banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য ও মেয়েদের পিতা-মাতা

আমি এমন অনেক নাটক, সিনেমা দেখেছি যাতে দেখানো হয়েছে ছেলের বাবা বা মাকে ছেলের বউ সহ্য করতে পারছে না ৷ কিন্তু এমন কোনো নাটক, সিনেমা দেখিনি যাতে দেখানো হয়েছে মেয়ের বাবা-মা বৃদ্ধ বয়সে কোথাও যাবার জায়গা পাচ্ছেন না; মেয়েটি চেষ্টা করছে যতটা সম্ভব সাহায্য করার, কিন্তু মেয়েটির স্বামী বা শ্বশুর বাড়ীর লোক সহ্য করতে পারছে না৷ আশেপাশের লোক বলছে মেয়ের বাড়ী থাকবেন, কেমন দেখায়? কিন্তু এই মেয়েটির জন্যও তার বাবা -মায়ের অনেক ত্যাগ ছিল, এই মেয়েটির জন্যও তারা রাত জেগেছেন, ভেজা বিছানায় শুয়েছেন ৷ উপরন্তু তার নিরাপত্তার জন্য বাড়তি উদ্বেগ সহ্য করেছেন; মেয়েটির বিয়ে দেবার সময় ছেলে পক্ষের যৌক্তিক-অযৌক্তিক সব দাবী মেনে নিয়েছেন, জামাই বা জামাই বাড়ীর কেউ আসলে টাকা থাকুক বা নাই থাকুক বাজারের বড় মাছ কিনেছেন; কোমরে ব্যাথা নিয়েও হাসি মুখে জামাইয়ের জন্য রান্না করেছেন৷ এত কিছুর পরেও কেন এই বাবা-মায়ের ত্যাগ , কষ্ট কোথাও মূল্যায়ণ পায় না? শুধু ‘মেয়ের বাবা-মা’ হওয়ার কারণে? আমি যখনি কোনো নাটক বা সিনেমায় সন্তানের জন্য মায়ের ত্যাগ দেখেছি আশ্চর্যজনক ভাবে সন্তানটি সর্বদাই ছেলে সন্তান ছিল, একবারের জন্যও আমি মেয়ে সন্তান দেখিনি। কারনটা কি হতে পারে? -আমি অনেকবার ভাবার চেষ্টা করেছি। মায়েরা কি ছেলেদের জন্য বেশী ত্যাগ করে যা ছেলেদের মনে রাখা উচিত? মায়েদের ছেলে সন্তানের প্রতি আকর্ষণটা একটু বেশী হতে পারে (অনেক মনোবিজ্ঞানী মনে করেন) কিন্তু ত্যাগ তো তারা মেয়েদের জন্য একটুও কম করেন না। তাহলে কেন মেয়ের মায়েদের ত্যাগটা সবসময় অনুচ্চারিতই থেকে যায়? আবার ভাবার চেষ্টা করেছি মেয়েরা হয়তো এমনিতেই বাবা মায়ের প্রতি যত্নশীল , ছেলেদের বরঞ্চ মনে করিয়ে দিতে হয় বাবা-মা তার জন্য কী কষ্ট করেছে । এটা হয়ত কোনো কোনো ক্ষেত্রে সত্যি হতে পারে কিন্তু যদি আমরা ছেলেদের জন্য বাবা মা কতটা কষ্ট করেছেন শুধু তাই পুনঃ পুনঃ উচ্চারণ করতে থাকি তবে কি মেয়ের বাবা-মায়েদের ত্যাগ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে না? এ তো গেলো এ দুনিয়ার কথা ৷ মৃত্যু পরবর্তী দুনিয়ার ব্যাপারেও ছেলের বাবা মায়ের সুবিধা মেয়ের বাবা মায়েদের থেকে বেশী দেখানো হয় ৷ ‘মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত’ কথাটা শুনলেই কেন যেন আমাদের মনে এক মা আর তার ছেলে এমন একটা ছবি ভেসে ওঠে ৷ একবার এক মফঃস্বলের এক মাওলানা যিনি ওই এলাকার মাদ্রাসার শিক্ষক এবং নিয়মিত ঈদের জামাতে ইমামতি করেন ও খুতবা দেন (অর্থাৎ একজন ধর্মীয় শিক্ষক এবং নেতা ) আমাকে বলছিলেন, “মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত এবং বিয়ের পরে মেয়েদের জন্য মা-বাবার স্থান নিয়ে নেয় তার শ্বশুড়- শ্বাশুড়ী ৷” তিনি আমাকে যা বোঝাতে চাইছিলেন তার অর্থ দাঁড়ায় ছেলেদের বেহেশত সর্বদাই মায়ের পায়ের নীচে থাকে কিন্তু মেয়েদের বেহেশত বিয়ের সময় তার মায়ের পায়ের নীচ থেকে সরে গিয়ে স্থান নেয় শ্বাশুড়ীর পায়ের নীচে ৷ অর্থাৎ বিয়ের