banner

রবিবার, ১৮ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 17, 2025

 

নারী উদ্যোক্তা গড়ার অগ্রদূত জান্নাতুল হক

 

নারীর ক্ষমতায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা তৈরিতে যাঁরা নীরবে কিন্তু দৃঢ়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তাঁদের অন্যতম হলেন জান্নাতুল হক। ২০১৩ সালে মাত্র একটি ফেসবুক পেজ ‘আমান্দ ফ্যাশন’ দিয়ে তাঁর ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয়। তখন দেশে এফ-কমার্সের সূচনালগ্ন, আর সেই সময়েই তিনি নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের পথ খুঁজে নেন।
ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান, যার নাম ‘শৈলীর ছোঁয়া’। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন জনপ্রিয় ফুড ব্র্যান্ড এজিউর কুইজিন–এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) হিসেবে।

জান্নাতুল হকের উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে রয়েছে পারিবারিক প্রেরণা, বিশেষ করে তাঁর স্বামী আশরাফ উদ্দিন–এর ভূমিকা, যিনি একজন প্রকৌশলী ও ব্যবসায়ী। স্বামীর উৎসাহেই তাঁর ব্যবসার প্রতি আগ্রহ জন্মে এবং তাঁর সহযোগিতায় তিনি ব্যবসার জগতে প্রবেশ করেন। পরে এটিকেই তিনি পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।

জান্নাতুল হকের শৈশব কেটেছে সিরাজগঞ্জে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছোট। তাঁর বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা, আর মা গৃহিণী। এই পারিবারিক বন্ধন ও আদর্শ তাঁকে আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।

শিক্ষাজীবনে তিনি উচ্চমাধ্যমিক শেষ করার পর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ২০০৮ সালে চাইল্ড অ্যান্ড সাইকোলজি বিষয়ে স্নাতকোত্তর (Masters) সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি থাকেন ঢাকার ধানমন্ডিতে।

ছোটবেলা থেকেই জান্নাতুল হকের স্বপ্ন ছিল দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (SME) নিয়ে কাজ করার। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করাটা তাঁর কাছে আবেগের জায়গা।
তিনি বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, অনেক নারী সংসারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করলেও সামাজিক বাধা ও কাঠামোগত সমস্যার কারণে মাঝপথে থেমে যেতে হয়। এই সমস্যাগুলো তাঁকে নাড়া দিয়েছে।
এই তাড়না থেকেই ২০২২ সাল থেকে তিনি ১০০ এর বেশি নারী উদ্যোক্তাকে বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহায়তা করেছেন। শুধু অর্থ নয়, তিনি দিয়েছেন মানসিক সহায়তা,ব্যক্তিগত পরামর্শ,বিপণন সহযোগিতা,নেটওয়ার্কিং সুবিধা।
এই সব সহায়তার ফলে অনেক নারী উদ্যোক্তা এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিচ্ছেন এবং রপ্তানি বাজারে পণ্য সরবরাহ করছেন।

তিনি বলেন,“আমি ১০০ নারী উদ্যোক্তাকে ছোট পরিসরে বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছি, যাতে তাঁরা নিজেরাই ই–কমার্স ও এফ–কমার্সে দক্ষ হয়ে ওঠে।”

নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য জান্নাতুল হক তৈরি করতে চান একটি সমন্বিত কো–ওয়ার্কিং স্পেস। সেখানে থাকবে-একাধিক উদ্যোক্তার কাজের জায়গা,ছোট ছোট ওয়্যারহাউস,পণ্য সরবরাহ ও ডেলিভারির ব্যবস্থা,সাপ্লাই চেইন পরিচালনার পূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।

তিনি বিশ্বাস করেন, এই প্ল্যাটফর্ম থেকে উদ্যোক্তারা নিজেদের ব্যবসা বড় করতে পারবেন, তৈরি করতে পারবেন নিজস্ব অফিস ও বড় আকারের স্টোরেজ সুবিধা।

