্য নানা রঙের ও নানা ধাঁচের পোশাকে সেজেছে খ্যাতনামা এই পোশাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। লা রিভের শোরুমে রয়েছে নানা রকম পোশাকের পাশাপাশি ফ্যাশনের নানা অনুষঙ্গও।

হালে নারীদের পোশাক মানেই একটু লম্বা ঝুলের ও বৈচিত্রময় রঙের সমাহার। আর সেই কথা মাথায় রেখেই ঈদুল আজহায় লা রিভ নিয়ে এসেছে বৈচিত্রময় ডিজাইনের সব টিউনিক। হালফ্যাশনের ‘ট্রেইল কাট টিউনিক’, ‘শার্ট স্টাইল লং টিউনিক’ ছাড়াও রয়েছে এশিয়ান টিউনিকে ফিউশনসহ ওয়েস্টার্ন ডিজাইনের নানারকম টিউনিক। রয়েছে ঐতিহ্যবাহী প্রিন্স কাটের স্টাইল টিউনিকও।

আরো আছে দুই লেয়ারের টিউনিক ডিজাইন। লা রিভের এবারের আয়োজনে ওই ডাবল লেয়ার টিউনিকগুলোতেই আরো একটি লেয়ার ব্যবহার করা হয়েছে, যা পোশাকে এনেছে আরো অভিজাত ভাব।

লম্বালম্বিভাবে কাটা স্লিট টিউনিক হালের ফ্যাশন দুনিয়ার অন্যতম অনুষঙ্গ। পোশাকের সামনে অথবা পাশ থেকে চেরা এই টিউনিকগুলো পালাজ্জো অথবা স্কার্টের সঙ্গে সমানভাবে পরা যায়। কিন্তু এবার শুধু টিউনিকেই নয়- সালোয়ার কামিজ, দোপাট্টায় এই স্লিট কাট নিয়ে এসেছে লা রিভ। এগুলো টপ, হারেম ও পালাজ্জোর সঙ্গে মানানসই।

নারীদের পোশাকের রঙে এবার আনা হয়েছে অভিনব বৈচিত্র। সবুজ, সোনালী, গাঢ় সামরক সবুজ, আইভরি, সরিষাদানা, শরতের কমলা রঙ, দারুচিনির বাদামি রঙ, নীল এবং কার্নিশনসহ নানা রঙের পোশাকে সেজেছে লা রিভের শো রুমগুলো।

লা রিভে ছেলেদের ঈদের পোশাকে ৭০ দশকের বিমূর্ত ও ঐতিহ্যবাহী ফ্যাশন ফিরিয়ে আনার প্রয়াস চালানো হয়েছে। পাঞ্জাবি বিশেষ করে সেমি ফিট, রেগুলার ফিট, জাকুয়ার্ডস এবং বিশেষ বিভিন্ন পাঞ্জাবিতে পুরোনো ফ্যাশনগুলোর আধুনিকায়নকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শার্ট ও টি-শার্টেও আরামদায়ক ও উন্নতমানের ফেব্রিকের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী পোশাকের ধারণা ফিরিয়ে আনার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।

শিশুদের জন্য লা রিভে বরাবরই ঈদে জমকালো আয়োজন থাকে। ১ থেকে ১৩ বছর বয়সি শিশুদের জন্য আধুনিক ও আরামদায়ক পোশাক পাওয়া যাবে সঠিক দামে। রয়েছে সদ্যজাত শিশুর জন্যও ঋতুভেদে আরামদায়ক নানা পোশাক।

ছেলে শিশুদের ঈদের পোশাক পাঞ্জাবিতে গাড় রঙের বৈচিত্রপূর্ণ কাজ করা হয়েছে। ছোট মেয়েদের জন্য পোশাকে প্রিন্ট ও বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের পোশাকের পাশাপাশি আধুনিক ফ্লোরাল ডিজাইনের ফ্রক, সালোয়ার কামিজ, দোপাট্টা ও ঘাগড়া চোলি পাওয়া যাচ্ছে। এসব পোশাকে বরাবরের মতোই কটন ও সিল্কের পোশাক তো থাকছেই সঙ্গে নানা রঙ ও ঢংয়ের পোশাকগুলো লা রিভের শিশুদের পোশাকে এনেছে বৈচিত্র। শোরুম ছাড়াও রয়েছে অনলাইনে পোশাক কেনার সুবিধা। ওয়েবসাইট: www.lerevecraze.com।

 

ঘর গোছানোর দরকারি টিপস

সবচেয়ে প্রশান্তির জায়গা হচ্ছে ঘর। একটি সাজানো পরিপাটি ঘর নিমিষেই আপনার মন ভালো করে দিতে পারে। বাড়িতে যারা থাকেন প্রত্যেকেরই দায়িত্ব থাকার জায়গাটি সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা। ঘর গোছানোর সময় খেয়াল রাখবেন যার ঘর গোছাচ্ছেন তার রুচি এবং পছন্দ সম্পর্কে। প্রতিদিন একটু একটু করে গোছানো যদি আপনার পক্ষে সম্ভব না হয় তাহলে পর পর কয়েক দিন ছুটি আছে এমন দিন বেছে নিন। কাজ ভাগ করে নিন।

সব একবারে পরিষ্কার বা গোছাতে যাবেন না। সব কিছু রাখার নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দিন যাতে আপনার স্বামী এবং সন্তানরা তাদের প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে সবকিছু পায়।

অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আলমারির একেবারে পেছনে রাখুন। যাতে অফিসে যাওয়ার সময় কাজের জিনিসগুলো হাতের কাছে পান। মনে রাখবেন বাইরে যান বলে ঘর গোছানোর সময় পান না এই অজুহাতটা কিন্তু ঠিক নয়।

জামাকাপড় যেখানে-সেখানে ফেলে না রেখে ওয়ারড্রবে ঢুকিয়ে রাখুন। ভাঁজ করে রাখবেন। ব্যবহারের পর যেখানকার জিনিস সেখানেই রেখে দিন। বই পড়া হয়ে গেলে বুক শেলফে সাজিয়ে রাখুন, রান্না হয়ে গেলে মশলাগুলো ক্যাবিনেটে রেখে দিন।

প্রতিটি ঘরে ছোট একটি ডাস্টবিন রাখুন। বাথরুমে রাখুন ওয়াল হ্যাঙ্গার। এর মধ্যে সব দরকারি জিনিস ভরে রাখুন। রান্না ঘরেও ব্যবহার করুন ড্রয়ার। এতে মশলার কৌটা, বাসনপত্র রাখুন। আর এ কাজগুলো নিয়মিত করলে দেখবেন আপনার ঘর সব সময়ই গোছানো লাগছে।

বাড়িতে যার যে জিনিসটার প্রয়োজন, সে সেই জিনিসটা হাতের কাছে রাখুন। নিজের ব্যবহার করা জিনিস অন্যের হাতের কাছে না রাখাই ভালো। এতে করে সবাই সবার ঘর গোছাতে সহায়ক হবে।

ঝটপট ঘর বসার ঘরটা গোছাতে সোফার কুশনগুলো সাজিয়ে ফেলুন সঙ্গে কুশন কভারগুলো বদলে দিতে পারেন। আপনার নিজের বেডরুমটিও চট করে গুছিয়ে ফেলুন। বিছানায় নতুন চাদর লাগান, বালিশের কভারগুলো বদলে দিন।

ঘর পরিষ্কার করা শেষে এয়ারফ্রেশনার স্প্রে করে দিন, ফুলদানির আগের ফুলগুলো ফেলে নতুন ফুল রেখে দিন।

 

স্টেইনলেস স্টিলের বেসিন ব্যবহারে মৃত্যু ঝুঁকি!