সময় মেয়ের মায়েরা বেহেশত হারান আর ছেলের মায়েরা বাড়তি একটি লাভ করেন ৷ এই সুত্র অনুযায়ী কোনো মহিলার যদি দুটি ছেলে থাকে তবে তিনি চারটি বেহেশতের উপরে দাড়িয়ে থাকেন কিন্তু যার দুটি মেয়ে তিনি মেয়েদের বিয়ে দেবার সাথে সাথে বেহেশতশূণ্য হয়ে যান ৷ এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কোন নারী চাইবে মেয়ের মা হতে? কে চাইবে কষ্ট করে মেয়ে পেটে ধরে, তার জন্ম দিয়ে, তাকে বড় করার সব কষ্ট সয়েও বেহেশতশূণ্য হতে? তার থেকে ভালো ছেলের মা হওয়া – ছেলের জন্য কষ্ট করার পুরস্কার হিসাবে পার্মানেন্ট একটা বেহেশত তো থাকবেই তার উপরে বোনাস হিসাবে মেয়ের মায়েরটাও পাওয়া যাবে। এভাবে কি আমরা সবাই মিলে এমন একটা সামাজিক চাপ তৈরী করছি না যাতে সবার মধ্যে ছেলে সন্তান পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়ে, আর মেয়ে সন্তানের আকাঙ্ক্ষা কমে? আর এ থেকে তৈরী হয় ভারসাম্যহীনতা আর পরিনামে জন্ম নেয় নানা রকম পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা । আমরা জানি রাসুল (সঃ) এর সময় মক্কার লোকেরা মেয়ে শিশু সন্তানদের জীবন্ত কবর দিত; কেন? যে বাবা এ কাজটি করত তার কি একটুও কষ্ট হতনা ? অবশ্যই হত। ইতিহাস সাক্ষী যে একাজ করার সময় তাদের বুক ফেটে যেত; চোখের পানিতে মুখ ভেসে যেত; তারপরও কেন তারা এটা করত? কারণ সমাজের চাপ। সমাজ এমন এক পরিবেশ তৈরী করে রেখেছিল যাতে ছেলের পিতা-মাতা নানা ভাবে সুবিধা ভোগ করত আর মেয়ের পিতা-মাতাদের পড়তে হত অসুবিধা জনক অবস্থানে – কাজেই কেউই মেয়ে সন্তান চাইতো না । আমাদের এই আধুনিক যুগেও যদি আমরা নাটক, সিনেমা, সাহিত্য সর্বত্র ছেলের বাবা-মায়েদের ত্যাগ কে হাইলাইট করি আর মেয়ের বাবা-মাদের ত্যাগ কে অবহেলা (over look) করি তবে আমরাও এমন এক পরিবেশ তৈরী করছি যাতে সবার মধ্যে ছেলের বাবা- মা হওয়ার ইচ্ছা বাড়ে, আর মেয়ের বাবা- মা হওয়ার ইচ্ছা অনুৎসাহিত হয়। আমরা কি এভাবে মেয়ে ফীটাস এবরশন কে উত্সাহিত করছি না? আমি একবার খুব নামকরা একজন ধর্মীয় বক্তার ওয়াজ শুনছিলাম ‘পিতা মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য’ এর উপর । বক্তব্যের শব্দ চয়ন এবং ধরন (Tone) এমন ছিল যে ওখানে উপস্থিত সব পুরুষের মনে হলো বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে তারা যথেষ্ট মনোযোগী হতে পারছেন না এবং এর সম্ভাব্য কারণ বা বাধা হলো স্ত্রী । অপরপক্ষে উপস্থিত প্রতিটা নারীর মনে হলো যে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর প্রতি দায়িত্ব পালনে তার ভূমিকা সমালোচিত হলো । এমন ব্যাখ্যা নিঃসন্দেহে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে ভালো প্রভাব ফেলবে না । শুধু তাই না, এধরনের ব্যাখ্যা যেহেতু ছেলের মায়েদের সুবিধা জনক স্থানে রাখছে সেহেতু ওই ওয়াজে উপস্থিত সব নারীর মনেই (আমার নিজেরও ) ছেলের মা হওয়ার ইচ্ছা তৈরী হয়েছে, মেয়ের মা হতে তেমন কারোই সেদিন ইচ্ছা হয়নি। ওয়াজগুলো কি এমন হতে পারে না যা শুনে প্রত্যেকটা পুরুষ ভাবতে পারে, সন্তান হিসাবে তার বাবা মায়ের সাথে সে নিজে ভালো আচরণ করছে কিনা?