জান্নাতুল হক ই–কমার্স খাতের উন্নয়নে নিরাপদ ব্যবসা পরিবেশ, গ্রাহকের আস্থা, সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা, আধুনিক লজিস্টিক ও পেমেন্ট সিস্টেম, স্টার্টআপ ফান্ড এবং সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে নীতিমালা গঠনের ওপর জোর দেন।
তিনি মনে করেন “ই-কমার্স খাত কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নের নয়, এটি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার একটি বড় হাতিয়ারও হতে পারে।”

জান্নাতুল হকের যাত্রা প্রমাণ করে, একজন নারীর আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম আর প্রেরণায় গড়ে উঠতে পারে এক সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তি। তাঁর কাজ শুধু নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতেই নয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও রাখছে গভীর প্রভাব।

তথ্যসুত্রঃ সারাবাংলা, যুগান্তর, সিমেক নিউজ.কম

 

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের, পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের ২০% নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ করতে হবে। পাশাপাশি, সিএমএসএমই খাতে ২৫% ঋণ বিতরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এর মধ্যে ১৫% নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।

এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করবে এবং পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার প্রতি উৎসাহিত করবে এবং ব্যবসায় তাদের অংশগ্রহণ বাড়াবে।

তবে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অনেক নারী উদ্যোক্তাই প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সুবিধা পান না বা ঋণ পেতে নানা জটিলতার মুখোমুখি হন। তাছাড়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই নীতিকে কতটা আন্তরিকভাবে অনুসরণ করবে, সেটিও একটি বড় প্রশ্ন।
সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকগুলোর মনিটরিং বাড়ানো, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন।

পাশাপাশি, নারী উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও নেটওয়ার্কিং সুবিধা নিশ্চিত করা হলে এই নীতি কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব ব্যবসার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

আপনার বিছানা কি গোপনে অসুস্থতার কারণ হয়ে উঠছে?

 

ঘুম!!শরীরে বিশ্রামের প্রয়োজন। অথচ আপনি জানেন কি, বছরে গড়ে একজন মানুষ তার বিছানায় ২৬ গ্যালনের মতো ঘাম ঝরায়? এই ঘাম, ধুলা, ত্বকের মৃত কোষ, ছত্রাক—সব মিলিয়ে আপনার আরামদায়ক বিছানাটিই হয়ে উঠতে পারে জীবাণুর অভয়ারণ্য!

নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজিস্ট ফিলিপ টিয়েরনো এ নিয়ে দিয়েছেন চমকে দেওয়ার মতো এক সতর্কতা। তিনি বলেন, অপরিষ্কার চাদরে ঘুমানো ঠিক যেন কুকুরের বিষ্ঠা স্পর্শ করার পর হাত না ধোয়ার মতোই ক্ষতিকর! কারণ, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানেই চাদরে জমে যেতে পারে ঘাম, পরাগকণা, ধুলোমাইটের বর্জ্য, এমনকি ছত্রাকের স্পোর—যা অ্যালার্জি ও নানা রকম সংক্রমণের কারণ হতে পারে।

এ সমস্যা থেকে বাঁচতে টিয়েরনোর পরামর্শ খুবই স্পষ্ট:
আপনার বিছানার চাদর প্রতি সপ্তাহে ধুয়ে ফেলুন। ব্যবহার করুন গরম পানি এবং উচ্চ তাপে শুকানোর পদ্ধতি, যাতে সব রকম ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নিশ্চিহ্ন হয়। শুধু চাদর নয়—বালিশের কভার ও তোষকের কভার পরিষ্কার রাখাও জরুরি। কারণ, বালিশে থাকতে পারে অন্তত ১৬ প্রকারের ছত্রাক!