রান্নাঘরের সিঙ্ক বা বেসিন মানেই ময়লা এবং জীবাণুদের বাসা, প্রতিটি বর্গক্ষেত্র ইঞ্চিতে ১৮ হাজার ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই তথ্য নতুন নয় বা বিস্ময়কর নয়, কারণ সেখানে ময়লা ধোয়া হয়।

কিন্তু নিউ সায়েন্টিস্টে প্রকাশিত তথ্যানুসারে, বেসিনে আপনি কি ফেলেন, সেটাই কেবল স্বাস্থ্য উদ্বেগের একমাত্র কারণ নয়।

চীনামাটির অথবা তামার বেসিনের তুলনায় স্টেইনলেস স্টিলের বেসিন নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে- লেজিওনাইরেস রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই সমস্যাটি তখন শুরু হয় যখন স্টেইনলেস স্টিলের সিঙ্কের ওপরের নিরাপদ আস্তরণ ক্ষয়ে যাওয়া শুরু হয়, ফলে সম্ভাব্য এই মারাত্মক রোগের জন্য একটি আদর্শ কারণ তৈরি করে।

মায়ো ক্লিনিকের মতে, লেজিওনাইরেস রোগের উপসর্গগুলো মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, শরীর ঠান্ডা এবং উচ্চ জ্বর হিসেবে শুরু হয় এবং দিন দিন বাড়তে থাকে যার সঙ্গে যুক্ত হয় কাশির সঙ্গে রক্ত, শ্বাস প্রশ্বাসে দুর্বলতা, বুকের ব্যথা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা এবং স্নায়বিক পরিবর্তন।

লেজিওনাইরেস রোগ প্রতিরোধে উইলকো ভ্যান ডের লুগ্টের তত্ত্বাবধানে একটি গবেষণায় গবেষকরা, বিভিন্ন ধরনের বেসিনের কলে লেজিওনেলা অ্যানিসা ব্যাকটেরিয়া ছাড়া এবং এই ব্যাকটেরিয়া সহ পানি পরীক্ষা করে। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, স্টেইনলেস স্টিলের বেসিনের কল এই ব্যাকটেরিয়ার বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে উর্বর পরিবেশের সৃষ্টি করে। পরীক্ষায় লেজিওনাইরেস রোগের ৫০ শতাংশ ঝুঁকি পাওয়া গেছে। স্টেইনলেস স্টিলের নিরাপদ আবরণ ক্ষয় হয়ে যাওয়ার পর মরচে পড়ে এবং এই মরচে লেজিওনেলা অ্যানিসা ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

 

৫ দিনব্যাপী অনলাইন মেলা

প্রথমবারের মতো ই-কমার্স শপ অর্থাৎ অনলাইনের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে এক ছাদের নিচে শুরু হচ্ছে, বাংলাদেশ অনলাইন ফেয়ার ২০১৭। রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের হোয়াইট হলে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া ৫ দিনব্যাপী এই মেলা চলবে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

১৭ সেপ্টেম্বর রোববার, সকাল সাড়ে দশটায় মেলার উদ্বোধন করবেন প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার। মেলায় মোট ৫০টি ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলার আয়োজক বাংলাদেশ অনলাইন বিজনেস ফোরাম।

মেলাতে থাকছে দেশি ও বিদেশি কাপড়, কসমেটিক্স, জুয়েলারি, মেন্স কালেকশন, ফার্নিচার, লেদার প্রোডাক্ট। আরো থাকছে হ্যান্ডিক্রাফটের দারুণ সব ক্রিয়েটিভ আইটেম। বাচ্চাদের জন্য থাকছে কিডস কালেকশন।

মেলা জমজমাট করার জন্য আয়োজক প্রতিষ্ঠান থেকে নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কেনাকাটায় ৫% থেকে শুরু করে ৫০% পর্যন্ত ছাড়। ৩০০ টাকার পণ্য কিনলে মেয়েদের জন্য থাকছে ফ্রি মেহেদী। ১০০০ টাকার একটি পণ্য কিনলেই মিলবে ৫০-৮০ টাকার একটি ফ্রি ফুড কুপণ। এই কুপণটি দিয়ে মেলার যেকোনো ফুড স্টল পছন্দের ফুড খাওয়া যাবে। থাকছে ফ্রি ফটোশুটের সুবিধা।

অস্বাভাবিক যৌনাচার আমাদের কি ক্ষতি করছে

কোথায় অধিকার কোথায় অধিকার

প্রচুর কেইস স্টাডি করতে হচ্ছে। আমি ব্যাপারটা এনজয় করি, কিন্তু খুব কষ্ট লাগে… ভাবি, মানুষ যে কেন এমন হয়…।
জিনিসটা দামী, সুন্দর, দুর্লভ, মনোমুগ্ধকর হতে পারে কিন্তু জিনিসটা ত আমারই সম্পত্তি, কেউ ত নিয়ে যাচ্ছেনা। আমারই ত! আমি ত যখন চাই এটা হাতে নিয়ে দেখতে পারি, ব্যবহার করতে পারি যেভাবে চাই সেভাবে, কেউ ত আরা করার নেই।
পুরুষেরা এটা ভুলে যায় যে, একজন মানুষকে কখনো সম্পত্তি বানানো যায়না, দখল করা যায়না, একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা যায়না। একজন মানুষকে প্রতিদিন নিজের করে নেওয়ার জন্য ভালোবাসা দিয়ে যত্ন করতে হয়। যতদিন এই চেষ্টা থাকে, ততদিন বন্ধন থাকে। এছাড়া যেটা কাগজে থাকে, সেই কাগজ সামাজিকতা ছাড়া আর কী?

নারীদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ঘটনা এমন যে, যখন তারা নিজেকে একেবারে সমর্পণ করে দেয়, খুব বেশি নির্ভর করতে শুরু করে সঙ্গীর উপর, তখন কেন জানি পুরুষেরা তাদের উপর আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে… কিংবা এই নারীটিকে তার অর্জন করা হয়ে গেছে ভেবে শো’কেসে(পড়ুন ঘরে) ফেলে রাখে(ব্যতিক্রম ভিন্ন কথা)। কখনো দরকারে ব্যবহার করে, কিন্তু তার প্রতি আকর্ষণ আর সেভাবে বোধ করেনা।

আর পুরুষদের ব্যাপারটা আরো কষ্টকর… আমার খুব কষ্ট হয়েছিল আক্ষরিক অর্থেই। সামাজিক ভাবে অনেকরকম স্ট্রাগল তাদেরকে করতে হয়। কিন্তু এই সময়ে তারা যে কতকিছুর মধ্য দিয়ে যায়, কতটা মানসিক শক্তি থাকতে হয়, কতকিছু মুখ বুঝে মেনে নিতে হয় আর পুরুষ বলে সেটা কখনওই প্রকাশ করতে পারেনা এই পুরুষ শাসিত সমাজে, যেখানে পুরুষের দূর্বলতা থাকতে নেই, সেটা গভীরে না গেলে দেখা সম্ভব না।
নারীদের সমস্যাগুলো আমরা জানি। তারা বলার জায়গা পেলে বলে। কিন্তু এই সমাজে একজন পুরুষ প্রায় কিছুই বলতে পারেনা যা তার গোটা জীবন জুড়ে ঘটে যাচ্ছে। কারণ তাকে বলতে দেওয়া হয়না। তার বলার নিয়ম নেই।।

আমাদের সমস্যা কি
আমাদের সমস্যা কি

আরেকটা জিনিস কি জানেন, এই বাংলাদেশে, এই মুসলিম প্রধান ও রক্ষণশীল চিন্তাধারার দেশে, যেখানে যৌন বিষয়গুলো একটা নির্দিষ্ট গন্ডির ভেতরে আবদ্ধ রাখার অলিখিত আইন আছে, সেখানে প্রায় ৯০% বা তারও বেশি মানুষের সমস্যাগুলো যৌনতা বিষয়ক।
আপনি কথা বলার সুযোগ দেন প্রপারলি, দেখবেন কি ভয়ংকর এক মহামারী এই সমাজের ভেতরটা নিঃশব্দে খেয়ে শেষ করে ফেলেছে অথচ আপনি টেরও পাননি।

না বলা কথা না বলা কথা

যৌনতার সমস্যা বলতে কেবল, বিবাহ বহির্ভূত বা বিবাহপূর্ব ব্যাভিচার নয়, অস্বাভাবিক ও চরম বিকৃত যৌনজীবন চর্চাকারী একটি অসুস্থ সংস্কৃতি সবার অলক্ষ্যে গড়ে উঠছে।
কিভাবে গড়ে উঠছে তা আপনি আমি দেখছিনা, তাকাচ্ছিনা, অংশগ্রহণ করছিনা বলে আমি আপনি মুক্ত হয়ে যাচ্ছি তা না। বরং এই যে আপনি এই লেখাটায় “যৌনতা” শব্দটা দেখে অস্বস্তি বোধ করছেন, এই ব্যাপারটাও এসব অস্বাভাবিকতাগুলোকে স্পেস দিচ্ছে।

আপনি হয়ত অভ্যস্ত না, কিন্তু আপনি এই অসুস্থ সমাজেরই একটা অংশ। আর নগরে আগুন লাগলে, সে আগুন মসজিদ-মন্দির আলাদা করেনা, হিন্দু বা মুসলমান বুঝেনা।
ধরুন আপনি একজন অভিভাবক। আপনার ছেলেকে শহরে পাঠিয়েছেন উচ্চশিক্ষার্থে। আপনি কি কল্পনাও করবেন, আপনার আদরের ছোট্ট ছেলেটি, প্রাপ্তবয়স্ক একজন যুবক হওয়ার পরেও একই পরিবারের মা ও মেয়ের ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার হয়ে প্রতিদিন উভয়ের দ্বারা ধর্ষিত হতে হতে ক্লান্ত হয়ে আত্মহত্যার কথা ভাবছে?
ভাবনার বিষয় ভাবনার বিষয়

সেক্স এডুকেশনের প্রয়োজন আছে কিনা, থাকলে সেটা কিভাবে, কখন, কার মাধ্যমে, কোন বয়সে সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। সেটা উঁচুতলার আলোচনা। কিন্তু আপনার সন্তান, তার ব্যাপারে আপনাকে ভাবতে হবে। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, যৌনতা তিনটি সমান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সমাজ তৃষ্ণা মেটাতে অসংখ্য স্বাদের পানীয়, ক্ষুধা মেটাতে অগণিত রেস্তোরাঁয় অফুরন্ত খাবার অফার করছে, যৌনতার ক্ষেত্রে কিছুই অফার করছেনা ভাবছেন? আপনি নাক সিটকালে বা চোখ ফিরিয়ে নিলে এটা বিলুপ্ত হয়ে যায়না।
সচেতন হোন। প্লিজ।

মানুষ বুঝা মানুষ বুঝা

আর আমরা, এগিয়ে যাওয়ার অংশ হিসাবে নারীদেরকে স্বনির্ভর করছি, সুযোগ দিচ্ছি, নিজে নারী হিসাবে সে সুযোগ আমিও নিচ্ছি, তা পাচ্ছি বলে। কিন্তু পুরুষের সুযোগ সংকুচিত করে নারীকে প্রাধান্য দেওয়া হোক তা আমি চাইবো না। এই সমাজে মানুষ রুপী পশু হিসাবে বেড়ে ওঠা পুরুষদের আপনি আমিই তৈরি করছি। তাকে স্বাভাবিক আবেগ, স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য প্রকাশে বাধা দিয়ে, তার আবেগকে তাচ্ছিল্য করে, তাকে আরো আরো আরো পুরুষালি হতে বাধ্য করে ও অনেক স্পর্শকাতর স্থানে ক্রমাগত বঞ্চিত করে পাশবিক এক সত্তা তার মধ্যে বেড়ে উঠতে ও তাকে মানবীয় অনুভূতি বুঝতে অক্ষম এক জন্তু হিসেবে গড়ে উঠতে বাধ্য করছি। আর তার উপরে আরো চাপিয়ে দিচ্ছি এক্সপেকটেশনের বিশাল বোঝা। আর এভাবেই বেঁচে থাকতে থাকতে একজন অমানুষের মত আচরণ করা ব্যক্তি বুঝতেই পারেনা তার আচরণটা গ্রহণযোগ্য নয়। আপনি এগুলো নিয়ে ভাবতে চান না? এছাড়াও আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে? আছে। কিন্তু বাসে আপনার বা আপনার স্ত্রী, বোন বা কন্যা সন্তানের পায়ের সাথে পা ঘষতে থাকা ব্যক্তিটিকে আপনি কিভাবে শায়েস্তা করবেন? সে না থাকলে আরেকজন, নইলে আরেকজন, নইলে আরেকজন তার জায়গা পূরণ করবে। কিন্তু যে মেয়েটির স্পর্শকাতর অঙ্গে স্পর্শ করা হয়েছে বলে সে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা গোসল করে আর চিৎকার করে কাঁদে, তাকে স্বাভাবিক জীবন আপনি কিভাবে ফিরিয়ে দেবেন? স্পর্শকারীকে ফাসি দিয়ে?
অতি আধুনিকতা ও অতি রক্ষণশীলতা একত্রে গিলতে গিয়ে এই সমাজের বদহজম হচ্ছে।