লিখেছেন:  কানিজ ফাতিমা

 

কোন স্ত্রীর ওপর ফেরেশতারা সারারাত অভিশাপ দিতে থাকে?

অনেক মহিলাকেই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীতে একটু খুনসুটি হলেই স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার মানসে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা বন্ধ করে বসে। এতে অনেক রকম ক্ষতি দেখা দেয়। পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। স্বামী দৈহিক তৃপ্তির জন্য অবৈধ পথও বেছে নেয়, অন্য স্ত্রী গ্রহণের চিন্তাও তাকে পেয়ে বসে। এভাবে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে স্বীয় শয্যা গ্রহণ বা দৈহিক মিলনের জন্য আহবান জানায়, কিন্তু স্ত্রী তা অস্বীকার করায় স্বামী তার ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে রাত কাটায়, তখন ফিরিশতাগণ সকাল পর্যন্ত ঐ স্ত্রীর ওপর অভিশাপ দিতে থাকে”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৩২৪৬]

অনেক মহিলাকেই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীতে একটু খুনসুটি হলেই স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার মানসে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা বন্ধ করে বসে। এতে অনেক রকম ক্ষতি দেখা দেয়। পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। স্বামী দৈহিক তৃপ্তির জন্য অবৈধ পথও বেছে নেয়, অন্য স্ত্রী গ্রহণের চিন্তাও তাকে পেয়ে বসে। এভাবে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সুতরাং স্ত্রীর কর্তব্য হবে স্বামী ডাকামাত্রই তার ডাকে সাড়া দেওয়া। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সঙ্গে দৈহিক মিলনের জন্য ডাকবে, তখনই যেন সে তার ডাকে সাড়া দেয়। এমনকি সে যদি ক্বাতবের পিঠেও থাকে। ” [যাওয়াইদুল বাযযার ২/১৮১ পৃ; সহীহুল জামে, হাদীস নং ৫৪৭] ‘ক্বাতব’ হচ্ছে, উঠের পিঠে রাখা গদি যা সওয়ারের সময় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

স্বামীরও কর্তব্য হবে, স্ত্রী রোগাক্রান্ত্র, গর্ভবতী কিংবা অন্য কোনো অসুবিধায় পতিত হলে তার অবস্থা বিবেচনা করা। এতে করে তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় থাকবে এবং মনোমালিন্য সৃষ্টি হবে না।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

ওলি-আউলিয়াদের কারামত কী ও কেন?