শুধু সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললেই আপনার ঘুমানোর জায়গাটা হয়ে উঠতে পারে এক শান্ত, পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর আশ্রয়—যেখানে জীবাণুর কোনো ঠাঁই নেই।

 

আল-আকসা: ইতিহাসের হৃদয়ে পোড়া প্রার্থনার মিনার

জেরুসালেম—একটি শহরের নাম নয় কেবল, এটি ইতিহাসের ধুলিকণায় লেখা বিশ্বাস, বেদনা ও বিজয়ের এক অনন্ত কাব্য। এই পবিত্র শহরের বুকে হৃদয়ের মতোই স্পন্দিত মসজিদুল আকসা, যে স্থান একাধারে ঈমানের প্রথম অভিমুখ, নবী করিম (সা.)-এর মেরাজের সফরের গন্তব্য এবং মুসলিম উম্মাহর আত্মপরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সেই আল আকসা আজ শুধু ইট-পাথরের একটি স্থাপনা নয়; এটি মুসলিম জাতির আত্মমর্যাদা, বিশ্বাস ও ঐক্যের প্রতীক। যুগের পর যুগ ধরে এই মসজিদ সাক্ষী থেকেছে যুদ্ধ, বিজয়, বিশ্বাসঘাতকতা এবং পুনর্জাগরণের।

এই লেখায় আমরা খুঁজে দেখবো আল আকসার অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত এক দীর্ঘ, রক্তাক্ত কিন্তু গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায়—যা একইসঙ্গে বেদনার, তেমনি অহংকারের।

পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনের হৃদয়ে অবস্থিত জেরুসালেম। আর এখানেই ইসলামের এক অনন্য ধন—মসজিদুল আকসা। মুসলমানদের প্রথম কিবলা, মক্কা ও মদিনার পর তৃতীয় সর্বোচ্চ মর্যাদার স্থান হিসেবে মসজিদটি ইসলামের ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য উপাদান।

আল আকসা: এক দৃষ্টিতে অতীত ও বর্তমান
আল কোরআনের পবিত্র আয়াতে ‘বরকতময় ও পবিত্র ভূমি’ হিসেবে বর্ণিত এই ভূমি অসংখ্য নবী ও রাসূলের পদধূলিতে ধন্য। প্রাচীন যুগে এটি ছিল ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। ইতিহাসের পাতায় আল আকসা ঘিরে ফুটে ওঠে সুলতান সালাহউদ্দীনের বীরত্বগাথা, খলীফা ওমরের ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও মুসলিম শাসকদের নির্মিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বর্ণালী অধ্যায়।
জেরুসালেমের এই ভূমিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রনায়ক মাওলানা মোহাম্মদ আলী জওহরসহ বহু মনীষী।

আল আকসা কমপ্লেক্স: শুধু একটি মসজিদ নয়, জ্ঞান-ঐতিহ্যের শহর
প্রায় ১৪ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই কমপ্লেক্স কোনো একটি স্থাপনায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি স্থাপত্য-ঐতিহ্যের মহাসমারোহ। চার দেয়ালের ভিতর বিস্তৃত প্রায় দুই শতাধিক স্থাপনা—মসজিদ, মিনার, মেহরাব, মিম্বারসহ একেকটি ইট যেন বহন করে শতাব্দীর ইতিহাস।

নির্মাণ ইতিহাস: হাজার বছরের শেকড়

১.ইসলাম পূর্ব যুগ: আদি নিদর্শনের শুরু
মসজিদুল আকসা পৃথিবীতে নির্মিত দ্বিতীয় মসজিদ। মক্কার মসজিদুল হারামের ৪০ বছর পর এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। ইতিহাসবিদদের মতে, কেউ বলেন আদম (আ.) এই মসজিদের প্রথম নির্মাতা, কেউ বলেন নূহ (আ.)-এর পুত্র সাম, আবার অনেকের মতে ইব্রাহিম (আ.) এই পবিত্র স্থানের ভিত্তি স্থাপন করেন।

