banner

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 13, 2025

 

রমজানের ইফতারিতে মরক্কান বাগরির

মুনিম সিদ্দিকী


আসুন এই রমজানের ইফতারিতে মরক্কান বাগরির তৈরি করি।

মরক্কান বাগরির রেসিপি

শীত আর গ্রীষ্মে বাগরির বানিয়ে খেতে পারেন। একবার বানালে টাওয়াল দিয়ে ঢেকে রেখে তিন দিন পর্যন্ত খেতে পারবেন, আমাদের দেশের চালের গুড়ির চিতুই পিঠার মত শক্ত হবে না, নরম তুলতুলেই থাকবে।

আমাদের দেশে চিতুই পিঠা চালের গুড়ি দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। আমাদের চিতুই পিঠা গরম গরম খেতে হয়। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে শক্ত হয়ে পড়ে। আমি আজ যে চিতুই পিঠার রেসিপি দিচ্ছি তা নরম তুলতুলে হবে ঠাণ্ডা হলেও শক্ত হবেনা। সকল বয়সের মানুষের কাছে সুস্বাদু লাগবে বিশেষ করে শিশু এবং বয়ঃবৃদ্ধের জন্য হবে অনন্য খাবার।

দোহাই মরক্কান বাগরিরকে চিতুই পীঠা বলবেন না। চিতুই কে চিতুই আর বাগরিরকে বাগরির বলে উল্লেখ করুন। মরক্কান বাগরিরই বলে যেন অন্যদেরকে আপ্যায়ন করেন। ধন্যবাদ।

যা লাগবে

১- ময়দা দেড় কাপ বা ১৬৫ গ্রাম।
২-সুজি দেড় কাপ বা ১৬৫ গ্রাম।
৩- চিনি ১ টেবিল চামচ বা ১৫ গ্রাম।
৪- লবণ ১ চা চামচ বা ৫গ্রাম।
৫- বেকিং পাউডার ১ চা চামচ বা ৫ গ্রাম।
৬- ইস্ট ২ চা চামচ বা ১০ গ্রাম।
৭- পানি উষ্ণ তবে গরম নয় সাড়ে চার কাপ বা ৪৯৫ গ্রাম।

প্রস্তুতি

১- প্রথমে পানি বাদে সকল উপকরণ ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। ময়দা আর সুচির পরিমাণ কম বেশি করা যায়। তবে সুজির সাথে অবশ্য ময়দা থাকতে হবে, কিন্তু ময়দার সাথে সুজি না থাকলেও বাগরির করা যাবে। ডুরুম গমের ময়দা আর সুজি হলে রঙ হলুদাভাব দেখাবে। শুধু ময়দা হলে সাদাভাব দেখাবে। আমাদের দেশের সুজির পরিমাপ বেশি হলে কালচে ভাব দেখাবে।

২-অল্প অল্প করে ঐ মিশ্রণে উষ্ণ পানি ঢেলে মিশ্রণকে নরম থকথকে করে নিতে হবে।

৩- মেশিন থাকলে ৩০ সেকেন্ড ঐ মিশ্রণ ঘুটে নিন। না থাকলে কাঠে চামচ বা অন্য কিছু দিয়ে ভালো ভাবে ঘুটে মসৃণ করে নিন। মনে রাখবেন এই মিশ্রণ পানির মত পাতলা যেন না হয় আবার যেন ঘনও না হয়।

৪- ঘুটাঘুটির পর পরিষ্কার টাওয়াল দিয়ে ঢেকে গরম কোন স্থানে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেস্টে রাখুন।

৫- ২০ /৩০ মিনিট পর লক্ষ্য করুন যে ঐ মিশ্রণের উপর বুদবুদ দেখা যায় কিনা? যদি বুদবুদ দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে আপনার মিশ্রণ ঠিক হয়েছে। যদি বুদ বুদ না হয় তাহলে আরো অল্প পানি মিশিয়ে নিন এবং অপেক্ষা করুন। বুদবুদ আসা পর্যন্ত।

