banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 4, 2025

 

ঘড়ির প্রতি আমার দুর্বলতা আছে : সাইমন সাদিক

ঢালিউডের একটি সম্ভাবনাময় নাম সাইমন সাদিক। তার জন্ম ৩০ আগস্ট ১৯৮৫ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার কলাপাড়া গ্রামে। কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। তার অভিনয় জীবনের শুরু জাকির হোসেন রাজুর `জ্বী হুজুর` চলচ্চিত্রে  অভিনয়ের মাধ্যমে। এছাড়া তিনি স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভি আয়োজিত `সুপার হিরো সুপার হিরোইন` প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে পোড়ামন ছবির মাধ্যমে পরিচিতি পান তিনি। অভিনয় জীবন ছাড়াও তিনি ব্যক্তিগত জীবনে প্রচন্ড ফ্যাশন সচেতন। সাইমন সাদিকের ফ্যাশন এবং লাইফস্টাইল নিয়ে কথা বলেন জাগো নিউজের সাথে। সঙ্গে ছিলেন ফারিন সুমাইয়া-

সাইমনের ব্যস্ততা শুরু হয় সকাল থেকেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে ঝটপট নাস্তা সেরে ছোটেন কর্মস্থলের দিকে। কাজের ক্ষেত্রে তিনি যেকোনো কাজই গুছিয়ে করতে ভালোবাসেন। শুটিংয়ের ক্ষেত্রে আগে থেকে কস্টিউম তৈরি করে এবং স্ক্রিপ্ট পড়ে রাখেন। ছুটির দিন তিনি পছন্দ করেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। অবসর সময়ে ঘুমাতে পছন্দ করেন। শুটিংয়ের কারণে ঘুমে প্রায়ই ব্যাঘাত ঘটে। আর অবসরে তাই এই ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা।

সাইমন সাদিক রূপচর্চা একেবারেই করেন না। তবে তিনি প্রতিদিন ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করে থাকেন। যেকোনো ঝাল ধরনের খাবার তার পছন্দের। সকালে হালকা নাস্তা, দুপুরে ভাত এবং রাতে বাসায় খাওয়া হলে ভাত আর বাইরে খাওয়া হলে হালকা খাবার খেয়ে নেন। তবে কিছু সময় পর পর তিনি খাবার খান। সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবার তিনি অল্প করে খেয়ে থাকেন।

এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে তার পছন্দ সানগ্লাস আর ঘড়ি। ঘড়ির প্রতি তার বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। ঘড়ির ক্ষেত্রে তার পছন্দের ব্র্যান্ড র্যাডো, রোলেক্স। আর সানগ্লাসের ক্ষেত্রে যেকোনো ভালো ব্র্যান্ড। তার প্রিয় ব্যক্তি তার মা। শখের ক্রিকেট খেলা, বন্ধুদের সঙ্গে গান করা, ছবি দেখা। পছন্দের গায়ক জেমস আর পছন্দের নায়ক সালমান শাহ্। তার কাছে ফ্যাশন মানে কী তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, `ফ্যাশন হচ্ছে তা যা আপনি ক্যারি করতে পারবেন। যাতে আপনি স্বাছন্দ্যবোধ করতে পারছেন তাই ফ্যাশন`।

 

কীভাবে বোঝাবেন কতটা ভালোবাসেন

ভালোবাসা শব্দটি খুব ছোট হলেও এর ব্যপ্তি অনেক। প্রত্যকটি ভালোবাসার মানুষ চায় তার কাছের মানুষটির থেকে উজাড় করা ভালোবাসা আর বিশ্বাস। নিজের যতটুকু সামর্থ্য আছে প্রত্যকটি মানুষ চায় তার সর্বোচ্চ দিয়ে তার ভালোবাসার মানুষকে কাছে রাখতে। তবে আপনি যদি ভালোবাসার মানুষকে আপনার ভালোবাসার কথা না বলেন তবে হয়তো আপনার অনেক অনুভূতিগুলো শব্দহীন হয়ে থাকবে। কিছু ক্ষেত্রে অনেকে মনে মনে ভাবতে থাকে যে কেন ভালোবাসার কথা প্রিয় মানুষটির মুখে শুনছে না। আর এতে আপনিও মনে মনে কষ্ট পান। তাই সঙ্গীকে আপনার কার্যকলাপ দিয়ে বোঝান যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন।

ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গী
ভালোবাসা প্রকাশের ধরন একেকজনের কাছে একেকরকম। কেউ ফুল হাতে প্রিয়ার হাতে হাত রেখে, আবার কেউ রাতের পর রাত জেগে কথা বলে, আবার কেউ খুদে বার্তা দিয়ে। যে যেভাবেই বলুক না কেন ভালোবাসা প্রকাশ হচ্ছে মূল বিষয়। তবে খেয়াল রাখুন যে আপনার সঙ্গী আপনার এই ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গী বুঝতে পারছে কি না। তার কাছে এই প্রকাশভঙ্গী স্বাভাবিক লাগছে কি না? নাকি তা কেবলই আপনাকে খুশি করার জন্য আপনার হাতে হাত মেলাচ্ছে। আপনার ভালোলাগার সাথেসাথে তার ভালোলাগাগুলোকেও প্রাধান্য দিন। যেকোনো সারপ্রাইজ দেয়ার ক্ষেত্রে তাকে মাথায় রেখে প্ল্যান করুন।

মনযোগ দিয়ে কথা শোনা
প্রায় সময়েই ভালোবাসার মানুষের কাছে অপর পক্ষের মানুষটির একটিই আবদার থাকে। তা হচ্ছে সে যেন তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে। ভালোবাসার মানুষটির সাথে থাকলেও দেখা যায় অনেক কাজে ব্যস্ত থাকা হয়। কখনো তা ফোনে আবার কখনো তা মেইলে। কাছের মানুষটির কথা ইচ্ছে থাকলেও মনোযোগ দিয়ে শোনা হয় না। আর যাতে সৃষ্টি হয় দূরত্ব। তাই যতটুকু সময় সম্ভব হয়, তার কথা শুনুন মনযোগ দিয়ে।

পরস্পরকে সময় দিন
সময় দেওয়া একটি সম্পর্কে অনেক বড় কিছু। আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে কতটুকু ভালোবাসেন তা সময়ের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। সম্পর্কে মাঝে একে অন্যকে কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। এতে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা যেমন বোঝা যায় তেমনি তা বাড়ে কয়েকগুণ। কাছাকাছি থাকা হলে অনেক সময় একে অন্যর গুরুত্ব বোঝা যায় না। যা বোঝা যায় কেবল দূরে থাকলে। তাই সম্পর্কে মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করেই একটু দূরত্ব বাড়ান। তবে তা সময় এবং অবস্থান বুঝে। আর তারপর আবার কাছাকাছি এসে বোঝান যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন!

 

যে কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি

কুরআন এবং হাদিসে মানুষের ভালো-মন্দ বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। যা  মানুষকে অন্যায়-অনাচার থেকে হিফাজত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষ সামান্য ভুলের কারণে মারাত্মক অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ে।

যে সব অন্যায়ের কারণে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের ময়দানে কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর (মানুষের) সঙ্গে আল্লাহ তাআলা কথা বলবেন না। এমনকি তাদের প্রতি দয়ার দৃষ্টিতেও তাকবেন না। বরং তারা কঠিন আজাবে নিপতিত হবে। আর তা হলো-

বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচার
এর মানে এই নয় যে, যৌবন কালে ব্যভিচার করা দোষণীয় নয়। বরং ব্যভিচার সর্বাবস্থায়ই মারাত্মক অপরাধ। কিন্তু বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচারকারীদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বনের কারণ হলো, বৃদ্ধাবস্থায় সাধারণত যৌনক্ষুধা নিবৃত থাকে এবং মৃত্যুর সময় সন্নিকটে বিধায় বৃদ্ধাবস্থায় কোনো ব্যক্তির ব্যভিচারের মতো গর্হিত কাজে কোনো ভাবেই কাম্য নয়। এ কারণেই তা সীমাহীন জঘন্য অন্যায় বলে পরিগণিত।