২.নবীদের যুগ: পবিত্রতার উত্তরাধিকার
নূহ (আ.)-এর প্লাবনে ধ্বংস হওয়ার পর ইব্রাহিম (আ.) মসজিদের পুনর্নির্মাণ করেন। এরপর দাউদ (আ.) এবং তাঁর পুত্র সুলাইমান (আ.) সময়কালে মসজিদ পরিণত হয় এক বিস্তৃত কমপ্লেক্সে। সুলাইমান (আ.) নির্মাণ করেন হায়কাল-ই-সুলাইমানি, যা পরবর্তীতে ইহুদিদের বিশ্বাসে রূপ নেয় সলেমন ট্যাম্পলে।

ইহুদি ও খ্রিস্টান আধিপত্য: ইতিহাসের উল্টো পৃষ্ঠা
খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে বুখতে নাসর হায়কাল ধ্বংস করে স্মৃতিচিহ্ন লুটে নেয়। ৭০ বছর পর ইরানি সম্রাটের সহায়তায় ইহুদিরা নির্মাণ করে ‘সেকেন্ড ট্যাম্পল’। এরপর গ্রিক সম্রাট অ্যারোটেনিস একে গ্রীক মন্দিরে রূপান্তর করেন। খ্রিস্টান শাসকরা আবারও এর রূপান্তর ঘটায় গির্জায়। এ সময় ইহুদিরা ভূমিহীন, আশ্রয়হীন জাতিতে পরিণত হয়—যেমনটা কোরআনে উল্লেখিত ‘লাঞ্চনার জাতি’।

ইসলামোত্তর যুগ: পুনর্জাগরণের আলোকবর্তিকা
মেরাজের রাতে রাসূল (সা.)-এর আল আকসা সফর শুধু অলৌকিক ঘটনা নয়, এক নতুন যুগের সূচনা। এর ধারাবাহিকতায় ১৪ হিজরিতে খলীফা ওমর (রা.) মসজিদে ওমর নির্মাণের মাধ্যমে এখানে মুসলিম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। ৬৯১ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিক নির্মাণ করেন কুব্বাতুস সাখরা।
স্বর্ণচূড়া বিশিষ্ট অষ্টকোণাকৃতির এই স্থাপনা ইসলামী স্থাপত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। কেন্দ্রের পাথরটি ইহুদিদের মতে পৃথিবীর ‘ফাউন্ডেশন স্টোন’।

উমাইয়া ও আব্বাসীয় যুগে আল আকসা হয়ে ওঠে ইসলামি জ্ঞানচর্চার প্রাণকেন্দ্র। প্রতিষ্ঠিত হয় অসংখ্য মাদরাসা ও প্রতিষ্ঠান। যদিও শিয়া ইসমাঈলিয়া সম্প্রদায়ের হাতে কিছু সময় এটি বিভ্রান্ত মতবাদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়, কিন্তু সেলজুক সুলতানরা পুনরুদ্ধার করে ইসলামের মূলধারায় ফিরিয়ে আনেন। ইমাম গাজালির আল আকসায় অবস্থান, জ্ঞানের দীপ্তি ছড়ায় এই কমপ্লেক্সে।

ক্রুসেড থেকে আধুনিক যুগ:রাজনৈতিক বৈরি বাতাস

মসজিদ আল আকসা—ইতিহাস, ধর্ম এবং রাজনীতির এক অম্ল-মধুর মিশেল। জেরুসালেমের হৃদয়ে অবস্থিত এই পবিত্র স্থানকে ঘিরে ইতিহাসের অনেক রক্তাক্ত অধ্যায় রচিত হয়েছে। ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান হিসেবে এর মর্যাদা বহু পুরনো হলেও, এর ইতিহাসে এক গভীর মোড় আসে ১০৯৯ খ্রিষ্টাব্দে, যখন প্রথম ক্রুসেডের সময় খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা জেরুসালেম দখল করে। তারা আল-আকসা মসজিদকে “সলোমনের মন্দির” বলে ঘোষণা করে এবং কুব্বাত আস সাখরাকে “টেমপ্লাম ডোমিনি((Templum Domini)” বা ঈশ্বরের গম্বুজ হিসেবে রূপান্তর করে ফেলে। মসজিদটি তখন খ্রিষ্টানদের গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে, আর আল-আকসা মসজিদকে ব্যবহার করা হয় কখনও ঘোড়ার আস্তাবল, কখনও রাজপ্রাসাদ হিসেবে।