শিক্ষা দরকার শিক্ষা দরকার

যৌনতার ব্যাপারগুলোকে আপনি কিভাবে দেখবেন আপনার ব্যাপার, কিন্তু বাথরুম সাফ করতে ঘেন্না লাগে বলে পুরো ঘর পরিষ্কার করলেন বাথরুম ছাড়া, কি লাভ? বাথরুমে স্যার/ম্যাম, আপনাকে যেতেই হবে। আর অপরিচ্ছন্ন বাথরুম ব্যবহার করলে পরে রোগবালাইও আপনারই হবে।

সুমাইয়া তাসনিম
সাইকোলজি

 

শিশুর সুস্থভাবে বিকাশে আপনার সচেতনতা

নতুন একটা মানব শিশুর সাথে সাথে জন্ম হয় নতুন বাবা মারও। সুন্দর আর সুস্থ পরিবার গঠন করতে হলে মার ভূমিকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ বাবার ভূমিকাও। সুতরাং সন্তানদের লালন পালনের দিকে খেয়াল রাখা উভয়েরই দায়িত্ব। দায়িত্ব ভাগাভাগি করার সুযোগ থাকলে উভয়ের বন্ধনের জন্যে খুব ভাল। আর যেহেতু বাবা উপার্জনের জন্য অধিকাংশ সময় বাইরে থাকেন তবুও যতটুকু কাজে সহযোগিতা করা সম্ভব। সন্তানের দায়িত্ব সবার।

শিশুর জন্মের সাথে জন্ম নেয় নতুন মা বাবা শিশুর জন্মের সাথে জন্ম নেয় নতুন মা বাবা

মা বাবার চিন্তার ধারার পরিবর্তন প্রয়োজন। আপনার শিশুটির সঠিকভাবে লালন-পালন বা বিকাশের জন্য কেবল,দুই ঘন্টা পর পর খাবার,একটি আরামদায়ক বিছানা আর ঘর ভর্তি খেলনা প্রয়োজন নয় বরং এগুল আপনার পোষা প্রাণীর জন্য যথেষ্ট। কারণ তার মানসিক বিকাশ বা আবেগীয় বুদ্ধির প্রয়োজন নেই। কিন্তু আপনার শিশু সন্তানের মানসিক বিকাশ বা আবেগীয় বিকাশের প্রয়োজন আছে,বরং সন্তানের প্রয়োজন অনেক কিছু আরও অনেক বিষয়।

কার্যকরী কিছু পদক্ষেপ কার্যকরী কিছু পদক্ষেপ

♦♦♦ কিছু পদক্ষেপ আমাদের শিশুদের সঠিক বিকাশে ভুমিকা রাখতে পারে,

♣কোলে বসানো:
খেয়াল করুন, আপনার শিশুকে কারো কোলে বসতে দিবেন আর দিবেন না।

♣কাপড় পাল্টানো:
সন্তানের বয়স দু’বছরের বেশী হলেই তার সামনে আর আপনি কাপড়চোপড় পাল্টাবেন না।

♣অন্যের কমেন্ট যাচাই করুন:
প্রাপ্ত বয়স্ক কেউ আপনার শিশুকে উদ্দেশ্য করে বলছে: ‘আমার বৌ’, ‘আমার স্বামী’- এটা অ্যালাউ করবেন না।

♣খেলার ধরণ খেয়াল করুন:
আপনার শিশু যখন বলছে সে খেলতে যাচ্ছে, কোন্ ধরণের খেলা সে খেলছে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন, উঠতি বয়সি বাচ্চাদের মধ্যে অ্যাবিউজিং প্রবণতা পাওয়া যাচ্ছে।

♣স্বাচ্ছন্দ্যবোধ এবং ভক্তদের সম্পর্কে জানুন: স্বাচ্ছন্দবোধ করছে না এমন কারো সাথে কোথাও যেতে আপনার শিশুকে জোরাজুরি করবেন না। পাশাপাশি লক্ষ্য রাখুন, আপনার শিশু বিশেষ কোন প্রাপ্ত বয়স্কের ভক্ত হয়ে উঠেছে কিনা।

♣বাচ্চার পরিবর্তন লক্ষ্য করুন:
দারুণ প্রাণচ্ছল কোন শিশু হঠাৎ নির্জিব হয়ে গেলে, তাকে প্রশ্ন করুণ। তার মনের অবস্থাটা পড়তে চেষ্টা করুণ।

♣যৌনমূল্যবোধ সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা:
বয়:সন্ধি পেরোচ্ছে এমন বাচ্চাকে যৌনমূল্যবোধ সম্পর্কে শিক্ষা দিন। আপনি যদি এ কাজ না করেন, তবে সমাজ তাকে ভুল টা শিখিয়ে দেবে।

♣কার্টুন, ছবি আর বই গুলতে কি দেখে:
কোন ছবি, কার্টুন ইত্যাদি বাচ্চাদের জন্য আনলে আগে তা নিজে দেখুন। কোন বই সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই তা কোমলমতি সন্তানের হাতে দিন।

♣বাচ্চাদের দিকে নজর দিন:
আপনি নিশ্চিত হন যে আপনি প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অপশন অ্যাক্টিভেট করে রেখেছেন কেবল নেটওয়ার্কে, বিশেষ করে সেই সমস্ত নেটওয়ার্কে যেখানে আপনার শিশু প্রায়শই ভিজিট করে।

♣বাচ্চাদের প্রযোজনীয় বিষয় শেখান:
তিন বছর বয়স হয়েছে এমন সন্তানকে তাদের ব্যক্তিগত গোপন স্থানসমূহ কিভাবে পরিস্কারপরিচ্ছন্ন রাখতে হয় তা শেখান। সতর্ক করে দিন যেন সেসব এলাকা কেউ স্পর্শ করতে না পারে- নিষিদ্ধদের মধ্যে আপনিও আছেন (মনে রাখবেন চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম এ্যান্ড উইথ ইউ)।

♣নিরবে তালিকাভুক্ত করুন:
কালো তালিকাভুক্ত করুণ সেই সব বই, গান, মুভি, পরিবার বা ব্যক্তিকে- আপনি মনে করেন যে বা যা আপনার শিশুর মনের সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারে।

♣নিজের সন্মান বুঝান:
আপনার শিশুকে ভিড়ের বাইরে গিয়ে দাড়ানোর মূল্যবোধ শেখান।

♣অভিযোগ আমলে নিন:
আপনার শিশু যদি কারো সম্পর্কে অভিযোগ করে তবে দয়া করে বিষয়টি নিয়ে মুখ বুজে থাকবেন না।