শাসকের মিথ্যা কথা বলা
মিথ্যা সব পাপের জননী। আর তাই মিথ্যা সবার জন্যই মারাত্মক অপরাধ। এখানে শাসকের কথা গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করার কারণ হলো, বাদশাহ বা শাসকগণতো কারো ভয়ে ভীত হওয়ার কথা নয় এবং কারো বাধ্যও নয়। ক্ষমতা ও প্রভাব থাকা সত্ত্বেও শাসকের মিথ্যা বলা সাধারণ মানুষ অপেক্ষা মারাত্মক অপরাধ। তাই সমাজের সব দায়িত্বশীলদেরকে মিথ্যা পরিহার করা জরুরি।

গরিবের অহংকার
বাদশাহ-ফকির, ধনী-গরিব, উঁচু-নীচু, ছোট-বড় সবার জন্যই অহংকার করা মারাত্মক অপরাধ। কিন্তু দরিদ্র মানুষের অহংকার করা বড়ই আশ্চর্যের বিষয়। কেননা গরিব মানুষের মধ্যে অংকারবোধ জাগ্রত হওয়ার কোনো কারণ থাকার কথা নয়। এ কারণে কোনো গরিব মানুষ যদি অহংকার করে বসে তা মারাত্মক অপরাধ।

পরিশেষে…
মানুষ যুবক হোক আর বৃদ্ধ হোক ব্যভিচার থেকে হিফাজত থাকা জরুরি। বিশেষ করে বৃদ্ধদের তা একেবারেই কাম্যনয়। আবার রাজা হোক আর প্রজা হোক মিথ্যা পরিহার করা আবশ্যক। বিশেষ করে যারা সমাজে মিথ্যার প্রচলন দূর করবে তাদের মিথ্যার আশ্রয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঠিক এমনিভাবে ধনী হোক আর গরিব হোক অহংকার থেকে মুক্ত থাকা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ব্যভিচার, মিথ্যা এবং অহংকারের মতো মারাত্মক অন্যায় থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত তিনটি বিষয় থেকে বিরত থেকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার নেক দৃষ্টি এবং দয়া লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

কোর্মা বিরিয়ানি তৈরি করবেন যেভাবে

বিরিয়ানি খেতে যারা পছন্দ করেন তাদের কাছে একটি জনপ্রিয় পদ হচ্ছে কোর্মা বিরিয়ানি। চেটেপুটে খেতে ভালোবাসলেও অনেকেই হয়তো এই খাবারটি তৈরির রেসিপি জানেন না। হঠাৎ কোনো অতিথি এলে বা ঘরোয়া পার্টিতে চাইলে রাঁধতে পারেন কোর্মা বিরিয়ানি। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : খাসির মাংস ছোট করে কাটা ১ কেজি, বাসমতি চাল আধা কেজি, টক দই আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ভাজা জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, ছোট এলাচ ৪ টি, কিশমিশ সিকি কাপ, আলুবোখারা ৭/৮ টি, পুদিনা পাতা ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৫/৬ টি, শাহি জিরা আধা চা-চামচ, জর্দার রং সামান্য, সিরকা ১ টেবিল চামচ, ঘি-তেল দেড় কাপ, কেওড়া জল ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো। কোর্মার মসলা (ছোট এলাচ ৬ টি, বড় এলাচ ৩ টির বিচি, লবঙ্গ ৪ টি, সাদা গোলমরিচ ৬টি ও দারুচিনি ৪/৫টা। এই মসলাগুলো চুলার পাশে রেখে মচমচে করে গুঁড়া করে নিতে হবে)।

প্রণালি : দই, আদা-রসুন বাটা, ধনে গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া ভাজা, জিরা, লবণ, সিকি কাপ তেল, ২ টেবিল চামচ ঘি,১ টেবিল চামচ কেওড়াজল ও কোর্মার মসলা অর্ধেক দিয়ে মাংস মেখে রাখুন। পাত্রের ১ কাপ তেল ও ঘি দিয়ে বেরেস্তা করে অর্ধেক তুলে নিন। বাকি অর্ধেক বেরেস্তার মধ্যে মাংস দিয়ে কোর্মার মতো রান্না করুন। নামানোর আগে বাকি অর্ধেক মসলা দিয়ে দিন।

