banner

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 13, 2025

 

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে (শেষ পর্ব)

আফরোজা হাসান


বেশ কয়েকমাস আগে একজন ব্যক্তির কিছু কথা ও কাজের কারণে তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধে চিড় ধরে গিয়েছিল। প্রফ বোঝাতে চেষ্টা করছিলেন কারো একটা বা দুটা ভুল আচরণের জন্য তার উপর নেতিবাচকতার সাইনবোর্ডই লাগিয়ে দেয়াটা অন্যায়। কেউ ভুল ত্রুটির উর্দ্ধে নয় এটা সবসময় মনে রাখা উচিত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমরা যাদেরকে পছন্দ করি তাদেরকে মনের সর্বোচ্চ স্থানে জায়গা দিয়ে ফেলি। তাই তাদের সামান্য চ্যুতিও আমাদেরকে মুষড়ে দেয়। আর চ্যুতি যখন ক্রমাগত হতে থাকে তখন শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক। অবশ্য শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিরও সচেতন থাকা অবশ্যক। কেননা একটা আচরণের দ্বারা যদি আমি কারো মনে শ্রদ্ধার বীজ বপন করি। তখন সেই বীজটা যাতে অক্ষত থাকতে পারে, বীজ থেকে চারা বের হতে পারে, চারা গাছে রূপান্তরিত হতে পারে সেই দায়িত্বটাও আমারই পালন উচিত। সবসময় শুনেছি শ্রদ্ধা অর্জন করার চেয়ে টিকিয়ে রাখাটাই বেশি কঠিন। প্রফের কাছ থেকে জেনেছিলাম নিজ আচরণ দ্বারা কারো মনে যদি শ্রদ্ধার জন্ম দেই তাহলে সেটাকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্বও আমারই।

এমন ছোট-বড় আরো কতই কিছুই না শিখিয়ে গিয়েছেন উনি আমাদেরকে। যা যা মনে পড়েছে এক এক করে সব লিখে মেইল পাঠিয়ে দিয়েছি প্রফকে। জানি সেই মেইল উনি হয়তো দেখবেন না কোনদিন। তবুও আমি এমনটা করেছি নিজের মনের স্বস্থির জন্য। কেননা মনে স্বস্থি না থাকলে জীবনে সব থাকতেও কোথাও শান্তি মিলে না এটা আমার খুব ভালো মতই জানা আছে। তাই সদা সতর্ক থাকতে চেষ্টা করি যাতে কিছুতেই মনের স্বস্থি বিঘ্নিত না হয়। কিন্তু সবসময় পারিনা। প্রফ যেহেতু আমার কলিগও ছিলেন এমন বেশ কয়েকবার হয়েছে উনার উপর রেগে গিয়েছি, যা বলেছেন তার উল্টো বলেছি, আমার যুক্তির সাথে মেলেনি তাই কেয়ার করিনি উনার কথা। সব বার হয়তো তেমন করে সরি বলাও হয়নি। গত তিন-চার মাস থেকে খুব কথা বলতে চাইতেন আমার সাথে। আমারো নানান ঝামেলা যাচ্ছে তাই নিজে তো ফোন দিতামই না উনি করলেও তেমন করে কথা বলা হয়ে ওঠেনি যেমনটা করে উনি বলতে চাইতেন।

আজ এসব স্মৃতি মনেকরে অপরাধবোধে ভোগা, দুঃখিত হওয়া আসলে অর্থহীন। কেননা আমার কোন অনুভূতিই উনার কাছে পৌছোবে না। কথায় বলে জীবনে সুযোগ, সম্ভাবনা একবারই আসে। হেলায় হারিয়ে ফেললে তাকে আর পাওয়া যায় না জীবনে। কিন্তু আপনজন, প্রিয়জন, পছন্দের মানুষদের ঘিরে স্মৃতিগুলোকে সুন্দর করার সুযোগ বার বার আসে, আর আসতেই থাকে আমাদের জীবনে। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই আমরা সেই সুযোগকে কাজে লাগানো তো দূরে থাক, সেটা যে একটা সুযোগ এটাই অনুভব করতে পারি না।

সমস্ত অনুভব, উপলব্ধি একসাথে মনে এসে ভিড় করে যখন সেই মানুষগুলো আমাদেরকে ছেড়ে চলে যায় অনেক দূরে। অথচ এই মানুষগুলোই জীবন যখন তপ্ত দাহ নিয়ে হাজির হয়, এরা হয় প্রশান্তিকর ঘন ছায়া! পিপাসাক্ত পথিকের মত মন এদের মাঝে খুঁজে পায় মিঠা পানির সরোবর! হতাশার ঘোর অমানিশায় এরাই জ্বালিয়ে যায় আশার প্রদ্বীপ! অসহায়ত্বের প্রহরগুলোতে জাগায় নির্ভরতার আশ্বাস। পথহারা মুহুর্তেকে আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে দেয় গন্তব্যের দিশা!