মনে রাখবেন, আপনি হয়ত বাবা মা হয়েছেন দু’দিন আগে,বুঝে উঠতে সময় নিচ্ছেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন, যে কোন ব্যথাই কিন্তু সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়.।
আপনার সচেতনতা আপনার পরিবারের নিরাপত্তা।

চল এগিয়ে যাই সামনে চল এগিয়ে যাই সামনে

 

চুল সাজে ঝুঁটিতে

কোরবানি ঈদ মানেই নানা কাজের ঝক্কি-ঝামেলা। এর মাঝে তো সাজটাও ঠিক রাখা চাই। ঈদের দিন নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার নানা আয়োজনের মাঝে চুলের সাজ অন্যতম। ঈদের দিন সকালে হালকা সাজ হিসেবে চুলে ঝুঁটি করার পরামর্শ দিলেন রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা মুন্নি। তিনি বললেন, এখন যেহেতু দিনের বেলা বেশ গরম থাকে এবং ঈদের দিন বিভিন্ন রকমের কাজ থাকে, সে জন্য যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই ঝুঁটি হতে পারে আরামদায়ক এবং স্টাইলিশ একটি সমাধান।

স্টাইলিংয়ের আলাদা কোনো বয়স বা সময়সীমা নেই, তাই ঝুঁটি করতে পারেন যে কেউই। হালকা সাজের জন্য সামনের চুলগুলোতে একটু বেণি করে পেছনে টেনে ঝুঁটি করা যেতে পারে। আবার পাশে সিঁথি টেনে সামান্য টুইস্ট করেও চুলে স্টাইলিশ ঝুঁটি বাঁধতে পারেন।

অপরদিকে, যাঁদের সামনের চুল ছোট অর্থাৎ চুলে ব্যাংগস কাট, লেয়ার অথবা ফ্রেঞ্চ কাট দেওয়া, তাঁরা সামনের চুলগুলো খোলা রেখে পেছনে একটু ওপর করে ঝুঁটি করতে পারেন। তবে কেউ যদি সামনের চুলগুলো খোলা রাখতে না চান, সে ক্ষেত্রে হালকা মুজ দিয়ে সামনের চুলগুলো আটকাতে পারেন। মাঝারি ধাঁচের চুলের সঙ্গে মেসি পনিটেইল এবং কেউ যদি চান সাধারণভাবে ঝুঁটি করে সেটা ফোল্ড করে বাঁধতে পারেন।

শুধু ঘরে নয়, বেড়াতে গেলেও একইভাবে ঝুঁটি করে বের হতে পারেন যে কেউ। যেকোনো দাওয়াত কিংবা পার্টিতেও চুলের ঝুঁটি দিতে পারে ভিন্ন লুক। এমনকি শাড়ির সঙ্গে যে কেউ চুলে ঝুঁটি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে ব্লাউজের গলার কাট কেমন। তবে যাদের কাঁধ ভারী, তাঁদের জন্য পনিটেইল না করাই ভালো, হালকা গড়নের যে কেউই শাড়ির সঙ্গে ঝুঁটি করলে তা সুন্দরভাবে মানিয়ে যাবে।

 

চা পান করেই পাবেন পরিষ্কার ত্বক

চা আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি পান করি। অনেকে আবার একটু বেশিই পান করে। সকালে উঠে এক কাপ চা দিয়ে দিনটা শুরু না হলে কেমন একটি ফিকে ব্যাপার হয়ে যায়।

কিন্তু আপনি কি জানেন, এই চাতেই লুকিয়ে রয়েছে আপনার ত্বকের সৌন্দর্য।

পরিস্কার ও উজ্জ্বল ত্বক দেবে যেসব চা
ক্যামোমাইল টি: এই ধরনের চায়ে কুয়েরসেটিন নামক উপাদান রয়েছে, যা চোখের ক্লান্তি দূর করে, ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। অনিদ্রা প্রতিরোধ করে। ক্যামোমাইল টি ব্যাগ চোখের উপরে কিছুক্ষণ রেখে দিলেই এই সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

জ্যাসমিন টি: এটি অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল। ত্বকের ব্রণ সারাতে সাহায্য করে। ত্বক উজ্জ্বল করে তোলে। ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে।

গ্রিন টি: অতি মাত্রায় সূর্যালোক ত্বকে ক্যানসারের সম্বাবনা বাড়িয়ে তোলে। গ্রিন চা ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। ত্বকের বলিরেখা এবং রিঙ্কলস দূর করে। নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে।

ব্ল্যাক টি: এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট রয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে।

আদা চা: পেটের সমস্যা হলে ত্বকে তার প্রভাব পড়ে। আদা চা হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে। ফলে ত্বক পরিষ্কার থাকে।

পিপারমিন্ট টি: তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই চা খুবই উপকারি। ত্বকে অতিরিক্ত তেলের উৎপাদন কমায়। মৃত কোষকে ত্বকের উপর থেকে সরিয়ে নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে।

হোয়াইট টি: গ্রিন টি-র থেকেও অনেক বেশি অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট রয়েছে এতে। ত্বকের ম্যাট্রিক্স মেটালোপ্রোটিনেজ মাত্রা কমিয়ে ত্বকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

কম্বু চা: ত্বকে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ত্বককে টানটান করতে সাহায্য করে। সানবার্ন দূর করে।

ম্যাট চা: জাপান থেকে এই চা এসেছে। এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। খাওয়ার পাশাপাশি ম্যাট চা পাউডার ত্বকে প্যাক হিসাবে লাগাতেও পারেন।

সূত্র: জিনিউজ।

 

এফডিসির জোছনা বেগম

খাবারের দোকানের ক্যাশ কাউন্টারে বসে আছেন শান্ত। সাইনবোর্ডবিহীন এই দোকানের নাম জানতে হলো শান্তর কাছ থেকে—‘হালিম হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। শান্তর সামনের বেশ কয়েকটা টেবিল ও বেঞ্চ। সেখানে নানা বয়সী লোকজন দুপুরের খাবার খাচ্ছেন। খাওয়া শেষ করে এসে বিল মেটাচ্ছেন কেউ কেউ। খানিক পরে শান্ত উঠে দাঁড়ালেন। চেয়ার ছেড়ে দিয়ে সামনে দাঁড়ালেন। চেয়ারে বসলেন একজন মধ্যবয়সী নারী। শান্ত পরিচয় করিয়ে দিলেন—‘আমার মা’। গত বছর এইচএসসি পাস করেছেন শান্ত।