১১১৯ খ্রিষ্টাব্দে নাইটস টেম্পলাররা মসজিদটিকে তাদের সদরদপ্তর হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। এই সময়ে স্থাপত্যগত অনেক পরিবর্তন আসে—উত্তরের বারান্দা সম্প্রসারিত হয়, নতুন এপস তৈরি হয়, এবং অভ্যন্তরে একটি বিভক্তকারী দেয়াল নির্মিত হয়। পশ্চিমে ও পূর্বে খিলানযুক্ত নতুন অংশ সংযোজিত হয়, যা পরে একটিতে মহিলাদের নামাজের স্থান এবং অন্যটিতে ইসলামী জাদুঘর হিসেবে রূপান্তরিত হয়।

এই ধর্মীয়-রাজনৈতিক দখলের অবসান ঘটে ১১৮৭ সালে। সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী জেরুসালেম পুনরুদ্ধার করে। বিজয়ের এক সপ্তাহের মধ্যেই মসজিদের অভ্যন্তরে থাকা খ্রিষ্টানদের স্থাপনাগুলো(টয়লেট, শস্যগুদাম) সব সরিয়ে ফেলা হয়। মেঝে আচ্ছাদিত হয় দামি কার্পেটে, গোলাপজল ও সুগন্ধি ছিটিয়ে তা আবার নামাজের উপযোগী করে তোলা হয়। সালাহউদ্দিন তখন মসজিদে স্থাপন করেন এক ঐতিহাসিক মিম্বর, যা আগে 1168 সালে সুলতান নুরউদ্দিন জেনগির আদেশে নির্মাণ শুরু হয়েছিল এবং তার মৃত্যুর পরে সমাপ্ত হয়।
পরবর্তী শতকগুলোতে মামলুক ও উসমানীয় শাসকদের অধীনে আল-আকসা ধীরে ধীরে নতুন মাত্রা পায়।
১৩৪৫ সালে মামলুক সুলতান আল-কামিল শামান মসজিদের পূর্ব দিকে আরও দুটি সারি ও ফটক সংযুক্ত করেন। উসমানীয়রা ১৫১৭ সালে জেরুসালেমের শাসন নিলে মসজিদে বড় কোনো স্থাপত্য পরিবর্তন না আনলেও আশেপাশে নানান উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করেন। কাসিম পাশার ফোয়ারা, নতুন সেতু এবং মুক্ত গম্বুজ নির্মাণ হয় এই সময়েই। ১৮১৬ সালে গভর্নর সুলাইমান পাশা আল-আদিল মসজিদের জীর্ণ অবস্থা দেখে পুনরায় সংস্কারের উদ্যোগ নেন।
বিশ শতকে এসে আল-আকসা নতুন করে সংস্কারের সুযোগ পায়, যখন জেরুসালেমের গ্র্যান্ড মুফতি আমিন আল-হুসাইনি তুর্কি স্থপতি মিমার কামালউদ্দিন বেককে দায়িত্ব দেন মসজিদ ও আশেপাশের স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। পুরনো উমাইয়া ভিত্তি শক্তিশালী করা হয়, কাঠের বিমের পরিবর্তে কংক্রিট ও পিতল ব্যবহৃত হয়, ভেতরের আর্চ ও গম্বুজের সৌন্দর্য পুনর্নির্মাণ করা হয়। খোদিত আরবি লিপি ও ফাতেমীয় আমলের মোজাইকও প্লাস্টারের আড়াল থেকে উদ্ধার করে দৃশ্যমান করা হয়।

