Daily Archives: May 4, 2025
গোরস্তানে গিয়ে যে ৫টি কাজ করা নিষিদ্ধ
এক. কবরে সিজদা করা
কবরে সেজদা করা হারাম এই বিষয়ে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আর এই হাদিসগুলি একজন মানুষের সামনে থাকলে সে কখনো এই ধরণের কাজ করতে পারে না। একটি হাদিসে এসেছে, হযরত জুনদুব (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবীদের কবরকে সিজদার স্থান বানিয়েছে আমি তোমাদেরকে তা থেকে নিষেধ করছি। [মিশকাত ৬৯]
দুই. কবরে পুষ্পস্তাবক অপর্ন করা
এই বিষয়ে একটি হাদিসে এমন পাওয়া যায় যে, একদিন নবী (সা.) দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি ইরশাদ করলেন যে, এই উভয় কবরে আযাব হচ্ছে আতঃপর তিনি খেজুরের একটি তাজা ডাল এনে দুটি কবরে পুতে দিলেন এবং তিনি ইরশাদ করলেন, আশা করা যায় যতদিন এই ডাল শুকাবে না ততদিন আযাব কিছুটা লাঘব হবে। দাফন কাপরের পরে কবরে পানি ছিটিয়ে দেয়া জায়েয আছে কিন্তু ফুল ছিটিয়ে দেয়া সুন্নতের পরিপন্থী। কবরে আগর বাতি জালানো বিষিদ্ধ ও মাকরূহ। [আপকে মাসায়েল ১/৩১৬]
তিন. কবরে চাদর চড়ানো
হাদিসে দেয়ালে চাদর চড়াতে নিষেধ করা হয়েছে। অথচ তাতে বাহ্যিকভবে তাতে খারাবীর কিছু নেই। শিরকেরও কিছু নেই। অথচ কবরে চাদর চড়ানো তো গায়রুল্লাহকে সম্মানের মান্তর। তাই কবরে চাদর চড়ানো জায়েয নেই। [আহসানুল ফাতাওয়া ১/৩৭৮]
চার. কবরে টাকা দেয়া
মাযারে যে কাটা দেয়া হয় এই দ্বারা যদি এই উদ্দেশ্য থাকে যে গরীবকে সাহায্য করা তাহলে দেয়া জায়েয আছে। আর যদি মাযারে মান্নত করার কারণে দিয়ে থাকে তাহলে তা নাজায়েয ও হারাম
পাচ. কবরবাসীর কাছে কিছু চাওয়া
কোন মাজারে গিয়ে এই কথা বলা যে, হে অমুক! আমার জন্য দোয়া করুন যেন আমার কাজটা হয়ে যায় অথবা এই কথা বলা যে কবর থেকে বের হয়ে এসে ইসলামকে সাহায্য করুন। অথবা এই ধরণের কোন শব্দ ব্যবহার করা বা ডাকা মাকরূহ। এছাড়া যদি তার আকীদা গলত হয় অর্থাৎ কবর ওয়ালাকে আল্লাহর কাজের হস্তক্ষেপের অধিকারি মনে করে ডাকে তাহলে হারাম হবে। [ইমদাদুল আহকাম ১/২২৩]
মাওলানা মিরাজ রহমান
হালকা শীতের পোশাক
সূর্যের তেজ কমতে থাকলেই ঠান্ডা বাতাসটা গায়ে লাগে। খুব বেশি শীতল নয়। তারপরও শীতের আগমন বলে কথা। একটু উষ্ণতা পেলে মন্দ হতো না। তবে শীতে জবুথবু হয়ে থাকার মতো পোশাকের প্রয়োজনও এখনো পড়েনি। পাতলা কাপড়ের তৈরি, স্টাইলেও আনবে ভিন্নতা—এমন পোশাক দেবে বাড়তি আরাম। বাজারে এখন বিভিন্ন নকশার ও কাপড়ের তৈরি এমন পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। নকশার পাতায় তারই এক ঝলক।