হালিম হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের অবস্থান কারওয়ান বাজার রেলগেট পার হয়ে এফডিসির পাশে গাড়ি মেরামতের গ্যারেজগুলোর পেছনে। ‘এফডিসির খাবার’ বলে খ্যাত খাবার রান্না হয় এখানে। যে তিনটি হোটেল থেকে শুটিং স্পটে খাবার যায় এবং স্থানীয়রা ‘এফডিসি’র খাবার খান, তারই একটি হালিম হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। অন্য দুটির চেয়ে এখানে খাওয়ার পরিবেশও ভালো। তাই ভিড়টা বেশ।

খেয়ে ঢেকুর তুলতে তুলতে একেকজন আসছেন আর বিল দিচ্ছেন। শান্তর মা তাই ব্যস্ত। একবার সামনের টেবিলের ড্রয়ার খুলছেন, টাকা রাখছেন। ভাংতি ফেরত দিচ্ছেন। কাস্টমার টিস্যু পেপার চাইলে সেটাও হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

দুপুর গড়িয়ে এসেছে। এফডিসির খাবার তালিকায় বড় জায়গাজুড়ে থাকা ‘কালা ভুনা’ও শেষ ততক্ষণে। হোটেলের ভিড় খানিকটা কমে এসেছে। তবে এই ফাঁকে কথা হয়েছে শান্তর সঙ্গে। পুরো হোটেলটি শান্তর মা জোছনা বেগম দেখভাল করেন। প্রায় ১৫ বছর আগে শান্তর বাবা আবদুল হালিম হোটেলটা করেছিলেন বটে, কিন্তু বছর সাতেক ধরে তিনি বিছানায় পড়ে রয়েছেন। শরীরের এক পাশ অবশ তাঁর।

ভিড় কমে এলে মুখোমুখি বসি জোছনা বেগমের। শুরু করেন শুরুর গল্প। জোছনা বেগমের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে। স্বামীর বাড়ি যশোরের কেশবপুরে। ঘটকের মাধ্যমে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। পাত্র হিসেবে আবদুল হালিমের বড় পরিচয় ছিল তিনি এফডিসির লোক। ‘এফডিসির লোক’ ব্যাপারটি পরিষ্কার করেন ছেলে শান্ত। ‘আমার বাবাকে এফডিসি এলাকার সবাই চেনেন। উনি একসময় সিনেমার প্রডাকশনে কাজ করতেন। তাই সবাই খুব পছন্দ করতেন। পরে হোটেল চালু করেছেন।’

ছেলের মুখের কথা টেনে নিয়ে জোছনা বেগম বলেন, ‘আমার বিয়ের পরে সবকিছু ভালোই চলছিল। বছর ঘুরতে ছেলে হলো। স্বামীকে সবাই চিনত বলে প্রতিদিন অনেক অর্ডার আসত। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেটা থেমে যায়।’ ততদিনে জোসনা বেগম তিন সন্তানের মা।

তারপর জমানো টাকা দিয়ে বছরখানেক স্বামীর চিকিৎসা করিয়েছেন। এই হাসপাতাল থেকে সেই হাসপাতাল। কিন্তু বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানো ছাড়া বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি। তারপর একদিন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। সংসার তো চালাতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে স্বামীর ব্যবসায় হাত দেন জোছনা বেগম।

ব্যবসার হাল ধরার শুরুর দিকে গল্পগুলো মনে করে বলেন, ‘শান্তর বাবা অসুস্থ হওয়ার পর হোটেলের কর্মচারীরা সবাই চলে যায়। কারণ, তাদের তো আর বসে বসে বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। বছরখানেক পরে আমি যখন নতুন করে শুরু করি, তখন তারা আরেক জায়গায় কাজ নিয়েছে। তাই নতুন নতুন কর্মচারী নিয়োগ দিতে হয়েছে। প্রচার করতে হয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে এগোচ্ছি।’

জোছনা বেগমের অধীনে এখন ১১ জন নিয়মিত কর্মী রয়েছেন এই দোকানে। তাঁদের কেউ বাজার করেন, কেউ রান্না, আর কেউ শুটিং বাড়িতে খাবার পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করেন।

জোছনা বেগম বললেন, ‘এফডিসির খাবারের আলাদা কদর আছে সবার কাছে। এ কারণে আমাকেও বাড়তি খেয়াল রাখতে হয়। সকালে বাজারটা যেন ভালো হয়। রান্নাটা যেন ভালো হয় এমনকি পরিবেশনটাও যেন সুন্দর হয়।’

তাহলে সংসার?

‘সেটাও আমি দেখি। কাছেই বাসা। তাই সকালে রান্না বসিয়ে দিয়ে চলে যাই। দুপুরে এসে শুটিং বাড়িতে খাবার পাঠানো এবং হোটেলে আসা কাস্টমারদের খাওয়ানো দেখভাল করি। তারপর দুপুরের পর বাসায় গিয়ে বাচ্চাদের দেখাশোনা করি। বাড়তি পরিশ্রম হলেও করতে তো হবেই।’ বলেন জোছনা বেগম।

কথা বলার এক ফাঁকে শান্ত জানিয়ে রাখে, এখানে খাবারের দাম কিন্তু কম। সব প্যাকেজ সিস্টেম। ভাত, ডাল সবজি ও গরুর মাংস দিয়ে খেলে ১২০ টাকা। গরুর মাংসের জায়গায় মুরগি খেলে ৯০ টাকা এবং মাছ খেলে ৮০ টাকা। তবে অর্ডার করলে যেকোনো খাবারই রান্না করে দেওয়া হয়।

ছেলের কথা বলার ফাঁকে মা উঠে গেলেন। রান্নাঘরে গিয়ে বাবুর্চিকে বুঝিয়ে দিলেন, কীভাবে হাঁস রান্না করতে হবে। রান্নাঘরে গিয়ে ছয়টা চুলার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই হাসিমুখে জোছনা বেগম বললেন, ‘রাতে একটা হাঁস রান্নার অর্ডার আছে। সেটাই বলে দিচ্ছিলাম। রাতে তো অর্ডার ছাড়া রান্না হয় না এখানে।’

স্বামীর হঠাৎ অসুস্থতায় নিশ্চয়ই অশান্ত হয়ে গিয়েছিল জোছনা বেগমের জীবন। িকন্তু জোছনা বেগম থেমে যাননি। ব্যবসা, স্বামীর চিকিৎসা, সংসার এবং সন্তানদের মানুষ করে চলেছেন শান্তভাবেই। জীবনের অমাবস্যা নিজেই দূর করছেন জোছনা।