তবে সব ইতিহাস আনন্দদায়ক নয়। ১৯২৭ ও ১৯৩৭ সালের ভূমিকম্প মসজিদে ব্যাপক ক্ষতি করে, যাকে ১৯৩৮ ও ১৯৪২ সালে আবার মেরামত করা হয়।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ ছিল এক মোড়বদলের ঘটনা, যেখানে মুসলিমরা হারায় মসজিদুল আকসার কার্যত নিয়ন্ত্রণ। যদিও নামমাত্রভাবে এটি পরিচালিত হয় জর্ডান-ফিলিস্তিনের ওয়াকফের তত্ত্বাবধানে, বাস্তবে প্রতিটি প্রবেশপথে রয়েছে দখলদার সেনাদের কঠোর নজরদারি। মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের আগে পোহাতে হয় অসহনীয় চেকিং, কখনো কখনো বন্ধ থাকে প্রবেশদ্বার।

কিন্তু সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা ঘটে ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট, যখন এক অস্ট্রেলীয় পর্যটক ডেনিস মাইকেল রোহান মসজিদে আগুন লাগিয়ে দেন। আগুনে নুরউদ্দিনের তৈরি সেই ঐতিহাসিক মিম্বর পুড়ে যায়। রোহান বিশ্বাস করতেন এই আগুনের মাধ্যমে তিনি যীশুর দ্বিতীয় আগমন ত্বরান্বিত করতে পারবেন। এই ঘটনার ফলে মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভ জন্মায় এবং তার ফলস্বরূপ গঠিত হয় ওআইসি—ইসলামিক সম্মেলন সংস্থা।

১৯৮০-এর দশকে ফের উগ্রবাদী ইহুদি সংগঠন গুশ এমুনিম আন্ডারগ্রাউন্ড আল-আকসা ও কুব্বাত আস সাখরা উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে। তাদের লক্ষ্য ছিল, এই দুই পবিত্র স্থাপনা ধ্বংস করে সেই স্থানে ”তৃতীয় ইহুদি মন্দির(থার্ড টেম্পল)” নির্মাণ করা।

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ২০০০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর, যখন ইসরায়েলের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা এরিয়েল শ্যারন এক হাজার সশস্ত্র রক্ষী নিয়ে আল-আকসা চত্বরে প্রবেশ করেন। ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদ করে, এবং সংঘর্ষের সূচনা হয়—যা পরবর্তীতে “আল-আকসা ইন্তিফাদা” নামে ইতিহাসে স্থান পায়। এই ইন্তিফাদা চলে পাঁচ বছর, ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র ফিলিস্তিনে।
২০১৪ সালে ইসরায়েলি পুলিশ ১৯৬৭ সালের পর প্রথমবারের মতো আল-আকসার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। যদিও তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল তারা শুধু প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেছে কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন।

২০১৪ সালের পর থেকে আল-আকসা মসজিদকে ঘিরে উত্তেজনা ও দখলদারিত্বের যে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে, তা মুসলিম বিশ্বের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মসজিদে প্রবেশে মুসলমানদের জন্য কঠোর নিয়ম আরোপ করেছে—বিশেষ করে রমজানের মতো পবিত্র মাসে, যেখানে পুরুষদের জন্য ৫৫ বছর এবং নারীদের জন্য ৫০ বছর বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব বিধিনিষেধ বহু ফিলিস্তিনির জন্য মসজিদে নামাজ আদায়ের পথ বন্ধ করে দিয়েছে।