চাইলে পুরো হাতার, লম্বা কাটের শ্রাগও পরতে পারেন। তবে পাতলা কাপড়ের তৈরি হলে পরে আরাম পাবেন। গেঞ্জি কাপড় অথবা দু-তিন ধরনের কাপড়ের মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে হালকা শীতের পোশাকগুলো। ছবির শ্রাগটি সিঙ্গেল জার্সি নিট দিয়ে তৈরি করা। কামিজ কিংবা পাশ্চাত্য পোশাকের ওপরে পরা যাবে অনায়াসে। পলিস্টার উলের তৈরি হাফহাতা টি-শার্ট। যাঁরা পুরো হাতা পরতে চান না, তাঁদের জন্য আদর্শ। উলের পরশ থাকায় কিছুটা ওমও পাবেন।
পাতলা সুতি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে টি-শার্ট দুটি। হালকা শীতের জন্য আদর্শ।
দাওয়াতে সিল্কের তৈরি এ ধরনের স্টাইল শাল পরতে পারেন। জমকালো ভাব নিয়ে আসবে দাওয়াতের লুকে। জিনস, টাইটস কিংবা সোজা কাটের প্যান্ট বা পালাজ্জোর সঙ্গে ভালো লাগবে।
শীতকালে জিনস পরে আরাম পান অনেকেই। জিনসের তৈরি টি-শার্ট স্টাইল ও আরাম দুটোই দেবে। গেঞ্জি কাপড়ের তৈরি পুরো হাতার সাদা রঙের টি-শার্টও বেশ নজরকাড়া।
ঘর পরিষ্কার
ঝেড়ে-মুছে সব ঝকঝকে। ঘরের কোথাও কোনো ধুলা নেই। কোনো দাগও নেই। শহুরে জীবনে চাইলেও বাসাবাড়ি এমন পরিষ্কার রাখা যায় না। বাড়িতে সহায়তাকারী না থাকলে অফিস শেষে প্রতিদিন সবকিছু হয়তো গুছিয়ে রাখাও সম্ভব না। বাড়ি পরিষ্কার রাখার ছোটখাটো কিছু পদ্ধতি আছে। ঘরবাড়ি প্রতিদিন নিয়ম করে পরিচ্ছন্ন রাখা সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে কিছু সহজ উপায় জানা থাকলে ঝটপট এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
সারা দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে বাসায় ফিরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন, সেটিই যদি অপরিষ্কার থাকে তাহলে কীভাবে হবে? সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনের জন্য চাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘরদোর। এ নিয়ে কথা হলো রাজধানীর সরকারি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরস বিভাগের প্রভাষক তাসমিয়া জান্নাতের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে নতুন করে বলার কিছু নেই। এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে অনেক এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে। ১৯৪০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পারডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ মারভিন ম্যান্ডেলার মতে, শিল্প-বিপ্লবের পর থেকেই যেহেতু প্রতিনিয়ত আমাদের ঘরে-বাইরে কাজ করতে হয়। তাই সবকিছু সামলে নিয়ে পরিপাটি থাকতে হলে আমাদের প্রাত্যহিক কাজে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার সহজ টিপস
