banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

শিঙ্গায় ফুৎকারের সময় সৃষ্টির অবস্থা

কিয়ামত বা মহাপ্রলয় ঘটাতে আল্লাহ তাআলা হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত করে রেখেছেন। তিনি যেদিন আল্লাহর হুকুমে শিঙ্গায় ফুৎকার দিবেন, সেদিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় মানুষের অবস্থা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ; যা আল্লাহ তাআলা কুরআন এবং হাদিসে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।

হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় শিঙ্গার মালিক (হজরত ইসরাফিল)-এর দৃষ্টি আরশের দিকে; যেদিন থেকে তাঁকে এ কাজের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে; সেদিন থেকে তিনি অনবরত আরশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এ ভয়ে যে, তাঁকে নির্দেশ করা হবে তাঁর দৃষ্টি নিক্ষেপের পূর্বেই। আর তাঁর চোখ দুটি যেন উজ্জ্বল দুটি তারকার মতো।’ (মুসতাদরেকে হাকিম)

আল্লাহ তাআলা হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে শিঙ্গায় প্রথম ফুৎকার দেয়ার জন্য নির্দেশ করবেন। আর সেই প্রথম ফুৎকারটি হবে সৃষ্টিকুলকে বেহুঁশ করার জন্য। প্রথম ফুৎকারের ফলে আকাশ এবং পৃথিবীতে যারা থাকবে, আল্লাহ ব্যতীত সব সৃষ্টিই বেহুঁশ হয়ে পড়বে অর্থাৎ সবাই মৃত্যুমুখে পতিত হবে।

শিঙ্গায় ফুৎকার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, ফলে আকাশ ও পৃথিবীতে যারা আছে সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে, তবে যাদেরকে আল্লাহ তাআলা রক্ষা করতে ইচ্ছা করবেন তারা নয়।’(সুরা যুমার : আয়াত ৬৮)

কিয়ামতের দিন দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকারের মুহূর্তটিও হবে অত্যন্ত ভয়ংকর। সে সময় একজন অপরজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার জন্য হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দিবেন। আর এটি হবে পুনরুত্থানের ফুৎকার। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, তখন ওরা (সব সৃষ্টি) দণ্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৬৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা সে দিনের ভয়াবহতার বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘অতএব আপনি তাদের থেকে মখু ফিরিয়ে নিন। যেদিন আহ্বানকারী আহ্বান করবে এক অপ্রিয় পরিণামের দিকে; তারা তখন অবনমিত চোখে কবর থেকে বের হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়। তারা আহ্বানকারীর দিকে দৌড়াতে থাকবে। অবিশ্বাসীরা (কাফেররা) বলবে, এটা কঠিন দিন।’ (সুরা কামার : আয়াত ৬-৮)

শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার পর মানুষ দলে দলে জমায়েত হতে থাকবে। তাদের সবাই ভয় ও চিন্তা মধ্যে নিমজ্জিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা করবেন, তারা ব্যতীত নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যারা আছে, তারা সবাই ভীতবিহবল হয়ে পড়বে এবং সবাই তাঁর কাছে আসবে বিনিত অবস্থায়।’

পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কিয়ামতের সময় উপস্থিত হওয়ার আগে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সময়ের যাবতীয় ভয়াবহতা থেকে হিফাজত করুন। আমিন।

 

বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রী যে দোয়া করবেন

বিয়ের পরপর স্বামী তার স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে দোয়া করবে। আর মুসতাহাব হলো স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একসঙ্গে দু’রাকাআত নামাজ আদায় করবে। নামাজ আদায়ের পর স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের জন্য দোয়া করবে। বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। স্বামী ও স্ত্রীর একসঙ্গে নামাজের পর হাদিসে একটি দোয়া রয়েছে, যা তুলে ধরা হলো-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত যে, নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন মহিলা তার স্বামীর কাছে আসবে, তখন স্বামী দাঁড়াবে এবং তার পেছনে তার স্ত্রীও দাঁড়াবে এবং উভয়ে দু’রাকাআত নামাজ পড়বে। অতঃপর বলবে (দোয়া করবে)-

