banner

সোমবার, ০৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 4, 2025

 

অন্যের সুখে অসুখী!

আগে প্রচুর ফেসবুকিং করতাম। ইদানীং কমিয়ে দিয়েছি। সেটা অন্য কারও ওপর রাগ করে নয়, নিজের ওপর বিরক্ত হয়ে। বিরক্তির কারণ হলো, আমি লক্ষ করলাম যে সামাজিক মাধ্যমে এসে আমার ভেতর নানা ধরনের অসামাজিক চিন্তাভাবনার জন্ম হচ্ছে। তার মধ্যে একটা হলো অন্যের সুখ দেখে হিংসা করা। দেখলাম নিউজ ফিডে কেউ যদি নিজের ব্যাপারে ভালো কিছু বলে বা নিজের জীবন নিয়ে ভালো কিছু শেয়ার করে, তাহলে তাদের জন্য খুশি না হয়ে আমার তাদের প্রতি হিংসা হচ্ছে। নিজের ব্যাপারে এটা ভালো লাগল না। ভাবলাম থাক, তাহলে আমি কয়েক দিন সামাজিক মাধ্যমে চলাফেরা কমিয়ে দিই।
দেশ থেকে শুরু করে বিদেশে থাকা আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুবান্ধবের খবর আমরা পাই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা টুইটার থেকে। কী খেলাম, কেমন আছি, কী পরব অথবা পড়ব, কোথায় যাচ্ছি, কোথায় যেতে ইচ্ছা করছে—সব জানাই ফেসবুকের মাধ্যমে। কেনাকাটা করি ফেসবুকে, সামাজিক দায়িত্ব পালন করি ফেসবুকে, এমনকি রক্তের প্রয়োজনে আশ্রয় নিই সামাজিক মাধ্যমের। ক্রমেই আমাদের একটা বড় জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক মাধ্যম আর শুধু বিনোদনের জায়গা নেই। সামাজিক মাধ্যম এবং বিশেষ করে, ফেসবুক অনেকের জন্যই একধরনের সমান্তরাল জগতে পরিণত হয়েছে।
এখন ফেসবুক বা সামাজিক মাধ্যমে আচরণ এবং অনুভূতির সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের আচরণ ও অনুভূতি আলাদা করে দেখার কোনো যৌক্তিকতা আমি দেখি না। সাধারণ জীবনে যদি ঈর্ষাবোধ বেড়ে যায়, তাহলে আমরা স্বভাবতই চিন্তিত হয়ে পড়ব। চেষ্টা করব কীভাবে নিজের ভেতর থেকে এ ধরনের নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দূর করা যায়। তাহলে ফেসবুক ভিন্ন হবে কেন?
আমি চিন্তা করে দেখলাম, যেকোনো দাওয়াত বা যেকোনো জায়গায় গিয়ে যদি আমার আশপাশের মানুষের সুখ সহ্য না হয়, তাহলে আমি কী করব। প্রথমে হয়তো সেসব জায়গায় যাওয়া কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখব। এ জন্যই আপাতত আমার ফেসবুকে যাওয়া-আসা কম। তবে এটা কোনো ধরনের স্থায়ী সমাধান নয়। কেন আমার ভেতরে নেতিবাচক চিন্তা বা অনুভূতি হচ্ছে, সেটা বুঝতে হবে এবং সেই চিন্তা বা অনুভূতিগুলো ঝেড়ে ফেলতে হবে।
অন্যদের সুখে কেন খুশি হতে পারছি না? অনেক চিন্তা করে দেখলাম, এর কারণ হয়তো-বা আমি আমার নিজের জীবন নিয়েই অসন্তুষ্ট। এই অসন্তুষ্টির সমাধান কী? সমাধান অনেক স্তরের। প্রথমত, চিন্তা কম করে যেসব কাজ করে মন আর শরীর ভালো লাগে, সেগুলো করা। আমার জন্য এ ধরনের কাজ মানে দৌড়ানো, অর্থাৎ ব্যায়াম করা আর ছবি তোলা। দৌড়ানো শুরু করলাম নতুন উদ্যমে। সিদ্ধান্ত নিলাম, যা-ই হোক না কেন সপ্তাহে অন্তত দুই দিন আমি ছবি তুলব।
আরেকটা জিনিস, যেটা করলে আমার মন আর শরীর হালকা হয়, সেটা হলো ঘুরে বেড়ানো। ব্যস্ত জীবন আমার। সব সময় বড় ছুটি নেওয়ার সুযোগ হয় না। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে রাগ আর হিংসা পুষে রাখা ঠিক হবে না। ঠিক করলাম আর কোথাও না যেতে পারলে চিড়িয়াখানায় যাব। নিজের মতো আরও কয়েকটা বানর দেখব। ছবি তোলা, দৌড়ানো, ঘর থেকে বেরিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করা খুব জটিল কোনো কাজ নয়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে লক্ষ করলাম, এই সহজ জিনিসগুলো কাজে দিচ্ছে। মন ভালো লাগছে। অন্যদের সুখও আমাকে আনন্দ দিচ্ছে। তবে এখানেই শেষ নয়।
ভেবে বের করলাম যে অসন্তুষ্টির আরেকটা কারণ হলো, নিজের যা আছে সেটার ব্যাপারে আমি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নই। অনেক সময় আমরা আমাদের জীবনের খারাপ দিকগুলো নিয়ে বেশি মনোযোগী হয়ে পড়ি। তখন নিজের জীবন দুর্বিষহ মনে হয়। অন্যদের সুখ দেখলে বিরক্ত লাগে। এই ফাঁদ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা সহজ উপায়, প্রতিদিন অনুশীলনে নিজের জীবনে ভালো জিনিসগুলো নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবা এবং ভালোর জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া। তখন নিজের অস্তিত্বের প্রতি মমতা বাড়ে। অন্যদের সুখের প্রতি সহানুভূতি আসে।
সামান্য ফেসবুকে প্রতিহিংসাপরায়ণ হওয়া নিয়ে এত চিন্তা কেন? কারণ আগে যেটা বললাম। ফেসবুকের অনুভূতি আর সাধারণ জীবনের অনুভূতি পৃথক করার কিছু নেই। নেতিবাচক চিন্তা যেখানেই আসুক, দূর করতে হবে। এবং দূর করা সম্ভব।
লেখক: অভিনেতা