* দরজা-জানালা কিংবা শোকেসসহ সব ধরনের কাচ ও থাই গ্লাস পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে লাগবে পানিতে ভেজা এক টুকরো স্পঞ্জ বা ফোম। পানির সঙ্গে সামান্য পরিমাণ ভিনেগার বা অ্যামোনিয়া মিশিয়ে নিতে পারেন। এবার পুরোনো পত্রিকার পাতা ভিনেগার আর পানির মিশ্রণে ভিজিয়ে ভালোভাবে মুছে নিন—কাচের চকচকে ভাব ফিরে আসবে। তবে সুতি কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে গেলে হিতে বিপরীত অবস্থা হতে পারে। কাপড়ের সূক্ষ্ম সুতা কাচের গায়ে লেপটে যায়। জানালার কাচে উজ্জ্বলতা আনতে সাদা ভিনেগার ব্যবহার করুন। প্রতি এক গ্যালন পানিতে দুই টেবিল চামচ ভিনেগারই যথেষ্ট। স্প্রে বোতলে নিয়ে স্প্রে করে পেপার বা সূক্ষ্ম সুতার কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
* স্টেইনলেস স্টিল ও প্লাস্টিকের আসবাব ধোয়ার ক্ষেত্রে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানিই যথেষ্ট।
* কাঠ, বাঁশ, বেত, হার্ডবোর্ড কিংবা পারটেক্সের তৈরি আসবাব পরিষ্কারে কখনোই পানি ব্যবহার করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে ধুলাবালু দূর করতে শুকনো কাপড় বা মপই যথেষ্ট। মপ মানে, হাতলের মাথায় থাকা গুচ্ছাকার সূক্ষ্ম সুতার দড়িসমেত ঝাড়ু বিশেষ। প্রয়োজনে প্রতি কক্ষে আলাদা আলাদা মপ রাখতে পারেন—খাটের নিচে, দরজার আড়ালে কিংবা বারান্দায়।
* সোফা, খাট, চেয়ার ইত্যাদি আসবাবের পরিষ্কারের জন্য আছে ‘ফার্নিচার ডাস্টার’। দাম পড়বে ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। কাঠে পানি পড়লে তা শুকিয়ে নিতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
* মোজাইক বা টাইলস করা পাথুরে মেঝে পরিষ্কার করতে ফ্লোর মপ বা ফ্লোর ব্রাশ ব্যবহার করুন। সে ক্ষেত্রে মেঝে পরিষ্কারক বিশেষ ধরনের সাবান (কঠিন বা তরল-জাতীয়) ব্যবহার করুন, কিন্তু কখনোই ডিটারজেন্ট পাউডার ব্যবহার করা ঠিক না।
* কার্পেট পরিষ্কার করা খুব কঠিন বিষয়ই বটে। এতে সামান্য বাই-কার্বোনেট সোডা ছিটিয়ে একটু ঘষে রেখে দিন ১৫ মিনিট। এরপর এভাপোরেট টুল দিয়ে বা ঝাড়ু দিয়ে ঝাঁট দিন। ব্যবহার করতে পারেন বিশেষ ‘ড্রাই শ্যাম্পু’ও।
* যেকোনো আসবাবের আঁচড়ের দাগ দূর করতে আলু কেটে ঘষুন, বেশ কার্যকর।
* কাঠের তৈরি আসবাব যেমন টেবিল বা বেঞ্চে মার্কার পেনের কালি লেগে গেল, তুলবেন কীভাবে? দাঁত মাজার টুথপেস্ট ব্যবহার করুন, উঠে যাবে।
* বাচ্চার আঁকিবুঁকিতে ঘরের দেয়ালের যাচ্ছেতাই অবস্থা? ভেজা স্পঞ্জ বা কাপড়ে বেকিং সোডা নিয়ে মুছে ফেলুন দেয়ালের যত দাগ।
* মাত্র কিনে আনা বাক্স থেকে খোলা নতুনের মতো রাখতে চান স্নিকার জুতা? টুথপেস্ট দিয়ে ঘষুন।
* সবজি কাটার বোর্ডে লেগে থাকা সবজি আর তা থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধ দূর করতে চান? লেবু কেটে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। লেবুর সঙ্গে লবণ ও বেকিং সোডাও মিশিয়ে নিতে পারেন।
* ঘর পরিষ্কারের পরপরই ঘর মোছার কাপড় ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে রাখতে হবে।