৬- এবার চুলার মধ্যে মৃদু তাপে ননস্টিক ফ্রাই পেন গরম করুন।

৭- গরম হলে ডাবু হাতার চামচ দিয়ে এক চামচ মিশ্রণ ননস্টিক প্যানের মধ্যখানে গোল করে ছড়িয়ে দিন।

৮- কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। যখন দেখবেন পিঠার মধ্যে অসংখ্য ছিদ্র দেখা যাচ্ছে এবং কাচা ভাব চলে গেছে তখন খন্তা দিয়ে আলতো করে ফ্রাইপ্যান থেকে নামিয়ে নিন।

৯- নামিয়ে নিয়ে পরিষ্কার টাওয়ালের মধ্যে একটি একটি করে রাখুন। গরম অবস্থায় একটির উপর আরেকটি রাখবেন না। ঠাণ্ডা হবার পর একটির উপরে আরেকটি রাখতে পারবেন।

১০- এবার ফ্রাই প্যানকে উলটো করে ট্যাপের ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন।

এর পর ৭ নং নির্দেশের মত করতে থাকুন।

এই গুলো ঘরে রেখে তিন দিন পর্যন্ত খাওয়া যাবে। সকাল বিকালের নাস্তায় চায়ের সাথে খেতে পারেন। বাগরির তাওয়া থেকে নামিয়ে গরম থাকতে থাকতে বাটার দিয়ে গ্লেজিং করলে বাগরির সুন্দর দেখাবে খেতেও ভালো লাগবে। গরম থাকা অবস্থায় বাটার (মাখন) লাগিয়ে বা বাটার মধু লাগিয়ে খেতে পারেন। ঠাণ্ডা হলে শুধু মধু বা জালিগুড় মিশিয়ে খেতে পারবেন। আবার রান্না করা গোস্তের তরকারী দিয়েও খেতে পারবেন। আবার জ্যাম জেলি বা কন্ডেন্সমিল্ক দিয়ে বা কাচমরিচ/পুদিনা পাতার চাটনি দিয়েও খেতে পারবেন।

 

 

‘পুরুষের একাধিক বিয়ে’ -শেষ পর্ব

ডা. ফাতিমা খান


ইসলামে একাধিক বিয়ে কখন বৈধ হবে :

ওহুদের যুদ্ধের পর বহু সংখ্যক মুসলমান যখন শহীদ হলেন তখন যারা বেঁচে ছিলেন তাদের উপর ইয়াতীম ও বিধবাদের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তখনই একাধিক বিয়ের বৈধতা ঘোষণা করে কুরআন মজীদে আয়াত নাযিল হয়।

وَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَىٰ فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَلَّتَعُولُوا

অর্থাৎ,” তোমরা যদি ইয়াতীমদের প্রতি অবিচার করতে আশঙ্কা কর, তবে যেসব স্ত্রীলোক তোমাদের পছন্দ তাদের মধ্য থেকে দুই, তিন বা চারজনকে বিয়ে কর।কিন্তু তোমাদের মনে যদি আশঙ্কা জাগে যে, তোমরা তাদের সাথে ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে একজন স্ত্রীই গ্রহণ কর।” (সূরা-নিসা, আয়াত-৩)