ওলি ওই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহ তায়ালার জাত ও সিফাতগুলোর মারেফাত তথা পরিচয় লাভ করেছেন। সাধ্যানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত রয়েছেন। যাবতীয় কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা ও আনন্দ-উপভোগ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করেন এবং যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকেন।

আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্যের সর্বোচ্চ নিদর্শন ‘মোজেজা’ ও ‘কারামত’। মোজেজা প্রকাশ পায় নবী ও রাসূলদের মাধ্যমে আর কারামত হক্কানি আউলিয়ায়ে কেরামদের জন্য নির্ধারিত।
‘কারামত’ শব্দটি আরবি একবচন। বহুবচনে ‘কারামাত’। এর অর্থ বিশেষ ক্ষমতা, মর্যাদা ও সম্মান ইত্যাদি। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে কারামত হলো- মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর পছন্দনীয় বান্দাদের থেকে এমন কিছু কাজ প্রকাশ করেন, যা দ্বারা তিনি তাদের সম্মানিত করেন, যা অস্বাভাবিক ও অলৌকিক। নবী-রাসূলদের পরই এই বান্দাদের মর্যাদা- যাদের ওলি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, ‘জেনে রাখ, নিশ্চয় যারা আল্লাহর ওলি তাদের নেই কোনো ভয় এবং নেই কোনো চিন্তা।’ (সূরা ইউনুস-৬২)।

ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ.) ‘আল ফিকহুল আকবর’-এ ওলির সংজ্ঞায় বলেছেন, ওলি ওই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহ তায়ালার জাত ও সিফাতগুলোর মারেফাত তথা পরিচয় লাভ করেছেন। সাধ্যানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত রয়েছেন। যাবতীয় কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা ও আনন্দ-উপভোগ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করেন এবং যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকেন।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হচ্ছে, ‘কারামাতুল আউলিয়ায়ে হাক্কুন’, অর্থাৎ আউলিয়ায়ে কেরামদের কারামত সত্য। এগুলো তাদের উচ্চ কামালাত তথা মর্যাদার সাক্ষ্য বহন করে বটে; কিন্তু কখনও তারা এসবের মাধ্যমে নিজেদের জনসমাজে প্রকাশ করেন না। ওলিদের যে কারামত সংঘটিত হয়, এগুলো তাদের অনিচ্ছায় এবং আল্লাহর ইচ্ছায় অলৌকিকভাবে সম্পন্ন হয়। ঘটনাচক্রে বা ক্ষেত্রবিশেষে ওলিদের মাধ্যমে কারামত প্রকাশ পায়।

প্রকৃতপক্ষে যিনি আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা অর্থাৎ যারা আল্লাহর ওলি তাদের কারামত আল্লাহ পাকের জাত, সিফাত ও এলমে মারফতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যে ব্যক্তি শরিয়তের পূর্ণ অনুসারী কেবল তার দ্বারা কোনো অলৌকিক ঘটনা ঘটলেই এটিকে কারামত বলা হয়।

যে ব্যক্তি আমলের ক্ষেত্রে শরিয়তের খেলাপ করে সে যদি চেষ্টা-সাধনা করে কোনোরূপ অলৌকিক কাজ প্রদর্শন করে তবে এটিকে কারামত বলে না। তাই জাদুকর, কাফের বা যোগী-সন্ন্যাসীদের দ্বারা যে অস্বাভাবিক কাজ প্রদর্শিত হয় সেগুলো কখনও কারামত নয়। এসবকে ‘এসতেদরাজ’ বলে। ওলি থেকে কারামত প্রকাশ পাওয়া জায়েজ ও অস্বাভাবিক। এটি সহিহ দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত। প্রকৃত মুসলমান একে অস্বীকার করতে পারে না। কারণ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ওলিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। সূরা তওবার ১১৯নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও। এখানে সত্যবাদী বলতে ওলিদের বোঝানো হয়েছে।

লেখক : মুহাম্মদ আনিসুর রহমান নূরী
সম্পাদনা ও গ্রন্থনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