* একটু সুযোগ পেলেই ঘরের কোনায় বা ওপরের দিকে মাকড়সা বাসা বাঁধে। ঝুলজাতীয় কালিও লেগে থাকে তাতে। এসব সহজে পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন সিলিং ব্রাশ। বেশ লম্বা হাতলওয়ালা ঝাড়ুগুলোয় নারকেলের শলাকা বা প্লাস্টিকের নরম আঁশ ব্যবহৃত হয়। আবার চাইলেই এর হাতল ইচ্ছামতো ছোট-বড় করা যায় পাবেন এমন সিলিং ব্রাশ। পাবেন ১৮০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।
* সারা দিনের রান্নায় লাগে এমন মসলা পিষে আগে থেকেই ঢাকা অবস্থায় ফ্রিজে রাখতে হবে। এতে গন্ধ ছড়াবে না এবং অন্যান্য খাবারও থাকবে ফ্রেশ।
* নিয়মিতভাবে সাবধানতার সঙ্গে ফ্রিজ পরিষ্কার করা যায়। প্রথমেই ফ্রিজের সুইচ অফ করে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এবার ভিনেগার বা বাসনকোসন ধোয়ার ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি দিয়ে ফ্রিজের ভেতরের অংশ ধুয়ে নিন। তবে কখনোই ফ্রিজের গায়ে সেঁটে থাকা বরফ ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে তুলতে যাবেন না, এতে ফ্রিজের ক্ষতি হতে পারে।
* অনেক সময় পানির কল বা টেপ বিকল হয়ে পড়ে—টেপ খুলতে বা বন্ধ করতে অনেক কষ্ট করতে হয়। এ ক্ষেত্রে একটি কাপড় উত্তপ্ত ভিনেগারে ডুবিয়ে পানির কলে জড়িয়ে দিন, সুফল পাবেন।
* সাধারণ ডিটারজেন্ট বা হারপিক দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করতে পারেন। ব্যবহৃত টিস্যু, সাবান কিংবা শ্যাম্পুর মোড়ক ইত্যাদি ফেলার জন্য বাথরুমেই একটি নির্দিষ্ট ময়লার ঝুড়ি রাখতে পারেন।
* ওভেনে খাবার গরম করার সময় অবশ্যই ঢাকনাসহ বাটি ব্যবহার করতে হবে। না হলে ওভেনের ভেতরটা তৈলাক্ত হয়ে যাবে।
* রান্নাঘরে তরিতরকারি কিংবা খাবারের ময়লা নির্দিষ্ট ঝুড়িতে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ভেজা ও শুকনো ময়লা ফেলার জন্য পৃথক দুটি ময়লার ঝুড়ি রাখুন। ঝুড়ির অভ্যন্তর ভাগ পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে নিন—ময়লা নেওয়ার সময় যাতে সেই পলিথিনসহ নিয়ে যায়। নিয়মিত ময়লার ঝুড়ি পরিষ্কার করে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
* বেসিনের পাশে সব সময় থাকুক হাত ধোয়ার সাবান ও মোছার জন্য পরিষ্কার তোয়ালে।
* থালাবাসন ধোয়ার পর শুকনো পরিষ্কার ন্যাপকিন অথবা নরম তোয়ালে দিয়ে মুছে রাখতে হবে যেন দাগ না বসে যায়।
* রান্নাঘরের সিঙ্কটিকে ঝকঝকে করতে হলে অর্ধেক আঙুর, সামান্য লবণ মিশিয়ে একটি স্পঞ্জ দিয়ে ঘষে নিন।
অন্দরের গাছপালায়ও তো ধুলা জমে। পরিষ্কার করবেন কীভাবে? এ ব্যাপারে পরামর্শ দেন ঢাকার আগারগাঁওয়ের গ্রিন সেভারস নার্সারির প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি। তিনি জানান,
* প্রথমে গাছের মরা পাতা ও ডালপালা থাকলে ছেঁটে ফেলতে হবে।
* ধুলাবালু পড়ে পাতা মলিন দেখাতে পারে। পানি স্প্রে করুন, পাতার ধুলো দূর হবে।