এ আয়াতটি থেকে নিম্নোক্ত সত্য গুলো স্পষ্টভাবে বোঝা যায়ঃ

১।একাধিক বিয়ে অবশ্য পালনীয় কোন কর্তব্য নয়। এ ব্যাপারে পুরুষদেরকে উৎসাহিতও করা হয়নি। শুধুমাত্র প্রয়োজনের তাগিদে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
২।যে পরিস্থিতিতে এ আয়াত নাযিল হয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে শুধুমাত্র জৈবিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য নয়, বরং বিধবা ও ইয়াতীমদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর জন্য একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
৩।যে সময় আরব দেশে এবং এর আশে-পাশের দেশগুলোতে দশজন কিংবা তারও অধিক সংখ্যক স্ত্রী গ্রহণের প্রচলন ছিল, সে সময় এই আইন অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত আইন হিসেবে বিবেচ্য।
৪।এই বহুবিবাহ আইনে প্রত্যেক স্ত্রীর সাথে ন্যায় সংগত আচরণ করা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক স্ত্রীর বাসস্থান, খাবার, পোশাক-পরিচ্ছেদ, সদয় ব্যবহার ইত্যাদির দায়িত্ব পূর্ণভাবে স্বামীর উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। যদি কেউ এ ব্যপারে অপারগ হয় তাহলে কুরআন মজিদে তার ব্যাপারে বলা হয়েছে ”তাহলে তোমরা একজনকেই বিয়ে কর”।

একই সূরায় অন্য একটি আয়াতে একাধিক বিয়েকে নিরুৎসাহিতও করা হয়েছে।

وَلَنْ تَسْتَطِيعُوا أَنْ تَعْدِلُوا بَيْنَ النِّسَاءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ ۖ فَلَا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ ۚ وَإِنْ تُصْلِحُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا

অর্থাৎ ”স্ত্রীদের মধ্যে সুবিচার ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা তোমাদের সাধ্যের অতীত। তোমরা অন্তর দিয়ে চাইলেও তা করতে সমর্থ হবে না। অতএব, একজন স্ত্রীকে একদিকে ঝুলিয়ে রেখে অপরজনের প্রতি একেবারে ঝুঁকে পড়বে না। (সূরা-নিসা, আয়াত ১২৯)

কুরআন একমাত্র কিতাব যেখানে ‘একজনকেই বিয়ে কর ‘ একথাটি বলা হয়েছে। অন্যান্য কোন ধর্ম গ্রন্থে এরকম কোন আদেশ দেয়া হয়নি। ইসলামে সময় ও পরিস্থিতিভেদে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে বটে কিন্তু তাও চারটির বেশী কখনই নয়। সুতরাং পুরুষেরা যত ইচ্ছা ততজন স্ত্রী গ্রহণ করবে এবং স্ত্রীদের মধ্য থেকে কাউকে সে বেশী মর্যাদা দিবে, কাউকে কম, এমনটি হতে পারবে না। ইসলামী আইনের দাবী হল, কোন পুরুষ তার স্ত্রী কিংবা স্ত্রীদের দায়িত্ব যথাযথভাবে ও সমভাবে পালন করতে ব্যর্থ হলে কিংবা স্বামী তার উপর অন্যায় অত্যাচার করলে স্ত্রী আদালতে গিয়ে বিয়ে- বিচ্ছেদের দাবী করতে পারবে।

একাধিক বিয়ের ব্যাপারে এরকম কঠিন কিছু নির্দেশাবলী থাকার পরও প্রয়োজনের তাগিদে যদি এর অনুমতি না দেয়া হত ও এ ব্যাপারে বেশ কিছু বাধ্য বাধকতা জারি করা হত তাহলে সমস্যাগুলোর সমাধান না হয়ে বেশ কিছু সামাজিক ও পারিবারিক বিশৃংখলা ও অশান্তি দেখা দিত। মহান আল্লাহ তায়ালা এ সার্বিক অবস্থা কে সামনে রেখেই মানুষের জন্য যথাযথ বিধান দিয়ে দিয়েছেন।

একাধিক বিয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান হতে পারে :

ক) ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে 

১. কোন পুরুষের স্ত্রী যদি বন্ধ্যা হয় এবং সে তার সন্তান বা উত্তরাধিকারীর জন্য উদগ্রীব হয়, তবে আরেকটি বিয়ে না করলে তাকে নিম্নের ২টি পন্থার যে কোন একটি কে গ্রহণ করতে হবে-

– আজীবন তাকে পিতৃত্বের সুখ থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।