চাল ২০ মিনিট ভিজিয়ে পানি ছেঁকে নিন। অন্য পাত্রে চালের ৪ গুণ গরম পানি করে তাতে কাঁচামরিচ ৫/৬ টি, এলাচ ৪/৫ টি, পুদিনাপাতা ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, দারুচিনি ২/৩ টুকরা ও শাহি জিরা আধা চা-চামচ দিন। পানি ফুটে গেল ভেজানো চাল দিন। চাল আধা সেদ্ধ হলে নামিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার বিরিয়ানি রান্নার পাত্রে ১ টেবিল চামচ ঘি ছড়িয়ে দিন।

এবার কিছুটা আধা সেদ্ধ চাল ছড়িয়ে অর্ধেক পরিমাণ মাংস ঢেলে দিন। এর ওপর বেরেস্তা ও কিশমিশ ছড়িয়ে দিন। মাংসের ওপর আবার একইভাবে রান্না করা ভাত ও মাংসের স্তর সাজান। ওপরে আবার চাল দিন। এখানে ভাতের স্তর হবে তিনটি এবং মাংসের স্তর হবে দুটি। সবার ওপরে বাকি ঘি এবং দুধে ভেজানো কেওড়া ছড়িয়ে দিয়ে আলু বোখারা গুজে দিন। এবার ঢাকনা দিয়ে ২০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

চোখ সাজাতে আইশ্যাডো

চোখের সাজে মনের কথা ফুটে ওঠে। তাইতো কতভাবে কত ঢঙে এই চোখকে ফুটিয়ে তোলা হয়। কখনো কাজলের স্পর্শে আবার কখনো বাহারি রঙের ছটায়। প্রিয় মানুষটির ছায়া নিজের চোখে দেখতে কে না পছন্দ করে। আর চোখ সাজাতে জুড়ি নেই আইশ্যাডোর। এটি চোখকে যেমন ফুটিয়ে তোলে তেমনই এর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। তবে এই আইশ্যাডো দেয়ার আছে কিছু নিয়ম। যার সাহায্য আপনার চোখকে আরো সুন্দর করে তুলতে পারেন।

চোখের আকার, রুচি, পোশাকের ধরণ ও রং, সাজের ধরন এবং আপনার ব্যক্তিত্ব আর স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী বেছে নিন শ্যাডো। তবে  সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে হালকা রং যেমন গোলাপি, হালকা নীল, সোনালি, হালকা সবুজের যেকোনো শেড। ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে চোখে মোটা করে কাজল বা স্মোকি আই সবচেয়ে মানানসই।

দিনের বেলা ব্যবহারের জন্য সংগ্রহে রাখতে পারেন বাদামি, ছাই (এশ), মভ, পিচের মতো আর্থ বা বেইজ টোনের রঙগুলো। আর রাতে ব্যবহারের জন্য অরেঞ্জ বা কমলা, বেগুনি, লাল, হলুদ, সবুজ, নীল, ডিপ ম্যাজেন্টা রঙগুলো থাকা চাই বিউটি বক্সে।

আইশ্যাডো বাছায়ের জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার গায়ের রঙের দিকে নজর রাখতে হবে। যাদের গায়ের রং ফর্সা তারা দিয়ে হালকা আর রাতে গাড় শেড ব্যবহার করুন, আর যাদের গায়ের রং শ্যামলা তারা সোনালি, সিলভার, গাঢ়, বেগুনি, বারগ্যান্ডি, বাদামি, পিচ, মভ ইত্যাদি।

চোখের আকারের সাথে সাথে আবার আইশ্যাডো লাগানোর ধরণে আসে বৈচিত্র্য। যেমন যাদের দু’চোখের দূরত্ব কম তারা নাকের কাছাকাছি থেকে চোখের ভেতরের দিকে শ্যাডো ব্যবহার করুন।

অন্যদিকে যাদের চোখের দূরত্ব বেশি, তারা চোখের ভেতরের অর্ধেক অংশজুড়ে মাঝারি থেকে গাঢ় টোনের যেকোনো রঙের শ্যাডো লাগান। ছোট চোখে হালকা রঙের আইশ্যাডোগুলো ভালো দেখায়।