মানব মনের সৃজনশীলতায় মা বাবার ভূমিকা

পাশের বাড়ির ভাবী এসেছেন বাসায়। আপনার আড়াই বছরের মেয়েটিকে ওর খেলনাগুলো দিয়ে কাছেই বসিয়ে দিলেন ভাবীর মেয়ের সাথে খেলতে। গল্প করছিলেন আপনারা, হঠাত চিৎকার শুনতে পেলেন। দৌড়ে গিয়ে দেখলেন আপনার মেয়ে অতিথির মেয়েকে মারছে, তার হাত থেকে নিজের খেলনা কেড়ে নিচ্ছে। সেই সাথে সমান তালে দুইজনই চিৎকার করে কাঁদছে। অপ্রস্তুত দুই মা সাথে সাথে রিএক্ট করে ফেললেন। আপনি মেয়েকে দুইটা মার লাগিয়ে দিলেন। প্রতিবেশি ভাবীও নিজের মেয়েকে টেনে নিয়ে বকা শুরু করলেন, ওকেই দোষারোপ করতে থাকলেন। চিৎকারের মাত্রা আরো বেড়ে গেল। আপনার মেয়ে কিছুতেই নিজের খেলনা শেয়ার করতে রাজি না।

আপনার তিন বছরের একমাত্র ছেলেটি খাওয়া নিয়ে অনেক ঝামেলা করে। মুখ থেকে থু করে ফেলে দেয়, জোর করে খাওয়াতে গেলে জেদ করে হাতের কাছে যা পায় ছুড়ে ফেলতে থাকে।

আপনার দুই বছরের মেয়েটি মোবাইলে কার্টুন দেখছিল। একটা জরুরি ফোন করার জন্য হাত থেকে নিয়ে নিলেন আর সাথে সাথে শুরু হলো ছেলের চিৎকার। আপনি দিচ্ছেন না বলে একসময় মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি খেতে লাগল। কাজেই বাধ্য হয়ে ওকে থামানোর জন্য তাড়াতাড়ি কাজ সেড়ে ফোনটা দিয়ে দিলেন হাতে।

শূন্য থেকে চার বছরের নিচের বাচ্চারা আক্ষরিক অর্থেই অবুঝ শিশু। ওরা যখন জেদ করে তা হলো রাগ আর হতাশার বায়োলজিক্যাল রেসপন্স। জোরে একটানা চিৎকার করতে থাকা, উলটো হয়ে পড়ে যাওয়া, হাত পা ছুড়তে থাকা, দম আটকে কাশতে কাশতে বমি করে দেয়া – এগুলোকে টেম্পার ট্যান্ট্রাম (temper tantrum) বলা হয়। টেম্পার ট্যান্ট্রাম সাধারণত দুই থেকে চার বছর বয়সীদের মাঝে বেশি দেখা যায়। সমবয়সীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে না পারা, নিজের কিছু শেয়ার করতে না চাওয়া – এগুলোও এই বয়সী শিশুদের বৈশিষ্ট্য। এর প্রতিকার সম্পর্কে জানার আগে আসুন জেনে নেই এর কারণ সম্পর্কে।

আমাদের মানবিক আবেগ-অনুভূতির প্রকাশ ও সামাজিক আচরণ নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স (prefrontral cortex) নামের অংশ থেকে। এই অংশটি আমাদের ব্রেইনের অন্যান্য অংশের চাইতে সবচেয়ে দেরিতে ডেভেলপ হয়, এটি চার বছর বয়স থেকে পরিপূর্ণতা লাভ করতে শুরু করে। ঠিক একারণেই চার বছরের আগে শিশুদের সামাজিকতা আর মানবিক আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে ইম্যাচিওর্ড ধরা হয়। আর তাই এই বয়সে ওরকম জেদ অথবা অসামাজিক আচরণ করাটাই স্বাভাবিক।

চার বয়সের নিচের বাচ্চারা যুক্তি-তর্ক বোঝে না। চারপাশের সাধারণ ব্যাপার স্যাপার আমাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হলেও ওদের কাছে তা দশ গুন বিভ্রান্তিকর। যেমন – পানির ফিল্টারের ট্যাপ ছেড়ে দিলে কী সুন্দর করে পানি পড়তে থাকে, বড়রা কেন এতে রাগ হয় তা ওর ছোট্ট মাথায় ঢোকে না। চকলেট, চিপস, আইস্ক্রিম খেতে কি মজা! বড়রা কেন খেতে নিষেধ করে তা কি ও বোঝে? ছোট ভাইয়ার খেলনা ওর খেলতে ইচ্ছা করলে কেড়ে নিতেই পারে, এতে ওকেই কেন বকা দেয়া হবে? কার্টুন যে সময়টা সবচেয়ে বেশি মজা লাগতে থাকে, ঠিক তখনই মা আর দেখতে দেয় না! এসব কারণে জেদ করাটাই কি স্বাভাবিক না?

এই বয়সের শিশুরা যা বোঝাতে চায় বা বলতে চায় তা প্রকাশ করার সঠিক ভাষা ওর জানা থাকে না। বড়রা কি চায় তা-ও অনেক সময় বুঝতে কষ্ট হয়।

টেম্পার ট্যান্ট্রাম মূলত যে সব কারনে হয়ে থাকেঃ
ক. অনুভূতি প্রকাশের অযোগ্যতা
খ. স্বাধীনভাবে ইচ্ছেমত কিছু করতে না পারা
গ. পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকা
ঘ. ক্ষুধা, একঘেয়েমি, ক্লান্তি, বিষণ্ণতা ও অতিরিক্ত উত্তেজনা

এবার আমরা জানব এই সমস্যাগুলো কেমন করে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

১. রুটিন মেনে চলুন
প্রতিদিনের খাওয়া, ঘুম, বিশ্রাম, খেলার একটা প্রাত্যহিক রুটিন সেট করে ফেলুন। দিনের প্রত্যেকটা কাজ সময়মত হলে বাচ্চার মেজাজ ঠিক থাকে। মাথা ঠান্ডা রাখতে পারলে অহেতুক জেদ করবে না, অল্পতে কষ্ট পেয়ে অসামাজিক আচরণও করবে না। যৌথ পরিবারে রুটিন মেনে চলা মুশকিল, তবে একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু সম্ভব।

২. ব্যস্ত রাখুন, সময় দিন
আপনার শিশুর ক্ষুধা, একঘেয়েমি, ক্লান্তি, বিষন্নতা ও অতিরিক্ত উত্তেজনা এড়াতে তার প্রয়োজনগুলো যথাসময়ে পূরণ করুন। এমন রুটিন সেট করবেন না যা বাচ্চার জন্য মেনে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। বাসায় সবসময় হেলদি স্ন্যাকস, ফল ইত্যাদি রেডি রাখুন, বাচ্চার সময় কাটানোর প্রয়োজনীয় উপকরণও (খেলনা, বই ইত্যাদি) যেন হাতের কাছেই থাকে।

ঘুমানোর আগের সময়টা উত্তেজনাকর খেলাধুলা থেকে দূরে রাখুন। ওইসময় বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়লে (যেমন দৌড়ঝাঁপ করা, অতিরিক্ত দুষ্টুমি, খিলখিল করে হাসা..) সহজে বিছানায় যেতে চাইবে না।