অন্যদিকে, ঐতিহ্যবাহী নিয়ম ভেঙে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো প্রায় ১৮০ জন ইহুদি উপাসককে আল-আকসা চত্বরে প্রার্থনার অনুমতি দেয়। এ পদক্ষেপ মুসলিমদের মাঝে উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়, কারণ এটি মসজিদের দীর্ঘকালীন ধর্মীয় মর্যাদা ও স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে।
মুসলমানদের দাবি, এই পরিবর্তন ইসরায়েলের পরিকল্পিত নীতির অংশ, যার মাধ্যমে মসজিদের নিয়ন্ত্রণে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
এই সংকট শুধু ফিলিস্তিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং পুরো মুসলিম বিশ্বে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেক মুসলিম দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন আল-আকসার ধর্মীয় অবস্থান ও মুসলমানদের অধিকারে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আজও আল-আকসা মসজিদ তার ধর্মীয় ও রাজনৈতিক গুরুত্ব নিয়ে বিশ্ব বিবেকের সামনে প্রশ্ন তুলে দাঁড়িয়ে আছে—একটি মুক্ত ও শান্তিপূর্ণ উপাসনাস্থলের আশায়।

সমাপ্তি
আল-আকসা মসজিদ শুধু একটি স্থাপত্য নয়, এটি একটি প্রতীক—বিশ্বাস, সংগ্রাম ও অটল অবস্থানের প্রতীক। শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে যে মিনার একবারও মাথা নোয়ায়নি, বরং প্রতিটি দখল, প্রতিটি আগুন, প্রতিটি গুলির শব্দে আরও বেশি দৃঢ় হয়ে উঠেছে তার আত্মিক অবয়ব। ক্রুসেডারদের বিজয়, সালাহউদ্দিনের পুনরুদ্ধার, উসমানীয়দের রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা আধুনিক যুগের দখলদারিত্ব—সব কিছুর মধ্য দিয়েই আল-আকসা থেকেছে অমলিন, অভ্রান্ত।

আজও, যখন জেরুসালেমের আকাশে বারুদের গন্ধ ভেসে আসে, তখনও মসজিদুল আকসার আঙিনায় ভোরের আলো পড়ে নিঃশব্দে। সেই আলোয় ইতিহাসের প্রতিটি ক্ষণ যেন চিত্রিত হতে থাকে—মিম্বর, মিনার ও মোজাইকে। সময়ের শত আঘাত, রাজনীতির শত হিসাব-নিকাশ আর বেদনার অতল থেকে উঠে আসা এই মসজিদ তাই কেবল ইবাদতের স্থান নয়, হয়ে উঠেছে এক জাতির আত্মপরিচয়ের অন্তর্নিহিত প্রতিচ্ছবি।

এখনও আল-আকসা থেকে ধ্বনিত হয় আজানের ধ্বনি—ভেঙে দেয় দেয়ালের সীমা, জাগিয়ে তোলে আত্মা। যতদিন ঈমান টিকে থাকবে, ততদিন আল-আকসাও টিকে থাকবে—বিশ্বাসের প্রতিরূপ হয়ে, দুনিয়ার সমস্ত নির্যাতনের বিপরীতে মাথা উঁচু করে।
আল আকসা আজও আমাদের ডাকে, ইতিহাসের প্রতিটি ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে যেন সে ফিসফিস করে বলে—
“আমাকে ভুলো না, কারণ আমার মাঝে লুকিয়ে আছে তোমার আত্মপরিচয়, তোমার সংগ্রাম, তোমার ঈমান।”

আরওয়া আনাম

 

‘মাতৃত্বই শ্রেষ্ঠ পরিচয়’—মা দিবসে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের বিশেষ উদ্যোগ

বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি আয়োজন করেছে এক ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারণা ‘মাতৃত্বই পৃথিবীর সবচেয়ে মহৎ পেশা’।
এই প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ১১ জন মায়ের জীবনগাথা ভিডিওচিত্রে ধারণ করেছে, যেখানে তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব ও মাতৃত্বের ভারসাম্য রচনার গল্প তুলে ধরা হয়েছে।