* পরে টিস্যু বা সুতি কাপড়ে নারিকেল তেল নিয়ে পাতা মুছে চকচকে আকর্ষণীয় ভাব ফিরিয়ে আনুন।
* বাজারে লিফ সাইনার নামে একধরনের বোতলজাত তরল পদার্থ পাওয়া যায়। স্প্রে করুন, পাতার চকচকে ভাব ফিরে আসবে। তাতে আবার উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানও থাকে। পাবেন পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারের বীজ মার্কেটে।
যেন মিনি কক্সবাজার
ঢাকার একেবারে কাছে। দোহারের কার্তিকপুরের যে জায়গাটি পদ্মাপাড়ে গিয়ে মিশেছে তার নাম মৈনটঘাট। এখানে ডানে-বাঁয়ে বালু চিকচিক করা স্থলভূমি থাকলেও সামনে শুধু রুপোর মতো চকচকে পানি। এটা পদ্মা, আমাদের প্রিয় পদ্মা নদী। মৈনট পদ্মাপাড়ের একটি খেয়াঘাট। এখান থেকে প্রতিদিন ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করে। খেয়া পারাপারের জন্য জায়গাটির পরিচিতি আগে থেকেই ছিল। তবে এখন সেটা জনপ্রিয় বেড়ানোর জায়গা হিসেবেও। এত দিন অনেকটা আড়ালে থাকলেও ঢাকার কাছে বেড়ানোর ‘হটস্পট’ এখন এই মৈনটঘাট। মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়া মৈনটঘাটের নতুন নাম হলো—মিনি কক্সবাজার!
প্রমত্তা পদ্মার হাঁকডাক আগের মতো না থাকলেও যা আছে সেটাই বা কম কী! বিশাল পদ্মার রূপ মৈনটঘাট এলাকায় বিস্ময়-জাগানিয়া। একটু পরপর পদ্মার ঢেউ কূলে আঁছড়ে পড়ছে। খানিক পরপর মাছ ধরার ট্রলার ছুটে চলে যাচ্ছে। তীরে সব ভ্রমণপিপাসুদের ভিড়। তাঁদের কেউ কেউ মাছ ধরার নৌকা দেখে মাছ কেনার জন্য এগোচ্ছেন। দরদাম ঠিক থাকলে অনেক পর্যটক মাছ কিনে নিচ্ছেন। পুরো নদীর তীর ও তার আশপাশের এলাকা সমুদ্রসৈকতের মতো করে সাজানো। এখানে সকালবেলাটা খুব ভালো কাটে, দুপুর কিছুটা মন্থর, তবে বিকেলবেলা অনেক বেশি জমজমাট। সোনা রোদের গোধূলিবেলার তো কোনো তুলনাই চলে না।
মৈনটপাড়ের দোকানপাটে বেচাকেনা আর পদ্মার জলে ঘুরে বেড়ানো। পদ্মার দুপাশের বিস্তীর্ণ ভূমি আর পদ্মার ঢেউ আছড়ে পড়ার দৃশ্যে আপনার সমুদ্র ঊর্মিমালার কথাই মনে হবে। আপনি হেঁটে হেঁটে চলে যাবেন বহুদূর। এখানে পদ্মার জলে পা ভিজিয়ে গল্প করার মজাই আলাদা!
সরাসরি বাস মৈনটঘাট চলে আসে। যাদের নিজস্ব বাহন আছে, তাদের তো কথাই নেই। বাস বা নিজস্ব বাহন থেকে নেমেই চোখে পড়বে নানা ধরনের পসরা সাজিয়ে বসা অনেক দোকানপাট। খাবারের দোকান তো আছেই। এসব পেছন ফেলে সামনে গেলেই পাবেন বিশাল পদ্মা। এতটা বিশাল যে ওপারের কিছুই দেখা যায় না, দেখা যায় না ডান-বাঁয়ের কোনো বসতি। এখানে ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করে। চাইলে ট্রলারে চেপে ওপারের চরভদ্রাসন থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। আবার ঘণ্টা চুক্তিতে ট্রলার বা স্পিডবোট ভাড়া করে পদ্মার বুকে ভেসে বেড়াতে পারেন। যা-ই করেন এখানে সময়টা কিন্তু বেশ কাটবে!
