banner

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 15, 2025

 

স্কুটি-নারী : নিজের বাহন পেতে আগ্রহ বাড়ছে


নারী সংবাদ


কলেজ পড়ুয়া, চাকরিজীবী কিংবা ব্যবসায়ী- নারীদের পছন্দের বাহনের তালিকায় বেশ আগেই জায়গা করে নিয়েছে দুই চাকার বাহন স্কুটি। আজকাল নগরজুড়ে প্রায়ই চোখে পড়ে নারীদের স্কুটি চালিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার দৃশ্য। শখে নয়, প্রয়োজনের তাগিদেই নারীরা বেছে নিচ্ছেন এ বাহন। বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট।
যানজট সমস্যা, গণপরিবহনের অপর্যাপ্ততা তো আছেই। তার ওপর দীর্ঘ অপেক্ষার পর বাসে উঠতে পারলেও সেখানে নেই পর্যাপ্ত সিট। লোকাল বাসে নারীদের বিড়ম্বনার শিকার হওয়ার ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক।
গবেষণা থেকে জানা যায়, গণপরিবহনে ৮৪ ভাগ নারী যৌন হেনস্তার শিকার হন। এসব সমস্যা সমাধানে সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ তৎপরতা চোখে পড়ে না। অগত্যা তারা নিজেরাই বেছে নিচ্ছেন আপন গতিছন্দ, চলার পথ, পথপরিক্রমণের উপায়। কবির ভাষায় বলা যেতে পারে, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রেÑ আতিকা রোমা, আমবারিন খান, মোনালিসা ও স্বপ্না ইসলাম তেমনই স্বনির্ভর, আত্মপ্রত্যয়ী চার নারী।
১৯৯০ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় আতিকা রোমার বাইক চালানো শুরু। তবে মাঝে ছিল বিশাল একটা সময়ের ব্যবধান। শিক্ষাজীবনের গ-ি পেরিয়ে ২০০৪ সালে তার কর্মজীবনের শুরু। তখন বাস, সিএনজিই ছিল ভরসা। তবে তা বেশি দিন ভালো লাগেনি তার। ২০০৯ সালে ব্যাটারিচালিত মোটরসাইকেল দিয়ে শুরু করলেন যাতায়াত। ওই সূচনা। রোমা এখন চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। নিজের উদ্যোগে নারীদের জন্য গড়ে তুলেছেন ‘যাব বহুদূর’ নামে একটি স্কুটি ড্রাইভিং প্রতিষ্ঠান। রোমার দৃঢ় বিশ্বাস, যাত্রাপথে নারীরা স্বাবলম্বী হলে নারী স্বাধীনতার পথে তারা এগিয়ে যাবে আরো একধাপ।
আমবারিন কাজ করেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে। চার বছর ধরে স্কুটি চালাচ্ছেন। যখন চালানো শুরু করেন, তখনো তার গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন হয়নি। আলাপচারিতায় জানালেন, বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা, রিকশা ও সিএনজির অতিরিক্ত ভাড়া আর যানজটের নিত্য ভোগান্তি তাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। তবে তার বেশ ভয় লাগত বাসের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিগুলোকে। বেশ কয়েকবার সেই অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে পড়তেও হয়েছে তাকে। অনেকটা জেদের বশেই স্কুটি চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন শেষতক। তবে ছোটবেলা থেকেই বাইক চালানোর প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। বাবাকে বাইক চালাতে দেখে সে আকাক্সক্ষা ক্রমে ক্রমে আরো জোরদার হয় তার।
বাসা থেকে খুব একটা আপত্তি না থাকলেও প্রথম প্রথম তারা বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি। তিনি বলেন, স্কুটি ছাড়া একটা দিনও এখন আমি ভাবতে পারি না। স্কুটি আমার জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।
বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন মোনালিসা। ২০১২ সাল থেকে স্কুটি চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার কাজের ধরনটা একেবারেই ভিন্ন। অফিসে সময়মতো উপস্থিত হতে হয়। বাস, সিএনজি, রিকশার জন্য অনির্দিষ্ট কাল অপেক্ষা করে থাকলে অফিসে ঠিকমতো যাওয়া যায় না। কাজের প্রয়োজনেই আমি স্কুটি চালানো শুরু করি। এখন তো স্কুটি ছাড়া চলার কথা ভাবতেই পারি না।
বেসরকারি ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা স্বপ্না ইসলাম। অফিসে যাতায়াত এবং দুই সন্তানকে স্কুলে আনা -নেওয়ার দৈনন্দিন কাজটা তিনি স্কুটিতেই করেন। বলেন, বর্তমানে ঢাকায় নারী বাইক চালকের সংখ্যা যে ঠিক কত, তার সঠিক তথ্য নেই। তবে নারী বাইকারদের নিয়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠনের তথ্যানুযায়ী, এ সংখ্যা বর্তমানে পাঁচ-ছয়শ’র কাছাকাছি। দিন দিন বাড়ছে এ সংখ্যা। যাদের বেশিরভাগই চাকরিজীবী কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলো বিশেষ করে ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বারিধারার মতো এলাকায় মেয়েদের স্কুটি চালাতে বেশি দেখা যায়।
নারীদের বাইক চালানোর ব্যাপারে প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো কি? এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নারী বাইক চালকরা জানান, পরিবারের সম্মতি পাওয়াটাই এ ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয়। কারণ আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনো কোনো নারীকে দুই চাকার যানের চালকের আসনে ভাবতে বা দেখতে ঠিক অভ্যস্ত নন। এ কারণে পরিবারের অনাপত্তি পাওয়াটাই হলো বড় কথা। পরিবারের সম্মতিটা প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বড় সাহসের ব্যাপার হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় অনেকেই কটূক্তি করেন, আড়চোখে তাকান। এসব প্রতিবন্ধকতাকে প্রত্যয় ও সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে পারলে স্কুটি হবে নারীর জন্য নিজের বৈশিষ্ট্য ও স্বয়ম্ভরতা প্রকাশের বড় এবং বলিষ্ঠ মাধ্যম।ঢাকা,সুত্র: (বাসস)।

 

সুবহে সাদিক


কামরুল হাসান তুহিন


আঁধার রাতের তারা গুলো
ঘুমিয়ে পড়া মেঘ গুলো
মেঘের মাঝে দুঃখ গুলো
কেউ দেখেনি, কেউ দেখেনি।

আকাশ ভরা বৃষ্টি গুলো
বৃষ্টি ভেজা পাখি গুলো
পাখির কন্ঠে গান গুলো
কেউ শোনেনি, কেউ শোনেনি।

সুবহে সাদিকের ক্ষণ গুলো
মুয়াজ্জিনের সুর গুলো
সুরের মাঝে মায়া গুলো
কেউ বোঝেনি, কেউ বোঝেনি।

ভোরে ওঠা নক্ষত্র গুলো
নিবিষ্ট মনের সালাত গুলো
সিজদারত অশ্রু গুলো
কেউ মোছেনি, কেউ মোছেনি।।

© ধ্রুব নীল