সংস্থাটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই ভিডিওগুলোতে উঠে এসেছে—কীভাবে এক একজন মা সংসার, সন্তান এবং কর্মক্ষেত্রে সমান নিষ্ঠায় দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ, মমতা এবং ধৈর্যের অনন্য দৃষ্টান্তগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হলো—সমাজে মায়েদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাঁদের জীবনের অজানা অধ্যায়গুলো সবার সামনে তুলে ধরা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সন্তান লালন-পালন কোনো সাধারণ দায়িত্ব নয়; বরং এটি এক মহান ত্যাগের কর্মযজ্ঞ, যা অন্য যেকোনো পেশার তুলনায় অনেক বেশি ভালোবাসা ও ধৈর্য দাবি করে।

মাতৃত্বকে একজন নারীর জীবনের শ্রেষ্ঠ পরিচয় হিসেবে তুলে ধরাই এই প্রচারণার প্রধান বার্তা।

 

নারীর স্বাস্থ্যরক্ষায় প্রযুক্তির বিপ্লব: বুয়েটের ‘নিওস্ক্রিনিক্স’ টিমের বিশ্বজয়

 

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো স্তন ক্যান্সার। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত না হওয়ায় এই রোগে প্রতিবছর হাজার হাজার নারী মৃত্যুবরণ করেন;বিশেষত আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে যেখানে সচেতনতা ও নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের অভাব প্রবল। ঠিক এই সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের গর্ব ‘বুয়েট’-এর একটি তরুণ দল এনে দিল এক যুগান্তকারী প্রযুক্তি, যা এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

জন হপকিন্স হেলথকেয়ার ডিজাইন কম্পিটিশন ২০২৫-এর ডিজিটাল হেলথ ট্র্যাক বিভাগে বিজয়ী হয়েছে বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের উদ্ভাবনী দল ‘নিওস্ক্রিনিক্স’।
তাদের তৈরি প্রযুক্তি—একটি AI-ভিত্তিক ডিভাইস ও অ্যাপ্লিকেশন, যা নারীদের নিজে থেকেই ঘরে বসে স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের সুযোগ করে দেয়। শুধুমাত্র লক্ষণ বিশ্লেষণ করেই প্রাথমিক পর্যায়ে সম্ভাব্যতা শনাক্ত করা সম্ভব হয়, যা পরবর্তী চিকিৎসা গ্রহণে সময়মতো পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।

এই প্রকল্পের মূল নেতৃত্বে ছিলেন ফাহমিদা সুলতানা,’নিওস্ক্রিনিক্স’ টিমের লিড ইনোভেটর।
একজন নারী হিসেবে, নারীর স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রযুক্তি উদ্ভাবনে তার নেতৃত্ব এই প্রকল্পকে দিয়েছে এক অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি। বাস্তব অভিজ্ঞতা, নারীর সমস্যা সম্পর্কে অনুভব, এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা—এই তিনের সমন্বয়ে তিনি টিমকে এগিয়ে নিয়ে যান সঠিক সমাধানের পথে।

দলটির অন্যান্য সদস্যরা-এইচ এম শাদমান,
সাদাতুল ইসলাম,মো. হাসনাইন আদিল,পৃথু আনান।
তত্ত্বাবধান করেছেন-অধ্যাপক মো. সোহেল রহমান, বুয়েট।
তথ্য ও মেডিকেল সহায়তায় ছিলেন-জারিন তাসনিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ,রিবাতুল ইসলাম, রংপুর মেডিকেল কলেজ।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে স্বাস্থ্যপরিসেবা এখনো শহরকেন্দ্রিক এবং নারীরা বহু সময় দ্বিধা বা লজ্জায় স্ক্রিনিংয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন, সেখানে এই প্রযুক্তি হতে পারে এক প্রযুক্তিনির্ভর আর্শীবাদ। এটা কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং নারীর স্বাস্থ্য অধিকার ও সচেতনতার ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।

অভিনন্দন নিওস্ক্রিনিক্স টিম এবং বুয়েট!
তোমাদের উদ্ভাবন একদিন লাখো নারীর জীবন বাঁচাবে।

#NeoScreennix
#WomenInTech
#HealthcareInnovation
#DigitalHealth
#BangladeshPride
#BreastCancerAwareness