৩. নিষেধাজ্ঞার কারনগুলো দূর করুন
“এটা ধরো না”, “ওটা নিও না” অথবা “ওখানে যেও না”, “না, এটা কোর না”… এসব কথা যেন বলা না লাগে সেই ব্যাবস্থা করুন। অর্থাৎ, বাচ্চার জন্য বিভ্রান্তিকর, বিপদজনক এমন যে কোন কিছু ওর হাতের নাগাল থেকে সরিয়ে ফেলুন। আপনি যে ওর ভালোর জন্য বলছেন তা এই বয়সে ওর বোঝার কথা না। ঘরটাকে এমন রাখুন যেন ও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে।

৪. স্বাধীনভাবে বেছে নিতে দিন
খাওয়ার সময় ওর কাছে জানতে চান কোনটা খেতে চায় – এটা নাকি ওটা? সিম্পল অপশন দিন। জামা পরানোর সময় কোন রঙ পরবে জানতে চান – নীল নাকি সাদা? কিছু ব্যাপার ওর নিয়ন্ত্রণে আছে বুঝতে দিন।

৫. “হ্যা/না” বলুন, “হয়তো/হতে পারে” নয়
অস্পষ্ট, বিভ্রান্তিকর উত্তর দেয়া দেখে বিরত থাকুন। যখন বুঝতে পারে না আপনি কী বলতে চাচ্ছেন, ও তখন রেগে যায় আর জেদ করতে থাকে। অথচ এটা প্রকাশ করতে পারে না যে সে আপনার কথা বুঝতে পারছে না। কাজেই হ্যা অথবা না, যা বলবেন স্পষ্ট করে বলবেন। যেটা হ্যা বলবেন, সেটা না যেন না হয় খেয়াল রাখবেন।

অনেক সময় বাচ্চারা আপনার মনোযোগ পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত জেদ, কান্নাকাটি করে থাকে। ওকে পর্যাপ্ত সময় দিন। খাওয়ানো, ঘুম পারানোর কাজে না, এমনি বসে একটু খেলা করুন ওর সাথে। ডাক্তারের ওয়েটিং রুমে অথবা লং জার্নিতে – এমন কোন সময় যখন দীর্ঘক্ষণ ওকে আপনার সাথে বসে থাকা লাগবে; ওর সাথে কথা বলুন, গেইম খেলুন।

এখন জেনে নেই জেদী বাচ্চাকে শান্ত করার কিছু উপায়।

১. জেদ শুরু হওয়ার সাথে সাথে, বা শুরু হতে যাচ্ছে বুঝতে পারলেই তাকে হাসানোর চেষ্টা করুন। যেমন একটা কলা নিয়ে কানে ফোনের মত ধরে হ্যালো হ্যালো করুন। তবে হাসানোর চেষ্টা করলে কিছু বাচ্চার কান্না আরো বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে অন্য পন্থা অবলম্বন করুন।

২. আপনার সোনামণির টেম্পার ট্যান্ট্রামের সময় কখনোই উলটো রাগ দেখাবেন না। গায়ে হাত তোলা বা বকাঝকা তো কখনোই নয়। ওর উপর চিৎকার না করে কোলে তুলে নিন, নরম স্বরে কথা বলুন। জানি এটা বলা যত সহজ করা ততই কঠিন। বাচ্চা যখন মাটিতে পড়ে হাত পা ছুড়তে থাকে, প্রতিবাদ করতে শ্বাস আটকে রাখে, এমন কি কোলে নিলে আপনাকে মারতে থাকে – জেনে নিন ওর বয়সির জন্য এসব স্বাভাবিক ট্যান্ট্রাম। ওই সময়টা যুক্তি-তর্ক কোন কাজে লাগবে না, ওর সাথে রাগারাগি করেও লাভ হবে না। বরং এতে জেদ আরো বাড়বে।

৩. ট্যান্ট্রাম যদি এমন পর্যায়ে থাকে যা বাচ্চার জন্য বা অন্য কারো জন্য ক্ষতিকর নয়, তাকে ইগনোর করুন। অহেতুক অনর্থক চিৎকার শুরু করলেই অন্য দিকে চলে যান, শুনতে পাচ্ছেন না এমন ভান করুন। এভাবে জেদ করে কোন লাভ হচ্ছে না বুঝতে দিন।

৪. জেদ করলেই যা চাই তা পাব – এমন একটা ধারণা যেন জন্ম না নেয়। আপনার মোবাইল নেয়ার জন্য জেদ করলে কিছুতেই মোবাইল ধরতে দিবেন না। আপনার কাজ শেষে মোবাইলটি ওর হাতের নাগালের বাইরে রেখে দিন। একবার যখন বুঝে ফেলবে যে এভাবে চাইলে কিছু পাওয়া যায় না, পরের বার আর এমন করবে না। কিন্তু জেদের ভয়ে একবার দিলেন তো দুইজনই হেরে গেলেন। ভবিষ্যতের জন্যেও তা সুখকর হবে না।

৫. বাইরে কোথাও গেলে অথবা বাসার অতিথির সামনে যদি ট্যান্ট্রাম শুরু করে, তাকে শান্তভাবে একই কথা বার বার বলে শান্ত করুন। অন্য কারো সামনে বকাঝকা করলে বা গায়ে হাত তুললে ও অপমানিত বোধ করবে, সেই সাথে ট্যান্ট্রাম আপনার কন্ট্রোলের বাইরে চলে যেতে পারে।

৬. আপনার শিশুটি যদি জেদ করে অন্যকে মারতে থাকে বা জিনিসপত্র ছুড়তে থাকে, সাথে সাথে থাকে নিয়ে অন্য ঘরে চলে যান। কিছু না বলে শান্ত হতে সময় দিন। বিয়ের দাওয়াত বা রেস্টুরেন্টে এমন হলে সাথে নিয়ে বের হয়ে যাবেন। জড়িয়ে ধরে আদর করে শান্ত করুন। তারপর আবার ভেতরে নিয়ে যান।

৭. চার বছরের নিচের শিশুদের ট্যান্ট্রামের জন্য শাস্তি দেবেন না কখনোই। আর রেগে মারধোর করলে আপনি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারেন। পরে মাথা ঠান্ডা হলে নিজেরই আফসোস হবে। মনে রাখবেন, শারীরিক আঘাত করলে বাচ্চারা মানসিকভাবেও আঘাতপ্রাপ্ত হয়। শারীরিক আঘাত ক্ষণস্থায়ী হলেও মানসিক আঘাত দীর্ঘস্থায়ী।

আপনার সন্তান আপনার কথা শুনবে আপনাকে ভালোবাসে বলে, ভয় পেয়ে নয়।

পরিশেষে দুআ করি আল্লাহ যেন প্রত্যেক মাকে অফুরন্ত ধৈর্য আর সহনশীলতা দান করেন। মা হিসেবে আল্লাহ যেই মহান দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, তা যেন সঠিকভাবে পালন করার তৌফিক দান করেন। আমীন।

#প্যারেন্টিং #টেম্পার_ট্যান্ট্রাম

লিখেছেন: Sihinta sharifa (Cornelia Stephanie)