 

বিষণ্নতা দূর করবেন যেভাবে

জীবনে চলতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতা পার হতে হয় আমাদের। কখনো নিজের অজান্তেই হয় মন খারাপ। ভর করে বিষণ্নতা। আর এই বিষণ্নতা অল্প সময়ের জন্য হতেই পারে। কিন্তু সমস্য বাঁধে তখনই, যখন বিষণ্নতা দীর্ঘ সময়ের জন্য আসে। তবে বিষণ্নতায় ডুবে থাকা কোনো কাজের কথা নয়। বিষণ্নতা দূর করার জন্য সচেষ্ট হতে হবে আপনাকেই।

মন খারাপ হলে ভালো কোন স্যালোনে গিয়ে নিজের রেগুলার লুকটাকে কিছুটা পরিবর্তন করুন, হতে পারে সেটি হেয়ার কাট, হেয়ার কালার অথবা সেগুলো না চাইলে একটি ভালো ফেশিয়াল বা স্পা! অথবা চাইলে পরিবর্তন করতে পারেন পোশাকও। উজ্জ্বল রঙকে প্রাধান্য দিন, পছন্দের পোশাকটিকেও।

নিজে নিজেই কিছু তৈরি করুন, প্রিয়জনের জন্য কার্ড, ঘর সাজানোর জিনিস, পোস্টার, অরিগ্যামি করুন। দেখবেন কষ্ট অনেক কম লাগবে। কাছের মানুষগুলোকে বাইরে থেকে কিনে না দিয়ে নিজেই কিছু বানিয়ে দিন। যাকে দেবেন তিনিও প্রচুর খুশি হবেন,আপনার বিষণ্নতাও দূর হবে।

মন খারাপ হলে বৈরী কোনো পরিবেশে ঘুরতে যান, রোমাঞ্চকর কিছু করুন। দেখবেন যখন আপনি মজার কিছু নিয়ে উত্তেজিত থাকবেন, মন ভালো হয়ে যাবে।

মন খারাপের সময়টাতে নিজে ভিন্ন কিছু রান্না করুন অথবা চলে যান অপরিচিত কোনো খাবারের দোকানে, তাদের স্পেশাল বা আপনার জন্য নতুন এমন কোন একটি আইটেম ট্রাই করে দেখুন। দেখবেন ভালো খাবার আপনাকে অনেকখানি প্রশান্তি দিচ্ছে।

দূরে কোথাও যাওয়ার সময় অথবা সুযোগ না থাকলে কোনো পার্কেই না হয় কাটিয়ে আসুন সময়। রোলার কোস্টার রাইড খারাপ লাগবে না কোনভাবেই।

ছবি তুলুন বা আঁকুন, এমন না যে আপনাকে খুব সুন্দর পারতেই হবে, কিন্তু সুন্দর করার চেষ্টা করতে থাকুন, বিষণ্নতা কমবে।

 