দক্ষ টিমওয়ার্কের জন্য জরুরি ৫টি কৌশল

এগিয়ে যেতে হলে দল বেঁধেই এগিয়ে যেতে হয়। একা একা বড় হওয়া খুবই কঠিন। যারা একাই সফলতার শীর্ষে পৌঁছে যেতে চান তারা প্রায়শই কিছু পথ পেরিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। একসাথে কাজ করলে মানসিক চাপ কারও একার ওপর পড়ে না। বিনিয়োগ বড় হয়, কাজ ভাগ করে নেওয়া যায়।
কিন্তু নানান মতের, নানান ধরণের মানুষকে নিয়ে একটি টিম একই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে কাজটি কিন্তু ভাবতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে আদতে তত সহজ নয়। কীভাবে টিমওয়ার্ক ভাল হতে পারে আসুন জেনে নিই সে বিষয়ে কিছু টিপস-
আপনার কর্মীরা যত কাছে থাকবে তত তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে
আপনার দলকে একত্র রাখার দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকেই। কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে থাকলে তাদের কাজের খোঁজ নেওয়া, তাদের মাঝে ইউনিটি তৈরি করা, ভুল ধরিয়ে দেওয়া সবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কাজের অবস্থানের দূরত্ব অনেক রকম ভুল তথ্য ছড়াতে সাহায্য করে। কর্মীরা একজন আরেকজনকে ঈর্ষা করা, দ্বন্দ তৈরি করার মত কাজে জড়িয়ে পড়েন। এতে ব্যহত হয় প্রজেক্টের গতি।
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বার বার তুলে ধরুন
কর্মীদের মাঝে কাজের গুরুত্ব বার বার তুলে ধরুন। মাঝে মাঝে মিটিং করুন। মিটিং ছাড়াও কর্মীদের প্রায়ই মনে করিয়ে দিন কাজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। এভাবে তারা কখনো ঝিমিয়ে যাবেন না। কোম্পানির কর্পোরেট ভ্যালু যেন তারা ভাল ভাবে বোঝেন সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। হতে পারে এটি আপনার একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কিন্তু আপনি আপনার কর্মীদের মানসিকতাকে পরিচালিত করতে পারেন একটি চমৎকার সংস্কৃতির দিকে। গড়ে তুলতে পারেন এমন একটি টিম যা শুধু কাজ করে না তুলে ধরে ব্রান্ড ভ্যালু।
 
কোম্পানিকে নিজের ভাবতে শেখান
আপনার কমীদের মাঝে কৃতজ্ঞতা তৈরি করুন। তাদেরকে এমনভাবে কোম্পানির কথা বলুন যেন তারা বুঝতে পারেন তারাই শুধু কোম্পানিকে শ্রম দেন না, কোম্পানিও তাদের কথা ভাবেন। সময় মত তাদের বেতন পরিশোধ করুন, বাড়তি কাজের টাকাও পরিশোধ করুন। মাঝে মাঝে সম্ভব হলে ইন্টেন্সিভ বোনাস দিন। দৃশ্যত এটি কোম্পানির বাড়তি খরচ মনে হলেও আসলে কর্মীদের কর্মচাঞ্চল্য মুনাফা হয়ে কোম্পানির ফান্ডেই ফিরে আসে।
প্রশংসা করুন
কর্মীদের কাজ ভাল হলে অবশ্যই প্রশংসা করুন। ভাল কাজের স্বীকৃতি দিন। যোগ্যতা অনুযায়ী পুরস্কৃত করুন। আপনি যদি টিমে স্বজনপ্রীতি বা বিশেষ কারও প্রতি ভালোবাসার চর্চা করেন তাহলে সেটি অন্যদের কাজও করার আগ্রহকে নষ্ট করবে। কারণ আপনার কর্মীরা ধরেই নেবেন, তারা যতই পরিশ্রম করুন না কেন স্বীকৃতি পাবেন না। তখন তারা কোম্পানির জন্য কষ্ট করতে চান না। এভাবেই কোম্পানি দক্ষ কর্মী হারায়।
বিশ্বস্ততা তৈরি করুন
কর্মীদের সাথে সৎ হন। বিশ্বস্ততা না থাকলে টিমওয়ার্ক কখনো সফল হয় না, দীর্ঘস্থায়ী হয় না। টিম মেম্বারদের কাছে পরিচ্ছিন্নভাবে কোম্পানির কাজ তুলে ধরুন। তাদেরকে বোঝান, এটি তাদের সকলের কোম্পানি। এর গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব সকলের। মিটিং এ সকলকে মতামত প্রকাশের সুযোগ দিন। আপনার একার মস্তিষ্ক অনেক বুদ্ধিদীপ্ত হতে পারে। কিন্তু আপনি যখন আরও অন্যদের আইডিয়া শুনবেন তখন আরও অনেক পথ খুঁজে পাবেন। একই সাথে কর্মীদের এই সম্মান দিলে তারা কোম্পানিকে নিজের মনে করবে। কোম্পানির লাভ হোক আর লস হোক, পাশে থাকবেন। কখনো টিম ভেঙ্গে চলে যাবেন না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