শ্যাডো লাগানোর ক্ষেত্রে স্পঞ্জ বা ব্রাশ অ্যাপ্লিকেটর ব্যবহার করতে পারেন। আঙুল দিয়েও কাজ সেরে নেয়া যাবে। পছন্দমতো আইশ্যাডো নিয়ে আইল্যাশের কিনারা থেকে চোখের পাতার উপরের ভাঁজ পর্যন্ত লাগিয়ে নিন।

শ্যাডো লাগানোর ব্রাশ বা স্পঞ্জ বহুব্যবহৃত বা পুরনো হলে সেটি ব্যবহার করবেন না। এতে করে চোখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং আপনার আইশ্যাডো কাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

চোখের সাজের ক্ষেত্রে সময় নিয়ে সাজুন। খেয়াল রাখুন যাতে চোখের ভেতর চলে না যায়। চোখের সাজের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের পন্য ব্যবহার করলে ভালো হয়। আর অবশ্যই আপনার গায়ের রঙ এবং পোশাকের সাথে মিলিয়ে আইশ্যাডো চোখে লাগান।

 

রুমানার ত্রিমাত্রিক বইয়ের জগৎ

রুমানা আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) স্থাপত্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে পড়ার সময় ত্রিমাত্রিক বই তৈরির কাজ শুরু করেন। রুমানা বলেন, ‘এখন সময় স্মার্টফোনের। মানুষ বই পড়তে চায় না। শিশু-কিশোরেরাও বই পড়তে চায় না। শিশুদের স্মার্টফোন থেকে বই পড়ার দিকে কীভাবে মনোযোগী করা যায়, সেই চিন্তা থেকেই আমার পপ-আপ বই তৈরি শুরু।’

নিজের উদ্যোগে, অর্থায়নে কাজ শুরু করেছেন রুমানা শারমীন। প্রথমে নিজের হাতে বই তৈরি করে বিক্রি করতেন। চাহিদা বাড়ায় এখন উৎপাদন করছেন। তাঁদের প্রতিষ্ঠান লাভজনক অবস্থায় আছে বলে জানালেন। গত কয়েক মাসে দুই হাজার কার্ডবোর্ডের উপযোগী ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটি ছবি ও বই বিক্রি হয়েছে।

রুমানাদের প্রকাশিত সব বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে রং-বেরঙের পপ-আপ। বইগুলো দেশেই তৈরি হচ্ছে দেশীয় গল্প আর দেশীয় ডিজাইনারদের হাতে। এটা একাধারে হস্তশিল্প ও প্রকাশনা সংস্থা। ২০১৫ সালের একুশে বইমেলায় শিশুতোষ গল্পের পপ-আপ বই আনার পর তাঁরা দারুণ সাড়া পান। একটি ব্যাংক থেকে ঋণও পান। উদ্যোক্তা হিসেবে এখন রুমানা বেশ পরিচিতি পেয়েছেন।

 