Doa-Inner

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লি ফি আহলি, ওয়া বারিক লিআহলি ফি; আল্লাহুম্মার্‌যুক্বহুম মিন্নি, ওয়ারযুক্বনি মিনহুম; আল্লাহুম্মাঝ্‌মাআ’ বাইনানা মা ঝামাআ’তা ফি খাইরিন; ওয়া ফার্‌রিক্ব বাইনানা ইজা ফারাক্বতা ফি খাইরিন।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার পরিবারে আমার স্বার্থে বরকত দিন এবং আমার মাঝে পরিবারের স্বার্থে বরকত দিন। হে আল্লাহ! তাদের আমার পক্ষ থেকে রিজিক দান করুন এবং আমাকে তাদের পক্ষ থেকে রিজিক দান করুন। হে আল্লাহ! যে কল্যাণ আপনি জমা করেছেন, তা আপনি আমাদের মাঝে জমা করুন। আর যদি আপনি কল্যাণকে পৃথক করেন, তাহলে আমাদের মাঝে পৃথক করুন।’ (তাবারানি)।

পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নববিবাহিত নারী-পুরুষকেই বাসর রাতে দু’রাকাআত নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে এ দোয়ার মাধ্যমে সুখী জীবন কামনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

ব্লাউজে বৈচিত্র্য

শাড়ি বাঙালি নারীর সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে কয়েকগুণ। আর বর্তমান সময়ে শাড়ি তরুণীদেরও পছন্দের তালিকায়। তবে এই শাড়ির সঙ্গে যদি মানানসই ব্লাউজ না হয়, তবে সেই সাজের মানেই হয় না। আর এই ব্লাউজেও আছে নানা ধরন। বাহারি নামের আর বাহারি কাটিংয়ের ব্লাউজে নারীকে মানিয়ে যায় দারুণভাবে। চলুন জেনে নেই ফ্যাশনেবল সেসব ব্লাউজ সম্পর্কে।

স্টোন ওয়ার্ক করা ব্লাউজ
পাথরের কাজ করা ব্লাউজ অনেক দিন ধরেই জনপ্রিয় নারীদের কাছে। বোট কলার দিয়ে ব্লাউজ তৈরি করে পেছনের পুরোটা ঢেকে দিতে হবে নেট দিয়ে। স্টোনের কাজটা থাকবে সেই নেটে। স্টোন বসানো নেট এখন বাজারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ব্লাউজের পেছন দিকটা তাই কাপড় দিয়ে তৈরি করলে দারুণ লাগবে।

গলায় ফ্রিল দেয়া ব্লাউজ
যেকোনো ধরনের গলার ডিজাইনে পাতলা কাপড় দিয়ে ফ্রিল দেয়া ব্লাউজ এবারের নতুন ফ্যাশন। কমবয়সী মেয়েদের জন্য মানানসই হবে এই ব্লাউজ। ব্লাউজ হবে স্লিভ লেস কিংবা ফুল স্লিভ। ছোট হাতার ব্লাউজে ফ্রিল ভালো লাগবে না।

ঘটি হাতা গ্ল্যাডিয়েটর ব্লাউজ
তরুণীদের মানাবে ছোট ঘটি হাতা দিয়ে পেছনে ক্রিসক্রস ফিতার ডিজাইন দেয়া ব্লাউজ।

ভারি কাজ করা ফুল হাতা ব্লাউজ
গত দু’বছর ধরেই চলছে ভারি কাজ করা হাই নেক ব্লাউজ। এবার হাই নেকে বদলে দেখা যাবে বড় গলার ফুল হাতা ব্লাউজ, সঙ্গে ভারি কাজ তো থাকবেই।

একপাশে এমব্রয়ডারি ও পেছনে বাঁধা
এবার বছরজুড়েই থাকবে এমব্রয়ডারি ব্লাউজের ফ্যাশন। একপাশে এমব্রয়ডারিটাও চলবে খুব। একইসঙ্গে আশির দশকের পেছনে বাঁধা ব্লাউজগুলোও এবার ফ্যাশনে ফিরে আসতে যাচ্ছে।

 

ঝটপট কিমা-পটেটো চপ

বিকেলের নাস্তায় চপ কিংবা কাটলেট হলে আর কী চাই!। চপের মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায়ে যে চপটি তৈরি করা যায় সেটি হচ্ছে আলুর চপ। আলুর চপের একঘেয়ামি দূর করতে সাথে যোগ করতে পারেন মাংসের কিমা। আর তাতেই তৈরি হবে মজার স্বাদের কিমা-পটেটো চপ। চলুন জেনে নিই-

উপকরণ : গরুর মাংস কিমা করা ১ কাপ, আলু আধা কেজি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, বিট লবণ ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, সয়াসস ১ চা চামচ, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা চামচ, আদা-রসুন বাটা সিকি চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কাঁচামরিচ কুচি ও পুদিনাপাতা, কুচি পছন্দমতো, ডিম ১টা ফেটানো, টোস্টের গুঁড়া ২ কাপ, তেল পরিমাণ মতো।