ভালোবাসার রেণু ঝরিয়ে যায় এরা শব্দে শব্দে! ধূসর গোধূলি বেলা এদের ছোঁয়ায় পরিণত হয় মাহেন্দ্র ক্ষণে! ধূ ধূ মুরুভূমিকে মনেহয় চন্দ্রালো ছড়ানো শালবন! মেঘলা আকাশকে করে দেয় রোদেলা দুপুর। এরা সবসময়ই অবস্থান করে মনের অনুভূতির বিপরীতে।

যাতে জীবন বীণা যখন বেদনার ঝঙ্কার তোলে ছড়িয়ে দিতে পারে আনন্দের বাণী। এরা আসলে ঠিক কেমন সেটা প্রকাশ যোগ্য না। তবে যারাই জীবনে এমন কারো সন্ধান পায়, আল্লাহর রহমা স্বরূপই পায়। সবসময় যে পরিবারের সদস্যই হয় এমন মানুষগুলো এমনটা ঠিক না।

রক্তের বন্ধনের বাইরেও কেউ হয়ে উঠতে পারে আপনার আপন। বন্ধন রক্তের হোক কিংবা মনের এটা আসলে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বন্ধনের হক আদায় করা, তাদের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি দেয়া। যাতে তারা জীবন থেকে অতীত হয়ে গেলে মনের কোণে ভিড় জমাতে না পারে তাদের প্রতি আমাদের দ্বারা সংঘটিত অভিমান, অবহেলা, অনুযোগ, অভিযোগ…।

এমন মানুষ গুলো আসলে আমাদেরকে জীবনকে চিনতে, জানতে ও বুঝতে শেখায়! যাদের কথা এই উপলব্ধি জাগায় যে জীবন যদি নিস্তব্ধতার আঁধারে ঢেকে যায়, তবুও সেটা আমাদের জন্য আল্লাহর দেয়া আমানত। দুঃখের অমানিশায় তাই জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিয়ে হাত বাড়িয়ে তাকে কাছে টেনে নিতে হবে।

আগাছায় ছেয়ে গিয়েছে বলে ত্যাগ না করে মমতার চোখে তাকাতে হবে জীবনের দিকে। তাহলেই চোখে পড়বে আগাছার ফাঁকে ফাঁকে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়া ঘাসফুলদের। এই প্রিয় মানুষগুলো যদি কখনো হারিয়ে যায়, তবুও সবসময় বেঁচে থাকে মন মাঝারে। কেননা উৎসাহ-প্রেরণা-স্নেহ-মায়া-মমতা-আদর-শাসন ও ভালোবাসার আদলে এরাই গড়ে দিয়ে যায় জীবনের ভিত্তি। হারিয়ে গিয়েও তাই এরা বেঁচে থাকে যাপিত জীবনের প্রতিটি কথা, কাজ ও দর্শনে।

 

চট্টগ্রামে নবম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা

নারী সংবাদ


নবম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী তাসফিয়া আমিন বয়স ১৬ বছর। চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত ইংলিশ মিডিয়াম ছাত্রী। বন্ধুর আদনান মির্জার সাথে সৈকতে বেড়াতে গিয়ে লাশ হলেন। পুলিশের ধারণা, ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ সৈকতে ফেলে দেয়া হয়।

গতকাল (বুধবার) নগরীর পতেঙ্গা থানার নেভাল বিচ এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে চোখ, নাক-মুখ থেঁতলে যাওয়া ওই স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বেলা ১১টায় স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে নেভাল একাডেমির ১৮ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

তাসফিয়া আমিন নগরীর নাসিরাবাদ ইংলিশ মিডিয়াম সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার পিতার নাম মোঃ আমিন। তাদের বাসা নগরীর ও আর নিজাম রোড আবাসিক এলাকায়। তাদের বাড়ি কক্সবাজার শহরের ডেইলপাড়া এলাকায়। লাশটি অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধারের পর দুপুরে তার বাবা আমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।

পরিবারের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পতেঙ্গা থানার এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে আদনান মির্জা নামে এক বন্ধুর সঙ্গে তাসফিয়া বেড়াতে বের হন। দুজন কিশোর কিশোরী। তারা দুইজনেই ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত সানশাইন এ পরেছে। সেখানেই তাদের পরিচয়। আর সম্পর্ক ১ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ঘুরতে বের হয়। এরপর রাতে আর বাসায় ফেরেনি। আদনান মির্জার সন্ধানে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। পুলিশ জানায়, ফেইসবুকের মাধ্যমে ওই যুবকের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে দুইজন।

পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক ফৌজুল বলেন, পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ফেইসবুকে পরিচয়ের পর আদনান মির্জা নামে এক যুবকের সঙ্গে এক বছর আগে থেকে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাসফিয়া। আদনানের সঙ্গেই তাসফিয়া পতেঙ্গা সৈকতে এসেছিল বলে পরিবারের ধারণা। আদনানকে আমরা আটকের চেষ্টা করছি। তার ধারণা, তাসফিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীর তীরে ফেলা হয়েছে।

ফৌজুল আজিম চৌধুরী জানান, তার দুই চোখ, নাক ও মুখ থ্যাঁতলানো ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। মুখে ফেনা ও রক্ত আছে। তার পরনে ছিল সালোয়ার কামিজ। স্থানীয়রা দেখে তাকে প্রথমে বিদেশি বলে ধারণা করে। নদীর তীরের উঁচু স্থান থেকে আনুমানিক ৮-১০ ফুট নিচে পাথরের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। তার ধারণা আগের রাতের যেকোন সময় তাকে খুন করে লাশ সেখানে ফেলে যাওয়া হয়েছে।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি। সুত্র: ইন্টারনেট এবং ফেসবুক।