– তার বন্ধ্যা স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতে হবে।

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এ ২টির কোনটিকেই সঠিক সমাধান হিসেবে মেনে নেয়া যায় না। এরকম পরিস্থিতিতে আরেকটি বিয়েই সমাধান হতে পারে… এক্ষেত্রে ১ম স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রেখেই পিতৃত্বের সুখ পাওয়া সম্ভব হবে।

অনুরূপভাবে, কোন পুরুষ যদি বন্ধ্যা হয় আর তার স্ত্রী সন্তানের জন্য উদগ্রীব হয় তাহলে সে চাইলে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ২য় স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। ( মেয়েদের জন্য একাধিক স্বামী গ্রহণ বৈধ নয় কেন, সে আলোচনায় আসছি কিছুক্ষণ পর )

২. কোন পুরুষের স্ত্রী যদি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকে তাহলেও তাকে নিম্নোক্ত ৩টি পন্থার যে কোন একটি অবলম্বন করতে হবে-

– আজীবন তাকে জৈবিক চাহিদাকে সংবরণ করতে হবে।

– অসুস্থ স্ত্রীর সাথে আপোষ করে গোপনে তাকে কোন যৌনসঙ্গী বেছে নিতে হবে।

– অসুস্থ স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা থাকা সত্ত্বেও তাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করতে হবে।

প্রথম সমাধানটি মানুষের মানবিক প্রবৃত্তির পরিপন্থি। ইসলাম মানুষকে তার জৈবিক চাহিদা পুরণের জন্য বৈধ পন্থা অবলম্বনের আদেশ দিয়েছে। দ্বিতীয় সমাধানটি সম্পূর্ণভাবে ইসলামী আইন বিরোধী। তৃতীয় সমাধানটি অত্যন্ত অমানবিক ! বিশেষতঃ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যখন খুব ভালো সম্পর্ক থাকে।

সুতরাং এ আলোচনা থেকে বুঝা যায়, এসব অবস্থায় আরেকটি বিয়েই এই সমস্যাগুলোর একমাত্র বৈধ সমাধান হতে পারে। এটি একটি ঐচ্ছিক সমাধানও বটে। এখানে অন্য কারো জোর-জবরদস্তিও চলবে না। (নিজের মা -বাবার মন রক্ষা করতে গিয়ে বা গোত্র কিংবা সমাজের চাপে পড়ে নয়।)

খ) সামাজিক ক্ষেত্রে 

১.নৃতত্ববিদদের গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, প্রাচীন বহু গোত্র ও সমাজ তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রয়োজনে একাধিক বিয়ে করত। সে সময় কিছু দরিদ্র এলাকায় শিশু মৃত্যুর হার ছিল বেশী, আবার কেউ কেউ সন্তানদেরকে তাদের উপার্জনের উৎস মনে করত। এসব কারনে বেশী সন্তানের আশায় তারা একাধিক বিয়ে করত। প্রাচীন আফ্রিকার খ্রীষ্টান মিশনারী সমাজ বহু আগেই একাধিক বিয়েকে সমর্থন করেছে এবং ঐ সমাজের মেয়েরা তাদের স্বামীদের একাধিক বিয়ে শুধু মেনেই নিত না বরং তা সমর্থন করত।

২. কোন দেশ বা সমাজ়ে যদি পুরুষের তুলনায় মহিলারা সংখ্যায় অধিক হয় ( কাশ্মীর, আফগানিস্তান ও ইরাকে বিবাহোপযোগী মেয়েরা পাত্র সঙ্গকটে ভুগছে) সেখানেও অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের একাধিক বিয়ে করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আমরা যদি অতীতের যুদ্ধগুলোর কথা ভাবি তাহলে দেখা যায় ধ্বংসাত্মক এ যুদ্ধগুলোতে পুরুষেরাই অধিকাংশ মৃত্যুবরণ করেছিল। এর ফলে শুধু যে বিয়ের জন্য পাত্রের অভাব হয়েছিল তা নয়, বরং যারা বিধবা হয়েছিল এবং একটি সম্মানজনক জীবন যাপনে আগ্রহী ছিল, তাদের জীবনও কষ্টকর হয়ে গিয়েছিল। এই সব দিক বিবেচনা করে ঐ পরিস্থিতিতে ঐ সমাজে পুরুষের একাধিক বিয়েই ছিল উত্তম সমাধান।