এই গরমে হালকা সাজ

গরমের এই সময়ে সাজ নিয়ে সবাইকেই বেশ ঝামেলায় পরতে হয়। কোন সাজে আপনাকে সতেজ লাগবে আর আপনার ত্বকের সাথে মানিয়ে যাবে তা ভাবতে ভাবতেই পার্টিতে কিংবা গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। আর সাজের ক্ষেত্রে তা মন মতো না হলে আর তাতে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে না পারলে সারাটা দিনই খারাপ কাটে। এই গরমে সাজ ঠিক রাখতে আর নিজেকে সতেজ দেখাতেই অনেকটা সময় চলে যায়। কিন্তু ছোট ছোট কিছু বিষয় খেয়াল করলে এই গরমেও আপনার সাজ থাকবে পরিপাটি।
হালকা মেকআপ
গরমে সময় সাজের দিকে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে মুখের মেকাপ। ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা ঠিক রেখে সাঁজের সব দিক ঠিক রাখা বেশ কঠিন। গরমের সময় যখনি মুখে মেখাপ লাগাতে যাবেন তার আগে মুখ ফেস ওয়াস দিয়ে দ্গুয়ে নিন। এর পরে  ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এরপরই বিবি ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। এতে মেকাপ করলে মুখে তা খুব সহজে বসবে এবং উঠে যাবে না। আর ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ত্বকে যেন ভালোভাবে ব্লেন্ড হয় সেদিকেও লক্ষ রাখুন। এতে আপনাকে সারাদিন বেশ সতেজ আর প্রাণবন্ত লাগবে

ব্লাশন
গরমে ব্লাশন লাগাতে একটু ভুল হলে তা সাঁজের পরো বিষয়টিই নষ্ট করে দেয়। তাই এই গরমে ক্রিম বেইজ ব্লাশন বেছে নেওয়া উচিত এটি  দীর্ঘস্থায়ী হয়। আর এই আবহাওয়ায় উজ্জ্বল রং এড়িয়ে হালকা ব্লাশন বেছে নেওয়াই ভালো। যার মধ্যে আপনি বেঁছে নিতে পারেন অ্যাপ্রিকোট বা কোরাল, হালকা গোলাপি ইত্যাদি রংগুলো। বাড়তি উজ্জ্বলতা যুক্ত করতে ব্লাশনের উপর হালকা করে ব্রোঞ্জার বুলিয়ে নিতে পারেন।

চোখের সাজ
গরমে চোখে সাঁজের সাঁজের ক্ষেত্রে চকচকে শ্যাডো এড়িয়ে  চলুন। হালকা রংয়ের শ্যাডো দিয়ে পাপড়ি ঘেষে লাইনার টেনে নিন। চাইলে রঙিন লাইনারও ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখের নিচে দিতে পারেন কাজল, এরপর হালকা করে স্মাজ করে নিন। উপরের ও নিচের পাপড়িতে ঘন করে মাস্কারা লাগিয়ে নিতে পারেন। তবে তা ওয়াটার প্রুভ হলে সবচেয়ে ভালো হয় গরমের এই সময়ের সাঁজের ক্ষেত্রে।

লিপস্টিক
গরমের এই সময়ে হালকা রঙের আর ম্যাট লিপস্টিক আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো নির্বাচন হবে। মেজেন্টা, লাল, চড়া গোলাপি কিংবা বেগুনি রঙের ম্যাট লিপস্টিকেও আপনাকে দারুণ মানাবে আর সতেজ দেখাবে।

 

আম দিয়েই তৈরি করুন মজাদার ক্ষীর

আসছে আমের মৌসুম। বাজারে এখনই উঠতে শুরু করেছে পাকা আম। আম দিয়ে তৈরি করা যায় নানা উপাদেয় খাবার। দুধ দিয়ে ক্ষীর রান্না তো অহরহই করে থাকেন। এবার নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে যাক। আম দিয়েই তৈরি করে ফেলুন সুস্বাদু ক্ষীর। কীভাবে? রইলো রেসিপি-

উপকরণ :
দুধ ২ কেজি, পোলাও চাল / বাসমতি চাল ১ কাপ, চিনি ১ কাপ (কম বেশি করা যাবে), এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা কয়েকটা, আম এর পিউরি/টিন ম্যাঙ্গো পাল্প ১ টিন, ডাবল ক্রিম ৩০০ মি.লি.।

প্রণালি :
হাড়িতে দুধ দিয়ে সাথে পোলাও চাল/বাসমতি চাল ১ কাপ, চিনি ১ কাপ (কম বেশি করা যাবে) এলাচ দারুচিনি তেজপাতা কয়েকটা মিশিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। আস্তে আস্তে ঘন হতে থাকবে। খেয়াল রাখবেন যেন নিচে না লাগে। ঘন হলে নামিয়ে নিন। এবার আমের পাল্পটা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিয়ে ক্ষীরের সাথে মিশিয়ে নিন। (সরাসরি চুলায় আমের মিশ্রণটা দিলে দুধ ফেটে যাবার সম্ভবনা থাকে তাই ক্ষীর ঠান্ডা হবার পর আমের মিশ্রণটা মেশাবেন) সাথে ডাবল ক্রিম ৩০০ মি.লি. মিশিয়ে নিন। ক্ষীর এর উপর কিছুটা পাল্প সাজানোর জন্য দিতে পারেন। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।