তৈরি করুন মজাদার চিকেন কাঠি রোল

মুরগি মাংসের যেকোন খাবার খেতে দারুন লাগে। মুরগি মাংস দিয়ে নানা খাবার তৈরি করা যায়। বাচ্চাদের টিফিনে কি খাবার দেবে তা নিয়ে মায়েদের চিন্তার শেষ নেই। বাচ্চাদের টিফিনের সমস্যা সমাধান করে দেবে চিকেন কাঠি রোল। সহজে অল্প কিছু উপকরণ দিয়ে এই কাবাবটি তৈরি করে নিন।

উপকরণ:  

ডো তৈরির জন্য:

২ কাপ ময়দা

১ কাপ আটা

১ চা চামচ লবণ

পুররের জন্য:

২৫০ গ্রাম মুরগির মাংস

৫টি পেঁয়াজ কুচি

১ চা চামচ আদা রসুনের পেস্ট

১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

১ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো

২ চা চামচ চিকেন মশলা পাউডার

১ চা চামচ চ্যাট মশলা

৩ চা চামচ লেবুর রস

তেল

১টি শসা কুচি

২টি পেঁয়াজ কুচি

১ চা চামচ লেবুর রস

১ চা চামচ চ্যাট মশলা

২টি ডিম ফাটানো

লবণ

চাটনি (পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ, লবঙ্গ, লেবুর রস এবং লবণ)

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে ময়দা, আটা, লবণ এবং পানি মিশিয়ে ডো তৈরি করে নিন।

২। চুলায় প্যান দিয়ে তাতে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে জিরা দিয়ে দিন।

৩। জিরা ফুটে আসলে এতে পেঁয়াজ কুচি, আদা রসুনের পেস্ট দিয়ে দিন।

৪। পেঁয়াজ নরম হয়ে আসলে এতে হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো দিয়ে দিন।

৫। এরপর এতে মুরগির টুকরো এবং লবণ দিয়ে ১০ মিনিট রান্না করুন।

৬। চিকেন মশলা দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন। এরপর এতে গরম মশলা, চ্যাট মশলা এবং লেবুর রস দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন।

৭। রান্না হয়ে গেলে এটি নামিয়ে রাখুন।

৮। ডো দিয়ে রুটি তৈরি করে নিন। অল্প তেলে রুটি ভেজে নিন।

৯। রুটি ভাজা হয়ে গেলে একটি ডিম ফেটে প্যানে দিয়ে দিন। ডিমটির উপর রুটি দিয়ে ভাজুন।

১০। শসা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লেবুর রস, চ্যাট মশলা, এবং লবণ দিয়ে সালাদ তৈরি করে রাখুন।

১১। ডিম রুটির উপর চাটনি, মুরগির মাংস এবং সালাদ দিয়ে রোল তৈরি করুন।

১২। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার চিকেন কাঠি রোল।