একজন বিবাহিত কিংবা অবিবাহিত ব্যক্তি উভয়ই মানুষ। তাদের স্বভাবজাত চাহিদাগুলো যদি বৈধ উপায়ে পূর্ণ করা না হয় তবে বিকৃত ও অসাধু উপায়ে পূর্ণ করার জন্য সে প্রলুব্ধ হয়।এক্ষেত্রে নৈতিকতার দিক থেকে মেয়েরাই সবচেয়ে বেশী অপব্যবহৃত হয়। তাদের জীবনের নিরাপত্তা, নিশ্চয়তা, আবেগ কোন কিছুরই কোন মূল্য থাকেনা। আর যদি তারা অবিবাহিত অবস্থায় গর্ভবতী হয়ে পড়ে তাহলে পিতৃ-পরিচয়হীন এই সন্তানের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব মায়ের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় (কিছু অমুসলিম দেশে এমন নিয়ম চালু আছে)। আবার একাকী এসব দায়িত্ব্ পালন করতে গেলেও সমাজে মা ও সন্তান উভয়েরই ভোগান্তির অন্ত থাকে না। সমাজ তাদেরকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করে না , আর পাঁচটি মানুষের মত পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করাও সম্ভবপর হয় না।

মেয়েদের জন্য একই সাথে একাধিক স্বামী গ্রহণ বৈধ নয় কেন ’

আল্লাহ তায়ালা নারী ও পুরুষকে দৈহিক ও মানসিকভাবে পৃথক ধাচে সৃষ্টি করছেন। পুরুষদের চরিত্রে বহুগামীতার ইচ্ছা লক্ষ্য করা যায়। তারপরও ধরা যাক, কোন মেয়ে একাধিক স্বামী গ্রহণ করছে। সম্ভাব্য সমস্যা গুলো আমরা একটু ভেবে দেখি।

১) তার যে সন্তানগুলো জন্ম নেবে তাদের কার পিতা কে হবে? কে, কোন সন্তানের পরিচয় বহন করবে?
২) একাধিক স্বামীর এই একমাত্র স্ত্রীর দায়ভার কার উপর ন্যস্ত হবে? সমাজে তার পরিচয় কার নামে হবে?
৩) ইসলাম ধর্মে পরিবারের কর্তা হলেন স্বামী। এই multi-husband এর পরিবারে কর্তা হবেন কে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা এই সহজ সমাধানটি পেয়ে যাই যে মেয়েদের জন্য একই সাথে একাধিক স্বামী গ্রহণ কখনও যুক্তি সঙ্গত হতে পারে না। তাই ইসলাম এর বৈধতা ঘোষণা করে না।

ইসলামের সকল বিধান, এর নমনীয়তা, কঠোরতা, দূরদর্শীতা ও বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত গুলোর কৃতিত্ব কোন বিশেষ গোষ্ঠী, ব্যক্তি এমন কি মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) এর ও নয়। এর গোপন কৃতিত্বের দাবীদার একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যিনি তার সৃষ্ট প্রতিটি জীবের চাহিদা ও সমস্যাবলী সম্পর্কে অবহিত আছেন।

সহায়ক বই ও লিংক:
1) Quranul Majid
2) Hadith
3) Women Under the shade of Islam – Dr. Jamal Badawi
4) ইসলামী সমাজে নারীর মর্যাদা- ডঃ মুস্তাফা আস- সিবায়ী
5) Lectures of Dr. Zakir Naik
6) মরিয়ম জামিলার লেখা বইসমূহ।

ডা. ফাতিমা খান
লেখিকা কর্মরত: আল হিবা মেডিক্যাল গ্রুপ, জেদ্দা, সৌদি আরব।

পর্ব -১