ঢেউয়ের বিরুদ্ধে হাল ধরেছেন নয় নারী

নদের নাম বুড়াগৌরাঙ্গ। তবে বয়োবৃদ্ধ নয়। ভাটার সময়ও তীব্র স্রোতের টান, ঢেউ আছড়ে পড়ে দুপাড়ে। জোয়ার এলে তো কথাই নেই। ঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাসের সময় যেন দানব হয়ে ওঠে বঙ্গোপসাগর-ঘেঁষা পটুয়াখালীর এই নদ।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নদীর রূপ যা-ই হোক না কেন, বুড়াগৌরাঙ্গ কিন্তু হার মেনেছে কয়েকজন নারীর কাছে। প্রশস্ত এই নদের ঢেউ চিরে তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন দ্রুতগামী জলযান, ইংরেজি ‘স্পিডবোট’ নামে সবাই যাকে চেনে। ক্ষিপ্রগতিতে স্পিডবোট চালিয়ে তাঁরা উপার্জন করছেন অর্থ, হাল ধরেছেন দারিদ্র্যের কবলে পড়ে ধুঁকতে থাকা সংসারের।
নদের স্রোতের বিরুদ্ধে এভাবে হাল ধরেছেন মাত্র নয়জন—কুলসুম বেগম, খাদিজা বেগম, নূপুর আক্তার, ফাতেমা বেগম, নীলুফার, মমতাজ, সুজাই রানী, সালেহা ও নূরজাহান। ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সের এসব নারী থাকেন পটুয়াখালীর গলাচিপার চর বিশ্বাস ও চর কাজল ইউনিয়নে। জন্ম থেকেই এই চরাঞ্চলকে ঘিরে থাকা দুরন্ত সব নদ-নদী তাঁদের চিরচেনা।
দুর্গম এ চরাঞ্চলে বাল্যবিবাহের প্রচলন আছে। মাছ ধরা আর কৃষিকাজ ছাড়া পুরুষদের অন্য কোনো কাজ নেই। বর্ষার পর কার্তিকের ধানকাটা হলে তাঁরা প্রায় কর্মহীন। এর ওপর কেউ যদি স্বামী পরিত্যক্ত হন, কিংবা কারও স্বামী যদি মারা যান, তাহলে নারীদের একপ্রকার পানিতেই পড়ে যেতে হয়। এই নয়জন নারীই এভাবে অসহায়ত্বের কবলে পড়েছিলেন।
ব্যবসায়ী আদু আকন্দ বছর কয়েক আগে মরণঘাতী ক্যানসারে ভুগে মারা যান। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন খাদিজা আক্তার। একইভাবে ফাতেমা আক্তারের স্বামী আবদুর রহমান খানের আয়-রোজগারে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই ছিল। ওদিকে মধ্যপ্রাচ্যে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নূপুরের স্বামী দুই সন্তানের জনক শাহ আলম।
কিন্তু যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাকশনএইডের আর্থিক সহায়তায় চরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের (পিআরসিডি) অধীনে চর বিশ্বাস ও চর কাজলে অসহায় নারীদের জন্য শুরু হয় স্পিডবোট প্রশিক্ষণ। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে অ্যাকশনএইডের অংশীদার সাউথ এশিয়ান পার্টনারশিপ (স্যাপ)। ৯ জন নারী ও ১১ জন পুরুষকে স্পিডবোট চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ছয় মাসে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন তাঁরা। বর্তমানে চার মাস ধরে বুড়াগৌরাঙ্গসহ আশপাশের নদ-নদীতে স্পিডবোট চালিয়ে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন কুলসুম, খাদিজা, নূপুর, ফাতেমা, নীলুফাররা।
২১ নভেম্বর দুপুরে বন্যাতলী ঘাটে কথা হয় খাদিজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এমন কু-কথা নাই যে আমারে শুনতে হয়নি। বোট যেন চালাইতে না পারি, হের লইগা আমারে নিয়া প্রভাবশালীরা সালিস বসাইছে। আমার স্বামী না থাকার সুযোগ যারা নিতে চাইছে, তারাই আবার অপবাদ দিসে।’
নূপুর অনেকটা কান্না মেশানো কণ্ঠে বলেন, ‘ভাই, আমাগো এই চরে কাম করনের সুযোগ নাই। হাতও পাততে চাই না। পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে আইসা স্পিডবোট চালানো শিখছি। অহন এই বোট চালাইতে পারলে বাচ্চা দুইডার মুখে খাওন দিতে পারমু। ভাই, খুব কষ্টে আছি।’
স্পিডবোট মাত্র একটি। চালক নয়জন নারী। বোট চালাতে মেরিন অফিস থেকে নিবন্ধন করা হয়েছে। এখন বন্যাতলী থেকে চর কাজল ঘাট পর্যন্ত চালাতে রুট পারমিটের আবেদন করা হবে। এরপরই বাণিজ্যিকভাবে স্পিডবোট চালানো শুরু হবে বলে জানান পিআরসিডির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক ভুঁইয়া ফরিদউদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন গর্ভবতী মা-সহ অসুস্থ রোগীদের দুর্গম চরাঞ্চল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেওয়া, লাশ বহনের সেবামূলক কাজ করা হয় এই স্পিডবোটের মাধ্যমে। পর্যটক, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন কার্যক্রমের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। এই টাকার একটি অংশ স্পিডবোটের নারী চালকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। বাকি অংশ একটি ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এভাবে নতুন স্পিডবোট কেনা হবে। তবে অ্যাকশনএইড থেকে
নতুন আরও একটি অত্যাধুনিক স্পিডবোট কেনা হবে, যার আসন ১৬টি।