দরকারি কথা
মৈনটঘাট সারা দিনের ট্যুর। দিনে গিয়ে দিনেই ফেরত আসতে পারবেন। ঢাকার গুলিস্তানের মাজারের সামনে থেকে সরাসরি বাস সার্ভিস আছে। যমুনা নামের এই বাসটি আপনাকে ঠিক দেড় ঘণ্টায় মৈনটঘাট পৌঁছে দেবে। ভাড়া ৯০ টাকা। তবে দলবেঁধে মাইক্রোবাস নিয়ে গেলে দারুণ একটা পিকনিক পিকনিক ভাব পাবেন। মৈনটঘাট তো অবশ্যই যাবেন। দেখে আসতে পারবেন কোলাকোপা বান্দুরার সব ঐতিহাসিক স্থাপনা, আলালপুর তাঁতপল্লি ও হাছনাবাদ জপমালা রানির গির্জা! খাবার নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। মৈনটঘাটেই রয়েছে ছাপরাঘরের মতো কিছু ভালো রেস্তোরাঁ। একেবারে ঘরের খাবারের স্বাদই পাবেন। বাচা মাছ, চিংড়ি আর পদ্মার ইলিশে মন-প্রাণ জুড়িয়ে যাবে।
সচেতনতা
বলা হয় প্রমত্তা পদ্মা। তার আগের সে রূপ না থাকলেও হালকাভাবে নেবেন না। এখন নদীতে গোসল করা নিষেধ। কেউ গার্ডের অবাধ্য হয়ে কিছু করবেন না। পানিপথে যাতায়াতে বা ট্রলারে ঘুরে বেড়ানোর সময় একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সম্ভব হলে সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখবেন। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, আপনার বা আপনার ভ্রমণসঙ্গীদের দ্বারা পরিবেশ হুমকিতে পড়ে এমন কোনো কিছু অবশ্যই করা চলবে না। পলিথিন বা প্লাস্টিকের বোতলসহ পরিবেশ বিপন্ন হয় এমন কিছু ফেলে আসবেন না।
ঘরেই তৈরি করুন মজাদার চিকেন নাগেটস
চিকেন নাগেটস সববয়সীদের কাছেই প্রিয় একটি খাবারের নাম। বাজার থেকে কেনা নাগেটসগুলো স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে। আপনি চাইলে ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন বাজারের মতো চিকেন নাগেটস। রইলো রেসিপি-
উপকরণ : ৫০০ গ্রাম চিকেন ছোট টুকরো করা, ১ কাপ বাটার মিল্ক, ১/২ চা চামচ হার্ব, লবণ, ১ চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো, ১ কাপ ময়দা, ব্রেড ক্রাম্বস বা বিস্কুটের গুঁড়ো, ২টি ডিম, ২ টেবিল চামচ চিজ।
প্রণালি : প্রথমে মাংস ভালো করে ধুয়ে নিন। বাটার মিল্ক, অল্প লাল মরিচ গুঁড়ো ভাল করে মাংসে মাখিয়ে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর মিশ্রণটি থেকে মাংসগুলো আলাদা করে নিন। এখন চিকেনের টুকরোগুলোতে লবণ, গোলমরিচ গুঁড়ো, হার্ব ( আপনি আপনার পছন্দমত হার্ব যেমন ওরিগেনো গুঁড়ো, তুলসি গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন) দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর ময়দা, লবণ, গোল মরিচ গুঁড়ো, এবং পারমেজান চিজ গুঁড়ো দিয়ে মিশিয়ে নিন। মুরগির টুকরোগুলো ময়দায় গড়িয়ে নিন। তারপর এটি ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বস গড়িয়ে নিন। এরপর চিকেন নাগেটসগুলো গরম তেলে দিয়ে দিন। বাদামী রং হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার চিকেন নাগেটস। চাইলে কাঁচা অবস্থায়ও ড্রিপ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে পারেন।