প্রণালি : আলু সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে গরম অবস্থায় চটকে নিতে হবে। তাতে বেরেস্তা, গোলমরিচের গুঁড়া, পরিমাণমত লবণ, সামান্য বিট লবণ দিয়ে মাখিয়ে ৮-১০ ভাগ করে রাখতে হবে। মাংসের কিমা, সয়াসস, গরম মসলার গুঁড়া, আদা বাটা, রসুন বাটা ও সামান্য লবণ দিয়ে অল্প পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে এবং সামান্য তেলে পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি ও পুদিনাপাতা দিয়ে ভেজে নিতে হবে। আলুর মধ্যে কিমার পুর ভরে পছন্দমতো চপের আকার করে ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে ও টোস্টের গুঁড়ায় গড়িয়ে নিয়ে ডুবো তেলে চপগুলো বাদামি রঙ করে ভেজে নিন।

 

বেলকনিতে শখের বাগান

কথায় আছে শখের তোলা হাজার টাকা। তাই তো ইটপাথরের এই ছোট্ট বাসায় থেকেও মানুষ চায় এক টুকরো বাগান করতে। আজকাল আমরা যে বাড়িগুলোতে বাস করি তাতে উঠান থাকা আকাশ-কুসুম কল্পনা মাত্র। একটা সময় ছিল যখন বাড়িজুড়ে থাকতো বিশাল উঠান। ছেলেমেয়েদের ছোটাছুটির সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলতো হাজার ধরনের গাছের। পাতা বাহারের সমাহার, কোনোটি গোলাপের চারা আবার কোনোটি বেলিফুল, কোনোটি গন্ধরাজ। আমগাছ, জামগাছ, কাঁঠাল, কলা কী থাকতো না সেই বাগানে। সেই সময়ের বাগান হারিয়ে গেলেও এখনো আছে মানুষের মনে সেই ইচ্ছা। তাই তো এখনো বাড়ির বেলকনিতে মানুষ অল্প পরিসরে গড়ে তোলেন শখের বাগান!

বেলকনিতে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে প্রথমেই দরকার পড়ে টবের। মাটির টব আপনার আশপাশের নার্সারিতে পেয়ে যাবেন খুব সহজে। বেলকনিতে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে পাতা বাহার। মাটি আর পর্যাপ্ত পানি হলেই আপনার গাছ খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেড়ে উঠবে। এছাড়া আপনি ছোট ছোট টবে লাগাতে পারেন অর্কিড। শৌখিন মানুষেরা প্রায়শই তাদের বেলকনির শখের বাগানে অর্কিড রোপণ করে থাকেন। অর্কিড রোপণ করতে পুরো গাছ না হলেও চলবে। গাছের কাণ্ড হলেও আপনি লাগাতে পারবেন। টবে মাটির সঙ্গে নারিকেলের ছোবরা, ছোট কনি পাথর আর ইটের মিশ্রণের মাধ্যমে রোপণ করা হয় অর্কিড।

একটি জায়গা বেশি হলে আপনি আপনার শখের বাগানে রাখতে পারেন ড্রাম। যাতে প্রচুর মাটি দিয়ে আপনি বনসাই আম, কাঁঠাল গাছ লাগাতে পারেন। তার সঙ্গে বনসাই ছাড়াও লেবু গাছ, মরিচ গাছ লাগানো যেতে পারে। ফুলের ক্ষেত্রে গন্ধরাজ, রজনীগন্ধা, গোলাপের গাছ লাগাতে পারেন আপনার শখের বাগানে। এসব গাছের মাটি একটি সময় পরপর পরিবর্তন করে দিতে হয়। সপ্তাহে কিংবা মাসে তিনবার অন্তর অন্তর নিড়ানি দিতে হয় মাটিতে। তার সঙ্গে সঙ্গে গাছের গোড়ায় দিতে হয় গোবর। এই সার গাছকে দ্রুত বেড়ে তুলতে সাহায্য করে।

গাছ আমাদের বন্ধু। এটি আমাদের যেমন অক্সিজেন দেয় তেমনি কার্বনডাইঅক্সাইড টেনে নেয়। এটি আমাদের দেয় সবুজ পরিবেশ, যা বায়ুমণ্ডলকে রাখে শান্ত। তাই একটি হলেও গাছ লাগান। এবং পরিবেশকে রাখুন সুস্থ, সুন্দর আর নির্মল।