কেমন হবে মা-ছেলের সম্পর্ক
পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ডাক মা। মায়ের কোনো তুলনা হয় না। সন্তানের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা, তাকে দেখাশোনা, তাকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা- সব, মায়ের হাতেই হাতেখড়ি। মায়ের সঙ্গে সন্তানের এই সম্পর্ক সৃষ্টির শুরু থেকেই। মা হাজার ব্যস্ত থাকলেও সন্তানের জন্য থাকে তার অফুরন্ত সময়। মা তার সন্তানকে তার সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবাসেন। তবে সন্তান মাঝে মাঝে তার ব্যস্ততার জন্য মাকে সময় দিতে পারে না। মায়ের জন্য সন্তানের সময় হয়ে ওঠে না। পারিপার্শ্বিক কাজ, স্কুল, কলেজ আর বন্ধুবান্ধব মায়ের সেই অভাব আর সন্তানকে অনুভব করতে দেয় না। তবে কী সন্তানের ভালোবাসা মায়ের থেকে সত্যিই কমে যায়?
সন্তান ছেলে হোক কিংবা মেয়ে মায়ের এই বিষয় নিয়ে কখনো অভিযোগ থাকে না। সন্তান মায়ের কাছে সৃষ্টিকর্তার উপহার। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই ছেলে সন্তানের জগৎটা কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। অনেক সময় মায়ের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়, তার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। একটি সময় মা যখন ছিল তখন তার জীবনে দ্বিতীয় কোনো মানুষ ছিল না। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের পাশাপাশি যুক্ত হয় বন্ধু-আত্মীয়সহ কাছের মানুষ। আর এতেই দূরত্ব বাড়ে। ছেলেদের সঙ্গে মায়ের খুনসুটি কিছুটা আগে থেকেই থাকে। মাকে ঘিরেই অনেকের থাকে দুনিয়া। হাজার ব্যস্ত থাকলেও মায়ের জন্য ছেলের মন পোড়েই। মায়ের জন্য তার ভালোবাসা হয়তো প্রকাশিত হতে পারে না, তবে তাই বলে ছেলের মনে মায়ের ভালোবাসা কমে না।
কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও দেখা যায়। ছেলেরা মায়ের চেয়ে বাবার সঙ্গে একটু বেশি খোলামেলাভাবে কথা বলতে পারে। যাতে মায়ের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায়। মা’কে সে সবকিছু আর তখন খুলে বলতে চায় না। যার ফলে দূরত্ব আরো বিশাল হয়। তাদের মাঝে সম্পর্কের ফাটল ধরে।
কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাবা সারাদিন অফিসে থাকে। মা ছাড়া তার আর কোনো সঙ্গী থাকে না। তাই মাকেই সে অবলীলায় বলে ফেলে মনের সব কথা। যার ফলে বড় হয়েও মায়ের সঙ্গে সে বিনা দ্বিধায় যে কোনো বিষয়ে কথা বলতে পারে। মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে।
ছেলে বড় হলে নানা কাজে তো ব্যস্ত থাকতে হয়ই, তাই বলে মায়ের জন্য কিছুটা সময় রাখতে ভুলবেন না। মায়ের সঙ্গে সারাদিনের ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো নিয়েই গল্প করুন, সম্ভব হলে তার কাজে টুকটাক সাহায্যও করুন। বাইরে থেকে ফেরার সময় মায়ের পছন্দের কিছু একটা কিনে নিয়ে যান। দেখবেন, মুখে কপট রাগ দেখালেও মনে মনে মা কতো খুশিই না হন!